অল্প একটু বাতাস লাগলে নতুন করে আক্ষেপ শুরু হয়, ঠাণ্ডা পানি পান বা গোসল করতে ভয়, ঠাণ্ডা পানিকে আরো বেশী ঠাণ্ডা মনে হয়। |
মেরুদণ্ডের অসস্থি, গতিশীলতার অভাব, পেশী ও ভার্টিবরাতে টেনে ধরা অনুভূতি। |
চক্ষু তারার সঙ্কোচন ও চোখ পিটপিট করে, চোখের কাজ করার পর চোখের অসস্থি। |
দূরের কিছু দেখেনা কেবল মাত্র নিকটের জিনিস দেখতে পায়। |
অস্বাভাবিক মানসিক কার্যকলাপ—সর্বদা চিন্তা করে দৃষ্টি’ অস্বচ্ছ চোখে পাতলা চামড়ার পর্দা পড়ে দৃষ্টি অস্বচ্ছ হয়। সবকিছু যেন একটার সাথে। আরেকটা জড়িয়ে গেছে দেখে।
চোখের পরিশ্রম করে চোখে ব্যথা হয়—কাল কাল বিন্দুর মত চোখের সামনে ভাসে আলোর ঝলকানি দেখে, চোখের পাতা ও চোখের পেশীগুলো নাচতে থাকে (এগারি), চোখের তারা অনবরত ঘুরতে থাকে—এসব লক্ষণে উপযোগী ।
দেহের সব পেশীগুলোর দারুণ অবসন্নতা, অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ইচ্ছামত চালনা করা যায় না (জেলস)।
মানসিক ও দৈহিক অসুস্থতার যুবকদের হাত পায়ে সামান্য কাপুনি বা সারা দেহ কাপে, আঘাতজনিত বা কোন রকম কারণ ছাড়াই টিটেনাস রোগ কোন লোক সামনে দিয়ে হেঁটে গেলে তা থেকে উৎপন্ন হাওয়া নাকে গিয়ে টিটেনাস হয় বা বেড়ে যায় হাইপেরি, লিসিন, নাক্স-ভ, ষ্ট্রিকনি)।
সম্বন্ধ—তুলনীয়—বেল, কোনি, কুরারে, জেল, হাইপেরি ও ষ্ট্রিকনি। টিটেনাস = ধনুষ্টঙ্কার (Tetanus) অন্য নাম Lock-Jaw বায়ুবাহিত জীবাণু clostridium Tetani (ক্লষ্ট্রিডিয়াম টিটানি) যা সাধারণতঃ রাস্তার ধূলো ময়লাতে পাওয়া যায়। ঐ জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হলে রোগীর খিঁচুনী হয় ও পেশীগুলো শক্ত; অনমনীয় হয়ে পড়ে, আক্রমণ ধীরে ধীরে বা হঠাৎ হতে পারে। প্রথম লক্ষণ চোয়াল শক্ত হয়ে যায়, মুখের পেশী নাচতে থাকে।
(মাইগেল ২০০ শক্তি), উদোম পাগলের মত মুখের ভাব হাসিকান্না মেশানো অভিব্যক্তি, পিঠের ও হাতপায়ের পেশীগুলো টানটান Tetanic হয়ে যায়।
রোগীর পিঠ যদি পেছনদিকে ধনুকের মত বেঁকে যায় তবে সেই অবস্থাকে ওপিস্হোটোনাস (Opisthotonos)। যদি পিঠ পাশের দিকে বেঁকে আসে তবে তাকে পুরোটোনাস (Pleurothotonos) ও যদি সামনের দিকে কুঁজো মত হয়ে বেঁকে যায় তবে সেই অবস্থাকে এমপ্রোস্হোটোনাস (Emprosthotonos বলে।
গোলমালে, জোর বাতাসে বা বিছানার চাদরের ছোঁয়া লাগলে খিঁচুনী ভাব বেড়ে যায়। গায়ের তাপমাত্রা অসম্ভব রকম বেড়ে যেতে পারে। শরীরে কোথাও ক্ষত হয়ে তাতে ঐ জীবাণুর সংক্রমণ হলে এই রোগ হয়। -Taber’s cyclo. Med. Dict. ]
এই ঔষধটি ও এটির মূল উপাদান এসারিন, মেটেরিয়া মেডিকার পক্ষে একটি অতিরিক্ত গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। এই ঔষধটি হৃদপিন্ডকে উত্তেজিত করে, রক্তের চাপ বাড়িয়ে থাকে এবং অন্ত্রের পেরিসটলসিস বাড়িয়ে থাকে। চোখের তারা ও চোখের পেশী সমূহের সঙ্কোচন উৎপন্ন করে। দূরের বস্তু দেখতে না পাওয়া অবস্থা উৎপন্ন করে। মেরুদন্ডের উপদাহ, গতিশক্তিহীণতা, অবসন্নতা, তৎসহ কশেরুকা অত্যন্ত অনুভূতি প্রবল। পেশীসমূহের কঠিণতা; পক্ষাঘাত। স্নায়ুমন্ডলের ভিতর অবস্থিত গতি বিষয়ক ও প্রতিবর্ত ক্রিয়ার স্নায়ুগুলিকে নিস্তেজ করে দেয় এবং এই কারনে বেদনার অনুভূতির জ্ঞানলোপ পায়, পেশী সমূহের দুর্বলতা এবং এর পরে সম্পূর্ণ পক্ষাঘাত দেখা দেয়, যদিও পেশীর সংকোচন কাজের কোন অসুবিধা তৈরী হয় না। পক্ষাঘাত ও কম্পন, নর্তন। মস্তিষ্ক আবরক ঝিল্লীর উপদাহ, তৎসহ পেশীসমূহের কঠিণতা। ধনুষ্টঙ্কার এবং চোয়াল আটকিয়ে যাওয়া। সুষুম্না কান্ডের ভিতরের স্নায়ুগুলির সামনের অংশের প্রদাহ। এসারিন স্থানিক ভাবে ব্যবহার করা হলে, চোখের তারার সঙ্কোচন উৎপাদন করে।
মাথা — মাথার উপরের অংশে অবিরাম বেদনা, মাথাঘোরা, তৎসহ মাথার ভিতরে সঙ্কোচনবৎ অনুভূতি। চক্ষুকোটরের উপরে বেদনা; চোখের পাতাগুলি উঠিয়ে তুলে ধরতে পারেনা। সেরিব্রা স্পাইন্যাল মেনিঞ্জাইটি সর্বাঙ্গীণ ধনুষ্টঙ্কারের মত কঠিণতা। মুখমন্ডলের পেশীর আক্ষেপিক অবস্থা।
চোখ – রাতকানা; আলোকাতঙ্ক, চোখের তারাগুলির সঙ্কোচন, দৃষ্টি সম্পর্কিত পেশী সমূহের স্পন্দন। চোখ বন্ধ করার অক্ষমতা। চোখের সামনের দাগ সমূহ, দেখা যায়; আলোর ঝলক দেখা যায়; আংশিক অন্ধত্ব। গ্লকোমা; দেখার কাজের সামঞ্জস্য বিধানের আংশিক পক্ষাঘাতযুক্ত অবস্থা। বক্রদৃষ্টিপ্রচুর অশ্রুস্রাব। চোখের পেশী সমূহের আক্ষেপ, তৎসহ চোখগুলি কাজে ব্যবহারের পরে, চোখদুটির উপদাহ। বৃদ্ধিপ্রাপ্ত মায়োপিয়া। ডিথিরিয়া রোগের পরে চোখের পেশী সমূহের পক্ষাঘাত।
নাক – তরল সর্দি; নাকের ছিদ্রের ভিতরে জ্বালা ও সুড়সুড়ঙ্কর অনুভূতি; নাক বন্ধ ও উত্তপ্ত। নাকের ছিদ্রের চারিপাশে জ্বর ফোস্কাসমূহ।
মুখগহ্বর – জিহ্বার অগ্রভাগে টাটানিরও অনুভূতি। মনে হয় যেন একটি বল গলা পর্যন্ত আসছে।
গলা – হৃদপিন্ডের অতিরিক্ত জোরে স্পন্দন, গলা পর্যন্ত অনুভূতি হয়।
পাকস্থলী — আহারের প্রায় সঙ্গে সঙ্গে তীব্র বেদনা। পেটের উপরের অংশে চাপ দিলে বেদনা অনুভূতি হয়। বেদনা বুক পর্যন্ত প্রসারিত এবং নীচের দিকে বাহু পর্যন্ত প্রসারিত হয়। পাকস্থলীর শূলবেদনা, পুরাতন কোষ্ঠকাঠিণ্য।
স্ত্রীরোগ — অনিয়মিত মাসিক ঋতুস্রাব, তৎসহ হৃদকম্প। চোখ গুলির আরক্ততা। পেশীসমূহের কঠিণতা।
হৃদপিন্ড – নাড়ী ক্ষীণ; হৃদকম্প; আক্ষেপিক ক্রিয়া তৎসহ সমগ্র শরীরে নাড়ী স্পন্দন অনুভব করা যায়। বক্ষঃস্থলে ও মাথায় হৃদস্পন্দন সুস্পষ্টভাবে অনুভূত হয়। গলায় হৃদকম্প অনুভূত হয়। চর্বি সঞ্চয়জনিত কারনে অপকৃষ্ট পরিবর্তন (কিউপ্রাম এসেটিকাম)।
অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ – ডানদিকের পিপলিটিয়্যাল স্থানে বেদনা। মেরুদন্ডে জ্বালা ও সুড়সুড়ি। হাত ও পা গুলির অসাড়তা। ঘুমাতে যাবার সময় হঠাৎ করে অঙ্গসমূহের ঝাঁকুনি। ধনুষ্টঙ্কারজনিত আক্ষেপ। পক্ষাঘাতযুক্ত অংশের পক্ষাঘাত, অঙ্গসমূহে খিলধরা।
সম্বন্ধ-তুলনীয়—এসারিন—ফাইজোস্টিগমার উপক্ষার (হৃদপিন্ডের ক্রিয়া ধীর গতি সম্পন্ন এবং ধমনীর টানভাব বৃদ্ধি পায়; চোখের পেশী সমূহের আক্ষেপ এবং চোখের পেশী সমূহের অনিয়মিত কাজের ফলে, চোখের তারার আক্ষেপিক বক্রতা; চোখের তারা সঙ্কুচিত। চোখের পাতার স্পন্দন, চক্ষু তারার টাটানি, চোখের পরিশ্রমের পরে দৃষ্টির অস্বচ্ছতা, চোখ ও মাথায় চারিপাশে বেদনা। স্থানিকভাবে চোখের তারার সঙ্কোচনের জন্য ব্যবহৃত হয়। এসারিন চোখের তারাকে সঙ্কুচিত করেও চোখের তারাগুলিকে এট্রোপিন প্রসারিত করে। কিন্তু জেলসিমিয়ামের মত প্রসারিত করে না। আভ্যন্তরীণ ভাবে 6x বিচূর্ণ)।
এসারিন স্যালিসাইলেট (অস্ত্রোপচারের পরে অন্ত্রের পক্ষাঘাত; চামড়ার নীচে ১/৬০-১/৪০ গ্রেণ)।
এছাড়াও তুলনীয় — মাসক্যারিণ, কোনিয়াম; কিউবেরা; জেলসিমিয়াম; বৈনাম টিটেনাস); পাইপ্যারাজিনাম— (ইউরিক অ্যাসিড ডায়্যাথিসিস; চুলকানি, গেঁটে বাত ও মূত্র পাথুরি। অবিরাম পিঠের বেদনা। চামড়া শুষ্ক, প্রস্রাব অল্প। বাতজনিত সন্ধি প্রদাহ। কার্বন মিশ্রিত জলের সঙ্গে দৈনিক ১ গ্রেন পরিমানে প্রযোজ্য। ১x ও ২x বিচুর্ণ দিনে তিনবার প্রযোজ্য)।
দোষঘ্ন — এট্রোপিন। ফাইজাস্টিগমার সম্পূর্ণ বিষক্রিয়ার পরিপূর্ণ মাত্রায় এট্রোপিন কয়েকবার প্রয়োগ করা হলে তা উপশমিত হয়।
শক্তি – ৩য় শক্তি।