হৃৎপিন্ডের রোগজনিত কাশি, দ্বিপ্রহর রাত্রে কাশি হয়। |
রোগীর মনে হয় নড়লেই হৃৎপিন্ডের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাবে, নাড়ী অত্যন্ত মৃদু ও সবিরাম। |
লিভার বড়, টাটানি ও বেদনাযুক্ত, জণ্ডিস হওয়ার প্রবণতা। |
সাদা লেইয়ের মত মল। |
রাত্রে ঘুমানোর উপক্রমে দমবন্ধ হয়ে আসে। |
পাকস্থলীতে অত্যন্ত খালি খালি অনুভূত হয়। |
প্রোস্টেট গ্ল্যান্ড (Prostate gland) বড়। |
রজোনিবৃত্তি সমস্ত হঠাৎ চোখেমুখে যেন আগুনের হলকা বয়—তারপর অত্যন্ত স্নায়বিক দুর্বলতা ও অনিয়মিত নাড়ী একবার চলে আবার বন্ধ হয়—এই অবস্থা সামান্য নড়াচড়ায় বেড়ে যায়—এই অবস্থাপ্রাপ্ত মহিলাদের ক্ষেত্রে উপযোগী । হৃৎপিন্ডের ভালবের অসুখ নেই অথচ হৃৎপিন্ড দুর্বল।
নড়াচড়া করলে হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে যাবে এই অনুভূতি (কোকেন)। নিড়াচড়া না করলে হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে যাবে এই ভীতি থাকে— জেলা
পাকস্থলীতে খালি খালি বোধ, দুর্বলতা, অত্যন্ত অবসন্নতা, মরতে চলেছে—মনে করে। রাতে স্বপ্নদোষ ঐ সাথে যৌনমিলনের পর জননাঙ্গে ভীষণ দুর্বলতা বোধ হয়।
বুকে ভীষণ দুর্বলতা কথা বলতেও কষ্ট হয় (স্ট্যানাম)।
মল – হালকা, ছাইরঙের মলত্যাগের দেরী, খড়িমাটির মত (চেলিডো, পডো); সাদা (ক্যাল্ক, চায়না); তরল মল যেন পাইপ ফুটো হয়ে গেছে, আপনা হতেই বেরিয়ে আসে ।
নাড়ী — পূর্ণ, অনিয়মিত, ধীর গতি, দুর্বল, প্রতি তৃতীয়, পঞ্চম ও সপ্তম স্পন্দন বাদ পড়ে যায়।
মুখ ফ্যাকাসে, মৃতবৎ, নীলচে লালবর্ণ।
গায়ের চামড়া, চোখের পাতা, ঠোট, জিব নীলবর্ণ, সায়ানোসিস।
চোখের পাতা, কান ঠোট ও জিব-এর শিরা ফুলে যায়।
থেমে থেমে শ্বাসপ্রশ্বাস নেয়, শ্বাসপ্রশ্বাসে কষ্ট হয়, মাঝে মাঝে গভীর দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে।
হাতের আঙুলে মাঝে মাঝেই ও সহজেই ঝিঁঝিঁ লাগে।
শোথ — স্কারলেট জ্বরে পরে, প্রস্রাবে এলবুমেনযুক্ত রোগে (Bright’s Disease) মূত্র বন্ধ হয়ে দেহের ভেতর ও বাইরে শোথরোগ সাথে মূর্চ্ছা ও হৃৎপিন্ডের যান্ত্রিক গোলযোগ থাকে, (জরায়ুস্থানে ঘায়ের মত ব্যথায় = কনভ্যালেরিয়া)।
বিছানায় শোয়া অবস্থা থেকে উঠিয়ে বসালে হৃৎপিন্ডের সাংঘাতিক অবসন্নতা (Syncope) দেখা দিতে পারে।
সম্বন্ধ – চায়না, ডিজিটালিসের সরাসরি ক্রিয়ার দোষনাশক ও উদ্বেগ বাড়িয়ে দেয়।
বৃদ্ধি — বসলে, বিশেষতঃ সোজা হয়ে বসলে ও হাঁটাচলায় বা নড়াচড়ায় বাড়ে ।
শক্তি – ৩, ৬, ৩০।
Dropsy = ড্রপসি—শোথ। সমস্ত দেহে, হাত পা, মুখ, পেট, চোখ ইত্যাদি সাধারণভাবে (Generalised Oedema) ফুলে যায়। শরীরে সমস্ত টিস্যুতে অত্যধিক পরিমাণে জলীয় পদার্থ জমা হয়।
কারণ— ক্যাপিলারীর মধ্যে তরল পদার্থ অতিরিক্ত চলাচলে, Vein অবরুদ্ধ হয়ে বা হার্ট ফেলিওর হয়ে ক্যাপিলারীতে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়ে; Lymph channel বন্ধ হয়ে; Kidney কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেললে, রক্তে Plasma Protein কম হয়ে গিয়ে; প্রদাহযুক্ত অসুখ হলে; শরীরে তরল ও ইলেকট্রোলাইট Balance নষ্ট হয়ে বিশেষতঃ Sodium অতিরিক্ত জমে গিয়ে, অপুষ্টিজনিত কারণে; শরীরে রাসায়নিক পদার্থ যেমন ব্যাকটেরিয়া জাত বিষ, সর্পবিষ, Alkali ও Histamine প্রবেশ করে ঐ অবস্থা সৃষ্টি করে।
Anasarca = Dropsy-র চরম অবস্থা (এনাসারকা)।
[Bright’s Disease = ব্রাইটস ডিজিজ—কিডনীর অসুখ বর্তমানে এই নাম প্রচলিত নয়। সাধারণতঃ যে অসুখে কিডনীতে পুঁজ উৎপত্তি হয় না বিশেষতঃ প্রস্রাবে প্রোটিন (Proteinuria) ও রক্ত (Hematuria), সাথে, সাথে রক্তচাপ বৃদ্ধি ও রক্তে Nitrogen-এর পরিমাণ বেড়ে যায়। প্রস্রাবে Albumen বার হয়। ব্রিটিশ চিকিৎসক Richard Bright-এর আবিষ্কর্তা।
[Syncope = সিনকোপ—মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ কমে গিয়ে জ্ঞান হারায়।]
সর্বপ্রকার রোগে, যেখানে প্রাথমিকভাবে হৃদপিন্ড আক্রান্ত হয়, যেক্ষেত্রে, নাড়ীর গতি দুর্বল, অনিয়মিত, সবিরাম, অস্বাভাবিক রকমের মন্থর এবং যেখানে শরীরের ভিতরের ও বাইরের অঙ্গে শোথ দেখা দেয়, সেই সব ক্ষেত্রে এই ঔষধটি কাজ করে থাকে। মায়োকার্ডিয়াম বা হৃদপেশীর মধ্যস্তরের দুর্বলতা ও বিবৃদ্ধি। এই ঔষধের প্রধান পথপ্রদর্শক লক্ষণ হল, হৃদপিন্ডের কোন অংশের ক্ষতির পূরন হয় না ও যখন অরিকিউল্যার ফিব্রিলেশন দেখা দেয়। অর্ধশায়িত অবস্থায় নাড়ীর গতি মন্থর কিন্তু বসে থাকলে অনিয়মিত এবং একই সঙ্গে দুইবার স্পন্দন হয়। অরিকিউল্যার ফ্লাটার ও ফিব্রিলেশন, বিশেষ করে যেখানে বাতজ্বরের পরে হৃদপিন্ডের অস্বাভাবিক অবস্থা দেখা দেয়। হার্টব্লক বা হৃদপিন্ডের যান্ত্রিক বিপর্যয়ের, দরুন প্রতিবন্ধকতার, নাড়ীর গতি অত্যন্ত মন্থর। হৃদপিন্ডের যান্ত্রিক বিপর্যয়ের অন্যান্য লক্ষণ সমূহ যেমন, প্রচন্ড দুর্বলতা, ক্ৰমশঃ শক্তিহীণতা, মূর্চ্ছা, চামড়া ঠান্ডা এবং অনিয়মিত শ্বাস-প্রশ্বাস; তামাক সেবনের ফলে হৃদপিন্ডের উত্তেজনা ও চোখের গোলযোগ সমূহ, যকৃতের কঠিণতা থেকে জন্ডিস এবং যকৃতের বিরুদ্ধে, এই জাতীয় ক্ষেত্রে প্রায়ই ডিজিট্যালিসের প্রয়োজন হয়। জন্ডিস তৎসহ হৃদপিন্ডের রোগ। অবসন্নতা, যেন মারা যাবে। মুখমন্ডল, নীলচোখ, হৃদপেশীর ক্রিয়াহীনতার ফলে যেক্ষেত্রে অ্যাসিস্টোল দেখা দেয়া। এই ঔষধ হৃদপেশীকে সক্রিয় করে, হৃদপিন্ডের সঙ্কোচন বা সিস্টোলের শক্তি বাড়িয়ে থাকে এবং সিস্টোলের স্থায়িত্বকালের সময়ও বৃদ্ধি করে। সামান্য পরিশ্রমে দুর্বলতা। হিমাঙ্গ অবস্থা।
মন – বিষন্নতা, গীতিপূর্ণ; ভবিষ্যত সম্পর্কে উদ্বিগ্ন। অনুভূতি ক্ষীন। যে কোন প্রকার আঘাত পেটের উপরের অংশে আঘাত করে। দুঃখিত, শক্তিহীণতা, অলস, নাড়ীর গতি মন্থর।
মাথা — হাঁটা চলার সময় ও উপরে উঠার সময়, হৃদপিন্ডও যকৃৎ সংক্রান্ত উপসর্গের সঙ্গে মাথা ঘোরা। ঠাণ্ডা জল পান করার পরে অথবা আইসক্রীম খাবার পরে। মাথার কপাল অংশে তীক্ষ্ণ, তীরবিদ্ধবৎ বেদনা, বেদনা নাক পর্যন্ত প্রসারিত হয়। মাথায় ভারীবোধ, তৎসহ মাথাটি পিছন দিকে পড়ে যাবে এই জাতীয় অনুভূতি, মূখমন্ডল নীলবর্ণযুক্ত। মাথায় বিভ্রান্তিবোধ, পূর্ণতার অনুভূতি এবং মাথার ভিতর শব্দ। সামান্য তন্দ্রাকালে কটকট শব্দ শুনতে পায়। জিহ্বা ও ঠোঁট দুটি নীলবর্ণ।
চোখ — চোখের পাতাদুটির রঙ নীল। চোখের সামনে মাছির মত কাল কাল পদার্থ সমূহ দেখতে পায়। বিভিন্ন প্রকারের সবুজবৰ্ণ বিচার করার তীক্ষ্ম ক্ষমতার প্রকাশ। দৃষ্ট বস্তু হলুদ অথবা সবুজ দেখায়। চোখের তারার অস্বাভাবিক প্রসারণ, চোখের পাতার কিনারাগুলি লালচে, স্ফীত, সকালে জুড়ে যায়। রেটিনার বিচ্ছিন্ন অবস্থা। দৃষ্টি ঝাপসা, চোখের তারার অস্বাভাবিকতা, দ্বিত দৃষ্টি।
পাকস্থলী – মুখের আস্বাদ মিষ্ট তৎসহ প্রচুর লালাস্রাব। প্রচন্ড বমিবমিভাব, বমিকরার পরেও কমে না। অবসন্নতা, পাকস্থলীর ভিতর অত্যন্ত দুর্বলতার অনুভূতি। পাকস্থলীর ভিতর জ্বলন, জ্বালা অন্ননলী পর্যন্ত প্রসারিত হয়। ঠান্ডা জল পানের পরে অথবা আইসক্রিম খাবার পরে কপালে তীক্ষ্ণ, তীর বেঁধার মত বেদনা, বেদনা নাক পর্যন্ত প্রসারিত হয়। নড়াচড়ার পরে অবসন্নতা ও বমি। সামান্য পরিমাণে খাবার পরে, অথবা খাদ্যবস্তুর গন্ধে অথবা দৃশ্যে অস্বস্তি হয়। পেটের উপরের অংশে স্পর্শকাতরতা। প্রচুর লালাস্রাব। পাকস্থলীর স্নায়ুশূল,যদিও খাবার সঙ্গে সম্পর্কযুক্তহীন।
উদর – পেটে বেদনা, যা মনে হয় অন্ত্রের নীচের দিকে প্রসারিত অংশে এবং উপ পজ্ঞরাস্থির নীচ অনুভূত হয়। পেটের তীব্রবেদনা, পেটের বৃহৎ ধমনীর স্পন্দন এবং পেটের উপর অংশের সংকীর্ণতা, যকৃতের বিবৃদ্ধি, টাটানি ব্যথা ও যন্ত্রনা।
মল — সাদা চকের মত, ছাইয়ের মত, আঠার মল। জন্ডিসের সময় উদরাময়।
প্রস্রাব – অবিরাম বেগ, ফোঁটা-ফোঁটা করে প্রস্রাব, কালো, উত্তপ্ত, জ্বালাকর অনুভূতি, তৎসহ তীক্ষ্ণ কেটে ফেলার ন্যায় বেদনা অথবা প্রস্রাব থলির গ্রীবাদেশে দপদপ কর বেদনা, যেন একটি খড় ভিতরে ঢুকছে ও বাইরে বেরিয়ে আসছে এই জাতীয় অনুভূতি; রাত্রে বৃদ্ধি। মূত্রবোধ। প্রস্রাব ঘোলাটে ও অ্যামোনিয়ার গন্ধযুক্ত। প্রস্রাব নলীর প্রদাহ, ফাইমোসিস, প্রস্রাবলীর পাথুরী। প্রস্রাব করার পরে প্রস্রাব থলিতে পূর্ণতার অনুভূতি। মূত্ৰনলীর সঙ্কোচন ও জ্বালা, মনে হয় যেন, মূত্ৰনলী সরু হয়ে গিয়েছে। প্রস্রাবে ইটের গুড়োর মত তলানি।
স্ত্রীরোগ – মাসিক ঋতুস্রাবের আগে পেটে ও পিঠে প্রস্রাব বেদনার মত যন্ত্রনা। জরায়ু থেকে রক্তস্রাব।
পুরুষের রোগ – রাত্রিকালীন শুক্রস্থলন (ডিজিট্যালিস) তৎসহ সঙ্গমের পরে পুরুষাঙ্গে অত্যন্ত দুর্বলতা। হাইড্রোসিস অন্ডকোষের বিবৃদ্ধি যেন একটি ব্লাডার, গনোরিয়া, লিঙ্গমুন্ডের প্রদাহ (মার্কিউরিয়াম) তৎসহ লিঙ্গাগ্রভাগের চামড়ার শোথ। শোথের ন্যায় লিঙ্গস্ফীতি। গোলাকার । প্রস্টেট গ্রন্থির বিবৃদ্ধি। শ্বাস-প্রশ্বাস গভীর শ্বাসনেবার অদম্য ইচ্ছা। শ্বাস-প্রশ্বাস অনিয়মিত, কষ্টকর দীর্ঘ-নিশ্বাস। কাশি, তৎসহ বুকের ভিতর হাজাকর টাটানি ব্যথার অনুভূতি। শ্লেষ্মা মিষ্টিস্বাদযুক্ত। বৃদ্ধ বয়েসে নিউমোনিয়া। বুকের ভিতর প্রচন্ড দুর্বলতা। শ্বাসকষ্ট, অবিরাম গভীর শ্বাস নেবার ইচ্ছা। ফুসফুসে চাপের অনুভূতি। পুরাতন ব্রঙ্কাইটিস, ফুসফুসে অপ্রবণ রক্তসঞ্চয় এবং হৃদপিন্ডের পেশীসমূহের ক্রিয়াহীনতার ফলে শ্লেষ্মার সঙ্গে রক্ত আসে। কিছুতেই কথা বলা সহ্য হয না। ফুসফুস থেকে রক্তমিশ্রিত শ্লেষ্মা উঠে তৎসহ হৃদপিন্ডের দুর্বলতা।
হৃদপিন্ড – সামান্য নড়াচড়াই তীব্র হৃদকম্প এবং নড়লে চড়লে হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে যাবে, এই জাতীয় অনুভূতি। (জেলসিমিয়ামের বিপরীত) প্রায়ই হৃদপিন্ডে সূঁচ ফোটার মত বেদনা। হৃদপিন্ডের অনিয়মিত কাজ। বিশেষ করে মাইট্রাল ভালবের রোগে, নাড়ীর গতি অত্যন্ত মন্থর। সবিরাম স্পন্দন, দুর্বল। শরীর নীলবর্ণ। নাড়ীর স্পন্দনের অস্বাভাবিকতা, হঠাৎ করে যেন হৃদপিন্ড থেকে গেল। এই জাতীয় অনুভূতি নাড়ীর গতি মন্থর এবং সামান্য নড়াচড়ায় অত্যন্ত দ্রুত হয়। হৃদাবরক ঝিল্লীর প্রদাহ, তৎসহ প্রচুর রক্তাম্বুস্রাব। হৃদপিন্ডের বিবৃদ্ধি। হৃদপিন্ডের অবসন্নতা,অনিয়মিত স্পন্দন তৎসহ মন্থর ও দুর্বল নাড়ী। হৃদপিন্ডের বিবৃদ্ধি সহ প্রসারণ। জ্বরের পরে হৃদপিন্ডের কিক্রাহীনতা। হৃদপিন্ডের শোথ।
অঙ্গ-প্রতঙ্গ – পায়ের পাতার স্ফীতি, হাতের আঙ্গুল খুব সহজেই নিষ্কিয় হয়ে পড়ে। হাত ও পা শীতল। সন্ধিস্থানে বাতের বেদনা। সন্ধিস্থানগুলি স্ফীত, চকচকে ও সাদা। পেশীর অবসন্নতা। রাত্রিকালে হাতের আঙ্গুলের স্ফীতি। একটি গরম জ্বলন্ত লালতার হঠাৎ করে পায়ের ভিতর দিয়ে চলে গেল, এই জাতীয় অনুভূতি (ডাজেন)। ঘুম আতঙ্কের সঙ্গে ঘুমের মধ্যে চমকিয়ে উঠে , যেন সে কোন উঁচু স্থান থেকে পড়ে যাচ্ছে। অবিরাম তন্দ্রালুতা।
জ্বর – হঠাৎ করে উত্তাপের ঝলক অনুভূত হয়, এর পরে প্রচন্ড স্নায়বিক দুর্বলতা।
চামড়া – উদ্ভেদ গাঢ় লালবর্ণ, পিটের দিকে বেশী হয়, অনেকটা হামের মত দেখতে। চোখের পাতায়, কানে, ঠোঁটে ও জিহ্বার উপর নীলবর্ণের স্ফীতি শিরাসমূহ। শোথাবস্থা। চুলকানি ও জন্ডিস।
কমা-বাড়া-বৃদ্ধি, যখন সোজাভাবে বসে থাকে, আহারের পরেও সঙ্গীতের পরে।
উপশম – যখন পাকস্থলী খালি হয়, মুক্ত বাতাসে।
সম্বন্ধ-দোষঘ্ন-ক্যাম্ফর, সার্পেন্টারিয়া। প্রতিবন্ধকতা-চায়না।
তুলনীয় – নেরিয়াম ও ডোরাম(হৃদপিন্ডের উরুর ডিজিট্যালিসের মতই কাজ করে কিন্তু এছাড়াও সুষুম্নাকান্ডের উপর ট্রিকনিয়ার মত কাজ আছে। শরীরের উপরের অংশে মূলতঃ আক্ষেপ দেখা দেয়। হৃদকম্প, দুর্বল হৃদপিন্ডের এই ঔষধের সাহায্য বলবর্দ্ধক হয়। দাঁত-কপাটি বা লকজ)।
এডোনিয়া, ক্র্যাটেগাসএকটি প্রকৃত হৃদপিন্ডের বলকারক ঔষধ, ক্যালমিস্তায়া, স্পাইজেলিয়া, লিয়েট্রিস।
এছাড়াও তুলনীয় ডিজিটক্সিনাম (ডিজিট্যালিস ক্লোরোফর্মের মধ্যে তালিকা তৈরী করা হয়, এই ঔষধের হলুদ দৃষ্টি এবং অস্বস্তিকর বমি-বমিভাব সুস্পষ্টভাবে থাকে)। শ্যামপেইন ও বায়ুপূর্ণ জলপানে বৃদ্ধি।
নাইট্রি স্পিরিটাস ডালসিস- ডিজিট্যালিসের ক্রিয়াবর্দ্ধক।
কনভ্যালেরিয়া (হৃদপিন্ডের রোগতৎসহ মাথাঘোরা এবং পাকাশয়িক গোলযোগ)।
কুইনিডিন (অরিকিউল্যার) ফিব্রিলেশনের ক্ষেত্রে হৃদপিন্ডের স্বাভাবিক স্পন্দন ফিরিয়ে নিয়ে আসতে সাহায্য করে। প্রায় ডিজিট্যালিসের কাজে সাহায্য করে। তিন গ্রেন পরিমাণে দুইমাত্রা, তিন ঘন্টা পর পর যদি সিঙ্কোনার কোন লক্ষণ প্রকাশ না পায়, সেক্ষেত্রে ছয় গ্রেন পরিমাণে চার মাত্রা, দৈনিক একমাত্রা করে প্রযোজ্য। (সি. হারল্যান ওয়েলস)। মাঝে মাঝে নাড়ীর বর্দ্ধিত স্পন্দন বা ট্যাকিকার্ডিয়া সাময়িক ভাবে হলেও এই ঔষধ হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক মাত্রায় ফিরিয়ে নিয়ে আসে।)।
শক্তি – যে ক্ষেত্রে ঔষধটি হোমিওপ্যাথিক তত্বানুসারে নির্দেশিত হয়, সেক্ষেত্রে ৩য় শক্তি থেকে ৩০ শক্তিই প্রতিক্রিয়া করে থাকে, কিন্তু সাময়িক উপশমের জন্য। যান্ত্রিক মাত্রায় ঔষধটি প্রযোজ্য। এই ক্ষেত্রে তাজা উদ্ভিদ থেকে প্রস্তুত অরিত, ৫ থেকে ২০ ফোটায় মাত্রায়, যে ক্ষেত্রে হৃদপিন্ডকে উত্তেজিত করা প্রয়োজন, অথবা ১১/২%। কাথ প্রযোজ্য। মাত্রা, যেক্ষেত্রে প্রস্রাব বর্দ্ধক হিসাবে ব্যবহার হবে যেক্ষেত্রে ১/২ আউন্স থেকে ১ আউন্স মাত্রায় প্রযোজ্য। অরিষ্ট চিনির সঙ্গে অথবা রুটির সঙ্গে দেওয়া চলে, এবং এই ঔষধ ব্যবহারের কুড়িমিনিট আগে এবং কুড়ি মিনিট পরে কোন প্রকার তরল বস্তু পান করা যাবে না। উদ্ভিদের পাতার গুড়ো ১/২ থেকে ২ গ্রেন পরিমাণে ক্যাপসুল হিসাবে ব্যবহার করা চলে। ডিজিটক্সিন ১ম থেকে ২৫০ গ্রেন। ডিজিট্যালিস যে কোন ভাবেই প্রয়োগ করা হউক না কেন, নাড়ীর স্পন্দনের গতি প্রতি মিনিটে ৮০ তে নেমে এলে এবং নাড়ীর স্বাভাবিক ছন্দ আংশিক অথবা সম্পর্ণভাবে প্রতিষ্ঠিত হলে ঔষধের মাত্রা কমিয়ে দিতে হবে। এই জাতীয় ক্ষেত্রে একটি ভালো নিয়ম হলো যে, ঔষধের মাত্রা অর্ধেক করে দিতে হয় এবং প্রস্রাবের পরিমাণ কোন সময় হঠাৎ করে জমে গেলে ঔষধের পরিমান আরো অর্ধেক করে দিতে হয়।
এলোপ্যাথিক মতে ব্যবহৃত হইয়া এই ঔষধটি, তাহাদের মেটিরিয়া মেডিকার অপর যেকোন ঔষধ অপেক্ষা অধিক ক্ষতি করিয়াছে। যে রোগীরই দ্রুত হৃৎক্রিয়া থাকিত এবং হৃৎপিন্ডের যেরূপ বিকৃতি ঘটিত, তাহাকে ডিজিটেলিস দেওয়া হইত। এই ঔষধটি অন্য যে-কোন ঔষধ অপেক্ষা অধিক মৃত্যু ঘটাইয়াছে। হৃৎপিন্ডের দ্রুত ক্রিয়া হইতে থাকিলে এবং ইহা প্রয়োগ করা হইলেও অতি শীঘ্র এক অদ্ভুত রকমের পক্ষাঘাত উৎপন্ন হয়, হৃৎপিন্ডের সামঞ্জস্যচক্র বিকল হইয়া পড়ে, হৃৎপিন্ডের সঙ্কোচন-প্রসারজনিত ক্ষয়ের পূরণ হয় না এবং রোগী অবসন্ন হইয়া পড়িয়া অবশেষে মারা যায়। তাহারা জানেন না যে, তাঁহারা যেরূপ ব্যবহার করেন, তদনুরূপভাবে এই ঔষধটি মূল অরিষ্টরূপে ও অনেক ফোঁটা মাত্রায়, হৃৎপিন্ডের মন্থরতা উপস্থিত না হওয়া পর্যন্ত ব্যবহৃত না হইলে, বহু রোগী জ্বরে, নিউমোনিয়া এবং অন্যান্য তরুণরোগে বাঁচিয়া যাইতে পারিত। তাহারা বলেন, ইহা শান্তিদায়ক ঔষধ, হ্যাঁ ইহা একটি শান্তিদায়ক ঔষধই বটে! রোগীকে অত্যন্ত শান্তি দেয়। তোমরা দেখিয়াছ যে, রোগী যখন যমের হাতে যায় এবং তাহার সবচেয়ে ভাল পোষাকটি পরাইয়া দেওয়া হয়, তখন সে কত শান্ত দেখায়। ডিজিটেলিস যাহা করে তাহাও এইরূপ। এলোপ্যাথদিগের হাতে উহা এইরূপ শান্তিদায়ক ঔষধ। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক কখনও নাড়ীকে দমাইবার জন্য ঔষধ ব্যবস্থা করেন না। তিনি রোগীর জন্য ঔষধ ব্যবস্থা করেন এবং হৃৎপিন্ড আপনা হইতেই সামলাইয়া লয়।
ডিজিটেলিস জ্বরের ঔষধ নয়। পরীক্ষায় জানা যায় যে, যখন নাড়ী দ্রুত থাকে, তখন প্রযোজ্য না হইয়া, যখন নাড়ী ধীর থাকে তখনই ইহা প্রযোজ্য হয়। এলোপ্যাথরা নাড়ী দ্রুত হইলে উহাকে ধীর করিবার জন্য ডিজিটেলিস দেন; যদি সুস্থ লোককে ইহা দেওয়া হয়, তাহা হইলে ইহা তাহার নাড়ী ধীর করিয়া দিবে এবং সেইজন্য নাড়ী যখন ধীর থাকে, তখন রুগ্ন লোককে ইহা দিতে হয়।
ইহাতে যকৃতের যথেষ্ট উপদ্রব সৃষ্টি করে। যকৃতে রক্তসঞ্চয় এবং যকৃৎ বৃদ্ধি। যকৃতে ক্ষততা।” যকৃতের চারিদিকের কোমলতা, কিন্তু ঐ সময়ে নাড়ী ধীর থাকে। ইহা অন্ত্রাদির ক্রিয়া মন্থর করিয়া দেয়, যকৃৎকে অক্ষম করিয়া ফেলে, মল পিত্তহীন, ফিকে বর্ণের, কাদার মত হয় এবং তৎসহ নাড়ী ধীর থাকে। ইহার সহিত ন্যাবারোগ যোগ কর, তাহা হইলেই তোমরা ডিজিটেলিসের একটি সুন্দর চিত্র পাইবে। ন্যাবারোগ, তৎসহ ধীর নাড়ী, যকৃৎস্থানে অস্বচ্ছলতা, বিবর্ণ মল; আর যদি তুমি পূর্বে ডিজিটেলিসের ক্রিয়ার বিষয় শুনিয়া বা দেখিয়া না থাক, তাহা হইলেও তুমি উহাকে প্রয়োগ করিতে পারিবে।
ডিজিটেলিস-জ্ঞাপক হৃৎপিন্ড, ডিজিটেলিসজ্ঞাপক যকৃৎ, এবং ডিজিটেলিস-জ্ঞাপক অন্ত্রাদি সম্বন্ধে আর একদল লক্ষণ, পাকস্থলীতে শূন্যতা ও নিমগ্নতার অনুভূতি। উহাতে তাহার মনে হয়, সে যেন মরিয়া যাইবে এবং খাইলেও তাহার উপশম হয় না। ইহা একপ্রকার স্নায়বিক, মৃত্যুকল্প অবসন্নতা এবং ইহা অনেক প্রকার হৃৎরোগের সহিত উপস্থিত হয়। তোমরা ডিজিটেলিসে অত্যন্ত স্নায়বিক অবসন্নতা দেখিয়া বিস্মিত হইও না। একাধারে অস্থিরতা এবং অত্যধিক স্নায়বিক দুর্বলতা। “মনে করে, যেন সে ছিন্নভিন্ন হইয়া যাইবে। উৎকণ্ঠা। মনে করে, যেন বিশেষ কিছু ঘটিবার উপক্রম হইয়াছে।” মনে হয় যে, তাহার সমস্ত শারীর বিধানটি উৎকণ্ঠাপূর্ণ অনুভূতি ও অস্থিরতায় পূর্ণ হইয়া গিয়াছে। ক্লান্তি, মূৰ্ছাভাব অবসন্নতা এবং অত্যন্ত শয্যাশায়ীতা। সামান্য বিরক্তিতেই মূর্হিত হইয়া পড়ে। উহা পাকস্থলীতে আরম্ভ হয়; পাকস্থলী ও অন্ত্রাদির মধ্যে একপ্রকার ভীতিকর অনুভূতি।
তাহার নিদ্রা, ভীষণ স্বপ্নে, বুকচাপা স্বপ্নে, হৃৎপিন্ডসংক্রান্ত রোগগুলির সহিত ইহা খুব সাধারণ। নাড়ী যখন অত্যন্ত ধীর হইয়া পড়ে, যখন উহা অনিয়মিত হয়, তখন নিদ্রার মধ্যে অনিয়মিতভাবে মস্তকে রক্তের যোগান হইতে থাকে এবং তাহাতেই একপ্রকার বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি হয়। শরীরের মধ্যে বিদ্যুতাঘাতের ন্যায় একপ্রকার সংঘাত চলিতে থাকে, উহা আভ্যন্তরিক উৎক্ষেপের মত, পেশী সঙ্কোচনের মত। অকস্মাৎ পেশীগুলি উৎক্ষিপ্ত হইয়া উঠে, যেন উহাদের মধ্য দিয়া বিদ্যুৎতরঙ্গ চলিয়া গেল। এইরূপ অবস্থার সহিত থাকে ধীর নাড়ী, মূৰ্ছাভাবের অনুভূতি এবং অত্যন্ত দুর্বলতা। যে-সকল লোক সময়ে সময়ে হৃৎপিন্ডরোগের আবেশে পীড়িত হয়, তাহাদের ওষ্ঠদ্বয়ে নীলাভ বিবর্ণতা দেখা দেয়, সময়ে সময়ে মনে হয় যে, নাড়ীর স্পন্দন থামিয়া যাইবে। তখন মুখমন্ডল নীল হইয়া যায়, হস্তাঙ্গুলিগুলি নীল হইয়া যায়। সে চিৎ হইয়া শুইয়া থাকিতে চায়। নিদ্রার মধ্যে মাঝে মাঝে চমকাইয়া উঠে, রাত্রিকালে হাতে পায়ে ঝাঁকি দিয়া উঠে।
হৃৎপিন্ডসংক্রান্ত অসংখ্য লক্ষণ আছে, কিন্তু তাহাদের মধ্যে কোনটিই ধীর নাড়ীর মত মূল্যবান নয়। রোগের প্রারম্ভেই নাড়ী ধীর হয়। তারপর ইহা বিদ্যুতের ন্যায় দ্রুত সঞ্চরণশীল হইতে পারে। রোগী উৎকণ্ঠিত ও অস্থির হয়, ভয়ঙ্কর স্বপ্ন দেখে, পাকস্থলীতে নিমগ্নতা বোধ করে উহাকে ডিজিটেলিসের বর্ধিত অবস্থা বলিয়া বোধ হয় কিন্তু আমি জানিতে চাই যে, নাড়ী প্রারম্ভে ধীরগতি ছিল কিনা। রোগী অবশ্য কচিৎ বুঝিতে পারে, কিন্তু অপর কেহ হয়ত বলিয়া দিবে যে, প্রারম্ভে নাড়ীর স্পন্দন ৪৮, উহাই ডিজিটেলিস। যদি প্রারম্ভে নাড়ী দ্রুত থাকে, ডিজিটেলিসের কথা ভাবিও না। উহাতে উপকার হইবে না। ডিজিটেলিস-জ্ঞাপক নাড়ী প্রথম দিকে ধীর থাকে এবং হয়ত অনেকদিন যাবৎ ঐরূপই থাকিয়া যায়, শেষপর্যন্ত হৃৎপিন্ড অনিয়মিত স্পন্দনের সহিত কম্পনশীল হইয়া পড়ে, সবিরাম হয় এবং মনে হয় যে, উহার স্পন্দন থামিয়া যাইবে এবং সেই সময় আমরা এই সকল অদ্ভুত লক্ষণ পাই। দুৰ্বলতাই ডিজিটেলিস-জ্ঞাপক নাড়ীর প্রকৃতি এবং অপর লক্ষণগুলি উহার আনুষঙ্গিক। প্রথমে উহা ধীর, কখন কখন বলবান। ধীরগতি বলবান নাড়ী, হৃৎপিন্ডের বাত আক্রমণ সম্ভাবনায় দেখা যায়। “বলবান, কিন্তু সেরূপ দ্রুতগতিবিশিষ্ট নহে, এরূপ নাড়ী। অকস্মাৎ হৃৎপিন্ডের দ্রুত ও অসমতালিক স্পন্দন।” সামান্য নড়াচড়ায় উৎকণ্ঠা ও হৃৎস্পন্দন বর্ধিত হয়। যখন নাড়ী খুব ধীরে চলে, কখন কখন মিনিটে ৪০ বার পর্যন্ত হইয়া যায়, তখন বেশী মাথা ঘুরাইলে, নাড়ী দপদপ করিয়া উঠে এবং বেগে চলিতে আরম্ভ করে। যদি সে বিছানায় পাশ ফিরে, মনে হয়; যেন তাহার হৃৎক্রিয়া বন্ধ হইয়া যাইবে। যদি সে নড়ে, সে অনুভব করে যেন তাহার সর্বাঙ্গে ফড়ফড় করিতেছে, ক্রমে উহার নিবৃত্তি হয় এবং হৃৎপিন্ড ধীর হইয়া যায়; কিন্তু শেষে উহার পরিবর্তন হয় এবং সৰ্ব্বক্ষণই হৃৎপিন্ড ফড়ফড় করিতে থাকে।
শোক বা দুঃখ হইতে বুক ধড়ফড় করা। হঠাৎ মনে হয় যে, হৃৎপিন্ডটি থামিয়া গেল। হৃৎপিন্ডের মধ্যে ফড়ফড় (পাখীর ডানা ঝাপ্টানর ন্যায়) শব্দ করে।
সামান্যমাত্র পরিশ্রমে দুর্বল হৃৎপিন্ডে, হৃৎক্রিয়া কষ্টকৃত এবং সবিরাম হইয়া পড়ে। লোকটি বর্ধিত যকৃৎবিশিষ্ট ধীর নাড়ীযুক্ত, ন্যাবা রোগগ্রস্ত এবং বিবর্ণ মলবিশিষ্ট। ইহার সহিত তাহার আর একটি উপসর্গ থাকে কিছুটা কাশি থাকে। হৃদ্রোগজাত কাশি না হইলে ডিজিটেলিস অন্যপ্রকার কাশির ঔষধ হয় না। মধ্যরাত্রে কাশি। কাশিতে “সিদ্ধশ্বেতসারের ন্যায় পদার্থ উঠে। ফুসফুসের তলদেশে রক্ত সঞ্চয় থাকিলে, কাশিতে রক্তাক্ত শ্লেষ্মা উঠে। কথা কহিলে, হাঁটিলে, কোন শীতল জিনিষ পান করিলে, দেহ অবনত করিলে কাশির উদ্রেক হয়। অন্যান্য রোগের সহিত সম্বন্ধযুক্ত কাশিও থাকে।
শ্বাসক্রিয়া সম্বন্ধেও ঐ একই কথা বলা যাইতে পারে। হৃৎপিন্ডের রোগ ও যকৃৎরোগের সহিত কষ্টকর শ্বাসক্রিয়া থাকে। শ্বাসক্রিয়া’ অনিয়মিত এবং অত্যন্ত কষ্টে সম্পন্ন হয়। অবিরত গভীর শ্বাস লইবার ইচ্ছা। যখন সে নিদ্রা যায়, তখন শ্বাসক্রিয়া ক্ষীণ হইয়া যায় এবং তারপর সে জাগিয়া হাঁপাইয়া উঠে। ল্যাকেসিস, ফসফরাস, কার্বো ভেজ’ এবং আরও কয়েকটি ঔষধে এই লক্ষণ আছে। এই সকল ঔষধ বিশেষভাবে মস্তিষ্কের পশ্চাৎ-অর্ধকে আক্রমণ করিয়া মস্তিষ্কের পশ্চাৎ-অর্ধে রক্তসঞ্চয় ঘটায়। যখন রোগী নিদ্রা যায়, তখন মস্তিষ্কের পূর্ধ্ব-অর্ধ পশ্চাৎ-অর্ধকে বলে “এখন তুমি কিছুক্ষণ শ্বাস-প্রশ্বাস চালাও, আমি ক্লান্ত হইয়া পড়িতেছি।” কিন্তু পশ্চাদৰ্দ্ধত ঐ কার্য্যের উপযুক্ত নহে। উহা ত রক্তসঞ্চয়যুক্ত হইয়া আছে এবং ঠিক যেমনই মস্তিষ্কের পূর্ব-অর্ধ বিশ্রাম লইতে আরম্ভ করে, অমনি পশ্চাৎ-অৰ্দ্ধও অবশ হইয়া পড়ে। তখন রোগীরও কষ্ট আরম্ভ হয় এবং এইভাবে আমরা রোগীর শ্বাসরোধ ভাব পাই।
“রাত্রিকালে শ্বাসরোধের ভয়।” এইবার কথাটির বিশ্লেষণ করিতে হইবে। সে অভিজ্ঞতা হইতে জানে যে, যতবারই সে ঘুমাইয়া পড়ে, ততবারই তাহার শ্বাসরোধ হয়, এবং শ্বাসরোধ হইবার ভয়ে, তাহার নিদ্রা যাইতে ভয় করে। রাত্রে শ্বাসরোধের ভয় এই কারণেই হয়। দিনের বেলায় ঘুমাইয়া পড়িলে ঐ একই ব্যাপার হয়। সে কেবলমাত্র হাঁপাইয়া হাঁপাইয়া শ্বাস লইতে পারে।” ফুসফুসের নিম্নাংশ পূর্ণ হইয়া গেলে ডিজিটেলিস একটি উপযোগী ঔষধ। রোগী বিছানার উপর বসিয়া থাকে এবং তাহার প্রত্যেকটি ফুসফুসের নিম্ন অংশের ভারি শব্দ এবং উপর অংশে প্রচুর প্রতিধ্বনিবৎ শব্দ পাওয়া যায়। তারপর এইরূপ হয় যে, সে শুইলেই তাহার শ্বাসরোধ হয়। ফুসফুসের পূর্ণতা না থাকিলে ডিজিটেলিসের রোগী বাশি না লইয়া চিৎ হইয়া শুইতে পছন্দ করে। কিন্তু যখন ফুসফুসের নিম্নাংশে রক্তসঞ্চয় থাকে, তখন তাহার শ্বাসরোধ হয়। যদি রোগের প্রারম্ভে নাড়ী ধীর হইয়া থাকে, এখন তাহা দ্রুত হইয়া পড়ে; এরূপ অবস্থায় ডিজিটেলিস উপকারে আসতে পারে।
এইবার জনন ও মূত্রযন্ত্র সংক্রান্ত একটি লক্ষণের উল্লেখ করিব। প্রষ্টেট গ্রন্থির স্ফীতির পুরাতন অবস্থায়, ডিজিটেলিস না থাকিলে যে আমি কি করিতাম, তাহা জানি না। এ ক্ষেত্রে মূত্রত্যাগ কালে অবিরত ক্লেশ হইতে থাকে। যেসকল স্থলে রোগী স্বাভাবিক ভাবে মূত্রত্যাগে অক্ষম থাকায় বহু মাস ও বহু বৎসর ধরিয়া ক্যাথিটার ব্যবহার করা হইয়াছে, এবং যদি চিরকুমারদিগের ও বৃদ্ধ লোকদিগের মূত্রের শেষ অংশ মূত্রস্থলীতে থাকিয়া যাইতে থাকে, তাহা হইলে ডিজিটেলিস একটি উত্তম ঔষধ। ইহা প্রষ্টেট গ্রন্থির আকার কমাইয়াছে এবং অনেক সময়। আরোগ্য করিয়াছে। মূত্রাবরোধের সহিত শোথ। মূত্র বিষ হইতে রক্ত বিষাক্ততায় এবং মূত্রপিন্ডের ব্রাইটাখ্য রোগের নানা অবস্থায় আমরা ডিজিটেলিস প্রয়োগ করিবার মত লক্ষণ পাই। মূত্ররোধ, ফোঁটা ফোঁটা করিয়া মূত্রপাত। শুক্রমেহ। স্বপ্নদোষ। যে-সকল লোক বহু বৎসর ধরিয়া গোপনে দুষ্কাৰ্য্য করিতেছে। প্রষ্টেট গ্রন্থির বৃদ্ধি।
ইহা দ্বারা পুরাতন গণোরিয়া আরোগ্য হয় । ইহা তরুণ গণোরিয়াও আরোগ্য করিয়াছে। যে কোমল পাতলা ঝিল্লীটি লিঙ্গমুন্ডকে আবৃত করিয়া রাখিয়াছে, তাহার প্রদাহ ইহা দ্বারা আরোগ্য হয়। জননেন্দ্রিয়ের শোথজনিত স্ফীতি।
“ক্ষুধানাশ এবং প্রবল তৃষ্ণা।” রোগী অধিক জল পান করিলে ও সামান্য আহার করিলে, অধিকাংশ ডাক্তারই সালফার’ দেন। ডিজিটেলিসের বমি বমি ভাবে “ইপিকাক’ ও ‘ব্রায়োনিয়ার ন্যায় নহে উহা এক অদ্ভুত রকমের বমনেচ্ছা। খাদ্যের গন্ধেই একপ্রকার ভয়ঙ্কর বমি বমিভাব দেখা দেয়, একপ্রকার নিমগ্নতা, শূন্যতাবোধ উহার সহিত হৃৎপিন্ডের উপদ্রব, ন্যাবা ও যকৃৎরোগ। বমি বমিভাবের সহিত একপ্রকার সাঙ্ঘাতিক অনুভূতি, যেন সে হিমাঙ্গ হইয়া পড়িতেছে, এরূপ ভাব বর্তমান থাকে। আহারে সময়ে সময়ে বমনেচ্ছার নিবৃত্তি হয়, কিন্তু আহারের পরেও নিমগ্নতাবোধ থাকিয়া যায়, উহাতে বুঝা যায় যে, ব্যাপারটি ক্ষুধা ছাড়াও আরও কিছু। “সৰ্ব্বক্ষণ স্থায়ী বমি বমিভাব। পাকস্থলী গহ্বরে অত্যন্ত স্পর্শকাতরতা। পাকস্থলী গহ্বরে মূৰ্ছা কল্পনা এবং নিমগ্নতা, যেন সে মরিয়া যাইবে। ক্ষুধাহীনতা, কিন্তু অত্যন্ত তৃষ্ণা। যকৃতস্থানে ক্ষততা ও কঠিনতা। যকৃতস্থানে চাপে অত্যনুভূতি।” এইবার তোমরা যকৃৎ ও হৃৎপিন্ডলক্ষণ ন্যাবারোগ, ধীরগতি নাড়ী, পাকস্থলীতে ভয়ানক নিমগ্নতাবোধ, প্রষ্টেট গ্রন্থির বৃদ্ধি, ধূসরবর্ণ মলের কথা মনে রাখ, তাহা হইলে ডিজিটেলিসের প্রধান লক্ষণগুলি পাইলে।
আমি যাহা বলিয়াছি, তারপর ডিজিটেলিস রোগীর যে সর্বক্ষণ স্থায়ী ভীষণ উৎকণ্ঠা থাকে, তাহাতে তোমরা আশ্চর্য্য হইবে না। সে একা থাকিতে চায়, বিষাদ, দুঃখিততা, হতাশা এবং অস্থিরতা। তাহার যে কি করা উচিত, তাহা নির্ধারণ করিতে পারে না; কম্পান্বিত থাকে। অতিরিক্ত মদ্যপায়ীদের মদ্যপান থামাইবার চেষ্টা করার পর, সময়ে সময়ে যেরূপ পাকস্থলীর, অন্ত্রাদির ও যকৃতের উপদ্রব দেখা দেয়; ঠিক তদ্রুপ রোগ। সে শয্যাশায়ী হইয়া পড়ে। তাহার হৃৎপিন্ড-লক্ষণ প্রবল হইয়া পড়ে, উহা অনিয়মিত, দুর্বল ও ধীর হয়, তাহার দুঃখিততা ও বিমর্ষতা আসে, নিজেকে কোন কার্যে নিযুক্ত করিতে পারে না। ডিজিটেলিস তাহাকে সুস্থাবস্থা লাভ করিতে সাহায্য করিবে।
(Digitalis, pertaining io the fingers (digitall, and so named because its flower resembled a finger-stall or thimble.)
অপর নাম – পারপেল ফক্সগ্লভ (Purple Foxglove)
ফক্স-ফিংঙ্গারস (Fox-Fingers)
লেডিজ ফিংঙ্গারস (Ladies Fingers)
স্কুফিউলেরিয়েসী জাতীয় ডিজিটেলিস পাপিউরিয়া নামক গাছে সরসপাতা থেকে মূল অরিষ্ট তৈরী হয়। এর প্রধান উপক্ষার ডিজিটেলিন (digitaline)।
ডিজিটেলিসের- মূলকথা
১। নাড়ী অতিশয় মৃদু গতিরও সবিরাম, দুৰ্বল হৃৎপিন্ড, অথবা দ্রুত ও অতিশয় অনিয়মিত নাড়ী।
২। শ্বাসক্রিয়া অনিয়মিত, কষ্টকর, ধীর গভীর অথবা ঘন ঘন দীর্ঘশ্বাস সহকারে সম্পাদিত শ্বাস-প্রশ্বাস; ঘুমিয়ে পড়ার সময় শ্বাস বন্ধ হয়ে যায়।
৩। মৃদু ও দুর্বল হৃৎপিন্ড এবং দুইয়ের মত সাদা মল সহকারে জন্ডিস রোগ।
৪। পাকস্থলীর দুর্বলতা ও মূৰ্ছাভাব বা নিমগ্নতা অনুভব সহ রোগী মনে করে নড়লে চড়লে তার মৃত্যু হবে।
৫। চর্ম, অক্ষিপল্লব, ওষ্ঠ ও জিহ্বার নীলাক্ততা বা সাইনোসিস ( cyanosis) ও শিরীস্ফীতি (distended veins)।
ডিজিটেলিস-একটি আলোচনা
হৃৎপিণ্ডের ঔষধ হিসেবে এর সম্বন্ধে অনেক কিছু লেখা ও বলা হয়েছে অ্যালোপাথরা ডিজিটেলিসকে হৃৎপিণ্ডের টনিক অর্থাৎ বলকর ঔষধ বলেন কিন্তু হোমিওপ্যাথি ঔষধ সমূহের মধ্যে টনিক বলে কিছুর উল্লেখ নেই।
* মানুষের দেহে যা কিছুতেই শক্তি সঞ্চার হয়; এই অর্থে পুষ্টিকর খাদ্যই একমাত্র টনিক। ডিজিটেলিস দ্বারা যদি কোন রুগ্ন অবস্থার সংশোধন হয়; তবে ৫ শক্তিবশতঃ রোগীর রোগ জন্মে, ডিজিটেলিসের সেই শক্তির প্রতিকূল শক্তি দ্বারা উহাতে আরোগ্যে উৎপন্ন হয়।
১। ডিজিটেলিসের প্রধান চরিত্রগত লক্ষণ অত্যন্ত ধীর গতি নাড়ী। এই ধীরগতি, কখন নাড়ীর অতি দ্রুতগতির সঙ্গে পর্যায়ক্রমে থাকতে পারে এবং সময়ে সময়ে উহা অতিশয় অনিয়মিত বা সবিরামও হতে পারে।
রোগী বিবরণী –১
একদিন একজন বৃদ্ধ অথচ বলিষ্ঠ লোককে রাস্তা পার হয়ে টলতে টলতে আমার অফিসের দিকে আসতে দেখি। আমি মনে করেছিলাম লোকটি মাতাল কিন্তু ভাল করে লক্ষ্য করে দেখতে পেলাম যে তার মুখমণ্ডল বেগুনী, ও তার ওষ্ঠদ্বয় ঈষৎনীল। আমি বাহিরে গিয়ে তাকে ধরে নিয়ে এলাম। সে বসে পড়ল ও কয়েক মিনিট একটিও কথা বলতে পারল না, কিন্তু বসে থেকে দম নেওয়ার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করতে লাগল। তার নাড়ী অত্যন্ত অনিয়মিত ও সবিরাম ছিল। যখন সে কথা বলতে পারল সে বলল, “যে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তার এই রোগের পালা চলছে। কয়েকবার পড়েও গেছে এবং রাস্তা দিয়ে চলে আসার সময় কোন কোন দোকানে গিয়ে খানিকটা করে বসে তারপর আসছে। আকৰ্ণন পরীক্ষায় (auscultation) দেখা গেল যে, হৃৎপিণ্ডের প্রথম শব্দটি কঠিন ও ফুঁ দেওয়ার মত। তার অল্প বয়সে প্রাদাহিক বাত রোগ হয়েছিল, তাকে সর্বপ্রকার কায়িক শ্রমের কাজ ছেড়ে দিতে হয়েছিল। তাছাড়া কখনও সাহস করে বাড়ীর বাহিরে গিয়ে তার সেতু নির্মাতার কাজে সে যোগ দিতে পারেনি। সে বলে যে এই হৃৎরোগেই তার মৃত্যু হবে।
* আমি তাকে জলের সঙ্গে কয়েক ফোটা ডিজিটেলিস-২ দিই। অল্প কদিনের মধ্যেই আমি তাকে কোদাল দিয়ে তার বাড়ীর সম্মুখের রাস্তা থেকে বরফ ফেলে দিতে দেখি। সে বলল, হ্যালো, আমার আর হৃৎরোগ নেই। এর পরেও তাকে আমি মাঝে মাঝে দেখেছি। সে বলেছিল যে ঐ ঔষধটিই তার সব রোগের পুনঃ পুনঃ আক্রমণ আরোগ্য করেছে।
[ন্যাশ]
রোগী বিবরণী-২
একজন মিতাচারী, (সৎ স্বভাবের) যুবক গা বমিবমি ও বমিতে আক্রান্ত হয়। তন্দ্রালু হয়ে পড়েছিল এবং দুদিন পরে তার সর্বাঙ্গে জণ্ডিস প্রকাশ পেয়েছিল। চোখের শুক্লমণ্ডল সোনার মত হলদে; সর্বশরীরের ত্বক ও নখের রঙও ঐ রূপ হলদে। মল ঘনত্বের দিক থেকে স্বাভাবিক কিন্তু সম্পূর্ণ বর্ণশূন্য। মূত্র অতিশয় ল্যাগার বিয়ারের মত বাদামি বা আরো ঘোর বাদামী; পাত্রের কিনারায় উহা তাজা ওর মত দেখাচ্ছিল। নাড়ীর গতি প্রতি মিনিটে ৩০ বার এবং মাঝে মাঝেই একটি করে স্পন্দন পাওয়া যাচ্ছিল না।
এইটি সম্পূর্ণ ডিজিটেলিস জ্ঞাপক জণ্ডিসরোগের রোগী এবং অল্প কদিনই এই ঔষধ সেবনেই সে সম্পূর্ণ আরোগ্য লাভ করেছিল।
ঔষধটি সেবনের খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তার মানসিক অবস্থার উন্নতি দেখা দিয়েছিল এবং মলমূত্র ও চর্ম ক্রমশ স্বাভাবিক বর্ণ প্রাপ্ত হয়েছিল। প্রকৃতিগত গতি নাড়ীই ছিল প্রধান লক্ষণ, কারণ বাকি লক্ষণগুলি যে কোন পূর্ণবিকশিত রোগে দেখা যেতে পারে।
(ন্যাশ)
২। হৃৎরোগজনিত শোথে ডিজিটেলিস প্রায়ই উপযোগী। তবে কিডনীর রোগবশতঃ যে শোথ জন্মায় তা অপেক্ষা ডিজিটেলিসের শোথে শৈরিক রক্তের নিশ্চলতার জন্য রোগীর চর্ম অত্যধিক নীলাভ হয়। পাণ্ডের দুর্বল ক্রিয়াবশতঃ নাড়ীর ধীর গতি সংযুক্ত যে সকল রোগ টেলিস দ্বারা বিশিষ্ট রূপে আরোগ্য প্রাপ্ত হয় তন্মধ্যে বৃদ্ধদের মাথাঘোরা, মস্তিষ্ক, বক্ষস্থল, উদর, অণ্ডকোষের শোথ ও ফুসফুসের অপ্রবল রক্তসঞ্চয় প্রধান।
৩। নাড়ীর গতি ধীর ব্যতীত নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি ডিজিটেলিসের অতি বিশেষ লক্ষণ, যথা –
১। ত্বকের বিশেষতঃ অক্ষিপটের ও ওষ্ঠের, জিহ্বার ও নখের নীলাক্ততা, বা সায়ানোসিস।
২। পাকস্থলীর দুর্বলতা বা শূন্যতা অনুভব; রোগীর বোধ হয় যেন তার মৃত্যু হচ্ছে।
৩। নড়লে চড়লে হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন থেমে যাবে রোগিনীর এরূপ অনুভূতি (না নড়লে চড়লে হৃৎস্পন্দন থেমে যাবে – জেলসিমিয়ামের লক্ষণ; যে কোন অবস্থানেই উহা থেমে যাবে – লোবেলিয়ার লক্ষণ।)
৪। শ্বাসক্রিয়া অনিয়মিত, কষ্টকর, ঘন ঘন দীর্ঘশ্বাস দ্বারা উহা সম্পাদিত হয়।
৫। অতিশয় দুর্বলতা ও সহসা সর্বাঙ্গীন শক্তির অবসন্নতা।
৬। ঘুমতে গেলে শ্বাসক্রিয়াক্ষীণ হয়ে পড়ে, বোধ হয় যেন দমবদ্ধ হয়ে গেল। তখন সে জেগে উঠে নিঃশ্বাস নেওয়ার জন্য হাঁ করে খাবি খায় এবং এই কারণে সে ঘুমোতে পারে না (গ্ৰিণ্ডেলিয়া ও ল্যাকেসিস)।