Cann-s | শরীরের কোন স্থান হতে যেন পানির মত তরল পদার্থ ফোটা ফোটা পড়ে এরুপ মনে হয, মনে হয হ্রদপিন্ড হতে তরল পদার্থ ফোঁটা ফোঁটা পড়ছে। |
Cann-s | আঙুল মটকাবার পর তা আড়ষ্ট অনুভূত হয়। |
Cann-s | সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠতে গেলে পেটেলার অস্থি সরে যায়। |
Cann-s | হাঁপানির সময় রোগী দাড়িয়ে ভালোভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারে। |
Cann-s | উরুর চাপ লাগলে মূত্রনালীতে যন্ত্রনা হয়, সেজন্য চলবার সময় পা দুটি ফাক করে চলে। |
Cann-s | মূত্রনালীর মুখ হতে ব্যাথা আরাম্ভ হয়ে ভিতরের দিক প্রর্যন্ত যায়, প্রস্রাব করবার সময় জ্বালা ও কামড়ান ব্যাথা। |
শরীরের কোন অংশের উপর বা তা থেকে যেন মাথার উপর বা মলদ্বার, পাকস্থলী বা হৃৎপিন্ড হতে ফোটা ফোটা জল পড়ছে—এই রকম অনুভূতি হয় যে ক্ষেত্রে সেক্ষেত্রে উপযোগী।
অত্যন্ত কোষ্ঠবদ্ধতা- তা হতে প্রস্রাব বন্ধ, মলদ্বার কুঁকড়িয়ে বন্ধ হয়ে থাকে।
মচকে গিয়ে হাতের আঙুল কুঁকড়ে থাকে। সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠতে গিয়ে প্যাটেলা [(Patella) পায়ের দুই লম্বা হাড়ের সংযোগস্থলে চাকতি] সরে যায়। শ্বাস কষ্ট বা হাঁপানি রোগ যে ক্ষেত্রে রোগী কেবল দাড়িয়ে থাকলে শ্বাস নিতে পারে। খাবার গিলতে গেলে গলা আটকে আসে। মনে হয় খাদ্য খাদ্যনালী দিয়ে
গিয়ে অন্য পথে (শ্বাসনালী) যায় (এনাকা)।
গনোরিয়া রোগে তরুণ প্রাদাহিক অবস্থা। (Secondary stage বা দ্বিতীয় অবস্থায় প্রস্রাবের পর জ্বালা, যেন হলদে পুঁজের মত বার হলে কিউবেবা প্রযোজ্য)।
মূত্রনালীতে স্পর্শ ও চাপ অসহনীয়; পা দুটো ফাক করে হাঁটতে পারে না- হাঁটতে গেলে মূত্রনালীতে ব্যথা হয়।
প্রস্রাব করার সময় মূত্রনালীর মুখ থেকে পেছন দিকে জ্বালাকর বেদনা, কামড়ানোর মত ব্যথা, পিছন দিকে সূঁচ ফোটানো মত ব্যথা থাকে। মূত্রনালীতে আঁকাবাঁকাভাবে ছিঁড়ে ফেলার মত ব্যথা।
সম্বন্ধ – মূত্রনালীতে প্রাথমিক প্রদাহের অবস্থায় ক্যান্থারিস, ক্যাপ্সি, জেলস, পেট্রোসেলি-র সমগুণ ।
শক্তি — ১x, ৩x, ৬, ৩০, ২০০।
এই ঔষধটি প্রস্রাব সম্পর্কিত, জননেন্দ্রিয় ও শ্বাস-প্রশ্বাস সম্বন্ধীয় যন্ত্রের উপর কাজ করে। জলের ফোঁটা ঝরছে এই জাতীয় অনুভূতি, এইটি এই ঔষধের বিশেষ অনুভূতি সম্পর্কিত বৈশিষ্ট্য, প্রচন্ড ক্রান্তি, যেন অস্বাভাবিক পরিশ্রম করা হয়েছে, খাওয়ার পর পরিশ্রান্ত। ঢোক গেলার সময় শ্বাসবন্ধের ন্যায় অনুভূতি, ঢোক গেলার সময় মনে হয়, চর্বিত বস্তু সকল যেন বিপথে নামছে। তোতলামি। চিন্তা ও কথা সম্পর্কিত ভ্রান্তি। কম্পমান বাক্যালাপ। কম্পমান, দ্রুত ও অসংলগ্ন বাক্যালাপ।
মাথা — লেক্টোফোবিয়া। মাথা ঘোরা, মাথার উপর ফোটা ফোটা করে জল ঝরছে এই জাতীয় অনুভূতি। নাকের গোড়ার দিকে চাপবোধ।
চোখ – কর্নিয়ার অস্বচ্ছতা। স্নায়বিক গোলযোগ মদের কুফল ও তামাক সেবনের পর চোখে ছানি। রোগীর মনে হয় গভীর অন্ধতা দেখা দিয়েছে। কুয়াশাচ্ছন্ন দৃষ্টি। চোখের পিছনের অংশে চাপবোধ। গণোরিয়া থেকে চক্ষুপ্রদাহ। চোখের মনির যন্ত্রণা। গন্ডমালা দোষযুক্ত চোখের রোগ (সালফ ক্যালকেরিয়া)।
প্রস্রাব – প্রস্রাব বাধাপ্রাপ্ত, তৎসহ দুর্বল কোষ্ঠকাঠিণ্য। যন্ত্রণাদায়ক বেগ। প্রস্রাব দুটি ধারায় নির্গত হয়। প্রস্রাবনলীতে সূঁচ ফোটার মত বেদনা। প্রদাহের ন্যায় অনুভূতি, তৎসহ স্পর্শে টাটানি। প্রস্রাব করার সময় জ্বালা, জ্বালা প্রস্রাব থলি পর্যন্ত প্রসারিত হয়। প্রস্রাব করার সময় ঝলসে যাওয়ার মত অনুভূতি, তৎসহ লিঙ্গমুন্ডের অগ্রভাগ আক্ষেপিক বেদনা। গণোরিয়ার, তরুন অবস্থা, প্রস্রাবলী অত্যন্ত অনুভূতি প্রবল। পা ফাক করে চলাচল করে। অন্ডদ্বয়ে টেনে ধরার মত অনুভূতি। মূত্রনালীর ভিতরের বেদনা আঁকাবাঁকা ভাবে প্রসারিত হয়। অতিরিক্ত কামোত্তেজনা। প্রস্রাবনলীতে ছোট ফুসকুড়ির মত মাংসের গ্যাঁজ। (ইউক্যালিপটাস), মুদ্রা বা ফাইমোসিস। শ্লেষ্মা বা পুঁজের দ্বারা প্রস্রাবনলীর মুখবন্ধ হয়ে যায়।
স্ত্রীরোগ – অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রমের পরে রজঃরোধ, তৎসহ কোষ্ঠকাঠিণ্য।
শ্বাস-প্রশ্বাস – বুকের ভিতর চাপবোধসহ শ্বাসকষ্ট ও হৃদকম্প; রোগী দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হয়। বুকের উপর ভারী বোধ; বুকের ভিতর ঘড়ঘড় সাঁইসাঁই শব্দসহ শ্বাস-প্রশ্বাস। কাশি, তৎসহ সবুজ বর্ণের, চটচটে, রক্তমিশ্রিত, শ্লেষ্মা।
হৃদপিন্ড — মনে হয় যেন হৃদপিন্ড থেকে ফোঁটা ফোঁটা করে কিছু পড়ছে। যন্ত্রনাদায়ক হৃদস্পন্দন এবং টানভাব তৎসহ হৃকম্প। হৃদাবরক ঝিল্লীর প্রদাহ।
ঘুম – ভয়যুক্ত স্বপ্ন। সকালের দিকে প্রচন্ড ক্লান্তি বোধ। দুপুরের দিকে ঘুমঘুম ভাব।
অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ — মোচ্কিয়ে যাওয়ার পর হাতের আঙ্গুলের সংকোচনের ন্যায় বেদনা। উপরের দিকে উঠার সময় প্যাটেলার স্থানচ্যুতি। উপরের দিকে উঠার সময় পায়ের পাতা ভার বলে মনে হয়। পক্ষাঘাতের ন্যায় ছিঁড়ে যাওয়ার মত বেদনা। পায়ের তলার ও পায়ের আঙ্গুলের গোলাকার অংশের উপসর্গ।
কমা-বাড়া – বৃদ্ধি, শুয়ে পড়লে; উপরের দিকে উঠার সময়।
সম্বন্ধ – দোষঘ্ন ক্যাম্ফর; লেমন জুস।
তুলনীয় – হেডিস্যারাম – ব্রেজিলিয়ান বারডক (গণোরিয়া ও পুরুষাঙ্গের প্রদাহ); ক্যান্থারিস; এপিস; কোপাইভা; থুজা; ক্যালি নাইট্রিকাম।
শক্তি – আরষ্ট থেকে ৩য় শক্তি। তোতলামিতে ৩০ শক্তি।
ক্যানাবিস ইন্ডিকা’র সহিত এই ঔষধের আশ্চৰ্য্য সাদৃশ্য আছে এবং সেইজন্য কেহ কেহ মনে করেন, দুইটিই একপ্রকার ঔষধ। অনেক সময় একটির বদলে অপরটি দেওয়া হইয়াছে। এবং অপরটি যে-সকল লক্ষণ উৎপাদন করে, তাহা আরোগ্যও করিয়াছে। ইহাদের মানসিক ও মূত্রসংক্রান্ত লক্ষণ অতিশয় সদৃশ। মাথার খুলি খোলা ও বন্ধ হওয়া লক্ষণ উভয় দ্বারাই আরোগ্য হইয়াছে।
বস্তুগুলি অদ্ভূত ও অবাস্তব বলিয়া মনে হয়। তাহার মনে হয়, যেন স্বপ্নের মধ্যেই রহিয়াছে। নিজের অস্তিত্ব সম্বন্ধে মানসিক বিশৃঙ্খলা লিখিতে ও কথা বলিতে ভুল করে এবং যাহা লিখে বা যাহা শুনে তাহা ভুলে বুঝে। ঘরের মধ্যকার শব্দ মনে হয়, যেন দূর হইতে আসিতেছে। যখন সে কথা বলে, মনে হয়, যেন আর একজন কথা বলিতেছে (এলুমেন’)। মনে হয়, যেন তাহার ইন্দ্রিয়জ্ঞান লোপ পাইবে। সকলের দিকে হতাশা, বৈকালের দিকে প্রফুল্লতা। শুইতে যাইবার ভয়। গলার মধ্যে মূর্চ্ছার মত অনুভূতি। পাকস্থলীর মধ্যে উদ্বেগ। মনের গোলযোগ ও শিরোঘূর্ণন।
মস্তকে রক্তের প্রাধান্য, যেন উহা পাকস্থলী হইতে আসিতেছে। জাগিয়া উঠিলে মনে হয়, যেন মাথার খালি একবার উঠিতেছে, একবার পড়িতেছে; সারাদিন ঐভাব থাকে, গোলমালে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। মনে হয় যে, মস্তক ত্বকের উপর ফোঁটা ফোঁটা ঠান্ডা জল পড়িতেছে। পোকা হাঁটার ন্যায় অনুভূতি।
চক্ষুর শ্বেতাংশের প্রদাহ ও শিরাস্ফীতি। চক্ষের মধ্যে যেন, বালি পড়িয়াছে এরূপ অনুভূতি। কর্ণের মধ্যে নানাপ্রকার শব্দ।
মনে হয়, যেন নাকটি বড় হইয়া গিয়াছে। নাক দিয়া রক্ত পড়ে। নাকের গোড়ায় চাপবোধ। নাকের মধ্যে শুষ্কতা। এক গন্ড লাল, অপর গন্ড বিবর্ণ। মুখে বিশ্রী স্বাদ। কথা বলা কষ্টকর। মুখগহ্বর ও গলা শুষ্ক। মাংসের অপ্রবৃত্তি। উদ্গার তিক্ত, অম্ল ও শূন্য।
মূত্রপিন্ডের প্রদাহ। মূত্রপিন্ডে ক্ষতবৎ যন্ত্রণা। গণোরিয়ার সহিত লিঙ্গাগ্ৰত্বকের স্ফীতি। গণোরিয়ার স্রাব গাঢ় এবং হলদে। মূত্রত্যাগকালে ও মূত্রত্যাগের পর মূত্ৰনলীতে জ্বালা। মূত্রত্যাগকালে মূত্রনলীতে সূঁচীবিদ্ধবৎ যাতনা। মূত্রনলী স্পর্শকাতর, স্ফীতি। লিঙ্গোচ্ছ্বাস। প্রারম্ভে ও পরে জ্বালা। অত্যন্ত কষ্টকর ও যাতনাদায়ক মূত্রপাত। মূত্রত্যাগকালে মূত্রপথ দিয়া পৃষ্ঠ পৰ্য্যন্ত বিস্তারণশীল যাতনা। স্ত্রীলোকদিগের মূত্রত্যাগের পর মূত্রনালীর মুখে যন্ত্রাদি ঠেলিয়া বাহির হওয়ার ন্যায় অনুভূতি। ভীষণ মূত্রপ্রবৃত্তি। অবিরাম এবং পুনঃ পুনঃ মূত্রপ্রবৃত্তি। অনিচ্ছায় মূত্রপাত। মূত্রত্যাগের পর ভীষণ যন্ত্রণা। রক্তাক্ত মূত্র। মূত্রত্যাগের শেষে মূত্রস্থলী গ্রীবা আক্ষেপিকভাবে সঙ্কুচিত হইয়া পড়ে। মূত্ৰনলীর প্রদাহ। স্ত্রীলোকদিগের মূত্রনালীতে প্রদাহ ও অত্যন্ত স্ফীতি, তৎসহ মূত্রত্যাগকালে জ্বালাকর বেদনা।
পুরুষ ও স্ত্রী উভয়েরই অত্যন্ত কামোত্তেজনা। লিঙ্গাগ্র ত্বকের অত্যন্ত শোথবৎ স্ফীতি। স্ত্রীলোকদিগের বন্ধ্যাত্বের জন্য ইহার সুনাম আছে। ঋতুস্রাব প্রচুর। ছোট ছোট মেয়েদের প্রদরস্রাব। (সিপিয়া) । গণোরিয়া। প্রসবের পর জরায়ুর রক্তস্রাব। গর্ভস্রাব আশঙ্কা।
বক্ষের সর্দি। ব্রঙ্কাইটিসের সহিত সাঁইসাঁই শব্দ। হাঁপানি, জালি খুলিয়া রাখিতে বাধ্য হয়। সবুজ, চটচটে শ্লেষ্মাস্রাব। লবণ আস্বাদ গয়ের। কাশি, তৎসহ রক্ত উঠা। বক্ষাবরক ঝিল্লীতে সূঁচীবিদ্ধবৎ বেদনা। হাঁপানির সহিত মূত্রস্থলীর রোগ। বুক ধড়ফড় করা।
পিকচঞ্চু অস্থিতে কোন সূক্ষাগ্র বস্তু দিয়া খোঁচামারার ন্যায় অনুভূতি। গোড়ালির কন্ডরায় টানিয়া ধরার ন্যায় বেদনা। ঘর্মকালে সর্বাঙ্গের চর্মে সূঁচীবিদ্ধবৎ যন্ত্রণা। হাতের আঙ্গুলের ডগায় অসাড়তা ।
অপর নাম – ইণ্ডিয়ান হেম্প (Indian hemp)
বাংলায় – ভাঙ্গ (bhang) গাঁজা (ganja)
আর্টিকেসী জাতীয় ক্যানেবিস স্যাটাইভা বৃক্ষ শীত প্রধান দেশে জন্মে। এর পল্লব ও কুসুমিত অগ্রভাগ থেকে ঔষধার্থে মূল অরিষ্ট তৈরী হয়।
ক্যানাবিস স্যাটাইভা মুত্রযন্ত্রে বিশেষতঃ মূত্র পথে বা মূত্র মার্গে (urethra) বিশেষ ক্রিয়া প্রকাশ করে। ইহা প্রমেহ বা গণোরিয়ার চিকিৎসা আরম্ভ করবার পক্ষে একটি সর্বোৎকৃষ্ট ঔষধ, (যদি না অন্য কোন ঔষধ বিশেষভাবে নির্দেশিত হয়, তাছাড়া সেরকম রোগীর সংখ্যাও অত্যন্ত কম।)
* স্পর্শে বা বাহ্য চাপে মূত্রমার্গের অত্যানুভূতি। রোগী পা ফাঁক না করে হাঁটতে পারে না। কারণ মূত্রমার্গে কোনরূপ চাপ পড়লেই অত্যন্ত যন্ত্রণা হয়। যদি রোগ মূত্রপথ বা মূত্রাশয়ে সম্প্রসারিত হয়ে থাকে তাহলে প্রতি কয়েক মিনিট ছাড়া ছাড়া পিঠে দারুণ বেদনা হয় এবং মূত্রের সঙ্গে রক্ত মিশে থাকে।
আমার চিকিৎসার প্রথম দিকে পাঁচ ফোটা মূল অরিষ্ট ৪ আউন্স জলে মিশিয়ে ওথেকে এক চা চামচ মাত্রায় রোগীকে দিনে ৩ বার করে খেতে দিতাম।