Cann-i | ভুলো মন, কোন বিষয় বলতে আরম্ভ করে কি বলতে চায় তা ভুলে যায়। |
Cann-i | সামান্য বিষয়ে অত্যন্ত হাসে, হাসি চেপে রাখতে পারে না। |
Cann-i | সময় ও স্থান সম্বন্ধে ভ্রম, সময় অত্যন্ত দীর্ঘ মনে হয়। |
Cann-i | মনে হয় যেন মাথার খুলি একবার খুলছে আবার বন্ধ হচ্ছে অথবা শূন্যে উঠছে ও নামছে। |
Cann-i | মানুষের সামনে লিঙ্গ চুলকায়। |
Cann-i | গাড়িতে উঠলে বমি করে। |
Cann-i | মলদ্বার ও জননেন্দ্রিয়ের মধ্যবর্তী স্থান (Perineum) ফোলা অনুভূতি, মনে হয় যেন একটি বলের উপর বসে আছে। |
অত্যন্ত ভুলো মন- বক্তব্যের শেষ কথা ও ঐ সময়ের কি ধারণা তা ভুলে যায়। কথা বলতে বলতে কি বলতে চাচ্ছে তা ভুলে যায়। মাথায় নানা চিন্তা ভিড় করে তাই কোন চিন্তা বা ঘটনা মনে করতে পারে না। (এনাকা, ল্যাক-ক্যা)।
একটার পর আরেকটা মতলব আঁটতে থাকে। তুচ্ছ কথা বললেও সে ভীষণ হাসতে থাকে। নানা রকম হাসিঠাট্টা ও ক্ষতিকর মতলব আঁটে কিন্তু তারপরই আবার বিলাপ করতে ও কাঁদতে থাকে। মাতালদের বাচালতা, সময় ও দূরত্ব সম্বন্ধে অতিরঞ্জিত ধারণা।
সময় যেন কাটতে চায় না (আর্জ-নাই); কয়েক সেকেন্ড কয়েক যুগ বলে মনে হয়।
দূরত্ব অত্যন্ত বেশী বলে মনে হয়, কয়েক গজ যেন কয়েক মাইল। মাথার খুলি যেন একবার খুলে যাচ্ছে আবার একবার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এমন অনুভূতি (এক্টিয়া-রেসি)।
মনে করে পেরিনিয়াম (মলদ্বার ও জননেন্দ্রিয় এই দুইটির মাঝের স্থান) ও মলদ্বারের কাছে কোথাও যেন ফুলে গেছে। যেন সে একটা বলের উপর বসে আছে। (প্রস্রাবে দড়ির মত শ্লেম্মাসহ এই অনুভূতি-চায়না)।
সম্বন্ধ – বেল হায়োস, ষ্ট্র্যামো, তুলনীয় ।
শক্তি—৩০, ২০০।
এই ঔষধ উষ্ণ প্রকৃতির মনোবৃত্তিকে দমন করে রাখে এবং অত্যন্ত স্পষ্টভাবে কল্পনা শক্তিকে প্রভাবিত করে, এস্বত্ত্বেও নিম্নস্তরের অথবা পশু জাতীয় প্রবৃত্তিকে তেমন ভাবে উত্তেজিত করেনা। ঔষধটি একটি প্রবল উল্লাসকর অবস্থা তৈরী করে। এই সময় সকল উপলব্ধি ও কল্পনা, যাবতীয় অনুভূতি ও আবেগ সর্বোচ্চ মাত্রায় বৃদ্ধি পায়।
অর্ধচেতন বা দিগন্তিত চিন্তাধারা। ঐ সময় মনে হয় রোগী দ্বিতীয় ব্যক্তিত্বের নিয়ন্ত্রনাধীন, কিন্তু মূল ব্যক্তিত্ব, দ্বিতীয় ব্যক্তিত্বের কাজ কর্মে বাধা দেয়। এই অবস্থায় দুটি ব্যক্তিত্ব স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে না, একটি অপরটির উপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে (এক ড্রাম মাত্রায় ঔষধ সেবন করে ডঃ অ্যালবার্ট, এই জাতীয় লক্ষণগুলি পেয়েছেন।
পরীক্ষকের মনে হয় তিনি গাঁজার স্বপ্নময় জগৎ থেকে সম্পূর্ণ পৃথক এবং তিনি যুক্তি সঙ্গত ভাবে চিন্তা করতে সক্ষম।
এই ঔষধ স্পষ্টরূপে মানসিক বিভ্রান্তি ও কল্পনার সৃষ্টি করে থাকে, সময়ের ব্যাপকতা ও স্থানের বিস্তৃতি সম্পর্কে অতিরঞ্জিত ধারনাই এই ঔষধের মূল বৈশিষ্ট্য। সময়, স্থানের আয়তন ও স্থান সম্পর্কিত ধারণার লোপ। ভীষণরকমের সুখী, তার কোন কিছুতেই কষ্ট দুঃখ হয়না, নিজের সম্পর্কে, কোন কিছুতেই তার কোন অসুবিধা হয় না। পরস্পর চিন্তা ধারার ভিড়। বিভিন্ন প্রকারের স্নায়বিক রোগে এই ঔষধের একটি আরামদায়ক প্রভাব আছে, যেমন, মৃগী, উন্মদনা, বুদ্ধিবৃত্তির হ্রাস পাওয়া, সকম্প প্রলাপ এবং বিরক্তিকর প্রতিবর্ত ক্রিয়া প্রভৃতি। গলগন্ড, শারীরিক নিস্তেজ ভাব।
মন — খুব বেশী কথা বলে ;অতিরিক্ত উল্লাস বা উৎসাহ। সময় অত্যন্ত দীর্ঘ বলে মনে হয়; প্রতিটি সেকেন্ড সময় একটি যুগ বলে মনে হয়; সামান্য কয়েক হাত দূরত্ব, অনেকটা ব্যবধান বলে মনে হয়। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন সিদ্ধান্ত তৈরী করে। উদ্বেগসহ হতাশ; পাগল হয়ে যাবে সর্বদা এই জাতীয় ভয়। বাতিকগ্রস্ত, প্রতিনিয়ত নড়াচড়া করে। অত্যন্ত বিস্মৃতিশীল; কিছুতেই বাক্য শেষ করতে পারে না। সর্বদা সুখকর চিন্তা মধ্যে নিজেকে হারিয়ে ফেলে। নিয়ন্ত্রনাধীন নয়, এই জাতীয় হসি। কম্পযুক্ত প্রলাপ। দিব্যদৃষ্টি, আবেগপূর্ণ উত্তেজনা; দ্রুত পরিবর্তনশীল মানসিক অবস্থা। রোগী (স্ত্রী) তার নিজের স্বরূপ কি তা উপলব্ধি করতে পারে না, পুরাতন মাথা ঘোরা, যেন ভেসে বেড়াচ্ছে এই জাতীয় অনুভূতি।
মাথা – মনে হয় যেন, মাথার উপরের অংশ উন্মুক্ত হচ্ছে ও বন্ধ হচ্ছে এবং মাথার উপরের অংশে যেন, উপর দিকে উঠে যাচ্ছে। মস্তিষ্কের ভিতর আঘাত (এলো; কোকা)। রক্তে ইউরিয়ার পরিমাণের বৃদ্ধির ফলে মাথার যন্ত্রণা। মাথার পিছনের অংশে দপদপ করে ও ভার বোধ। মাথার যন্ত্রণা তৎসহ পেট ফাঁপা। অসাড়ে মাথা নড়ে। আধকপালে শুরু হবার পূর্বে অস্বাভাবিক জাতীয় উত্তেজনা ও বাচালতা।
চোখ — দৃষ্টি স্থির। পড়ার সময় অক্ষরগুলি পরস্পরের সঙ্গে মিশে যায়। দিব্যদৃষ্টি। ভূত সম্পর্কিত বিভ্রান্তি কিন্তু ভয় ভাব থাকেনা।
কান – কানের ভিতর দপদপ করে, বুজবুজ ও ঝিনঝিন্ শব্দ। কানের ভিতর ফুটন্ত জলের মত শব্দ। শব্দে অত্যন্ত অনুভূতি প্রবল।
মুখমণ্ডল — নিদ্রালুতা ও বোকার মত মুখ ভঙ্গী। ঠোঁট দুটি আঠা জোড়া লাগার মত। ঘুমের ভিতর দাঁত কড়মড় করে। মুখ গহ্বর ও ঠোঁট শুষ্ক। লালা গাঢ়, ফ্যানাযুক্ত ও চটচটে। (পাকস্থলী — খিদে বেড়ে যায়। হৃদপিন্ডের স্থানে পাকস্থলীর অংশে বেদনা; চাপে উপশম। পাকস্থলীর স্ফীতি। পাকস্থলীর নিম্নাংশের মুখের আক্ষেপ। পেটের রক্তবহানলীগুলিতে প্রচন্ড টানভাবের মত অনুভূতি, মনে হয় ঐগুলি প্রসারিত হতে হতে ফেটে যাবে।
সরলান্ত্র – গুহ্যদ্বারে, একটি বলের উপর বসে থাকার মত অনুভূতি।
প্রস্রাব – প্রস্রাব পিচ্ছিল শ্লেষ্মায় পূর্ণ। প্রস্রাব করার সময় অবশ্যই কোঁথ দিতে হয় এ ফোটা-ফোটা করে প্রস্রাব; প্রস্রাব করার আগে কিছু সময় অপেক্ষা করতে হয়। প্রস্রাব নলীতে সূঁচ ফোটার মত জ্বালাকর বেদনা। ডানদিকের বৃক্ক স্থানে অল্প অল্প বেদনা।
পুরুষের রোগ – সঙ্গমের পরে, পিঠের বেদনা। লিঙ্গমুন্ড থেকে সাদা, চকচকে শ্লেম্মা ছুঁয়ে ছুঁয়ে পড়ে। পুরুষের কামোন্মত্ততা। বহুসময় ধরে সঙ্গম সুখের অনুভূতি। যন্ত্রনাদায়ক লিঙ্গোদ্রেক। মূলাধারে অথবা মলদ্বারের নিকটবর্তী অংশে স্ফীতির ন্যায় অনুভূতি, যেন মনে হয় রোগী একটি বলের উপর বসে আছে।
স্ত্রীরোগ — মাসিক ধাতুস্রাব প্রচুর, কালচে, যন্ত্রনাদায়ক, জমাট বাঁধে না। ধাতুস্রাবের সময় কোমরের বেদনা। জরায়ুর বেদনা সহ তীব্র স্নায়বিক উত্তেজনা এবং অনিদ্রা। বন্ধ্যাত্ব (বোরাক্স)। যন্ত্রনাদায়ক মাসিক ধাতুস্রাব তৎসহ কামোচ্ছাস।
শ্বাস-প্রশ্বাস – হাঁপানী। বুকের ভিতর ভারবোধ তৎসহ গভীর,কষ্টকর শ্বাস-প্রশ্বাস।
হৃদপিন্ড – হৃদ্কম্পের জন্য রোগী ঘুম থেকে জেগে উঠে। ফোঁটানোর মত বেদনা সহ হৃদপিন্ডে ভারবোধ। নাড়ীর গতি খুবই ধীর। (ডিজিট্যালিস, ক্যালমিয়া, অ্যাপোসাইনাম)।
অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ — শিরদাঁড়া ও মেরুদন্ডের উপর দিয়ে বেদনা; সামনের দিকে ঝুঁকে থাকতে বাধ্য হয়; সোজা ভাবে কিছুতেই চলাচল করতে পারে না। বাহু ও হাতের ভিতর দিয়ে এক প্রকার শিহরণ এবং হাঁটুর ভিতর দিয়ে নীচে নামে এই জাতীয় শিহরণ। সমগ্র নিম্নাংঙ্গের পক্ষাঘাত; পায়ের ডিমে ও তলায় বেদনা, হাঁটু ও গোড়ালিতে তীব্র বেদনা ; সামান্য হাঁটার পরে ভীষন ক্লান্তি বোধ।
ঘুম — অত্যন্ত নিদ্রালু, কিন্তু ঘুমাতে যেতে পারে না। মারাত্মক ধরনের অনিদ্রা। ইন্দ্রিয় সমূহের শক্তিহীনতার ফলে শরীরের নিস্তেজ ভাব। মৃতদেহের স্বপ্ন দেখে; ভবিষ্যত বানী সম্পর্কিত। রাত্রে বোবায়, ধরা।
কমা-বাড়া – বৃদ্ধি, সকালে; কফি, মদ ও ধূমপানে; ডানদিক চেপে শুলে। উপশম — মুক্ত বাতাসে, ঠান্ডা জলে ও বিশ্রাম।
সম্বন্ধ – বেলেডোনা, হায়োসায়ামাস, স্ট্রামোনিয়াম, ল্যাকেসিস, এগারিকাস, এ্যালেন (সময় সংক্রান্ত ধারনার বিশৃঙ্খলা, সময় সংক্রান্ত ধারনার বহুগুন বৃদ্ধি, ফলে এক মিনিট সময় এক ঘন্টা বলে মনে হয় প্রভৃতি)।
শক্তি — আরষ্ট ও নিম্নশক্তি।
শরীর ও ইন্দ্রিয়জ্ঞানের একপ্রকার অদ্ভুত বিকৃত অনুভূতি দেখা দেয়। মনে হয়, যেন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও শরীরের অংশগুলি বড় হইয়া গিয়াছে। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের উপর একপ্রকার সুখকর রোমাঞ্চ অনুভূত হয়। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলি কম্পিত হয়। শরীরের উপর অত্যন্ত দুর্বলতা বিস্তৃত হইতে থাকে। লক্ষণগুলি নিস্পন্দ বায়ুরোগ সদৃস হয়। অনুভূতিজ্ঞান এবং পৈশিক শক্তি নষ্ট হইয়া যায়। বিশ্রামে লক্ষণগুলির উপশম হয়। চিত্তের উন্নত অবস্থার সহিত আনন্দভাব। অদ্ভুত অদ্ভুত এবং অবাস্তব কল্পনা। সময় ও দূরত্ব সম্বন্ধে অদ্ভুত প্রকারের আতিশয্য বোধ। তাহার বোধ হয়; যেন তাহাকে আকাশপথে লইয়া যাওয়া হইতেছে। মনে হয়, যেন তাহার দুইটি অস্তিত্ব রহিয়াছে, দুইটি অবস্থা সম্বন্ধে চেতনা রহিয়াছে, অথবা সে দুই স্থানে বর্তমান আছে। ভ্রান্ত দর্শন। অসংলগ্ন কথা। গুরুতর কথায় হাস্য করে। হাসে ও কাঁদে। আক্ষেপিক হাসি। তামাসা করে, ঘ্যানঘ্যান্ করে ও কাঁদে। মৃত্যুভয়, পাগল হইবার ভয়, অন্ধকারে ভয়। উৎকণ্ঠা ও দুঃখ। মানসিক লক্ষণ খোলা বাতাসে বেড়াইলে উপশমিত হয়। দুর্বলতার সহিত তাহার আর এক বিদরীত ভাব বর্তমান থাকে। সে জ্ঞানহারা হয় ও পড়িয়া যায়। যুক্তিপূর্ণ কথাবার্তার পরক্ষণেই অযৌক্তিক কথা বলে, এবং পুনঃ পুনঃ অবস্থা বদলাইতে থাকে। কথা ও ধারণা ভুলিয়া যায়। তাহার বাক্য সম্পূর্ণ করিতে পারে না। চিন্তার পর চিন্তা আসিয়া এরূপ বিশৃঙ্খলা ঘটায় যে, সে সংলগ্ন বাক্যালাপ করিতে পারে না। তাহার মন অসম্পূর্ণ কল্পনা ও কাল্পনিক ছবিতে পূর্ণ থাকে। মনের মধ্যে অবিরত অদ্ভুত অদ্ভুত ধারণা জন্মিতে থাকে। বাচালতা। কোন বিষয়ে যুক্তিপূর্ণভাবে চিন্তা করিবার মত মনঃসংযোগ করিতে পারে না। চিন্তা করিতে চেষ্টা করলে নানা অদ্ভুত কল্পনা ও ধারণা আসিয়া বাধা দেয়। মনের সম্মুখে স্বপ্নের পর স্বপ্ন চলিতে থাকে। সে তাহার অদ্ভুত মানসিক বিশৃঙ্খলার মধ্যে নানা কণ্ঠস্বর, ঘন্টাধ্বনি, সঙ্গীত শুনিতে পায়।
মনে হয়, যেন মাথার খুলিটি একবার খুলিতেছে আবার বন্ধ হইতেছে অথবা একবার স্বস্থান হইতে উঁচু হইয়া উঠিতেছে, আবার নামিতেছে। মাথার মধ্যে দপদপকর বেদনা। মাথার পশ্চাদ্ভাগে দপদপানির সহিত ভারবোধ। জ্ঞানলাভের পর অথবা নিদ্রাভঙ্গে মস্তিষ্কমধ্যে সম্মাতের অনুভূতি। শঙ্খদ্বয়ে সূঁচীবিদ্ধবৎ যন্ত্রণা। মাথার ত্বকে টানবোধ। মস্তক-ত্বকে স্পর্শকাতরতা। দৃষ্টির অপরিচ্ছন্নতা। দৃষ্টিপথে অলীকদর্শন। অক্ষরগুলি জুড়িয়া যায়। শ্রবণশক্তি তীক্ষ্ণ হয়। কর্ণে সঙ্গীত ও ভনভন্ শব্দ, দপদপানি। মুখমন্ডল বিবর্ণ ও বসা। পাগলের মত দৃষ্টি। বোকার মত দৃষ্টি। রুগ্ন, ভাবহীন দৃষ্টি। নিদ্রাকালে দাঁত কড়মড় করে। তোঁতলামি। ধাতব আস্বাদ। জলের ইচ্ছা এবং জলের ভয়। উদরাধ্মান, উদরস্ফীতি, উদ্গার উঠিলে উপশম।
বহুসংখ্যক মূত্রসম্বন্ধীয় লক্ষণ আছে। মূত্রপিন্ডের প্রদাহের সহিত জ্বালাকর বেদনা। মূত্রপিন্ডে বেদনা ও মৃদু কনকনানি। মূত্রপিন্ডে সূঁচীবিদ্ধবৎ বেদনা। অবিরত অথবা পুনঃ পুনঃ মূত্রত্যাগ। নির্গমনকালে মূত্রে জ্বালা করে। মূত্রত্যাগের পূৰ্ব্বে, সময়ে ও পরে মূত্রনালীতে জ্বালা ও হুলবিদ্ধবৎ যন্ত্রণা। এই ঔষধে বহু গণোরিয়া রোগী আরোগ্য হইয়াছে। ইহা গণোরিয়ার প্রথম অবস্থার উপযোগী এবং ক্যানাবিস স্যাটিভায় যে-সকল লক্ষণ দেওয়া হইয়াছে, তাহাও আরোগ্য করে। মূত্র-প্রবাহ আরম্ভ হইবার জন্য অপেক্ষা করিতে হয়। মূত্রত্যাগের পর ফোঁটা ফোঁটা মূত্র পড়ে। মূত্রের মধ্যে যথেষ্ট শ্লেষ্মা থাকে। ইহা গণোরিয়া রোগের কষ্টকর লিঙ্গোচ্ছ্বাসে উপকারী। গণোরিয়ায় স্রাব হরিদ্রাবর্ণ।
পুরুষ ও স্ত্রী উভয়েরই সঙ্গম-ইচ্ছা বর্ধিত হয়। আপনা হইতেই কষ্টকর লিঙ্গোদ্রেক হয়। ঋতুস্রাব প্রচুর ও তরল, থাকিয়া থাকিয়া প্রসববেদনার ন্যায় ব্যথা। জরায়ুর আক্ষেপ। গর্ভস্রাব আশঙ্কা, গণোরিয়াজনিত গর্ভস্রাব সম্ভাবনা, দুই সপ্তাহ অন্তর ঋতুস্রাব উপস্থিত হয়।
বক্ষের আক্ষেপিক চাপবোধ, তৎসহ শ্বাসরোধভাব। নিদ্রাকালে হৃৎস্পন্দন। সারা রাত্রি শ্বাসরোধভাবের সহিত হৃৎপিন্ডে চাপনবৎ বেদনা হৃৎপিন্ডে সূঁচীবিদ্ধবৎ যাতনা। নাড়ী ধীর বা দ্রুত এবং অনিয়মিত; কম্পনশীল; স্নায়বিক নাড়ী।
ঋতুকালে পৃষ্ঠে বেদনা। মেরুদন্ডস্থানে বেদনা, সেইজন্য সোজা হইয়া হাঁটিতে পারে না।
কম্পন ও রোমাঞ্চের সহিত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের পক্ষাঘাতিক দুর্বলতা। অঙ্গাদির ও পায়ের পাতার অসাড়তা। পদতলে কাঁটা ফোটার ন্যায় বেদনা। বিশ্রামে উপশম ও সঞ্চালনে বৃদ্ধি, চলিতে গেলে নিম্নাঙ্গের মধ্য দিয়া ভীষণ যন্ত্রণা।
নিদ্রাতুর, কিন্তু নিদ্রা যাইতে পারে না। নিদ্রার মধ্যে হাতে-পায়ে ঝাঁকি দিয়া উঠে। মৃতদেহ সম্বন্ধে স্বপ্ন। স্বপ্নে ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে নানা কথা জানিতে পায়। বুকচাপা স্বপ্ন।
চৰ্ম্মে কাঁটা ফোটার ন্যায় বোধ, সর্বাঙ্গে পোকা হাঁটার ন্যায় বোধ ও চুলকানি মনে হয়, চৰ্ম্ম। দেহের উপরে টান করিয়া রাখা হইয়াছে, অনুভূতিজ্ঞানের অভাব।
অপর নাম – ইণ্ডিয়ান হেম্প (Indian hemp)
বাংলা – গাঁজা বা ভাঙ্গ (Bhang)
* আর্টিকেসী জাতীয় ক্যানাবিস ইণ্ডিকা নামক গাছের মঞ্জুসিত শাখাকে গঞ্জিকা বা গাঁজা বলে। ইহা ভারতবর্ষে জন্মে। এর উপক্ষারকে ক্যানাবিন (চরস) বলে। উক্ত বিদ্যায় ক্যানাবিস ইণ্ডিকা ও ক্যানাবিস স্যাটাইভা রকম হলেও ভৈষজ্য গুণে এরা বড়ই আলাদা। ক্যানাবিস ইণ্ডিকার শুকনো শাখা থেকে মূল অরিষ্ট তৈরী করা হয়।
হৃৎপাটিকার (valvular) রোগজনিত শোথে একজন রমণী রুগ্ন ছিলেন। শোথ ভাল হওয়ার পরু হঠাৎ তার কথা বলার শক্তি লোপ পায়। কোন কথার উত্তরে তিনি বাক্য আরম্ভ করতে পারতেন কিন্তু শেষ করতে পারতেন না। কারণ যা বলতে চাইতেন তা ভুলে যেতেন। এজন্য তিনি বড়ই অধৈর্য হয়ে পড়েছিলেন এবং বাক্যটি শেষ করবার নিমিত্ত চীৎকার করতেন। যদি কেউ তাঁর বক্তব্য তার হয়ে বসে দিত তাহলে তিনি তাতে সম্মতি জ্ঞাপন করতেন। কয়েকদিন পরে তাকে ক্যানাবিস ইণ্ডিকা দেওয়া হয়। তাতে তিনি শীঘ্রই তার কথা বলার শক্তি ফিরে পান।
এই ঔষধ সম্বন্ধে বলবার মত আমার এই অভিজ্ঞতাটুকুই আমি লাভ করেছি মাত্র।