ক্যাম্ফোরা CAMPHORA OFFICINARUM [Camph]

Camph সমস্ত শরীর বরফের মত শীতল অথচ রোগী গায়ে কাপড় রাখতে চায় না, শরীরের ভিতরে জ্বালা।
Camph নাক ঠান্ডা ও সরু, মুখমন্ডল নীলবর্ন ও শীতল, জিহ্বা শীতল (কলেরা ও জ্বরে এরূপ দেখা যায়)।
Camph তরুণ রোগে অত্যন্ত পিপাসা, কিন্তু পুরাতন রোগে পিপাসা থাকেনা।
Camph ঠান্ডা হাওয়া সহ্য হয় না, সর্দি লাগে।

ব্যথার কথা চিন্তা করলে ব্যথা কমে যায় (হেলিবোর) (চিন্তা করলে বাড়ে-ক্যাল্ক-ফস, হেলোনি, এসি-অক্সা)।

যারা দৈহিক ও মানসিকভাবে দুর্বল ও খিটখিটে এবং ঠান্ডা বাতাস একদম সহ্য হয় না যাদের, তাদের পক্ষে উপযোগী। (হিপার, কেলি-মিউ, সোরিন)।

আঘাত লেগে মানসিক ভয়ভীতি ও তার কুফলে—উপর থেকে দেহ ঠান্ডা, মুখ ফ্যাকাসে, নীলচে ঠোট দুটো নীলবর্ণ হয়ে যায়; ভীষণ অবসন্নতা দেখা দেয় রূপ এক্ষেত্রে উপযোগী।

সারা দেহে সামান্য ছোয়াতে অত্যন্ত স্পর্শকাতরতা। জিব ঠান্ডা, থলথলে ও কাঁপে।

হঠাৎ বমি ও উদরাময়ের আক্রমণ, নাক ঠান্ডা ও যেন ছুঁচালো হয়ে পড়ে। রোগী উদ্বিগ্ন ও অস্থির হয়ে পড়ে। গায়ের চামড়া ও শ্বাস-প্রশ্বাস ঠান্ডা (ভিরেট্রাম, জ্যাট্রোফা)।

উদরাময়যুক্ত কলেরা ও এসিয়াটিক কলেরার প্রথম অবস্থায় ভয়ানক, বহু সময় যাবৎ স্থায়ী শীতভাব (ভিরেট্রাম)।

জীবনীশক্তির হঠাৎ ও সম্পূর্ণ অবসন্নতা সেই সাথে দেহের চামড়া অত্যন্ত ঠান্ডা। রক্তসঞ্চয়জনিত শীতভাব ও ভয়ঙ্কর সবিরাম জ্বরে প্রায়ই উপযোগী (ভিরেট্রাম) হয়। ঐ সময় নাড়ী দুর্বল, নাড়ী দেখতে গেলে খুবই ছোট ও অনুভব করা যায় না।

হাম ও স্কারলেট জ্বরে যখন উদ্ভেদ প্রকাশ পায় না। মুখ ফ্যাকাশে, নীলবর্ণ ও ঠান্ডা হয়ে যায়। মুখ মড়ার মত বিবর্ণ দেখায় কিন্তু শিশু গায়ে ঢাকা দিতে চায় না। সেইক্ষেত্রে (সিকেলি) উপযোগী।

হামের পরবর্তী সব উপসর্গে উপযোগী।

সম্বন্ধ ক্যাম্ফার প্রায় প্রতিটি উদ্ভিদজাত ওষুধের ও তামাক বা যে সকল ফলে প্রূসিক এ্যাসিড থাকে তাদের প্রতিষেধক। বিষাক্ত ব্যাঙের ছাতার ক্রিয়ানাশক।

রোগীর ঘরে মূল ওষুধ রাখা উচিৎ নয়।

তুলনীয় — কার্বভে, ওপি, ভিরেট্রাম, সিকেল।

উপমশ — যে সব উপসর্গে রোগী ভুগছে তা চিন্তা করলে, গরম, বাতাসে, ঠান্ডা জল খেলে।

চিন্তা করার মত বিষয়— ক্যাম্ফর ও ওপিয়ামের পরীক্ষায় প্রাপ্ত লক্ষণগুলির প্রতি যথার্থ দৃষ্টি দেওয়ার উপরই হোমিওপ্যাথগণের সবরকম অগ্রগতি নির্ভর করে হেরিং ।

শক্তি , ১x, ৩x, ৩০।

হ্যানিম্যান বলেছেন, “এই বস্তুটির ক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করা খুবই গোলমেলে ও কষ্টকর কাজ, এমন কি স্বাস্থ্যবান মানুষের শরীরের পরীক্ষা করা হলেও, কারণ ঔষধটি প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া, অন্যান্য ঔষধের থেকে অধিক দ্রুততার সঙ্গে জীবনী শক্তির প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে মিশ্রিত অবস্থায় অথবা পর্যায়ক্রমে প্রকটিত হয়। এই কারণে এটা নির্ধারণ করা খুবই কষ্টকর কাজ হয় যে, কোন লক্ষণগুলি জীবনী শক্তির প্রতিক্রিয়ার ফলে দেখা দিয়েছে এবং কোন লক্ষণগুলি ক্যাম্ফরের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ার ফলে মাঝে মাঝে প্রকাশিত হয়েছে।

এই ঔষধের পতনাবস্থা বা হিমাঙ্গ অবস্থায় একঠি পরিষ্কার ছবি পাওয়া যায়। সমগ্র শরীর বরফের মত ঠান্ডা; হঠাৎ করে শারীরিক শক্তির পতনাবস্থা নাড়ী ছোট ও দুর্বল। অস্ত্রো প্রচারের পরে, যদি শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক অবস্থা থেকে কম হয়, রক্তের চাপ কম হয়, তিন মাত্রা ক্যাম্পার ১x বিচূর্ণ, ১৫ মিনিট পর পর রোগীকে দেওয়া হবে। এই জাতীয় অবস্থা আমরা কলেরা রোগ দেখতে পাই, এবং এই জাতীয় ক্ষেত্রে ক্যাম্ফার যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছে। সর্দির প্রথম অবস্থা, তৎসহ শীতবোধ ও হাঁচি। পেশীর কম্পন ও অত্যাধিক অস্থিরতা। সন্ধি স্থানে কটকট শব্দ। মৃগীরোগের মৃত আক্ষেপ। পেশী ও ফাসার সঙ্গে ক্যাম্ফরের সরাসরি সম্বন্ধ রয়েছে। শীত প্রধান দেশের স্থানীয় বাত রোগের এই ঔষধ প্রয়োজন হয়। শিরা স্ফীতি। জরুরী কালীন অবস্থায় হৃদপিন্ডকে শক্তিসালী করতে ক্যাম্ফর একটি সন্তোষজনক ঔষধ বিশেষ। সুগারের সঙ্গে এক ফোটা ঔষধ মিশিয়ে একমাত্রা তৈরী করে, এমনকি প্রয়োজনে পাঁচ মিনিট পর পর ব্যবহার করা চলে।

ক্যাম্ফরের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হল, রোগী কিছুতেই আবৃত হতে চায়না, এমনকি শরীর বরফের মত ঠান্ডা হলেও। অবসন্ন বা শক অবস্থায় একটি প্রধান ঔষধ। যন্ত্রনার কথা।

চিন্তা করলে, যন্ত্রনার উপশম হয়। ঠান্ডায় ও স্পর্শে অত্যাধিক অনুভূতি প্রাণ। হামের কুফল। তীব্র আক্ষেপ তৎসহ হিষ্টিরিয়া রোগীর মত উত্তেজনা। টিটেনাস রোগের আক্ষেপ, গন্ডমালা দোষযুক্ত শিশু এবং খিটখিটে, দুর্বল, সুন্দর দেখতে ব্যক্তির উপর এই ঔষধের ক্রিয়া বিশেষভাবে প্রকাশিত হয়।

মাথা মাথা ঘোরা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার প্রবণতা যুক্ত, মনে হয় সে যেন মরে যাবে। ইনফ্লুয়েঞ্জা; মাথার যন্ত্রণা, তৎসহ সর্দিজ লক্ষণ সমূহ, হাঁচি প্রভৃতি। মস্তিষ্কের সেরিবেলাম স্থানে আঘাত করার মত বেদনা। ঠান্ডা ঘাম। নাক ঠান্ডা ও কুঁচকানো। জিহ্বা ঠান্ডা, শিথিল,কম্পন যুক্ত। চক্ষুকোটরে ও রগে পরিবর্তনশীল, সূঁচ ফোটার মত বেদনা। মাথায় টাটানি ব্যথা। মাথার পিছনের অংশে দপদপানি, নাড়ীর স্পন্দনের সঙ্গে একই সঙ্গে দপদপ করে।

চোখ স্থির, বড়ো বড়ো করে তাকান; চোখের তারা বিস্ফারিত। দৃষ্ট সকল বস্তু সমূহ উজ্জ্বল ও চকচকে বলে মনে হয়।

নাক নাক বন্ধ; হাঁচি। হঠাৎ করে আবহাওয়ার পরিবর্তনে তরল সর্দি। নাক ঠান্ডা ও কুঁচকানো। মাঝে মাঝে নাক দিয়ে রক্তপাত বিশেষ করে এই সঙ্গে রোগী যদি কুঁচকানো চর্মযুক্ত হয়।

মুখমন্ডল ফ্যাকাশে, চক্ষুকোটরগত, আঙ্কযুক্ত,বিকৃত; নীলচে, ঠান্ডা। মুখমন্ডলে ঠান্ডা ঘাম।

পাকস্থলী পাকস্থলীর উপরের অংশে চাপমারার মত বেদনা। শীতল অনুভূতি, পরে জ্বালাকরে।

মল কালচে বর্ণের; অসাড়ে; এশিয়াটিক কলেরা, তৎসহ পায়ের ডিমের খিল ধরা, সারা শরীর ঠান্ডা, অসহ্য যাতনা, প্রচন্ড দুর্বলতা, পতনাবস্থা বা হিমাঙ্গ অবস্থা, জিহ্বা ও মুখগহুর ঠান্ডা।

প্রস্রাব জ্বলন ও কষ্টকর প্রস্রাব, তৎসহ প্রস্রাব থলির গ্রীবায় কোঁথ। মূত্ররোধ, তৎসহ প্রস্রাবথলি পূর্ণ।

পুরুষের রোগ কামেচ্ছার বৃদ্ধি। বেদনাদায়ক লিঙ্গোদেক। বারে বারে লিঙ্গোদ্রেক। রাত্রিকালীন বীর্যস্থলন।

শ্বাস-প্রশ্বাস – হৃদপিন্ডের স্থানের গোলযোগ। বুকের ভিতর চাপা বোধ সহ শ্বাসকষ্ট। হাঁপানি মারাত্মক, শুষ্ক, খুকখুকে কাশি। হৃদকম্প, শ্বাস-প্রশ্বাস ঠান্ডা। শ্বাস-প্রশ্বাসের বিরতি।

ঘুম অনিদ্রা, তৎসহ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ঠান্ডা। পেশীর কম্পন ও অস্থিরতা।

অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ – দুই দিকের কাঁধের মধ্যবর্তী স্থানে বাত জনিত বেদনা। কষ্টকর নড়াচড়া। অসাড়তা, সুড়সুড় অনুভূতি ও শীতলতা। সন্ধিস্থলে কটুকটু করে। পায়ের ডিমের খিলধারা। পা দুটি বরফের মত ঠান্ডা, বেদনা যেন মোচকিয়ে গিয়েছে।

জ্বর নাড়ী ছোট, দুর্বল, ধীর গতি যুক্ত। সমগ্র শরীর বরফের মত ঠান্ডা। ঠান্ডা ঘাম। রক্তাধিক্য সহশীতবোধ। জিহ্বা ঠান্ডা, শিথিল, কাঁপে।

চামড়া ঠান্ডা, ফ্যাকাশে, নীলবর্ণযুক্ত, কালচেনীল বর্ণ। কিছুতেই চাপা গায়ে রাখতে পারে না। (সিকেলি)।

কমা-বাড়া – বৃদ্ধি, নড়াচড়া, রাত্রিতে, সংস্পর্শে, ঠান্ডা বাতাসে।

উপশম – উত্তাপে।

সম্বন্ধ ক্যাম্ফার প্রায় সকল প্রকার ভেষজ ঔষধের দোষঘ্ন ঔষধরূপে কাজ করে। তামাক, আফিং, ক্লিমি নাশক ঔষধ প্রভৃতি।

ল্যাম্ফা অ্যাকিউট্যাঙ্গিউলা (সমগ্র শরীর বরফের মত ঠান্ডা, তৎসহ অস্থিরতা এবং উদ্বেগ; জ্বালাকর পিপাসা)।

ক্যাম্ফোরিক অ্যাসিড (ক্যাথিটার ব্যবহার করার ফলে যে জ্বর দেখা দেয়, এই ঔষধ ঐ জ্বরের প্রতিষেধক রূপে কাজ করে প্রস্রাব থলির প্রদাহে, ১৫ গ্রেন মাত্রায় দিনে তিনবার; এছাড়াও রাত্রিকালীন কমাবার জন্য এই ঔষধ ব্যবহার করা হয়ে থাকে)।

প্রতিবন্ধক কেলিনাইট।

পরিপূরক ক্যান্থারিস।

দোষঘ্ন ওপিয়াম; নাইট্রি স্পিরিটাস ডালসিস; ফসফরাস।

তুলনীয় কার্বোভেজ, কুপ্রাম; আর্সেনিক; ভিরেট্রাম।

শক্তি অরিষ্ট, এক ফোঁটা মাত্রায়, বারে বারে পুণঃ প্রয়োগ করা হবে, অথবা ক্যাম্ফরের স্পিরিটের ঘ্রাণ নিলেও হবে। শক্তিতে ঔষধ একই ভাবে সমান ফলপ্রদ।

বাড়ীতে কর্পূরের বোতল থাকা মহা ক্ষতিকারক, কারণ কর্পূর আমাদের অধিকাংশ ঔষধের ক্রিয়া নাশ করে। শক্তীকৃত আকারে কর্পূর (ক্যাম্ফার) বহু রোগ আরোগ্য করে। কতকগুলি স্নায়বিক উত্তেজনাবিশিষ্ট তরুণ রোগে, এমন কি আক্ষেপ ও খিচুনিযুক্ত উন্মত্ততা এবং টঙ্কার, অবশেষে অবসন্নতাযুক্ত অবস্থায় ক্যাম্ফর উপযোগী। ক্যাম্ফারের অবস্থা বলিতে আক্ষেপ অথবা শীতলতার অবস্থা। ক্যাম্ফরের খুব তরুণ অবস্থায় রোগীর চূড়ান্ত উত্তেজনা, উত্তেজনা প্রবণতা ও উন্মত্ততা দেখা দেয় অথবা সে অপর সীমায় চলিয়া যায়, তখন উত্তেজনা চলিয়া যায়, অনুভূতি নষ্ট নয়, অচৈতন্যতা ও শীতলতা উপস্থিত হয়। একই রোগীতে দুইটি সীমা দেখা যাইতে পারে— একটি প্রথমে ও অপরটি পরে। সে মানসিক উত্তেজনার চরম অবস্থা ও প্রচন্ডতা হইতে শয্যাগত ও অবসন্ন অবস্থায় উপস্থিত হয়, তখন তাহার দেহ নীল ও ঠান্ডা হয়, কিন্তু তবুও সে দেহকে অনাবৃত রাখিতে চায়। মানসিক অবস্থায় উৎকণ্ঠা ও অত্যন্ত ভয় থাকে, ভয়—লোকের অদ্ভুত অদ্ভুত স্থানের অন্ধকারের আবার সেই অন্ধকার কল্পিত মূর্তিতে পূর্ণ থাকে। সে অন্ধকারে শয্যা হইতে বাহিরে যাইতে সাহস করে না, সকল গতিশীল জিনিষই প্রেত বলিয়া মনে হয়, ঘরের সব জড় পদার্থই জীবিত বলিয়া মনে হয় এবং তাহাকে ভয় দেখায় উন্মত্ততা। ইহার সহিত ক্যান্থারিসে’র ন্যায় মূত্রপিন্ড ও মূত্রসম্বন্ধীয় রোগ থাকে, আর এই সাদৃশ্যের জন্য এই দুই ঔষধই পরস্পর অনুপূরক ও দোষনাশক। যদি কোন স্ত্রীলোক নিজেকে ক্যান্থারিস দ্বারা বিষাক্ত করিয়া থাকে এবং যদি উন্মত্ততা ও উত্তেজনা বর্তমান থাকে, তাহা হইলে ক্যাম্ফার বিষনাশকস্বরূপ কাৰ্য্য করিবে।

মানসিক লক্ষণগুলি সম্বন্ধে বিস্তৃত আলোচনা করা উচিত। রোগী এমন একটি অবস্থায় যায়, যাহা জড়ত্ব হইতে বিসদৃশ নহে এবং তাহার চেহারা এরূপ হয়, যেন অবস্থাটি ধীরে ধীরে আসিয়াছে। তাহার মন ও স্মৃতিশক্তি নষ্ট হইয়া যায়। সে চক্ষু মুদ্রিত করে, বাহ্যতঃ নিদ্রিত থাকে এবং কোন প্রশ্নের উত্তর দেয় না। উত্তাপ ক্রোধ ও খেয়ালের বশে প্রলাপবিশিষ্ট হইয়া পড়ে, বিছানা হইতে অথবা জানালা দিয়া লাফাইয়া পড়িতে চায়। চিৎকার করে, সাহায্য প্রার্থনা করে উৎকণ্ঠিতভাবে বিছানায় এপাশ ওপাশ করে সূতিকা জ্বরে, মস্তিষ্কে রক্তসঞ্চয়, অথবা কোন যন্ত্রে ভয়ানক প্রদাহের তাড়নায় এরূপ লক্ষণে ক্যাম্ফর প্রযোজ্য হইবে। সঙ্ঘাতের ফলে মানসিক গোলযোগ দেখা যায় এবং ঐ অবস্থার সহিত ভীষণতা থাকে। রোগী যত ভীষণভাবে ভুগিতে থাকে, তত শীঘ্র শীঘ্র সে শীতল হইয়া পড়ে এবং যখন সে শীতল হয়, তখন ঠান্ডা ঘরের মধ্যেও সে গাত্রাবরণ ফেলিয়া দেয়। ইহা অনেকটা ‘সিকেলি’ সদৃশ। সিকেলি’ রোগী ঠান্ডা হইয়া যাইলে, অনাবৃত থাকিতে ও ঠান্ডা ঘরে থাকিতে চায়, আর উহাতে উন্মত্ত ভাবও থাকে, সুতরাং আমরা এখনও এমন কিছু পাইলাম না যাহা দ্বারা ‘সিকেলি’কে ক্যাম্ফর হইতে পৃথক করা যায়। কিন্তু ক্যাম্ফরের মধ্যে বরাবর আর একটি জিনিষ আছে, যাহা দ্বারা পার্থক্য নির্ণয় করা যায়। শীতলতা, উন্মত্ততা এবং উত্তাপ অনেক সময়ে মিশিয়া যাইতে পারে। যখন ক্যাম্ফর রোগী হিমাঙ্গ হইতে থাকে, থাকিয়া থাকিয়া তাহার উত্তাপের আবেশ হয়, হয় প্রাহিত অঙ্গে, না হয় স্নায়ুপথে বিদীর্ণকর, ছিন্নকর, জ্বালাকর যন্ত্রণার সহিত উত্তাপের ঝলক সংমিশ্রিত থাকে। এরূপ রোগীকে শুশ্রূষা করা বড়ই কষ্টকর, কেহই বা কোন কিছুই মনোমত হয় না। যদি মূত্রস্থলীর প্রদাহ উপস্থিত হয়, অত্যন্ত যাতনা এবং স্পর্শকাতরতা থাকে, যন্ত্রণার তাড়নায় তাহার মানসিক অবস্থা উন্মাদের ন্যায় হইয়া উঠে। তারপর রোগীর হিমাঙ্গ অবস্থা উপস্থিত হয় এবং সে অনাবৃত হইতে চায়, ঠান্ডা বাতাস চায়, জানালাগুলি খুলিয়া দেওয়া চায়, কিন্তু এইসব কর হইয়ার পূর্বেই তাহার একটা উত্তাপের ঝলক আসে এবং সে গায়ে-ঢাকা দেওয়া চায়, তাপনিয়ামক যন্ত্র ঘুরাইয়া দিতে বলে, উত্তপ্ত জলের বোতল চায়, কিন্তু এই অবস্থাও আবার চলিয়া যায়। ধাত্রী উত্তপ্ত লৌহ আনিতে আনিতেই সে জানালা খুলিয়া দিতে বলে এবং সবকিছুই শীতল চায়। তুমি দেখিলেই বুঝিবে যে, এগুলি সাঙ্ঘাতিক রোগ। প্রবল সঙ্ঘাত এবং ঠান্ডা লাগার ফলে, অত্যন্ত অবসন্নতার সহিত এরূপ পশ্চাৎবক্রতা; আক্ষেপ; মস্তিষ্ক, যকৃৎ মূত্রপিন্ড প্রদাহ উপস্থিত হইয়া থাকে। যে ব্যক্তি তাহার জীবিকার জন্য অনেক ঘন্টা ধরিয়া খাটিতেছে তোমরা তাহার এরূপ অবস্থা দেখিতে পার। তাহার উত্তেজনা শেষ হইয়া প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়াছে এবং উহা যেন একটি ঘূর্ণিবায়ুর মত, সে যতক্ষণ না পরিশ্রান্ত হইয়াছে, ততক্ষণ পর্যন্ত খাটিয়াছে, আর এক্ষণে সে অবসন্ন, হিমাঙ্গ ও নীল হইয়া পড়িয়াছে; এইরূপ ক্ষেত্রেই বৃদ্ধ। স্ত্রীলোকেরা কর্পূরের শিশি লইয়া তাহাদের সুনাম অর্জন করেন; কিন্তু শক্তীকৃত ক্যাম্ফর কপূরের শিশি অপেক্ষা অনেক বেশী উপকার করিবে; উহা তাহাকে তৃপ্তিদায়ক নিদ্রায় নিদ্রিত রাখিবে।

ইহা রজোনিবৃত্তিকালে গরম ঘরের মধ্যে উত্তাপের আবেশ এবং ঘর্ম থাকিলে, অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলি অত্যন্ত ঠান্ডা থাকিলে এবং রোগিণী অনাবৃত থাকিলেই শীত করা এবং ঢাকা দিলেই প্রচুর ঘর্ম থাকিলে উপযোগী। রোগিণী শীতে কষ্ট পাইলেও তাহার হাত-পা গরম করিতে আবরণ সহ্য করিতে পারেন না।

মাথা যন্ত্রণায় পূর্ণ, দপদপকর যাতনা সঙ্কোচন অনুভূতি, যেন মস্তিষ্কের তলদেশ ফিতা দিয়া একত্রে বাঁধিয়া রাখা হইয়াছে, মাথায় সমুদয় পশ্চাদ্ভাগ ও ঘাড়ে হাতুড়িপেটার ন্যায় দপদপ করে, সম্মুখদিকে মাথা অবনত করিলে বৃদ্ধি, জ্বালা, হুলবিদ্ধবৎ যন্ত্রণা। কপালের শিরঃপীড়া।

আমরা কলেরা রোগে ক্যাম্ফরের কথা শুনিয়া থাকি, উহা এমন একটি রোগ, যাহাতে রোগী দ্রুত শয্যাশায়ী হইয়া পড়ে। তাহার মুখমন্ডল ঠান্ডা, নীল এবং কুঞ্চিত হইয়া পড়ে, কিন্তু তেমন ঘৰ্ম্ম থাকে না। এইরূপ রোগীর জন্য ক্যাম্ফরের কথা চিন্তা করিতে হয়। উদর হইতে বেশী স্রাব হয় না, বেশী বমন থাকে না, বেশী ঘৰ্ম্ম থাকে না, কিন্তু অকস্মাৎ রোগী ঠান্ডা নীল ও হিমাঙ্গ হইয়া পড়ে, যেন সে পক্ষাঘাতযুক্ত এবং অচৈতন্য হইয়া পড়িয়াছে।

মুখে ফেনা জন্মানর সহিত তড়কা। ওষ্ঠ নীল, স্ফীতিলাগা, ধনুষ্টঙ্কার। মুখে ঠান্ডা ঘৰ্ম্মের সহিত বমন। মুখের বিসর্পবৎ আকৃতি।

তুষ্ণা না থাকিলেও সে জল পান করিতে চায়। আবার অনিবার্য পিপাসাও থাকে, সে অসম্ভব পরিমাণ শীতল জল পান করিয়াও তৃপ্ত হয় না। সে আরও ঠান্ডা চায়, সে আরও জল চায় এবং উহা বমি করিয়া তুলে।

স্পষ্ট পাকাশয়িক উপদাহ বৰ্ত্তমান থাকে। সবকিছুই বমি হইয়া যায়। জিহ্বা নীল ও ঠান্ডা, শ্বাস-প্রশ্বাস শীতল হয়। শরীর হইতে যাহা নির্গত হয়, সবই ঠান্ডা। বুক হইতে যে-বায়ু ত্যক্ত হয়, তাহা কার্বো ভেজ’ বা ‘ভিরেট্রামে’র ন্যায় মাটির নীচের ঘর হইতে নির্গত বায়ুর মত ঠান্ডা। জিহ্বা শীতল ও কম্পনশীল। কলেরা রোগে এইরূপ অবস্থা দেখা দেয়। শীতল অবস্থায় আগাগোড়া জ্বালা থাকে। দেহের ভিতর জ্বালা করে, হাজিয়া যাওয়ার ন্যায় দেহের মধ্যে চিড়িক মারিয়া উঠে, উত্তাপ ব্যতীতই জ্বালার অনুভূতি থাকে।

পাকাশয়-প্রদাহে, পাকস্থলীতে এমন তীব্র যন্ত্রণা হয় যে, মুখশ্রী ‘আর্সেনিকের ন্যায় হইয়া পড়ে, পাকস্থলীতে সাঙ্ঘাতিক উদ্বেগ অনুভূত হয়, তাহার মনে হয়, যেন সে নিশ্চয়ই মরিবে। উকিতোলা ও বমনের সহিত, পাকস্থলীতে জ্বালাকর, বিদীর্ণকর, ছিন্নকর যন্ত্রণা। পাকস্থলীতে ও অন্ত্রে খালধরা বেদনা দেহের অন্যান্য অংশ পর্যন্ত বিস্তৃত হইয়া অবশেষে আক্ষেপ ও পশ্চাৎবক্রতা সৃষ্টি করে। পাকস্থলী গহ্বরের যাতনায় সে হতাশ হইয়া পড়ে। পাকস্থলীতে উত্তাপ। পাকস্থলীতে ঠান্ডার অনুভূতি। উদরদেশ শূলবৎ ব্যথা ও জ্বালায় পূর্ণ হয়। উদরে শীতলতাবোধ।

কলেরার মল, চাউলধোয়া জলের মত মল, তৎসহ উদ্বেগ, অস্থিরতা, পেশীর আক্ষেপ, বুকে খালধরা, অবসন্নতা, বর্ধমান শীতলতা এবং নীলিমা; রোগী অনাবৃত থাকিতে চায়, সে হিমাঙ্গ হইতে থাকে। এসিয়াটিক কলেরায় সেই প্রাচীন কালের ক্যাম্ফর, কুপ্রাম’ ও ‘ভিরেট্রাম’ এখনও সমভাবে উপযোগী। ক্যাম্ফারে অবসন্নতা, নীলিমা ও শীতলতা আছে, অথচ সে অনাবৃত থাকিতে চায় এবং তাহার দেহ শুষ্ক ও শীতল থাকে।

অপর দুইটি ঔষধেও কলেরার সবকিছুই আছে, কিন্তু কুপ্রামে শীতলতা তত বেশী নয়, খালধরা; আক্ষেপভাবই বেশী, রোগী ততটা অবসন্নও নয়! মত বেশী খালধরা থাকে, কুপ্রাম’ ও ততই উপযোগী হয়। যত বেশী মলস্রাব হয়, যত বেশী ও ঘর্ম থাকে, আমরাও তত বেশী ‘ভিরেট্রামে’র কথা ভাবি। ক্যাম্ফরে শীতলতা ও শুষ্কতা। ভিরেট্রামে’ শীতলতা ও প্রচুর স্রাব।

ঠান্ডা লাগার পর, অনিচ্ছায় কফিচূর্ণের মত ঘোরাল বাদামি মলের সহিত কর্ত্তনবৎ যাতনা, কোঁথানি। সময়ে সময়ে শীতলতা ও নীলিমাবিশিষ্ট কলেরা রোগী উকি তুলিতে ও বমি করিবার চেষ্টা করিতে থাকে, এবং সামান্যমাত্র মলত্যাগ করিবার জন্য ভয়ানক কোঁথ দিতে থাকে এবং ফলে এখানে সেখানে আক্ষেপ দেখা দেয়। এইরূপ উদর-লক্ষণ ক্রমশঃ বাড়িয়া বাড়িয়া আর কোঁথ দেওয়ার মত অবস্থা থাকে না, পক্ষাঘাতের ন্যায় অবস্থা উপস্থিত হয়। সরলান্ত্র সঙ্কুচিত ও যন্ত্রণাপূর্ণ বোধ হয়।

মূত্র ও জননেন্দ্রিয় সংক্রান্ত উপসর্গ থাকে। জ্বালাকর মূত্রত্যাগ। মূত্রকৃচ্ছ্রতা। পুনঃ পুনঃ মূত্রবেগ। কষ্টের সহিত সুৰ্ব্বদা মূত্রপ্রবৃত্তি। সরলান্ত্রে যেরূপ, মূত্রস্থলীতেও সেই অবস্থা উপস্থিত হয়, মূত্ররোধের সহিত তীব্র যাতনা দেখা দেয়। রোগী মূত্রত্যাগপাত্রে বসিয়া এবং মূত্রত্যাগের জন্য কোঁথ দিতে থাকে, কিন্তু মূত্রস্থলীর অবস্থা পক্ষাঘাতের ন্যায়। মূত্র লাল রক্তাক্ত, ‘ক্যান্থারিসে’র ন্যায় ফোটা ফোটা পড়ে। মূত্রস্থলীর গ্রীবায় কোঁথানি।

ক্যাম্ফর অসহনীয় প্রকারের সঙ্গমপ্রবৃত্তি সৃষ্টি করে। কোন কোন স্থলে অধিক মাত্রায় সেবনে উহার চূড়ান্ত দেখা যায়, আবার কোন কোন ক্ষেত্রে উহার ঠিক বিপরীত হয়। পরীক্ষাকালে ইহাতে বর্ধিত সঙ্গম প্রবৃত্তি ও ধ্বজভঙ্গ দুই দেখা গিয়াছিল। আমি কোন একজন ফরাসী মহিলার সহিত পরিচিত ছিলাম, পাগলের ন্যায় তিনি তাঁহার পুত্রগণকে সর্বদা বাড়ীতে তাহার কাছে রাখিতে চাহিতেন এবং মনে করিতেন যে, যদি তিনি তাহাদিগকে বালিকাদের নিকট হইতে দূরে রাখিতে পারেন, তাহা হইলেই কাজ হইবে এবং তাঁহাদের কামপ্রবৃত্তি দূর করিবার জন্য তাহাদের বালিশের নীচে একটি করিয়া কর্পূরের থলি রাখিয়া দিতেন। তাহাদের সকলেই ধ্বজভঙ্গযুক্ত হইয়া পড়িয়াছিল। ক্যান্থারিসে’র ন্যায় ইহাতেও ঐরূপ আছে।

ক্যাম্ফর সর্দি উৎপন্ন করে নাসিকা ও নাসিকা হইতে বায়ুনলীভুজগুলি পর্যন্ত বায়ুপথে প্রচুর স্রাব দেখা দেয়। শিশু ও বৃদ্ধগণের ব্রঙ্কাইটিস। বৃদ্ধ শীর্ণ ব্যক্তিদের হাওয়ায় উন্মুক্ত থাকায় প্রতিবারই সর্দি লাগে, তাহার ঠান্ডা ও শীতার্ত্ত হয়। এন্টিম ক্রুড’, ‘এমন কাৰ্ব্ব’ ও ক্যাম্ফর অশীতিপর বৃদ্ধদের এক আশ্চর্য্য ঔষধ। প্রত্যেক ঠান্ডাই ভীতিপ্রদ বোধ হয়। যুবকদিগের ন্যায় বৃদ্ধ ব্যক্তিরা একইভাবে ঠান্ডায় শয্যাগত হয় না, তাহারা অবসন্ন হইয়া পড়ে, শৰ্য্যাগত হয়, বুকের মধ্যে ঘড়ঘড়ি দেখা দেয়, পরিজনেরা মনে করে উহা মৃত্যুঘড়ঘড়ি, এ যেন ঠাকুরদাদার শেষ অবস্থা। এই অবস্থায় পূর্বোক্ত তিনটি ঔষধ উপযোগী, এবং উহাদের যেন নিউমোনিয়ার বৰ্দ্ধিত অবস্থা। এন্টিম ক্রুড’, ‘এন্টিম টার্ট’ ‘এমন কাৰ্ব্ব’ এবং ক্যাম্ফর উত্তাপ অবস্থা না থাকিলে ঐরূপ ক্ষেত্রে উপযোগী হইবে। ক্যাম্ফরে উত্তাপ একরূপ নাই, উহাতে উত্তাপের অনুভূতি আছে, কিন্তু কোন স্পষ্ট উত্তাপ নাই। এই ঔষধের আরও লক্ষণ আছে, যাহা বৃদ্ধগণের মধ্যে পাওয়া যায়।

পেশীর উৎক্ষেপ, কম্পন ও ঝাঁকি দিয়া উঠা। কম্পনের সহিত আক্ষেপিক অবস্থা। জিহ্বার কম্পনশীলতা।

ক্যাম্ফরের সর্বাঙ্গীন ধাতুগত অবস্থা-শীতলতা এবং শীতলতার অত্যনুভূতি। তরুণ প্রদাহিক অবস্থাতেও সে শীতল থাকে এবং গাত্রাবরণ রাখে না। তরুণ রোগে প্রবল তৃষ্ণা থাকে, পুরাতন রোগে তৃষ্ণা থাকে না। আর্সেনিকের অনুরূপ, তরুণ রোগে তৃষ্ণার্ত, পুরাতন রোগে তৃষ্ণাহীন।

ক্যাম্ফরের তরুণ রোগে আর একটি মনে রাখিবার মত প্রয়োজনীয় বিষয় আছে। উহা এই যে, উত্তাপের সময় এবং যখন যন্ত্রণা হইতে থাকে, সে আবৃত থাকিতে চায়। তাহার শীতলতা, শীতলতা দ্বারাই উপশমিত হয়, সে আরও ঠান্ডা চায়

অপর নাম – ক্যাম্ফোরা (Camphora)

বাংলায় – কর্পূর।

লরেসি জাতীয় ক্যাম্ফোরা নামক একপ্রকার সুদীর্ঘ, সুন্দর চিরহরিৎ বৃক্ষের কাষ্ঠ খণ্ড খণ্ড করে উর্ধ্বপাতন করলে কর্পূর পাওয়া যায়। এই কর্পূরের সঙ্গে অ্যালকোহল মিশিয়ে মলূ অরিষ্ট তৈরী করা হয়।

ক্যাম্ফরের – মূলকথা

১। জীবনীশক্তির সম্পূর্ণ অবসন্নতা সহকারে বাহ্য দেহের (বোগীর গায়ের) অতিশয় শীতলতা; হিমাঙ্গ বা পতনাবস্থা বা কোলাপ্স (collapse)।

২। স্পর্শে শরীর অতিশয় শীতল হওয়া সত্ত্বেও রোগী গায়ে কাপড় চাপা দিয়ে থাকতে চায় না; সবকিছু আবরণ ছুঁড়ে ফেলে দেয়।

৩। বেদনার কথা চিন্তা করলেই উহা অন্তর্হিত হয়; শীতল বাতাসে অতিশয় অনুভবাধিক্য।

ক্যাম্ফর – পরিক্রমা

১। যে প্রধান চরিত্রগত লক্ষণটিকে কেন্দ্র করে ক্যাম্ফরের সমগ্ন ক্রিয়া পরিভ্রমণ করে, তা হল – “বাহ্যগাত্রে অতিশয় শীতলতা সহ জীবনীশক্তির আকস্মিক ও সম্যক অবসন্নতা বা কোলাপ্স।”

অতএব এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই যে, কেন হ্যানিম্যান তার কলেরা রোগের ত্রয়ী ক্যাম্ফর, কুপ্ৰাম ও ভেরেট্রামের মধ্যে ক্যাম্ফরকে শীর্ষস্থান দিয়েছিলেন।

যদি আমাদের এককথায় এর অবস্থাটিকে বর্ণনা করতে হয়, তাহলে বলতে হবে কোলাপ্স বা পতনাবস্থাই বা হিমাঙ্গবস্থাই এর প্রধান লক্ষণ। তবে কলেরা রোগে ক্যাম্ফর ও ভেরেট্রাম অ্যালবাম খুব কাছাকাছি সম্পর্ক যুক্ত।

ক্যাম্ফর, ভেরেট্রাম ও কুপ্ৰামের পার্থক্য –

ক্যাম্ফরের হিমাঙ্গ অবস্থায় বেদনাশূন্য ভেদ (পাতলা পায়খানা) হয় অথবা একেবারেই পায়খানা (দাস্ত) হয় না।।

কিন্তু ভেরেট্রাম অ্যালবামে প্রভূত ভেদবমনের ফলেই হিমাঙ্গ অবস্থা উপস্থিত হয়। উভয় ঔষধেই বাহ্য দেহে অত্যন্ত শীতলতা থাকে। ভেরেট্রামে মড়ার মত বিশীর্ণ মুখমণ্ডল ও কপালে সুস্পষ্ট শীতল ঘাম হয়। উদরে ও হাতে পায়ে যদি খালধরা (cramps) বর্তমানে থাকে তাহলে কুপ্রাম এই ত্রয়ীর মধ্যে প্রধান স্থান গ্রহণ করে। এই চরিত্রগত লক্ষণগুলি যে কেবলমাত্র কলেরা রোগে বর্তমান থাকে, তা নয়। যে কোন রোগেই প্রকাশ পেতে পারে।

* ক্যাম্ফরে হিমাঙ্গতার একটি বিশেষত্ব আছে, যথা রোগী বাহ্যত যতই শীতল হোক না কেন, কোনমতেই বস্ত্রাবৃত হতে চায় না, উহাতে আপত্তি করে।

সিকেলি করের হিমাঙ্গতাও ঠিক এইরকম। এমনকি বাৰ্ধক্যজনিত গ্যাংগিন রোগেও এই লক্ষণে ইহা একটি উপযোগী ঔষধ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।

* নেপলসের ডাঃ রুবিনী ক্যাম্ফর দ্বারা ৫৯২ জন কলেরা রোগীর আরোগ্য করেছিলেন।

* দৈহিক শীতলতা ও উত্তাপে বিরক্তি সহ হিমাঙ্গ অবস্থা বা হামাদি সস্ফোট জ্বরের.উদ্ভেদ বসে গিয়ে অথবা শিশু কলেরার শেষাবস্থায়, নিউমোনিয়ায়, কিংবা ক্যাপিলারি ব্রঙ্কাইটিসে এবং দারুণ শীতভোগে বা ঠাণ্ডা লাগায় অথবা অভিঘাতের ফলে (traumatic shock) দেখা দিলে ক্যাম্ফর উপযোগী। অর্থাৎ মৃত্যু ভিন্ন যেকোন কারণেই এই অবস্থা আসুক না কেন, তাতে কিছু আসে যায় না। একমাত্রা ক্যাম্ফরের কথা চিন্তা করবেন। তবে এক্ষেত্রে রোগীর ঔষধ গ্রাহিতা-শক্তি (susceptibility) ও সামর্থ্য অনুসারে মূল অরিষ্ট থেকে উচ্চক্রম পৰ্য্যন্ত একে বিভিন্ন প্রকারে ব্যবহার করা যেতে পারে।

Camph : Camphora Officinarum
Universal antidote to homoeopathic remedies.Painful coldness. Icy cold, yet averse to covers, with internal burning heat and anxiety. Sudden weakness. Dry collapse, scanty or retained discharges.


A/F:

– Shock from injury

– Free discharges

– Cold; drafts

– Suppressed eruptions, perspiration, discharges

– Cold air

– Sunstroke

– Vexation

– Operations


MODALITIES:

< When half asleep

< Shock

< Mental exertion

< Inattention

< SUPPRESSIONS

< Motion

< Night

< Darkness

< Touch

> Sweat

> Thinking of complaints

> Drinking cold water

> Open air

> Warmth


MIND:

– Attacks of TERROR BY NIGHT, afraid to go to sleep at night.

– Desire for company at night; anguish at night as if dying.

– Great anxiety and extreme restlessness.

– Feels she is going to die; relieved when she finds herself alive.

– Religious despair.

– Loquacious with hasty speech, speech incoherent, wandering.

– Lewdness, destructiveness of clothes.

– Wants to jump out of bed or window, does not like anyone near him. Nothing satisfies him.

– Closes her eyes and answers no questions.

– Quarrelsome, rage with mania to dispute.

– Feels unloved by family, forsaken or isolated.


GUIDING INDICATIONS:

– Bad effects of SHOCK from injury, infection or exposure. Surface of the body cold, face pale, blue lips, livid profound prostration.

– COLDNESS, CRAMPS and CONVULSIONS with mental anguish.

– Patient becomes icy cold yet he is AVERSE TO COVERS (Carb-v, Sec) or wants them off and then on alternately with internal burning heat and anxiousness. Very sensitive to cold air or taking cold. Inhaled air seems cold. Skin and breath cold. (Verat, Jatr).

– Internal heat and external coldness.

– Feeling as if cold wind were blowing over the body.

– COLLAPSED CONDITION with coldness and lividity.

– SCANTINESS or RETENTION of discharges. i.e. Dry collapse with little vomiting and purging in cholera.

– In acute complaints, there is VIOLENT THIRST, in chronic complaints, thirstlessness.

– Camphor antidotes nearly every vegetable medicine; also tobacco, fruits containing prussic acid. Poisonous mushrooms should not be allowed in the sick room in the crude form.

– Sleep extends into a coma.

– Head-Pains fleeting, stitches in temporal region and orbits.

– Occipital throbbing synchronous with the pulse.

– Face- Nose cold and pointed.

– Bluish, old, pinched look.

– Mouth drawn into a grinning position. Risus sardonicus.

– G.I.T.- Sudden attacks of vomiting and diarrhoea.

– Cramps in the stomach and bowels spreading to other parts of body, especially in calf muscles, until there are convulsions and opisthotonos.

– Respiratory system- First stages of a cold, with chilliness and sneezing.

– Hoarse, squeaking voice.

– Asphyxia neonatorum.

– Cold breath.

– Chilly, below scapulae, before colds.

– Pneumonia or bronchitis with collapse (Laur, Ant-t).

– C.V.S.- Camphor is used as a heart stimulant for emergency.

– C.N.S.- Violent convulsions with wandering and hysterical excitement.

– Tetanic spasms, with showing of the teeth, with retraction of the lips, followed by stupor with coldness.

– Thumbs cramp backwards.

– Cramps in calves.

– Urinary system- Strangury.

– Haematuria.

– Nephritis. Green urine.

– Cystitis with burning dysuria.

– Genitalia- Sexual excitement, satyriasis.

– Extremities- Arthritic pains felt as cold and painful.

– Cold spots.

– Cold hands and feet.

– Cramps in feet, especially the dorsum of the foot.

– Fever- Shaking chill with cold skin.

– Wants covers during the hot stage only.

– Covers during fever, uncovers once skin becomes cold (Kent).

– Sudden inflammatory fevers with rapid alternation of heat and cold, followed by rapid prostration.

– Heat or sweat > covers.

– Skin- Measles and scarlatina, when eruption does not appear with pale or cold blue hippocratic face, chill, will not be covered.

– Dry skin.

– Erisepelas.

– RASHES FROM EXPOSURE TO SUNLIGHT (Nat-m, Bell).


KEYNOTES:

1. Icy coldness of surface, yet aversion to covering, and then on alternately with internal burning heat and anxiousness.

2. Collapsed condition with coldness and lividity.

3. Scantiness or retention of discharges. Dry collapse with little vomiting and purging.

4. Cramps in the stomach and bowels spreading to other parts of body especially in calf muscles.

5. Pains are > thinking of them.


NUCLEUS OF REMEDY:

– A state of collapse or shock with coldness, cramps, convulsions and mental anguish.

– Icy coldness of the body, yet aversion to covering, throws off all the covers, alternately with internal burning heat and anxiousness.


CONFIRMATORY SYMPTOMS:

1. Icy coldness of the body in collapsed condition, yet aversion to covering, alternating with internal burning heat and anxiousness.

2. Scantiness or retention of discharges.

3. Cramps in stomach and bowels spreading to other parts, like calf muscles.

4. Very sensitive to cold air or taking cold.

5. Pains are better by thinking of them.


CLINICAL:

-Asphyxia neonatorum, Cholera, Chronic fatigue syndrome, Collapse with chills, Dysentery, Fainting, Inflammatory fevers, Influenza, Nephritis, Pneumonia, Sepsis, Sunstroke, Urinary tract infections.

-It is an universal antidote to all vegetable drugs.

-Always give camphor in sugar or milk- Dr. Tyler.


REMEDY RELATIONSHIPS:

Complementary : Canth.

Inimical : Kali-n.

Compare : Agar, Aloe, Ars, Carb-an, Carb-v, Croto-t, Cupr, Dulc, Op, Phos, Verat.

Antidoted By : Dulc, Nit-s-d, Op, Phos.

It Antidotes : Am-c, Canth, Carb-v, Cupr, Lyc, Nat-m, Nearly every vegetable medicine, Squil.

Duration Of Action : 1 Days.


✅ আমাদের সফল চিকিৎসার প্রমাণ দেখুন।

(ডান পার্শের মেনুতে রোগের নাম লিখে সার্চ করুন)

[videogallery id=”Success of Homeopathy”]

.
.

About The Author

D.H.M.S (Dhaka), M.M (BMEB) Consultant Homoeopathic physician Researcher, books author and speaker Owner of HD Homeo Sadan  CEO of HD Health Lecturer: Ashulia Homeopathic Medical College

Related posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *