অহংকারী, নিজেকে খুব বড় আর সাবাইকে নগন্য মনে করে। |
বড় জিনিস ছোট মনে হয়। জাঁকজমক পূর্ণ বিষয় পছন্দ করে। |
মানসিক লক্ষণ প্রকাশ পেলে শারীরিক লক্ষণ চলে যায়। |
ব্যথা ধীরে ধীরে বাড়ে আবার ধীরে ধীরে কমে, ব্যথার জায়গায় ঝিঁ ঝিঁ ধরে। |
স্ত্রীজননেন্দ্রিয় স্পর্শকাতর, কুমারী মেয়েদের অত্যন্ত যৌন আকাঙ্ক্ষা, পিউবার্টির পূর্বেই হস্তমৈথুন করে। |
উপযোগিতা – কালো চুল, শক্ত সবল পেশী, পাতলা চেহারা। রক্তপ্রধান ধাতু ও নির্দিষ্ট সময়ের অনেক আগেও প্রচুর পরিমাণে ঋতুস্রাব হয় এমন মহিলাদের রোগ সকলে উপযোগী।
যৌন ইন্দ্রিয় অত্যন্ত অনুভূতিস্পন্দন— সামান্য কাপড়ের ছোঁয়া সহ্য করতে পারে না, যৌনেন্দ্রিয় পরীক্ষা করতে গেলে দেহে খিঁচুনি আসে সঙ্গমকালে যোনিওষ্ঠে যন্ত্রণা হয়—যৌনসঙ্গম সহ্য করতে পারে না—সঙ্গমকালে মূৰ্ছিত হয়ে পড়ে (মিউরেকস ও অরিগেনাম তুলনীয়)।
বেদনা — ধীরে ধীরে বেড়ে আবার ধীরে ধীরে কমতে থাকে। (ষ্ট্যানাম), বেদনার সময় আক্রান্ত অঙ্গ অসাড় হয়ে যায়। (ক্যামো)।
হিষ্টিরিয়া গ্রস্তরোগী যারা একবার আনন্দে উৎফুল্ল হয় অবোর পরক্ষণেই বিষন্ন হয়ে পড়ে—সহজেই কেঁদে ফেলে (ক্রোকাস, ইগ্রে, পালস)। ফ্যাকাসে, একটুতেই ক্লান্তি আসে এমন রোগীদের ক্ষেত্রে উপযোগী ।
উদ্ধত, মনে গর্ববোধ, ঘৃণা করে ও উগ্র মেজাজ তাদের প্রতি শ্রদ্ধাভাব না দেখিয়ে অবজ্ঞা সূচক করুণার ভাব দেখায়। অবজ্ঞার সাথে কাউকে গ্রাহ্য না করার মত মনের ভাব এমন মানসিক লক্ষণে উপযোগী ।
মনের ভুল-চার পাশের সব কিছুই যেন ছোট, সবাই যেন দৈহিক ও মানসিকভাবে তার তুলনায় নিকৃষ্ট অথচ (রোগীনি) নিজে সবার থেকে সব দিকে উৎকৃষ্ট, উন্নত।
সবদিক দিয়ে নিজে উন্নত, বড় হয়ে যাচ্ছেন এই উন্নাসিকতা। সামান্য ব্যাপারেই বিরক্তি (ইগনে, ট্রাফিস), বহুদিন যাবৎ মনে রাগ পুষে রাখে ।
জীবনে বিতৃষ্ণা, কথা বলতে চায় না, মৃত্যুভয় হয় (একোন, আর্স)।
ভয় দুঃখ, বিরক্তি, হস্ত মৈথুন বা কৃত্রিম মৈথুন ও অহঙ্কার থেকে মানসিক লক্ষণ দেখা দিলে দৈহিক লক্ষণ দূর হয়—পাল্টা পাল্টি করে লক্ষণগুলো দেখা দেয়। দেয়। মাথা যন্ত্রণা মস্তিষ্কে বা মাথার ওপরদিকে অসাড়ভাবে তীব্র যন্ত্রণা—রাগ বা মনোকষ্ট হলে দেখা দেয়। জরায়ু সম্বন্ধীয় গোলযোগে হিষ্টিরিয়া হলে মাথা যন্ত্রণা দেখা দেয়। মাথা যন্ত্রণা ধীরে ধীরে বাড়ে ধীরে ধীরে কমে।
কামোন্মাদনা – প্রসবের পর বাড়ে, যৌন ইন্দ্রিয়গুলো বড় হয়ে যায়, বিশেষতঃ কুমারী মেয়েদের কেলি-ফস, যোনিতে চুলকানি, আক্ষেপ ও সঙ্কোচন বোধ।
ঋতুস্রাব – নির্দিষ্ট সময়ের অনেক আগে, অত্যন্ত বেশী পরিমাণে, অনেক দিনে ধরে হতে থাকে। কালচে চাপচাপ, দুর্গন্ধ যুক্ত, যোনি পথে সব কিছু যেন বেরিয়ে আসছে, যোনিতে আক্ষেপ-জরায়ুতে ঝাকি লাগা মত যন্ত্রণা যৌনাঙ্গে স্পর্শ কাতরতা—এসব লক্ষণ দেখা দিয়ে উপযোগী। জরায়ুতে তীব্র চুলকানি, যোনি ওষ্ঠে চুলকানি।
কোষ্ঠকাঠিন্য — ভ্রমণকালে সমুদ্র ভ্রমণে=ব্রায়ো), সীষক বিষাক্ততায়, অন্ত্রের নিষ্ক্রিয়তা হয়ে, বার বারে পায়খানায় যায়—পরিষ্কার ভাবে মলত্যাগ হয় না। নরম কাদার মুত মল রেকটাম ও মলদ্বারে আটকে থাকে (এলুমিনা), বিদেশীদের কোষ্ঠবদ্ধতা (এক জায়গা হতে অন্য য়গায় ভ্রমণ জনিত), গর্ভাবস্থায়, দুর্দম্য কোষ্ঠবদ্ধতায় নাক্স-ভ দিয়ে ব্যর্থ হলে প্লাটিনা দিতে হয়।
অতিরিক্ত ঋতুস্রাব — কালচে চাপ বাঁধা বা তরল স্রাব, ঘন, কাল আলকাতরার মত বা দলা দলা পিন্ডের মত স্রাব (ক্রোকাস হলে উপযোগী)।
সম্বন্ধ—তুলনীয়=অরাম, ক্রোকাস, ইগনে, কেলি-ফস, পালস, সিপিয়া, ষ্ট্যানাম, ভ্যালেরিয়ানা, প্ল্যাটিনার উদ্ভিজ্জ সমগুণ।
শক্তি – ৩০, ২০০ হতে উচ্চ শক্তি, যৌন উত্তেজনা হেতু উপসর্গে উচ্চশক্তি কাজ দেয় = হেরিং।
এটি স্ত্রীলোকেদের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে উপযোগী ঔষধ বিশেষ। পক্ষাঘাত প্রবলতা, স্থানিক অসাড়তা, অনুভূতি শূণ্যতা, ও শীতলতা, এই ঔষধটি প্রধান লক্ষণ। হিস্টিরিয়াজনিত আক্ষেপ; বেদনা ধীরে ধীরে বাড়ে ও কমে (ষ্ট্যনাম)। কম্পন।
মন — হত্যা করার অদম্য ইচ্ছা। নিজেকে বড়ো বলে মনে করে; অপরকে ঘৃনা করে। উদ্বত ও গর্বিত প্রতিটি বিষয়ে চিন্তিত। মনে করে প্রতিটি বস্তুই পরিবর্তীত হয়ে গেছে। মানসিক গোলযোগ, তৎসহ ঋতুস্রাবের অবরুদ্ধ। মানসিক লক্ষণগুলি প্রকাশ পাবার সঙ্গে-সঙ্গে শারীরিক লক্ষণগুলি চলে যায়।
মাথা – টানভাব, চাপবোধযুক্ত বেদনা মাথার কোন একটি নির্দিষ্ট ক্ষুদ্র স্থানে। কপালের চারিপাশেও ডানদিকের রগে সঙ্কোচনের অনুভূতি। অসাড়তা, তৎসহ মাথার বেদনা।
চোখ — দৃষ্টবস্তু, বস্তুর আকারের তুলনায় ছোট দেখায়। চোখের পাতার স্পন্দন (এগারিকাস)। চোখে শীতলতার অনুভূতি। চক্ষুগোলকে খিলধরার মত বেদনা।
কান – অসাড়তার অনুভূতি। খিলধরার মত বেদনা। কানের ভিতরে গর্জন ও গুড়গুড় শব্দ হয়।
মুখমন্ডল — মুখমন্ডলের স্নায়ুশূল, তৎসহ চবর্বণ অস্থিতে অসাড়তার অনুভূতি, মনে হয় যেন ঐ অংশগুলি স্ক্রু দ্বারা বাঁধা রয়েছে। নাকের গোড়ায় বেদনা, মনে হয় যেন ঐ অংশ কোন যন্ত্রের সাহায্যে নিঙড়ানো হচ্ছে। শীতলতা, সুড়সুড়ি এবং অসাড়তা, মুখমন্ডলের সমগ্র ডানদিকে এই জাতীয় অনুভূতি। বেদনা ধীরে ধীরে বাড়ে ও কমে (স্ট্যানাম)।
পাকস্থলী – গ্যাঁজলা, প্রচুর বায়ুসঞ্চয়, সঙ্কোচন, প্রচুর ক্ষুধা, অবিরাম বমিবমিভাব, তৎসহ উদ্বেগ ও দুর্বলতা।
উদর – চিত্রকারের উদরশূল। নাভীস্থানে বেদনা; বেদনা পিঠ পর্যন্ত প্রসারিত হয়। পেটের ভিতরে চাপবোধ ও নীচের দিকে কিছু ঠেলে বেরিয়ে আসার মত অনুভূতি, এই জাতীয় অনুভূতি বস্তিকোট পর্যন্ত প্রসারিত হয়।
মল – বাধাপ্রাপ্ত; সামান্য পরিমানে মন; খুব কষ্ট করে বের করলে হয়। মল, মলদ্বারের চারিপাশে লেগে থাকে, অনেকটা নরম কাদার মত। চটচটে মল। ভ্রমণকারীর কোষ্ঠকাঠিণ্য। যাদের খাদ্য ও পাণীয় অবিরাম পরিবর্তিত হয়ে থাকে। আগুনে পোড়ার মত মল।
স্ত্রীরোগ – জননেন্দ্রিয় স্থান অতিরিক্ত স্পর্শকাতর। বাইরে ও ভিতরে সুড়সুড়কর অনুভূতি (ক্যালিব্রোমেটাম, ওরিগ্যানাম)। ডিম্বাশয় অনুভূতি প্রবণ ও জ্বালা করে। মাসিক ঋতুস্রাব নির্দিষ্ট সময়ের অনেক আগে, প্রচুর পরিমাণে, কালচে জমাট বাঁধা, তৎসহ আক্ষেপ এবং বেদনাপূর্ণ নীচের দিকে ঠেলামারাবৎ অনুভূতি, শীতবোধ এবং অঙ্গের অনুভূতি প্রবণতা। যোনিপথের আক্ষেপ। স্ত্রীলোকের কামোন্মত্ততা। অত্যাধিক যৌনবিকাশ; যোনিপথের আক্ষেপ। যোনিকপাটের চুলকানি। ডিম্বাশয়ের প্রদাহ ও বন্ধাত্ব। অস্বাভাবিক যৌন ক্ষুধা ও বিষন্নতা।
অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ — ঊরুস্থানে কষাভাব, যেন মনে হয় যস্ত্রের সাহায্যে কষে বাঁধা রয়েছে। অসাড় ও ক্লান্তির অনুভূতি। পক্ষাঘাতের ন্যায় অনুভূতি।
ঘুম — পা দুটি অনেক দূরে প্রসারিত করে ঘুমায় (ক্যামোমিলা)।
কমা-বাড়া-বৃদ্ধি, বসে থাকলে ও দাঁড়িয়ে থাকলে; সন্ধ্যায়।
উপশম, হাঁটা-চলায়।
সম্বন্ধ -তুলনীয়—রেডিয়াম, স্ট্যানাম; ভ্যালেরিয়ানা; সিপিয়া।
এছাড়াও তুলনীয়—প্ল্যাটিনাম মিউরিয়েটিকাম (যখন আয়োডাইড অফ পটাশ, সিফিলিস রোগজনিত উপসনের উপশম করতে পারে না, সেই ক্ষেত্রে এই ঔষধটি ভালো কাজ করে মাথার পিছনের অংশে তীব্র বেদনা, কষ্টকর ঢোক গেলা এবং সিফিলিসরোগজনিত কারনে গলা ও অস্থির উপসর্গসমূহ: পায়ের পাতার অস্থির ক্ষয়);
প্ল্যাটিনাম মিউর ন্যাট (প্রচুর প্রস্রাব ও লালাস্রাব);
সিডাম অ্যাকরী (যৌন সম্পর্কিত উপদাহ, এই ঔষধটি স্নায়ু কেন্দ্রের উপদাহের উপশম ঘটায়)।
দোষঘ্ন — পালসেটিলা।
প্ল্যাটিনা, সীসার কুফল নষ্ট করে।
শক্তি — ৬x বিচুর্ণ থেকে ৩০ শক্তি।
প্ল্যাটিনামের পরীক্ষায় স্ত্রীলোকের বিকৃত মনের চিত্র পরিস্ফুট হইয়াছে। যে সকল হিষ্টিরিয়াগ্ৰস্তা নারী ভয়, দীর্ঘকালস্থায়ী উত্তেজনা, কিম্বা আশাভঙ্গ, মানসিক সম্মাত অথবা দীর্ঘস্থায়ী রক্তস্রাবের অধীন হইয়াছেন, ইহা তাঁহাদিগের পক্ষেই বিশেষ উপযোগী। রোগিণী গর্বিত এবং ক্ষণক্রোধী হইয়া পড়েন। এই ঔষধটির একটি বিশেষ চরিত্রগত লক্ষণ গর্ব ও নিজেকে অত্যন্ত বড় মনে করা। তিনি কল্পনা করেন যে তিনি উচ্চবংশসম্ভতা, আর তাহার বন্ধু ও আত্মীয়গণের জন্ম নীচ বংশে, সুতরাং তিনি তাহাদিগকে ঘৃণা করিতে থাকেন। মনে করেন যেন তাহার পরিচিত ব্যক্তিরা তাহার চেয়ে হীন। এই ঔষধের একটি আশ্চর্য্য লক্ষণ এই যে মনের কল্পনা দেহেও বিস্তৃত হইয়া পড়ে। তিনি মনে করেন যে, তাঁহার দেহটি বৃহৎ এবং অন্যান্য লোকের শরীর তাঁহার দেহটি বৃহৎ এবং অন্যান্য লোকের শরীর তাঁহার দেহের তুলনায় ছোট। তিনি তাচ্ছিল্যযুক্ত মনোভাবে থাকেন, যে সকল ব্যাপার গুরুতর নহে, তাহাদের বিষয়েই উত্তষ্ঠিত ও গভীর হইয়া পড়েন, সামান্য বিষয়েই ক্রুদ্ধ হইয়া পড়েন, সামান্য বিরক্তিতেই ক্রুদ্ধ ও খিটখিটে হইয়া উঠেন, উদ্বিগ্ন ও ক্রন্দনশীল হন। প্রত্যেকবার সামান্যমাত্র এবং জীবনে বিতৃষ্ণা উপস্থিত হয়। এই ঔষধটিতে ভয় একটি প্রধান লক্ষণ। তাহার উত্তেজনায় তাঁহার হৃৎস্পন্দন ও সকল অঙ্গপ্রত্যঙ্গের কম্পন উপস্থিত হয়, মৃত্যুভয় ভয় হয়, যেন কিছু ঘটিবে; ভয় হয় যেন তাহার অনুপস্থিত স্বামী আর তাহার নিকটে ফিরিয়া আসিবেন না, যদিও প্রকৃতপক্ষে তিনি নিয়মিতভাবেই আসিতে থাকেন। অস্থিরচিত্ত, উত্তেজনাশীল, চলিয়া বেড়াইতে থাকেন, চারিদিকে ঘুরিতে থাকেন, কাঁদিতে থাকেন।
মানসিক লক্ষণগুলি দৈহিক লক্ষণগুলির সহিত পৰ্য্যায়ক্রমে উপস্থিত হইতে থাকে। অদ্ভুত অদ্ভুত অলীক কল্পনা। তিনি কল্পনা করেন যে, তিনি মানবজাতির অন্তর্ভুক্ত নহেন, ধৰ্ম্মসংক্রান্ত বিষয়ে উন্মাদ হইয়া উঠেন, ঘরের কোণে বসিয়া থাকেন, ক্রমাগত চিন্তা করেন এবং কোন কথাই বলেন না। উন্মত্ত হইয়া উঠেন, কমোন্মত্ত হইয়া উঠেন, অশ্লীল কথা বলিতে থাকেন এবং কাঁদতে থাকেন। বিরক্তি বা ক্রোধ হইতে আক্ষেপ উপস্থিত হয়। তিনি শিস দেন, গান করেন, নৃত্য করেন। তাহার কল্পনাপ্রসুত বিষয়গুলি সম্বন্ধে অবিরত কথা বলিতে থাকেন। হয় তিনি বিষাদগ্রস্ত নচেৎ বাতিকগ্রস্ত থাকেন। তাঁহার গর্বে কোন আঘাত লাগিলে তাঁহার রোগ লক্ষণগুলি উপস্থিত হয়। সঙ্গমসংক্রান্ত উত্তেজনায় তাঁহার রোগ-লক্ষণগুলি উপস্থিত হয়। সাধারণ মানসিক লক্ষণগুলির সহিত অঙ্গপ্রত্যঙ্গের কম্পন, কামোত্তেজনা, এবং দেহের নানা স্থানের ও বিবিধ অঙ্গের অসাড়তা সংমিশ্রিত থাকে। চাপিয়া সঙ্কুচিত করার ন্যায় অনুভূতি, চাপিতে থাকার ন্যায় যন্ত্রণা, যেন ব্যান্ডেজ বাধিয়া বা আঁকড়াইয়া ধরিয়া রাখিয়াছে এরূপ যন্ত্রণা, অঙ্গগুলির চৰ্ম্মের উপর ব্যান্ডেজ বাধা থাকার ন্যায় টান বোধ। এই চরিত্রগত লক্ষণটি দেহের বিভিন্ন অংশে প্রকাশিত থাকে এবং অনেক বিশেষ লক্ষণকে রূপায়িত করে। মস্তকতৃকে অসাড়তার অনুভূতি, তৎসহ মাথায় চাপনবৎ যন্ত্রণা। ছিদ্র করার ন্যায় আকুঞ্চিত করার ন্যায় যন্ত্রণা। মস্তকত্বকে টান বোধ, মস্তকত্বকে খালধরার ন্যায় আকুঞ্চন, ক্রমশঃ বাড়িয়া তীব্র হইয়া উঠে। মাথায় মোচড়ানোর ন্যায় অনুভূতি। যন্ত্রণা শখস্থানে হইতে পারে। মস্তিষ্কশীর্ষে হইতে পারে অথবা কপালের উপর হইতে পারে। তারপর মস্তকত্বকে পোকাহাঁটার ন্যায় অনুভূতি পিঁপড়া চলার ন্যায় অনুভূতি, অসাড়ভাবও থাকিতে পারে। হঠাৎ মাথায় বিদ্যুৎস্পর্শের ন্যায় আঘাত লাগা। মস্তকত্বকের অসাড়ভাবের ন্যায় অন্য কোন লক্ষণই তত বেশী অবিচলিত থাকে না, এই লক্ষণটি মাথার সকল রকম অনুভূতির ও যন্ত্রণার সহিত সর্বক্ষণই থাকিয়া যায়। সকল প্রকার শিরঃপীড়াই ক্রমশঃ বাড়ে ও অবশেষে তীব্র হইয়া উঠে। হিষ্টিরিয়াগ্রস্ত ব্যক্তিদিগের অত্যনুভূতির সহিত মাথায় তীব্র স্নায়ুশূল। সময়ে সময়ে মাথার অসাড়ভাবের কথাও বলা হইয়াছে, উহা মস্তিষ্কটি যেন অসাড় হইয়া গিয়াছে এরূপ অনুভূতি। মনোকষ্ট, ভয়, বিরক্তি হইতে, রক্তস্রাব হইতে এবং সঙ্গমসংক্রান্ত উত্তেজনা হইতে শিরঃপীড়া উপস্থিত হয়।
চক্ষুর সম্মুখে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ দেখে, চক্ষের পাতা আক্ষিপ্ত হয়, বস্তুগুলি বাস্তবিক যেরূপ, তাহা হইতে ছোট দেখায়। চক্ষে শীতলতার অনুভূতি, আক্ষেপ, চক্ষুর পেশীগুলির আক্ষপিক কম্পন ও ঝাঁকি দিয়া উঠা। কর্ণে খাল ধরার ন্যায় যন্ত্রণা, কর্ণের মধ্যে শীতলতাবোধ, বাহ্যকর্ণের অসাড়ভাব। কর্ণের অসাড়ভাব, মুখমন্ডল, নাসিকা এবং মস্তকতৃক পৰ্য্যন্ত বিস্তৃত হয়। প্ল্যাটিনাম একটি রক্তস্রাবজনক ঔষধ। শরীরের নানা অংশ ও শ্লৈষ্মিক ঝিল্লী হইতে রক্তস্রাব। যেখানেই রক্তস্রাব দেখা যায়, সেইখানেই তরল রক্তের সহিত চাপচাপ মেশান থাকে। নাকের লক্ষণগুলি পরীক্ষা করিলে, রক্তস্রাব লক্ষিত হয়। নাক হইতে কাল জমাটবাঁধা রক্ত। গন্ধে অনুভূতি। নাকের গোড়ায় তীব্র খালধরা যন্ত্রণা, তাহার সহিত মুখমন্ডলের আরক্ততা।
মুখমন্ডলে শীতলতার অনুভূতি, মুখমন্ডলের অসাড়তা, মুখমন্ডলে খালধরা ও চাপনবৎ যন্ত্রণা। মুখমন্ডরের স্নায়ুশূল। মুখমন্ডলের অসাড়তার সহিত শীতলতাবোধ ও পোকা হাঁটার ন্যায় অনুভূতি। চোয়ালের হাড়ের অসাড়ভাব। মুখমন্ডলে ছিন্নকর, রন্ধকর যন্ত্রণা।
নিম্নচোয়ালের মধ্যে, বিশেষতঃ ডান পার্শ্বে দপদপকর ও খনন করার ন্যায় যন্ত্রণা, তৎসহ অসাড়তা ও শীতলতা। যন্ত্রণা ধীরে ধীরে আসে এবং ধীরে ধীরে চলিয়া যায়। জিহ্বা যেন। ঝলসাইয়া গিয়াছে এরূপ অনুভূতি, জিহ্বার ভিতর পোকা হাঁটার ন্যায় অনুভূতি। অবসন্নকর মনোভাবের জন্য ক্ষুধাহীনতা কিম্বা অন্যান্য সময়ে রাক্ষুসে ক্ষুধা, তাড়াতাড়ি আহার করে, যাহা। কিছু দেখে তাহাই খাইয়া ফেলে । অত্যন্ত উদরবায়ু সঞ্চয়, পাকস্থলীতে খাদ্য গাজিয়া উঠা। পাকস্থলী ও উদরের পেশীগুলি উৎক্ষিপ্ত হইয়া উঠে। অনুভূতি যেন সমুদয় উদরটিকে শক্ত করিয়া সঙ্কুচিত করিয়া রাখিয়াছে অথবা ব্যান্ডেজ বাঁধিয়া রাখিয়াছে। উদরের চামড়ার উপর টান বোধ। উদরের মধ্যে তীব্র খালধরার ন্যায় যন্ত্রণা, উহাতে উদরটি ভিতর দিকে ঢুকিয়া যাইতেছে, এরূপ অনুভূতি। উদরে চাপনবৎ, নীচের দিকে ঠেলামারার ন্যায় যন্ত্রণা। এই যন্ত্রণা অনেকটা। ‘প্লাম্বামের’ সদৃশ এবং প্লাটিনাম ‘প্লাম্বামে’র প্রতিবিষ হিসাবেও ব্যবহৃত হইয়াছে। অবরুদ্ধ উদরবায়ু হইতে চাপনবৎ, টানিয়া ধরার ন্যায় যন্ত্রণা। প্লাম্বামে যেরূপ দেখিতে পাওয়া যায়, তদ্রুপ অন্ত্রপ্রণালীর নিষ্ক্রিয়তা। দুর্দম্য কোষ্ঠবদ্ধতা, অত্যন্ত অধঃবায় ।
মল অৰ্দ্ধজীর্ণ এবং লেইয়ের ন্যায় অথবা পোড়াইয়া রাখার ন্যায় কঠিন অথবা স্বল্প ও কষ্টদায়ক, আবার উহা আঠার ন্যায়ও হইতে পারে। নরম কাদার ন্যায় মল ও মলদ্বারে লাগিয়া থাকে। পুনঃপুনঃ মলত্যাগ প্রবৃত্তি এবং মলত্যাগে বেগ দিতে অক্ষমতা। সীসক-বিষাক্ততার পর উদরে যন্ত্রণা, সীসক-বিষাক্ততাজনিত উদরশূল। পরিব্রাজকদের কোষ্ঠবদ্ধতা। মলত্যাগ করিবার জন্য দীর্ঘ সময় ধরিয়া চেষ্টা করিতে হয়। মলত্যাগকালে মলদ্বারে জ্বালা। মলদ্বারে, বিশেষতঃ সন্ধ্যাকালে চুলকানি, কুটকুট করা ও কুন্থন। পুরুষ ও স্ত্রী উভয় শ্রেণীর মধ্যে অত্যন্ত সঙ্গমবিষয়ক উত্তেজনা দেখিতে পাওয়া যায়। পুরুষেরা সঙ্গমসংক্রান্ত উত্তেজনার ফলে হস্তমৈথুন প্রবৃত্ত হয়। ইহা হস্তমৈথুনের ফলে উৎপন্ন মৃগীরোগ আরোগ্য করিয়াছে। স্ত্রীলোকদিগের মধ্যে সঙ্গমসংক্রান্ত উত্তেজনা প্ল্যাটিনামের একটি প্রধান লক্ষণ। অসহনীয় সঙ্গমসংক্রান্ত উত্তেজনা এবং জননাঙ্গে কামোদ্দীপক সুড়সুড়ির অনুভূতি। বাহ্য জননেন্দ্রিয় এই স্পর্শকাতর হয় যে, ঋতুকালে স্ত্রীলোকদিগের পক্ষে কৌপিন গ্রহণ করা অসম্ভব হইয়া পড়ে। যোনিপথ এতই অত্যনুভূতিযুক্ত থাকে যে, চিকিৎসকের পক্ষে উহা তর্জনি দ্বারা পরীক্ষা করা অসম্ভব হইয়া পড়ে। ইহা প্রদাহ নহে কিন্তু একপ্রকার অত্যনুভূতিপ্রবণতা। যুবতীদের, হিষ্টিরিয়াগ্ৰস্তা বালিকাদের বর্ধিত সঙ্গমেচ্ছা। বিবাহিতা নারীদের ভীষণ সঙ্গমেচ্ছা, তৎসহ চুলকানি, সুড়সুড়ি ও কামোদ্দীপনা। ডিম্বকোষ প্রদেশে, প্রধানতঃ বামটিতে যন্ত্রণা। ইহা দীর্ঘকালস্থায়ী বন্ধ্যাত্ব, বিশেষতঃ অতিরিক্ত সঙ্গমেচ্ছা হইতে আগত বন্ধ্যাত্ব আরোগ্য করিয়াছে। ডিম্বকোষদ্বয়ে জ্বালাকর, সূচীবিদ্ধবৎ যন্ত্রণা। জরায়ুর রক্তস্রাবের সহিত আগত এবং ঋতুকালে ডিম্বকোষদ্বয়ের প্রদাহ। ইহা ডিম্বকোষের অবুদ এবং অন্যান্য প্রকার কৌষিক অর্বুদ আরোগ্য করিয়াছে। জরায়ুর প্রদাহ এবং জরায়ু যেন বাহির হইয়া পড়িবে এরূপ ঠেলামারা যন্ত্রণা। জরায়ু নির্গমন এবং বস্তিদেশে আকর্ষণবোধ । জরায়ুর বহুপাদ অর্বুদ এবং জরায়ু হইতে রক্তস্রাব। প্রচুর ঋতু-রক্তস্রাব। প্রবাহ ঘোরালবর্ণ, এমনকি কাল এবং যথেষ্ট তরল রক্তের মধ্যে চাপচাপযুক্ত থাকে। এইরূপ স্নায়বিক স্ত্রীলোকদের সর্বদাই মনে হয় যেন ঋতুস্রাব উপস্থিত হইবার উপক্রম হইতেছে। ঋতুস্রাব নিয়মিত সময়ের পূর্বে, প্রচুর পরিমাণে এবং সাধারণতঃ স্বল্পকালস্থায়ী হয়। বৃদ্ধা স্ত্রীলোকদের রক্তস্রাব কতকটা ঋতুরক্ত প্রবাহের ন্যায় হয়। সময়ে সময়ে ঋতুকাল চৌদ্দ দিন অন্তর ফিরিয়া আসে; কিম্বা ঋতুস্রাব একেবারে অনুপস্থিত থাকে। সঙ্গমকালে যোনি-ওষ্ঠ এবং যোনিপথ অত্যন্ত স্পর্শকাতর থাকে, সময়ে সময়ে সঙ্গমকাৰ্য্য বাধাপ্রাপ্ত হয়। স্ত্রীলোকেরা এলবুমেনযুক্ত প্রদরস্রাবে কষ্ট পান, উহা বেশীর ভাগ দিনের বেলায় উপস্থিত হয় এবং বিশেষ কোন অনুভূতি থাকে না। গর্ভকালে বহু উপসর্গ দেখা দেয়, গর্ভপাত আশঙ্কা, দুর্বলকর রক্তস্রাব, স্রাব কাল ও চাপচাপ। প্রসবকালে যোনি ও আভ্যন্তরীণ অঙ্গাদির স্পর্শকাতরতার জন্য জরায়ুর সঙ্কোচনে বাধা পড়ে। ধাত্রীবিদ্যাবিশারদের পক্ষে স্বাভাবিকভাবে পরীক্ষা অসম্ভব হইয়া পড়ে। প্রসবকালে বা প্রচুর রক্তস্রাবের সময় অঙ্গাদিতে খালধরার ন্যায় যন্ত্রণা হয়, হিষ্টিরিয়াজাত আক্ষেপ, সূতিকাক্ষেপ দেখা দেয়। প্রত্যেক প্রকার মানসিক পরিশ্রমের পর হৃৎস্পন্দন, অঙ্গাদির কম্পন, অসাড়তা, থরথর করা এবং অঙ্গাদির উত্তেজনা দেখা দেয়। পদদ্বয়ের অসাড়তার সহিত কম্পনযুক্ত অস্থিরতা। পদদ্বয়ের শীতলতা। পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠে ব্যান্ডেজ বাঁধা থাকার ন্যায় অনুভূতি। এই অনুভূতিটি সর্বত্রই বর্তমান থাকে। উরু বা পায়ের কাছে অঙ্গগুলি ব্যান্ডেজ বাঁধা থাকার ন্যায় অনুভূতি হয়। প্রায় সর্বক্ষণই স্নায়ুগুলি খুব উত্তেজনার অবস্থায় থাকে। রোগী অবসন্ন হইয়া পড়েন। পক্ষাঘাতিক দুর্বলতা, উহা বিশ্রামকালে বাড়ে। অসাড়তা, আড়ষ্টতা ও শীতলতা। রক্তাধারগুলির দপদপানির সহিত, শরীরের উপর সর্বত্র কষ্টকর কম্পনশীলতা। মস্তকত্বকের, পায়ের পাতার, হাত দুইটির, অঙ্গাদির অসাড়তা। স্থান-পরিবর্তনশীল স্নায়ুশূল। হিষ্টিরিয়াগ্রস্তা স্ত্রীলোকদিগের আক্ষেপজনক রোগসমূহ। কামোত্তেজনা হইতে আক্ষেপ। চর্মের উপর প্রধানতঃ জ্বরের সময় শীতলতা, পোকা হাঁটার অনুভূতি ও অসাড়তা।
অপর নাম প্লাটিনাম (Platinum)
মূলকথা
১। অহঙ্কার বা গৰ্ব্ব, নির্জেকে অতি বড় মনে করে। অপর সকলকে অবজ্ঞা করে। সব কিছুই রোগীর কাছে তুচ্ছ বলে মনে হয়।
২। জননেন্দ্রিয়ের অতিশয় অনুভরাধিক্য কিন্তু অত্যধিক সঙ্গমেচ্ছা। জরায়ু রোগ সহকারে কামোন্মাদ; জরায়ুর স্থানচ্যুতি বা বহিনির্গমন বা প্রভূত রজঃস্রাব।
৩। বেদনা ক্রমে ক্রমে বৃদ্ধি পায় এবং তেমনি ক্রমে ক্রমে কমে (স্ট্যানাম), কখনও কখনও বেদনাক্রান্ত স্থানের অবশতা বোধ হয় (ক্যামোমিলা)।
প্লাটিনা পরিক্রমা
১। মন, স্নায়ুমণ্ডল ও জননেন্দ্রিয়ের সঙ্গে এই ঔষধটির বিশেষ সম্বন্ধ আছে। তাই এই তিনদিক থেকে এই ঔষধটি আলোচিত হতে পারে। এই অদ্ভুত মানসিক লক্ষণ আছে। তাদের মধ্যে প্রধান তিনটি হল-
ক) অহঙ্কার বা গৰ্ব্ব, নিজেকে সবচেয়ে বড় বলে মনেকরে,দান্ত্রিকতার সঙ্গে অপরকে অবজ্ঞা করে।
খ) মানসিক ভ্রান্তি- এক ঘন্টা ঘুরে আসার পর বাড়ীতে প্রবেশ করে, মনে করে যেন চারদিকের সবকিছুই ছোট,সকল ব্যক্তিই শারীরিক ও মানসিক গুণে নিকৃষ্ট, কিন্তু রোগিণী নিজে শারীরিক ও মানসিকগুণে শ্রেষ্ঠ। গ) পরিবর্তনশীল প্রকৃতি; পৰ্য্যায়ক্রমে প্রফুল্লতা ও বিষন্নতা। শেষাক্ত লক্ষণটি ইগ্নেসিয়া, ক্রোকাস,নাক্স মস্কাটা ও একোনাইট আছে। একোনাইটের মত মৃত্যুভয় প্ল্যাটিনাও লক্ষণ।
মন্তব্য
রোগী চিকিৎসায় উল্লিখিত প্রথম লক্ষণদুটি কারো কারো কাছে তেমন কিছু মূল্যবান বলে নাও মনে হতে পারে। কারণ ঐশুলির কোন নিদানসঙ্গত কারণ দেওয়া স্থায় না, কিন্তু এগুলি চিকিৎসার ক্ষেত্রে অতিশয় মূল্যবান লক্ষণ। তাছাড়া উহারা আর অন্য কোন ঔষধেই পাওয়া যায় না।
আমি (ডা.ন্যাশ) এই লক্ষণ দ্বারা পরিচালিত হয়ে,এই ঔষধটি দ্বারা দুরারোগ এক উন্মাদ রোগিণীকে সুস্থ করেছিলাম যাকে কয়েকজন প্রসিদ্ধ অ্যালোপাথিক চিকিৎসক চিকিৎসা করেও তার কিছু করতে পারেনি। তার অবশেষে তাকে পাগলাগারদে পাঠানোই ঠিক করেছিলেন। কিন্তু তার পিতামাতা বেশ ধনবান ছিলেন বলে পাগলাগারদে না পাঠিয়ে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা করিয়েছিলেন। আমি তাকে প্লাটিনা দিয়েছিলাম। কারণ এই লক্ষণটি খুব সুস্পষ্ট ছিল মানসিক লক্ষণ দেখা দিলে শারীরিক লক্ষণ চলে যায় এবং শারীরিক লক্ষণ দেখা দিলে মানসিক লক্ষণের অন্তর্ধান হয়। শারীরিক লক্ষণটি ছিল মেরুদন্ডের উপর দিয়ে লম্বালম্বি ভাবে এক প্রকার বেদনা। এই লক্ষণটি মানসিক লক্ষণের সঙ্গে পর্যাক্রমে উপস্থিত হত।
ঔষধ ব্যবহারের পর প্রথম দিন থেকেই রোগিণীর উপকার হতে থাকে এবং ক্রমেই সুস্থ হতে হতে সে সম্পূর্ণরূপে সেরে যায়। পনের বছর হল এখন সে সম্পূর্ণ সুস্থ, এমন কি রোগঘুরে আসার আর কোন চিহ্ন নেই।
৩। মস্তিষ্ক লক্ষণ ঘড়া আর যেসকল স্নায়বিক লক্ষণে প্লাটিনা উপযোগী তা হল
ক) কেন ক্রমে ক্রমে বাড়ে এবং সেই রকমই ধীরে ধীরে কমে (স্ট্যানাম)।
খ) বেদনাক্রান্ত স্থানের অবশতা (ক্যামোমিলা)।
প্রথম লক্ষণটি স্ট্যানামেরমত, কিন্তু স্ট্যানামের মত প্লাটিনার রোগী দুর্বল নয়। দ্বিতীয় লক্ষণটি ক্যামোমিলায় দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু প্লাটিনার রোগীতে ক্যামোমিলার মত অত অশিষ্টাচার নেই।উভয়েই মানসিক লক্ষণের ঔষধ। যদি সন্দেহ হয় তাহলে ভৈষজ্যতত্ত্ব অধ্যয়নকরে উহার মীমাংসা করতে হবে।
প্ল্যাটিনাম ও স্ট্যানামে ক্রমে বেদনার হ্রাস-বৃদ্ধি হয়, বেলেডোনায় হঠাৎ আরম্ভ হয় ও বিরতি জমে। কিন্তু মস্তিলক্ষণে প্লাটিনার বেলেডোন অনেক সদৃশ।
৪। জননেন্দ্রিয়
১) কামোন্মাদ –সুতিকারস্থায় উহার বৃদ্ধি হয়, পেট পর্যন্ত সুড় সুড় করে।
২) অত্যাধিক সঙ্গম প্রবৃত্তি বিশেষতঃ কুমারীদের। অল্পবয়সে অত্যধিক কাম প্রবৃত্তির বিকাশ।
৪) জননাঙ্গে অত্যন্ত স্পর্শানুভূতি, সামান্য স্পর্শও সহ্য সহ্য করতে পারে না। জননেন্দ্রিয় পরীক্ষা করলে আক্ষেপ উৎপন্ন হয়, সঙ্গমকালে প্রায় মূর্চ্ছা জন্মে।
৬) জরায়ু থেকে রক্তস্রাব অথবা প্রকৃত রক্তস্রাব, কাল ও চাপচাপ রক্ত।
এইগুলি প্ল্যাটিনার জননেন্দ্রিয়ে লক্ষণ। প্রভূত ঋতুস্রাবওম্পর্শে বা সংসর্গে জননাঙ্গের অতিরিক্ত অনুভূতিসহ ডিম্বাশয়ের উপদ্রবে ও জরায়ুর প্রোলান্সে প্ল্যাটিনা উপযোগী।
৬। হিস্টিরিয়া প্ল্যাটিনায় মানসিক, স্নায়বিক ও জননাঙ্গের লক্ষণদৃষ্টে বোধ হয় যে হিস্টিরিয়া রোগের ইহা একটি উৎকৃষ্ট ঔষধ, বাস্তবিক ক্ষেত্রেও হিস্টিরিয়া রোগে প্ল্যাটিনা ফলপ্রদ।
জিঙ্কাম ও স্ট্যানামের মত প্লাটিনাও উচ্চতর ক্রমেই বেশী উপকারী। কিন্তু কোনও উন্মাদরোগে উচ্চক্রম না থাকায় আমি (ডা.ন্যাশ) ছাই ব্যবহার করেছিলাম।
এলুমিনার মত প্ল্যাটিনাতেও এক রকমের কোষ্টবদ্ধতা দেখা যায়। এতে মলদ্বারে নরম কাদার মত মল লেগে থাকে।