শিশু যখন স্কুলে যায়

শিশু যখন স্কুলে যায়:

স্কুলগামী শিশু বলতে ৬ থেকে ১২ বছর বয়সের শিশুদের বুঝানো হয়। আমরা সহজভাবে বলতে পারি প্রাইমারি স্কুলগামী শিশু।

শারীরিক বিকাশ

স্কুলগামী শিশুদের প্রায়শই সূক্ষ্ম ও শক্তিশালী মোটর (হাত-পায়ের কাজ) দক্ষতা তৈরি হয়। বিশেষ করে চোখ ও হাতের নিপুণ দক্ষতা তৈরি হয়, শারীরিক ভারসাম্য রক্ষায় হাত-পা সঠিক কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারে।

এ সময়ে শিশু সুন্দরভাবে লেখা শিখতে পারে, নিজের পোশাক নিজে পরা, বিছানা তৈরি ও খাবার তৈরি করার মতো রুটিন কাজসমূহ করতে পারে।

এ বয়সী শিশুদের মধ্যে উচ্চতা, ওজন ও গড়নের মধ্যে বড় পার্থক্য থাকবে। কারণ জেনেটিক ব্যাকগ্রাউন্ড, পুষ্টি ও ব্যায়াম শিশুর বৃদ্ধির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

৬ বছর বয়সের মধ্যে বডি ইমেজের অনুভূতি তৈরি হতে শুরু করে। এ সময় শিশুদের প্রতিদিন কমপক্ষে ১ ঘণ্টা শারীরিক কার্যকলাপ করার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে দিতে হবে।

এ সময়ে শিশুদের সেকেন্ডারি লিঙ্গের বৈশিষ্ট্য বিকাশ লাভ করতে শুরু করে, যেমন:

মেয়েদের সেকেন্ডারি লিঙ্গের বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • স্তন বৃদ্ধি হওয়া।
  • বগলের নিচে লোম ও যৌনকেশ দেখা দেওয়া।

 

ছেলেদের সেকেন্ডারি লিঙ্গের বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • বগলের নিচে লোম, বুকের উপরে লোম ও যৌনকেশ দেখা দেওয়া।
  • অণ্ডকোষ এবং পুরুষাঙ্গ বৃদ্ধি পাওয়া।

৫ বছর বয়সী বেশিরভাগ শিশু স্কুলের রুটিন অনুসারে বিভিন্ন বিষয় শিখতে শুরু করে। প্রথম কয়েক বছর মৌলিক বিষয়গুলো শেখার উপর বেশি জোর দিতে হয়। অতঃপর অক্ষর ও শব্দ চেনানোর পাশাপাশি বিষয়বস্তু গল্প আকারে শেখাতে হবে।

৬ বছর বয়সী শিশুর ১৫ মিনিটের জন্য কোন কাজে মনোযোগ দিতে পারে। এ সময় শিশুকে ১৫ মিনিট পড়িয়ে কিছুক্ষণ গল্প বা খেলাধুলা করে আবার পড়াতে পারেন।

৯ বছর বয়সী শিশু প্রায় এক ঘণ্টার জন্য মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করতে সক্ষম। এদেরকেও ১ ঘণ্টার বেশি কিছু পড়তে বা অংক করতে দেয়া উচিৎ না। তবে কিছুক্ষণ গল্প বা খেলাধুলা করে আবার পড়াতে পারেন।

মানুষের জীবন মানেই ব্যর্থতা ও সফলতার সমন্বিত রূপ, শিশু ক্লাসে ভালো না করলে কখনো তিরস্কার করা যাবে না। বরং ব্যর্থতা ও হতাশাকে জয় করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও সাহস যোগাতে হবে।

শিশু বারবার শারীরিক অভিযোগ করতে পারে (যেমন গলা ব্যথা, পেটে ব্যথা, হাত-পায়ে ব্যথা ইত্যাদি)। এটি শিশুর শরীরের সচেতনতা বৃদ্ধির কারণে হতে পারে। অনেক সময় শিশুদের এ ধরনের অভিযোগের কোনো ভিত্তি থাকে না। কিন্তু শিশু অভিযোগ করলে অবশ্যই গুরুত্ব সহকারে অনুসন্ধান করতে হবে। শিশুকে আশ্বস্ত করবে যে পিতামাতা তাদের মঙ্গল চায়।

সাধারণত এ বয়সে শিশুদের বন্ধুত্ব একই লিঙ্গের শিশুদের সাথে হয়ে থাকে। প্রকৃতপক্ষে স্কুলগামী শিশুরা প্রায়ই বিপরীত লিঙ্গের শিশুদের অস্বস্তিকর মনে করে। শিশুরা বয়ঃসন্ধিকালের কাছাকাছি আসলে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি নেতিবাচক ধারণা কমতে শুরু করে।

শিশুদের সুরক্ষাঃ

স্কুলগামী শিশুদের সুরক্ষাটা খুব জরুরী

  • স্কুলগামী শিশুরা অত্যন্ত সক্রিয়। তাদের সমবয়সীদের থেকে উৎসাহ প্রয়োজন, শিশুরা সমবয়সীদের থেকে বাহবা, লাইক বা উৎসাহ পাওয়ার আশায় অনেক দুঃসাহসিক কাজ করতে পারে। অভিভাবকদের অবশ্যই এ বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
  • শিশু যেন খারাপ সঙ্গীর সাথে না মিশে তা খেয়াল রাখতে হবে। অসৎ ও অসভ্য পরিবারে শিশুকে মিশতে দিবেন না, অসৎ পরিবারের সন্তানদের অভিজাত চলাফেরা যেন আপনার আপনার সন্তানকে প্রভাবিত করতে না পারে সে দিকে লক্ষ্য রাখুন। মাঝে মাঝে সৎ-অসৎ, ভদ্রতা-অভদ্রতা, মান-সম্মান, সুসঙ্গ-কুসঙ্গ, ইত্যাদি বিষয়ের সুফল ও কুফল শিশুকে বুঝিয়ে বলুন। বারবার বলুন যেন শিশু তার শৈশবেই নৈতিক করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়সমূহ উপলব্ধি করতে পারে।
  • শিশুদের উপযুক্ত ও নিরাপদ এলাকায় উপযুক্ত সরঞ্জাম এবং নিয়মসহ খেলাধুলা করতে শেখানো উচিত।
  • জলে সাঁতার কাটার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে শিশু যেন ডুবে না যায়।
  • ম্যাচ, লাইটার, বারবিকিউ চুলা, খোলা আগুন সম্পর্কিত বিষয়ে সতর্ক থাকুন।

পিতামাতার জন্য কিছু টিপস:

  • আপনার সন্তানের শারীরিক বিকাশ স্বাভাবিকের বাইরে গিয়ে থাকলে, চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
  • ভাষাগত দক্ষতা পিছিয়ে আছে বলে মনে হলে, শিশুর বক্তব্য ও ভাষা উন্নত করার চেষ্টা করুন।
  • শিক্ষক, স্কুলের কর্মচারী ও সন্তানের বন্ধুদের পিতামাতার সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখুন যাতে আপনি সম্ভাব্য সমস্যা সম্পর্কে সচেতন হতে পারেন।
  • শিশুদের খোলাখুলিভাবে কথা বলতে এবং উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাহীন কথা বলতে উৎসাহিত করুন।
  • শিশুদের বিভিন্ন সামাজিক কাজে অংশগ্রহণের জন্য উৎসাহিত করুন।
  • শিশুরা সোশ্যাল মিডিয়া ও সমবয়সীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সহিংসতা, যৌনতা ও অপরাধমূলক কাজে জড়িত হচ্ছে কি না তা নিবিড়ভাবে লক্ষ রাখুন। সর্বদা তার কুফলসমূহ বলতে বলতে অপরাধমূলক বিষয়ের প্রতি শিশুদের ঘৃণা তৈরি করুন।
  • অসৎ ও অসভ্য পরিবারে শিশুকে মিশতে দিবেন না, অসৎ পরিবারের সন্তানদের অভিজাত চলাফিরা যেন আপনার আপনার সন্তানকে প্রভাবিত করতে না পারে সে দিকে লক্ষ্য রাখুন। মাঝে মাঝে সৎ-অসৎ, ভদ্রতা-অভদ্রতা, মান-সম্মান, সুসঙ্গ-কুসঙ্গ, ইত্যাদি বিষয়ের সুফল ও কুফল শিশুকে বুঝিয়ে বলুন। বারবার বলুন যেন শিশু তার শৈশবেই নৈতিক করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়সমূহ উপলব্ধি করতে পারে।
  • খেলাধুলা, ক্লাব, শিল্পকলা, সঙ্গীত এবং স্কাউটের মতো গঠনমূলক কর্মকাণ্ডে শিশুদের অংশগ্রহণে উৎসাহিত করুন।
  • স্কুলগামী শিশুদের পারিবারিক কাজে অংশগ্রহণ করা উচিত, যেমন টেবিল গুচিয়ে রাখা, বিছানা গুচিয়ে রাখা, খাবারের প্লেট পরিষ্কার করা ইত্যাদি।
  • দিনে ২ ঘণ্টার উপরে যেন টিভি, কম্পিউটার, মোবাইল ইত্যাদি না দেখে সে ব্যাপারে লক্ষ্য রাখুন।

যে কোনো জটিল ও কঠিন রোগের সঠিক হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পেতে এখানে ক্লিক করুন

সকল পদ্ধতির চিকিৎসা পেতে ও যে কোনো রোগের বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে এখানে ক্লিক করুন

✅ আমাদের সফল চিকিৎসার প্রমাণ দেখুন।

(ডান পার্শের মেনুতে রোগের নাম লিখে সার্চ করুন)

[videogallery id=”Success of Homeopathy”]

.

.

About The Author

D.H.M.S (Dhaka), M.M (BMEB) Consultant Homoeopathic physician Researcher, books author and speaker Owner of HD Homeo Sadan  CEO of HD Health Lecturer: Ashulia Homeopathic Medical College

Related posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *