কোনিয়াম ম্যাকুল্যাটাম CONIUM MACULATUM [Con]

শুয়ে থাকলে বা বিছানায় পাশ ফিরার সময় মাথা ঘোরে, চলার সময় মাথা এক পাশে ফিরালে মাথা ঘোরে।
স্মরনশক্তি হ্রাস-বিশেষত বৃদ্ধদের।
বিমর্ষ, সহজেই বিরক্ত হয়, ঝগড়াটে, প্রতিবাদ সহ্য হয় না।
ল্যারিংসের ভিতর একটি স্থান যেন শুষ্ক হয়ে ‍গেছে, সেখানে সুড়সুড় করে, সে জন্য কাশি হয়, শুয়ার পর থেকে থেকে জোরে জোরে কাশি হয়।
রজঃস্রাবের সময় স্তন ফুলে উঠে ও ব্যথা হয়।
প্রস্রাব করতে অত্যন্ত যন্ত্রনা হয়, প্রস্রাব হতে হতে থেমে যায়, আবার হয়।
পেটের বায়ু ও মল ঠান্ডা অনুভূত হয়।
ঘুমালে অথবা চোখ বন্ধ করলে ঘাম হয়।

স্ত্রীলোকদের ও যারা বয়স্কা অথচ অবিবাহিতা তাদের রজোনিবৃত্তি সময় ও তার পরে বিভিন্ন রোগে ব্যবহার্য।

বয়স্কদের ক্ষেত্রে, বয়স্ক অবিবাহিত পুরুষ ও স্ত্রীদের যাদের শক্ত সবল পেশী, যাদের পাতলা চুল ও সহজেই উত্তেজিত হয়ে ওঠে ও যারা সবল অথচ অলসভাবে শুয়ে বসে দিন কাটায় তাদের অসুখে উপযোগী।

উপযোগিতা – বয়স্ক লোকদের দুর্বলতায়, আঘাত লেগে বা পড়ে গিয়ে চোট পেলে (আনিকা); ক্যান্সার লক্ষণযুক্ত ও যাদের বিভিন্ন গ্ল্যান্ডগুলো ফুলে যায়, গ্ল্যান্ডের রোগে ভোগে; যাদের পেশীতন্তু শক্ত সবল তাদের অসুখে প্রযোজ্য।

কোন কাজকর্ম বা লেখাপড়ার ইচ্ছা থাকে না, আলসে, উদাসীন, সব কিছুতেই অনীহা এমন লোকেদের অসুখে প্রযোজ্য।

স্মৃতিশক্তি দুর্বল, কোন রকম মানসিক চাপ সহ্য করতে পারে না। বিষন্নভাব, সহজেই বিরক্ত হয়, অন্যের উপর প্রভুত্ব করতে চায়, ঝগড়াটে, বকাঝকা করে, প্রতিবাদ সহ্য করতে পারে না (অরাম-মে); উত্তেজনায় মানসিক অবসাদ হয় এমন লোকেদের অসুখে উপযোগী। একা থাকতে ভয় তবুও লোক সঙ্গ বর্জন করে (কেলি-কা, লাইকো)।

গ্ল্যান্ডগুলো শক্ত পাথরের মত হয়। ক্যান্সার প্রবণ লোকেদের স্তন ও অন্ডকোষের গ্ল্যান্ড ঐ রকম শক্ত হয়; চাপ লেগে বা আঘাত থেকে গ্ল্যান্ড শক্ত হলে (তুলনীয়-এষ্টেরিরুবেন্স)। ঋতুস্রাবের আগে ও সময়ে স্তন শক্ত ও ঘায়ের মত ব্যথা ও যন্ত্রণা (ল্যাক-ক্যা, কেলি-কা)।

মাথাঘোরা বিশেষতঃ যখন শুয়ে থাকে ও একদিক হতে অন্যদিকে, ঘুরে শোয়; সামান্য মাথা নাড়ালে এমনকি চোখ সামান্য নাড়ালে মাথা ঘোরায়। মাথা সম্পূর্ণ স্থির রাখতে বাধ্য হয়; মাথা বাঁদিকে ঘোরালে মাথা ঘোরায় (কলচি); বয়স্কদের মাথা ঘোরা, যেসব স্ত্রীলোক জরায়ু ও ডিম্বকোষ জনিত অসুখে ভোগ তাদের মাথা ঘোরালে প্রযোজ্য ।

কাশি – স্বরযন্ত্রে (Laryn) নির্দিষ্ট কোন জায়গায় শুকিয়ে আক্ষেপিক কাশি হতে থাকে (গলায় ঐভাব—একটিয়া) সাথে বুক ও গা চুলকাতে থাকে (আয়োডি); ঐ কাশি রাতে বাড়ে শুলে বাড়ে ও গর্ভাবস্থায় বাড়ে (কষ্টি, কেলিব্রোম)।

প্রস্রাব করতে অত্যন্ত কষ্ট হয়। থেমে থেমে হয়, একবার থামে আবার হয়; প্রষ্টেটগ্ল্যান্ড বা জরায়ুঘটিত অসুখ হলে ঐরূপ প্রস্রাব হয়।

ঋতুস্রাব ধীরে ধীরে হয় বা বন্ধ হয়ে যায়। স্বাভাবিক সময়ের পরে, অল্প পরিমাণে ও অল্পদিন স্থায়ী হয়। শরীরে লালবর্ণ ফোড়ার মত উদ্ভেদ বার হয় স্রাব বন্ধ হলে তা মিশে যায় (ডালকা); ঠান্ডা লেগে ঋতু বন্ধ বা ঠান্ডা জল ঘাটাঘাটি করে ঋতুবন্ধ (ল্যাক-ডি)।

শ্বেতপ্রদর – ঋতুস্রাবের দশদিন পর শুরু হয় (বোরাক্স, বোভিষ্টা) হেজে যায়, রক্তমিশ্রিত, দুধের মত প্রচুর, ঘন ও থেমে থেমে হয়।

যৌন সঙ্গমের ইচ্ছা দমিত, থেকে বা ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়ার কুফল; কাম প্রবৃত্তি চরিতার্থ না হয়ে বা অতিরিক্ত যৌন সংসর্গে অসুখ হলে এ ওষুধ ব্যবহার্য। চোখ কোন প্রদাহ নাই অথচ আলোকাতঙ্ক, কৃত্রিম আলোয় চোখের  ব্যবহারে ঐভাব বেড়ে যায়, যে সব ছাত্রছাত্রী রাত জেগে পড়ে তাদের প্রায়ই এ ওষুধ লাগে, অত্যন্ত আলোভীতি (সোরিন)।

সারা দিন রাত, ঘুমিয়ে পড়ামাত্র এমনকি চোখ বুজলেই ঘাম হতে থাকে (চায়না)।

সম্বন্ধ যাদের কোনিয়াম প্রয়োজন তাদের প্রায়ই মদ বা উত্তেজক দ্রব্যে উপকার হয় কিন্তু যারা সুস্থ অবস্থায় কোনিয়াম ব্যবহারে সহজেই অভিভূত হয়ে পড়ে তারা মাদক জাতীয় উত্তেজক দ্রব্য সহ্য করতে পারে না।

তুলনীয় হাড়ে চাপ লাগলে আর্নিকা ও রাস-ট এর সাথে; ক্যান্সারে আর্স ও এষ্টেরিয়াস-এর সাথে গ্ল্যান্ড ফোলায় ক্যাল্কে-কা ও সোরিন-এর সাথে তুলনা করা যায় ।

বৃদ্ধি রাতে শুলে, বিছানায় পাশ ফিরলে বা উঠে বসলে, কৌমার্য অবলম্বনে ।

শক্তি ৩০, ২০০ হতে উচ্চশক্তি, ০/১ হতে ০/৩০।

এটি একটি অতি পুরাতন ঔষধ বিশেষ। প্রাচীন কালে সক্রেটিসের মৃত্যু ঘটাবার জন্য এই বিষাক্ত ঔষধের প্রয়োগ বিষয়ে প্লেটো এক সুচিত্রিত বর্নণা লিপিবদ্ধ করে গেছেন। উর্ধ্বগামী পক্ষাঘাত এই ঔষধ তৈরী করে, এবং সবশেষে শ্বাস-প্রশ্বাস ক্রিয়া বন্ধ হয়ে রোগীর মৃত্যু হয়, এই ঔষধের প্রুভিং-এর সময় এইরূপ বহু শেষাবস্থার লক্ষণ পাওয়া যায়, যেখানে কোনিয়াম একটি উৎকৃষ্ট ঔষধ হিসাবে বিবেচিত হয়, যেমন কষ্টকর পদচালনা, কম্পন, হাঁটার সময় হঠাৎকরে শরীরের শক্তি লোপ পায়, পায়ের যন্ত্রনাদায়ক আড়ষ্টতা প্রভৃতি। এই জাতীয় অবস্থা প্রায়ই বৃদ্ধাবস্থায় দেখা দেয়। যে সময় দুর্বলতার সময় বলে বিবেচিত হয়। অবসন্নতা, স্থানিক রক্তসঞ্চয় এবং শিথিলতা দেখা যায়। এটিই কোনিয়ামের উপযুক্ত পরিবেশ, যেখানে কোনিয়াম খুব ভালো কাজ করে থাকে। এই অবস্থার বৈশিষ্ট্য হল দুর্বলতা, চিত্তন্মত্ততা, প্রস্রাবের গোলযোগ। দুর্বল স্মৃতিশক্তি, ও কামেচ্ছা বিষয়ক দুর্বলতা প্রভৃতি। রক্তেনিবৃত্তি কালের, অবিবাহিত, বৃদ্ধা মহিলা ও অবিবাহিত বৃদ্ধ পুরুষদের উপসর্গ সমূহ। অর্জুদের ক্ষেত্রে কোনিয়ামকে স্মরণ করা যেতে পারে। সর্বাঙ্গে আঘাতের ফলে থেঁৎলিয়ে যাওয়ার মত অনুভূতি। সকালে বিছানায় থাকাকালীন অবস্থায় প্রচন্ড দুর্বলতা। শরীর ও মনের দুর্বলতা,কম্পন ও হৃদকম্পাক্যান্সার রোগ হবার প্রবণতা যুক্ত। আটিরিয়ো-স্কেলেরোসিসবুক্কাস্থির ক্ষত। গ্রন্থিসমূহের বিবৃদ্ধি। গ্রন্থি তন্ত্রের উপর কাজ করে, গ্রন্থির স্ফীতিও কঠিণতা, এই ঔষধ তৈরী করে, গ্রন্থির গন্ডমালা ঋতুদোষ ও ক্যান্সার রোগ গ্রন্থের মত গ্রন্থির পরিবর্তন সাধন করে এই ঔষধ। ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগের পরে এই ঔষধ বলকারক হিসাবে কাজ করে। শরীরের বহু স্নায়ুর শূলবেদনা হেতু অনিদ্রা।

মন – উত্তেজনা মানসিক অবসাদ তৈরী করে। হতাশ ভীরু, সমাজের প্রতি বিরুপ মনোভাবাপন্ন এবং একা থাকতে ভয়। ব্যবসা অথবা পড়াশুনা কোন কাজেই মন লাগে না। কোন বিষয়েই মন আকৃষ্ট হয় না। স্মৃতিশক্তির দুর্বলতা, মানসিক পরিশ্রম সহ্য হয় না।

মাথা — বিছানায় শুয়ে থাকলে অথবা শশায়া অবস্থায় পাশ ফিরলে মাথাযোরা, যখন মাথা এদিক ওদিক ঘোরায়, অথবা চোখ ফেরাবার সময়ে মাথাঘোরা। মাথানাড়লে, সামান্য শব্দে, অথবা অপরের বাক্যালাপে বৃদ্ধি, বিশেষতঃ বাম দিকে। মাথার যন্ত্রনা, বুদ্ধিনাশকারক তৎসহ বমিবমিভাব’ও শ্লেষ্মাবমন, তৎসহ মনে হয় বাইরের কোন বস্তু মাথার খুলির নীচে রয়েছে। মাথার উপরে ঝলসে যাওয়ার মত অনুভূতি। ডানদিকের রগে কষে ধরা মত চাপবোধ। খাবার পরে বৃদ্ধি,(জেন, ট্রোপিন)। একদিকের অর্ধাংশে। থেঁৎলিয়ে যাবার মত বেদনা। সকালে ঘুম থেকে উঠার সময় মাথার পিছনের অংশে মৃদু বেদনা।

চোখ-আলোকাতঙ্ক ও অতিরিক্তঅশ্রুস্রাব। কণ্ঠনালীর পুঁজোৎপত্তি। দৃষ্টিঝাপসা; কৃত্রিম আলোকে বৃদ্ধি। চোখ বন্ধ করলেই, ঘাম হয়। চোখের পেশীর পক্ষাঘাত। (কষ্টিকাম)। সামান্য ধরনের চক্ষু প্রদাহ। সামান্য ক্ষতে বা সামান্য ছাল উঠে গেলে সুতীব্র আলোকাতঙ্কের সৃষ্টি হয়।

কান — বিকৃতি শ্রবনশক্তি। কান থেকে রক্তের রঙে র স্রাব। নাক সহজেই রক্তস্রাব হয়। ক্ষতযুক্ত হয়। নাকে কোমল অর্বুদ।

পাকস্থলী — জিহ্বার গোড়ায় ক্ষত। তীব্র বমি বমিভাব, ঝাঁঝাল বুকজ্বালা এবং অল্প ঢেকুর, বিছানায় শুতে যাবার সময় বৃদ্ধি। পাকস্থলীর বেদনাদায়ক আক্ষেপ। খাবার পরে উপশম এবং খাবার কয়ের ঘন্টা পরে বৃদ্ধি, অম্ল ও জ্বালা, বুক্কাস্থি স্থানে বেদনাদায়ক স্থান।

উদর – যকৃতে ও যকৃতের চারিপাশে তীব্র কনানি যুক্ত বেদনা। পুরাতন জন্ডিস এবং পেটের উপরের ডানদিকে বেদনা। স্পর্শকাতর, থেঁৎলিয়ে যাওয়ার মত, স্ফীত, ছুরি দিয়ে কাটার মত যন্ত্রনা। কষা ভাব যুক্ত বেদনা।

মন – বারে বারে বেগ। শক্ত তৎসহ কোঁথ। প্রতিবার মলত্যাগের পরে কম্পন সহ দুর্বলতা। ভিরেট্রাম, আর্সেনিক, আর্জেন্টাম নাইট্রিকাম। মলত্যাগের সময় সরলান্ত্রে উত্তাপ ও জ্বালা।

প্রস্রাব – প্রস্রাব ত্যাগ করা ভীষণ কষ্টকর। প্রস্রাবের ধারা প্রবাহিত হয় এবং আবার বন্ধ হয়ে যায় (লিডাম)। বাধাপ্রাপ্ত স্রাব। (ক্লিমেটিস)। বৃদ্ধদের ফোঁটা ফোঁটা করে প্রস্রাব (কোপাইভা)।

পুরুষের রোগ – কামেচ্ছায় বৃদ্ধি, যৌনশক্তির হ্রাস। যৌন ইচ্ছা সংক্রান্ত স্নায়বিক উত্তেজনা, তৎসহ দূর্বল লিঙ্গোদ্রেক। যৌন ক্ষুধা চেপে রাখার কুফল সম্পর্কিত উপসর্গ সমূহ। অন্ডদ্বয় শক্ত ও বৃদ্ধিপ্রাপ্ত।

স্ত্রীরোগ – বাধকবেদন, তৎসহ উরুস্থান থেকে নীচের দিকে টেনে ধরা ভাব! স্তন্যগ্রন্থি শিথিল ও সঙ্কুচিত, শক্ত, স্পর্শ করলে বেদনা হয়। স্তনের বোঁটায় সূঁচ ফোটার মত বেদনা। হাত দিয়ে খুব শক্ত করে স্তন গ্রন্থি চেপে রাখতে ইচ্ছা করে। মাসিক ঋতুস্রাব বাধাপ্রাপ্ত ও স্বল্প, অঙ্গগুলি অনুভূতি প্রবন। স্তনদ্বয়ের বিবৃদ্ধি ও বেদনাদায়ক হয়, মাসিক ঋতুস্রাবের আগেও ঋতুস্রাবের সময়ে। (ক্যালকেরিয়া কার্ব,ল্যাকক্যানাইনাম) ঋতুস্রাবের পূর্বে উদ্ভেদ। যৌনাঙ্গের চারিধারে চুলকায়। অপ্রাপ্ত, গর্ভাবস্থা, জরায়ুমুখ ও জরায়ু গ্রীবার কঠিণতা। ডিম্বাশয়ের প্রদাহ, ডিম্বাশয়ের বিবৃদ্ধি, কঠিণতা, ছুরি দিয়ে কাটার মত বেদনা। কামেচ্ছা চেপেরাখা অথবা চাপা পড়া মাসিক ঋতুস্রাবের কুফল অথবা অতিরিক্ত সম্ভোগের কুফল। প্রস্রাবের পরে প্রদরস্রাব।

শ্বাস-প্রশ্বাস – একটানা শুষ্ক কাশি, খুকখুকে ধরণের কাশি; রাত্রে এবং সন্ধ্যায়, বৃদ্ধি, কণ্ঠনলীতে একটি শুষ্ক স্থান থাকার কারনে কাশি দেখা দেয় তৎসহ গলা ও বুকে চুলকানি, যখন শুয়ে থাকে, কথা বলার সময় অথবা হাসির সময় এবং গর্ভাবস্থায়। দীর্ঘসময় ধরে কাশির পরে কেবলমাত্র শ্লেষ্মা উঠে। সামান্য শারীরিক পরিশ্রমে হাঁপায়, বুকের ভিতর সঙ্কোচন, বুকের ভিতরে বেদনা।

পিঠ – দুটি কাঁধের মধ্যবর্তী স্থানে পিঠের বেদনা। থেঁৎলিয়ে যাওয়ার কুফল ও মেরুদন্ডে আঘাত লাগার কুফল। মেরুদন্ডীয় কশেরুকার অস্থি প্রদাহ। কোমর প্রদেশে ও ত্রিকাস্থি স্থানে মৃদু কনানি ব্যথা।

অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ – ভারবোধ, পরিশ্রান্ত, পক্ষাঘাতগ্রস্ত, কম্পন, হাতদুটির স্থিরতা থাকে না; হাতের ও পায়ের আঙ্গুলের অসাড়তা। পেশীর দূর্বলতা, বিশেষ করে নিম্নাঙ্গে। হাতে ঘাম হয়। চেয়ারের উপর পা দুটি তুলে রাখলে বেদনার উপশম হয়।

চামড়া — বগলের গ্রন্থির বেদনা তৎসহ নীচের দিকে বাহু পর্যন্ত অসাড়তা। আঘাত লাগার পরে কঠিনতা। চামড়া হলুদবর্ণযুক্ত, তৎসহ ফুসকুড়িযুক্ত উদ্ভেদ, হাতের নখগুলি হলুদ। গ্রন্থি সমূহের বিবৃদ্ধি ও কঠিণতা, অন্ত্রের গ্রন্থিগুলিও। গ্রন্থিগুলির ভিতর দিয়ে প্রবাহমান সূঁচীবিদ্ধবৎ বেদনা। অর্বুদ সমূহ, কেটে ফেলার মত বেদনা; রাত্রে বৃদ্ধি। পুরাতন ক্ষত তৎসহ দূর্গন্ধযুক্ত স্রাব। ঘুমিয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘাম শুরু হয় অথবা এমনকি চোখ দুটি বন্ধ করলেই শুরু হয়। রাত্রিকালীন: প্রাতঃকৃালীন ঘাম, তৎসহ দূর্গন্ধ ও চামড়ার তীব্র বেদনা।

কমা-বাড়া-বৃদ্ধি, শুয়ে পড়লে, পাশ হিলে অথবা বিছানায় উঠলে, অবিবাহিত জীবনে, মাসিক ঋতুস্রাবের আগে ও ঋতুস্রাবের সময়ে, ঠাণ্ডা লাগালে, শারীরিক অথবা মানসিক পরিশ্রমে।

উপশম – উপোস করে থাকলে অন্ধকারে, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ঝুলিয়ে রাখলে, নড়াচড়ায় ও চাপে।

কমা-বাড়া-তুলনীয় – সিরিনাম—ক্যান্সার রোগ বিষ থেকে প্রস্তুত ঔষধ (ক্যান্সার রোগ প্রবণ ধাতুগ্রন্থিসমূহের বিবৃদ্ধি, স্তন গ্রন্থির ক্যান্সার, ক্রিমি)। ব্যারাইটাকার্ব, হাইড্রাসটিস, আয়োডিনাম, ক্যালিফস, হায়োসায়ামাস কিউব্যারী।

শক্তি — উচ্চতর শক্তিতে ভালো কাজ করে, সেক্ষেত্রে অনেকটা সময় পর পর ব্যবহার করা প্রয়োজন, বিশেষ করে কোন প্রকার অর্বুদ, আংশিক পক্ষাঘাত প্রভৃতি। অন্যথা ৬ষ্ঠ থেকে ৩০ শক্তি প্রযোজ্য।

এই ঔষধটির ক্রিয়া গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী এবং সোরাদোষনাশক, ইহা শারীর বিধানের যে বিশৃঙ্খলা অবস্থা আনয়ন করে, তাহা এত গভীরে প্রবেশ করে এবং দীর্ঘকাল স্থায়ী হয় যে, উহাতে প্রায়ই সকল টিসুই বিচলিত হইয়া পড়ে। রোগগুলি ঠান্ডা লাগায় উপস্থিত হয় এবং শরীরের সর্বত্র সকল গ্রন্থিগুলিই আক্রান্ত হইয়া পড়ে। সামান্য একটু ঠান্ডা লাগাতেই গ্রন্থিগুলি কঠিন ও বেদনান্বিত হইয়া পড়ে। গভীরমূল রোগগুলিতে, ক্ষতস্থানে এবং প্রদাহিত অঙ্গে রসপ্রসেক হয় এবং লসিকাবহ সমূহের উপর দিয়া গ্রন্থিগুলি মালার ন্যায় গাঁটগাট হইয়া পড়ে। বায়ুর নিম্নদিকের গ্রন্থিগুলির প্রদাহ হয় এবং ক্ষত জন্মে। ঘাড়, কুঁচকিস্থান ও উদরের গ্রন্থিগুলি বৰ্দ্ধিত হইয়া পড়ে। ক্ষতস্থানগুলি কঠিন হইয়া পড়ে। স্তনের ফোড়া অনেকগুলি ডেলা ও গুটিকা দ্বারা বেষ্টিত হয়। স্তনে দুধ সঞ্চয় না হইলেও ডেলাগুলি থাকিয়া যায়, শরীরের উপর সর্বত্র ডেলা ও গুটিকা, কঠিনতা ও বর্ধিত গ্রন্থির সৃষ্টি হয়। কোনিয়াম গ্রন্থির দূষিত অবস্থায় বিস্তৃতভাবে ব্যবহৃত হইয়াছে। কারণ ইহা প্রথম হইতেই গ্রন্থিগুলিকে আক্রমণ করে ও রসপ্রসেক ঘটায় এবং সেগুলি কর্কট রোগের ন্যায় পাথরের মত কঠিন হইয়া পড়ে। অতঃপর এই ঔষধের আর একটি প্রবল লক্ষণ, ইহার স্নায়ুবিধানের উপর ক্রিয়া। স্নায়ুসমূহ অত্যন্ত দুর্বল অবস্থায় উপনীত হয়। স্নায়ুসমূহের দুর্বলতার জন্য পেশীসমূহে কম্পন, উৎক্ষেপ এবং ঝাঁকিমারা আরম্ভ হয়। কোনরূপ শারীরিক পরিশ্রম করিলেই সে অত্যন্ত অবসন্ন হইয়া পড়ে। কক্কুলাসে যেরূপ বর্ণনা করা হইয়াছে, তদ্রুপ ক্রমবর্ধমান পক্ষাঘাতিক দুর্বলতা উপস্থিত হয়। শরীর ও মনের অবসন্নতা অর্থাৎ শরীরের সকল প্রকার কাৰ্য কুশলতার একপ্রকার মন্থর অবস্থা। যকৃৎটি কঠিনতাপ্রাপ্ত, মন্থর ও বদ্ধির হয়। মূত্রস্থলী দুর্বল হয়, কেবলমাত্র আংশিকভাবে মূত্র নির্গত করিতে পারে। অথবা সময়ে সময়ে—পক্ষাঘাতের ন্যায় অবস্থা, মূত্র-নির্গমনকারী শক্তিই চলিয়া যায়। ইহা হইতে বুঝায় যে, ঔষধটি বর্ধিত হইয়া পক্ষাঘাতিক দুর্বলতার দিকে অগ্রসর হইতে থাকে।

হিষ্টিরিয়া। মনের অবসাদ বায়ুরোগের ন্যায় অবস্থা, তৎসহ স্নায়বিকতা, কম্পন এবং পেশীসমূহের দুর্বলতা। প্রথমদিকে সে ক্লান্তি বোধ করে, কিন্তু ক্রমশঃ এইরূপ চলিতে চলিতে অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলি পক্ষাঘাত গ্রস্তের ন্যায় হইয়া পড়ে।

রোগের অনেকগুলি বেদনাশূন্য হয়। ক্ষত এবং পক্ষাঘাতের অবস্থা বেদনাশূন্য। শরীর ও মনের অত্যন্ত দুর্বলতা। পেশীসমূহের অত্যন্ত অবসন্নতা, ক্লান্তি, কম্পনযুক্ত দুর্বলতা। পদদ্বয় ও নিতম্ব প্রদেশের পক্ষাঘাত। যে সকল বিধবা বা বিপত্নীক ব্যক্তি সহবাস সম্পর্ক হইতে হঠাৎ বঞ্চিত হইয়াছেন, তাহাদের মানসিক লক্ষণ, স্নায়বিক লক্ষণ, কম্পন। স্ত্রীলোক বা পুরুষ যুবশক্তিবিশিষ্ট অবস্থায় থাকিতে, যদি সহসা সহবাসে বঞ্চিত হইয়া পড়েন, তাহা হইলে তাহাদিগের কম্পন যুক্ত দুর্বলতা, কোনরূপ মানসিক পরিশ্রমে অক্ষমতা অন্যে যাহা বলে তাহাতে মনোযোগ দিবার অক্ষমতা দেখা দেয়। ইহা পুরুষদিগের মধ্যে যত স্পষ্ট, স্ত্রীলোকদিগের মধ্যে তত স্পষ্ট নহে। যে-সকল স্ত্রীলোক অসাধারণ সঙ্গম শক্তি বিশিষ্ট, তাহাদের যখন এইরূপ অবস্থা হয়, তখন জরায়ু ও ডিম্বকোষে প্রবল রক্তসঞ্চয় হইতে পারে। কোনিয়াম অপেক্ষা ‘এপিস’ই সম্ভবতঃ তাহার লক্ষণসমূহের অধিক উপযোগী হইবে। কিন্তু হিষ্টিরিয়া ও উত্তেজনা প্রবণতা থাকিলে কোনিয়ামই ঔষধ। এইরূপ কারণ হইতে ইহার বহু লক্ষণের আবির্ভাব ঘটে।

কোনিয়াম এরূপ গভীরভাবে ক্রিয়া করে যে, ইহাতে ক্রমশঃ একপ্রকার জড় অবস্থা উপস্থিত হয়। মন অক্ষম হইয়া পড়ে। শরীরের পেশীসমূহের ন্যায়, প্রথমে মনও ক্লান্ত হয়। সে কোনরূপ মানসিক কার্যে অক্ষম হইয়া পড়ে। স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়। মনের একাগ্রতা: আসে না, সে কোন বিষয়ে মনঃসংযোগ করিতে পারে না, চিন্তা করিতে পারে না এবং অবশেষে জড় অবস্থা উপস্থিত হয়। কোন মানসিক পরিশ্রম সহ্য করিতে না পারা এবং কোন কিছুতে মনকে আটকাইয়া রাখিতে না পারা, এই ঔষধের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় লক্ষণগুলির অন্যতম। নির্দিষ্টকাল ব্যবধানে আগত উন্মাদ রোগ। জড়তা, উন্মাদলক্ষণ অপেক্ষা জড়তাই বেশী সচরাচর দেখা যায়। তোমরা যখন রোগীর মানসিক অবস্থা পরীক্ষা করিতে থাকিবে, তখন এমন লক্ষণসমূহ দেখিবে যে, তোমাদের মনে হইবে, রোগী প্রলাপ বকিতেছে, কিন্তু উহা ঠিক প্রলাপ নহে। উহা ধীরে ধীরে আগত মনের দুর্বলতা, জ্বরের সহিত যেরূপ ক্ষিপ্র ক্রিয়াশীল অবস্থা দেখা যায়, ইহা সেরূপ অবস্থা নহে, উহা জ্বরশূন্য প্রলাপ, আর উহা সৰ্ব্বদা থাকেও না। একরূপ উন্মাদ, কিন্তু উহা অপ্রবল। সে ধীরে ধীরে চিন্তা করে, এবং ঐ অবস্থায় অনেক সপ্তাহ, অনেক মাস থাকিয়া যায়, এবং তারপর যদি আরোগ্য হয়। যে-সকল উত্তেজনাবিশিষ্ট রোগীর মনের অল্পাধিক দুর্দান্তভাব ও ক্রিয়াশীলতা থাকে, তাহারা ‘বেল’, ‘হায়স’, ‘স্ট্রামো’ ও ‘আর্সে’র সদৃশ হয়। এই ঔষধের মানসিক অবস্থা এত ধীরে ধীরে আসে যে পরিজনগণ উহা লক্ষ্য করিতে পারে না। মন ধীরে ধীরে আগত, অদ্ভুত অদ্ভুত ব্যাপারে পূর্ণ হইয়া যায় এবং পরিজনগণ যখন লক্ষ্য করেন যে, সে কি সব করিতেছে এবং বলিতেছে তখন তাহারা বিস্মিত হইয়া ভাবেন সে উন্মাদ হইতেছে, না জড় অবস্থার দিকে যাইতেছে। কোনিয়ামের প্রকৃতি ধীর ও অপ্রবল। সম্পূর্ণ ঔদাসিন্য, কোন বিষয়েই কোন আগ্রহ থাকে না, বিশেষতঃ খোলা বাতাসে বেড়াইবার সময়। “সে কোন লোকের নিকটে থাকিতে চায় না, তাহার পাশ দিয়া যাহারা যায়, তাহাদের সহিত কথা বলে না, বরং তাহাদিগকে ধরিয়া গালাগালি দিবার দিকে ঝোঁক থাকে।” নিশ্চয়ই ইহা একটি উন্মাদের ব্যবহার। দুঃখিত ও নিরানন্দ মনের অত্যন্ত অস্বতি প্রতি পনের দিন পরে পরে উপস্থিত হয়।” ইহা দ্বারা ঔষধটির দুই সপ্তাহ অন্তর পৰ্য্যায়শীলতা দেখা যাইতেছে। কোনিয়ামের রোগী দুঃখিত ও বিষন্ন অবস্থায় ঘরের কোণে বসিয়া ঝিমাইতে থাকিবে, সে যে কেন এত দুঃখিত, তাহার কোন কারণ দেখাইবে না। বিষাদবায়ুগ্রস্ত রোগী তাহার খেয়াল ও ধারণা লইয়া ঘুরিয়া বেড়ায়, লোকে তাহাকে তর্কবিতর্ক করিয়া সুপথে আনিতে চায়, কিন্তু যতই তাহারা তর্ক করে, সেও ততই অধিকতর বিষাদগ্রস্ত হইয়া পড়ে। বিষন্ন, খিটখিটে ও বিরক্ত। সবকিছুতেই সে বিরক্ত ও বিচলিত হইয়া পড়ে। কোনপ্রকার উত্তেজনা সহ্য করিতে পারে না, উহাতে দৈহিক ও মানসিক কষ্ট উপস্থিত হয়, দুর্বলতা ও বিষন্নতা দেখা দেয়। কখন কখন যে-সকল লোক দুঃখ পাইয়াছে, তাহাদের মধ্যে কোনিয়ামের লক্ষণ প্রকাশ পায়। তাহাদের স্মৃতিশক্তি দুর্বল হইয়া পড়ে। সম্ভবতঃ এই লক্ষণটিই প্রথমে আসে। তাহারা ভুলিয়া যায়, তাহারা ব্যাপারগুলিকে যেরূপভাবে স্মরণ করিতে চায়, ঠিক সেইভাবে স্মরণ করিতে পারে না। এইভাবে তাহারা ক্রমশঃ দুৰ্বল হইতে হইতে জড়ে পরিণত হয়। যদি এই অবস্থা মনসংক্রান্ত হয়, তাহা হইলে ফলে জড়তা দেখা দেয়, যদি ইহা শারীরবিধান সম্বন্ধীয় হয়, তাহা হইলে পরিণতি হয় পক্ষাঘাতে; আর, সৰ্বাঙ্গীণ পক্ষাঘাতিক দুর্বলতা আসা অসাধারণ নহে। সুতরাং যে পর্যন্ত না কোন নির্দিষ্ট রোগের বিকাশ হয়, সে পর্যন্ত শরীর ও মন একত্রে বর্ধিতভাবে দুৰ্বলতাবিশিষ্ট হইতে থাকে এবং তারপর রোগী হয় পক্ষাঘাতের দিকে যায় নচেৎ বিশেষপ্রকার রোগ বিকাশ হইয়া তাহাকে জড়ত্বের দিকে ঠেলিয়া দেয় এবং তারপর, শরীরটি ঐ একইভাবে থাকিয়া যায়। এইসকল রোগীর এমন একটি সময় আসে যখন শরীর ও মনের মধ্যে একপ্রকার অনৈক্য উপস্থিত হয়। যখনই হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় শরীরের উন্নতি হয়, তখনই মনের অবনতি হইতে থাকে, এবং সে কখনও আরোগ্য হয় না। এরূপ রোগীও দেখিতে পাওয়া যায়। আমি কখনও শরীর ভাল হওয়া এবং মন সামান্যতরও খারাপ হওয়া দেখিতে চাই না। উহা দ্বারা ঔষধজ বৃদ্ধি বুঝায় যদি মানসিক লক্ষণের উন্নতি না হয়, তাহা হইলে বুঝিতে হইবে, রোগী ক্রমশঃ খারাপ হইতেছে। কোন ঔষধ যে ভাল কাজ করিতেছে, সে সম্বন্ধে মানসিক উন্নতি অপেক্ষা আর কোন ভাল প্রমাণ নাই।

কোনিয়ামের রোগী সামান্যমাত্র মদ্যজাতীয় পানীয় সহ্য করিতে পারে না। যে-কোন প্রকার মদ্য বা উত্তেজক সুরাজাতীয় পানীয়ে কম্পন, উত্তেজনা, মানসিক দুর্বলতা এবং অবসন্নতা সৃষ্টি করে। এইরূপ রোগীর বহুপ্রকার শিরঃপীড়া থাকে। ধ্বংসসানুখী রোগীদের শিরঃপীড়া দেখা দেয়। মাথায় সূচীবিদ্ধবৎ, ছিন্নকর বেদনা, মাথার মধ্যে দপদপানি। মস্তিষ্কের ক্লান্তির পূর্বলক্ষণ। স্নায়ুশূল।

পেশীসমূহে দুৰ্বলতা। মুখের একপার্শ্বের. পেশীসমূহের দুর্বলতা। চক্ষুর উপর পাতার পক্ষাঘাত। ঝিঝিধরা বেদনা। এগুলির সবই সৰ্বাঙ্গীণ স্বাস্থ্যভঙ্গের লক্ষণ। মস্তিষ্কের হঠাৎ, তীব্র রক্তসঞ্চয় অথবা মাথায়, মুখে, চক্ষে হঠাৎ ভীষণ যন্ত্রণার আক্রমণে, আমরা কোনিয়াম দিবার কথা চিন্তা করিব না, কিন্তু ঐগুলি কোন বর্ধনশীল সৰ্বাঙ্গীণ রোগের আনুষঙ্গিক হইলে কোনিয়ামের কথা ভাবিব। মুখমন্ডল, চক্ষু ও মাথার চারিদিকের স্নায়ুপথ বরাবর সূচীবিদ্ধবৎ, বর্শাবিদ্ধবৎ, কৰ্ত্তনবৎ যন্ত্রণা। মস্তকশিখরে সূচীবিদ্ধবৎ যন্ত্রণা। প্রায়ই লক্ষণগুলি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসককে শরীর পরীক্ষা করিতে চালিত করিবে। কিন্তু শরীর পরীক্ষা অপেক্ষা ঔষধনির্দেশক লক্ষণগুলিই অনেক বেশী প্রয়োজনীয়।

উত্তেজনায় শিরঃপীড়া উপস্থিত হয়। মস্তক ও ত্বকের অসাড়তা কোনিয়ামের একটি বিশেষ লক্ষণ। ইহা একটি সাধারণ লক্ষণও বটে, যেখানেই যন্ত্রণা থাকে, সেইখানেই অসাড়তা দেখা দেয়, বেদনার সহিত অসাড়তা, প্রায়ই দুর্বলতার সহিত অসাড়তা। পক্ষাঘাতিক অবস্থার সহিত অসাড়তা থাকে। সবমন, শিরঃপীড়ার সহিত মূত্রত্যাগে অক্ষমতা। অত্যন্ত মাথাঘোরা। মনে হয়, ঘরের মধ্যের সবকিছুই যেন ঘুরিতে থাকে। মাথায় গোলমাল বোধ। অনেক সময়ে চিন্তায় বিভোর হইয়া বসিয়া থাকে। শিরোঘূর্ণন ও মাথায় চাপবোধের সহিত নাড়ীর গতির পরিবর্তন হয় মাথা নোয়াইলে মাথাঘোরা বাড়ে। সামান্য মাত্র মাদক পানীয়ে মত্ততা আসে। মাথা ঘুরাইলে, আসন হইতে উঠিলে বৃত্তের ন্যায় ঘুরিতে থাকার ন্যায় শিরোঘূর্ণন, শুইয়া থাকিলে বৃদ্ধি, বিছানায় পাশ ফিরিলে, বা এদিক ওদিক চাহিলে, মনে হয় বিছানায় শুইয়া চক্ষু ঘুরাইলে, অথবা চক্ষু ফিরাইলে উপস্থিত হয়। ইহা অনেকটা কক্কুলাসের অবস্থার অনুরূপ, কেবলমাত্র শিরোঘূর্ণন সম্বন্ধে নহে, কিন্তু পেশীগুলির সর্বাঙ্গীণ মন্থর অবস্থা সম্বন্ধেও বটে। সৰ্বাঙ্গীণ পেশীর আংশিক পক্ষাঘাত ও দুর্বলতা, চক্ষেও বর্তমান থাকে। চক্ষুর সকল পেশীর পৈশিক দুর্বলতা থাকে, সুতরাং কোনিয়ামের রোগী চলমান জিনিষের দিকে তাকাইলেই সবমন। শিরঃপীড়া, দৃষ্টিসম্বন্ধীয় ও মানসিক উপদ্রববিশিষ্ট হইয়া পড়ে। গাড়ীঘোড়া চড়িতে, দ্রুতবেগে গমনশীল দ্রব্যাদি দেখিতে, কোন বিন্দুতে দৃষ্টিসংলগ্ন করিতে অক্ষমতা—আমরা যাহাকে পেশীশক্তির সামঞ্জস্যের মন্থরতা বলি—তাহা অনেক প্রকার রোগের কারণ হয়। যথেষ্ট দ্রুত বেগে গমনশীল বস্তুকে দেখিতে পায় না এবং তাহাতে একপ্রকার শিরঃপীড়া উপস্থিত হয়। বস্তুসমূহ লাল, রামধনু বর্ণের, ডোরা ডোরা, মিশ্রিত দাগযুক্ত দেখায়, একটি জিনিস দুইটি দেখায়; দৃষ্টিশক্তির দুর্বলতা, নিকটদৃষ্টি, অধিকক্ষণ পড়িলেই অক্ষরগুলি জড়াইয়া যায়। ইহার সবকিছুই পেশীশক্তির অসামঞ্জ্যহেতু। দৃষ্টিপথের বিভিন্ন সমিায় যোজনার মন্থরতা। উত্তেজনাবশিষ্টি হইলে দৃষ্টি অস্পষ্ট হইয়া পড়ে। চক্ষুর দুর্বলতা ও জ্বলজ্বলে ভাব। চক্ষুর প্রদাহ ব্যতীত আলোকাতঙ্ক। জোড় আলো হইতে অস্পষ্ট আলোর পরিবর্তনে চক্ষুতারকাদ্বয়ের ক্রিয়ার সামঞ্জস্য থাকে না এবং সেইজন্য তাহার কষ্ট হয়। অত্যন্ত আলোকাতঙ্ক এবং অশ্রুস্রাব। চক্ষুতারকার বহিঃস্থ বা অবন্তরস্থ কোন তন্তুর রক্তসঞ্চয় ব্যতীত আলোকাতঙ্ক। চক্ষুতারকাদ্বয় সময়ে সময়ে সঙ্কুচিত এবং সময়ে সময়ে প্রসারিত হয়। কোনিয়াম কনীনিকার ক্ষত আরোগ্য করিয়াছি। পড়িবার সময় চক্ষে জ্বালা। চক্ষুতে তীরবিদ্ধবৎ, খোঁচামারার মত, কাটিয়া ফেলার মত, জ্বালাকর যন্ত্রনা। চক্ষু পাতা দুইটি কঠিনতাপ্রাপ্ত হয়, পুরু হয় এবং ভারি হইয়া ঝুলিয়া পড়ে। সে কষ্টে উহাদিগকে উঠায়তে পারে। সুতরাং এই পক্ষাঘাত শরীরের পেশীসমূহের মধ্যে বিস্তৃত হয় এবং একইভাবে মনকে আক্রমণ করে। অতিকষ্টে চক্ষুর পাতা উঠাইতে পারে, মনে হয় উহাদিগকে গুরুভার দিয়া জোড় করিয়া নীচের দিকে নামান হইতেছে। চক্ষুপাতার সমুদয় উপরিভাগে জ্বালা; আঞ্জনি, চক্ষু পেশীগুলির পক্ষাঘাত। একটি স্পষ্ট লক্ষণ মুখে ও কানের চারিদিকের এবং চোয়ালের নিম্নের গ্রন্থিগুলির স্ফীতি। কর্ণমূলগ্রন্থি স্ফীত ও কঠিনতাপ্রাপ্ত। চোয়ালের মধ্যবর্তী গ্রন্থির এবং জিহ্বার নিম্নবর্তী গ্রন্থির ঐ একই প্রকার বর্দ্ধশীল কঠিনতা। কর্কটরোগে গ্রীবাপার্শ্বস্থ গ্রস্থিগুলির বৃদ্ধি। ইহা চক্ষের পাতার, নাকের, এবং গন্ডস্থলের অন্তঃত্বকের অর্বুদ আরোগ্য করিয়াছে। ওষ্ঠের উপরে কঠিনতাপ্রাপ্ত ক্ষত। ক্ষতের গভীর তলদেশে কাঠনতা থাকে এবং যে সকল নালীগুলি ক্ষতের দিকে রস প্রেরণ করে তাহাদের চারিদিকে মালার মত গাঁটগাঁট থাকে।

আংশিক পক্ষাঘাত বাড়িয়া যাইয়া গলনলীর পক্ষাঘাত হয়, গিলিতে কষ্ট হয়, খাদ্য কতকটা পথ নামে ও থামিয়া যায়। খাদ্য যখন হৃদপিন্ডের মুখ অতিক্রম করিবার উপক্রম করে, তখন উহা থাকিয়া যায় এবঙ অনেক চেষ্টার পর ভিতরে প্রবেশ করে। যেন কোন কিছু আটকাইয়া আছে, এইরূপ বুজিয়া যাওয়ার অনুভূতির সহিত গলিার মধ্যে ঠেলা মারিয়া উঠে। গলার মধ্যে একটা ডেলা থাকার ন্যায় পূর্ণতার অনুভূতি, তৎসহ  অনিচ্ছায় ঢোক গিলিতে বাধ্য হয়। গলায় পূর্ণতা, তৎসহ অবরুদ্ধ উদ্গার। গলার মধ্যে এইরূপ চাপবোধ যেন পাকস্থলী হইতে গলার মধ্যে একটা গোলাকার বস্তু উঠিয়া আসিতেছে। উহা একটি স্নায়বিয় রোগ, স্নায়বিয় স্ত্রীলোকদিগের মধ্যে দেখা যায়। এবং উহাকে গ্লোবাস হিষ্টিরিকাস (গুল্মবায়ু) বলে। যখন কোন স্ত্রীলোক মনে করেন যে, তাঁহার কান্না পাইতেছে, তখন তিনি ঢোক গিলিতে থকেন, তাহার গলরোধ হয়, এবং গলায় ঐরূপ গোলা উঠার ন্যায় অনুভুতি জন্মে। স্নায়বিয় ভগ্নস্বাস্থ্য ধাতু, জীবনে ক্লান্ত-ভবিষ্যতের দিকে চাহিলে রোগ, দুঃখ ও পক্ষাঘাত বা জড়ত্ব ছাড়া আর কিছুই দেখিতে পায় না। যখন তাহাদের শান্তির মুহূর্ত আসে, তখন তাহারা কাঁদে তাহাদের বর্দ্ধিত গ্রন্থি ও দুর্বলতার কথা ভাবিয়া দুঃখিত হয় এবং আবার গলায় সেই ডেলা উঠা বোধ করে।

অনেক প্রকার পাকস্থলীর রোগ আছে, পাকস্থলী ক্ষত, পাকস্থলীর ক্যান্সাররোগ। সকল লক্ষণ মিলিলে, কোনিয়াম পাকস্থলীর লক্ষণের পক্ষে উপশমদায়ক সর্বশ্রেষ্ঠ ঔষধগুলির অন্যতম। ইহা কিছুদিনের জন্য ক্যান্সাররোগেও উপশম দিবে, কিন্তু আবার কষ্টসকল উপস্থিত হইবে, কারণ যখন লক্ষগুলি বর্দ্ধিত হইয়া কোনিয়াম প্রয়োগের মত অবস্থায় আসে, তখন অনেক ক্ষেত্রেই আর আরোগ্য আশা থাকে না।

উদরের কঠিনতা, উদরে অত্যন্ত স্পর্শকাতরতা। চিমটি কাটার ন্যায় যন্ত্রণা, সূঁচ ফোটানের ন্যায় যন্ত্রণা, শূলবেদনার ন্যায়, কাটিয়া ফেলার ন্যায়, খাল ধরার ন্যায় যন্ত্রণা। স্ত্রীলোকদের উদরে  নিন্মদিকে ঠেলামারা বেদনা, যেন জরায়ুটি বাহির হইয়া পড়িবে। উদরাময় অপেক্ষা নিষ্ফল মলবেগ, কঠিন মল ও সরলান্ত্রের পক্ষাঘাতের সহিত কোষ্ঠবদ্ধতাই অধিক ক্ষেত্রে দেখা যায়। তাহার মলত্যাগকালে বেগ দিবার ক্ষমতা থাকে না, মলনির্গমনে যে-সকল পেশী যোগ দেয় তাহাদের সবগুলির পক্ষাঘাতিক দুর্বলতার জন্য, আধেয় নির্গত করিতে পারে না। স্বাভাবিক মলত্যাগের পর উদরে স্পন্দন ও শূন্যতা অনুভব করে। স্ত্রীলোক মলত্যাগকালে এত বেশী কোঁথ দেয় যে, যোনিপথে জরায়ু বাহির হইয়া পড়ে। প্রত্যেকবার মলত্যাগের পর তাহার কম্পনবিশিষ্ট দুর্বলতা দেখা দেয় এবং বুক ধড়ফড় করে। মূত্র-প্রবাহ থামিয়া থামিয়া নির্গত হয়। রোগী মূত্র নির্গত করিবার জন্য বেগ দেয়, ক্লান্ত হইয়া পড়ে এবং থামিয়া যায়। মূত্রধারা থামিয়া যায় এবং কোনপ্রকার বেগ ব্যতীতই আবার আরম্ভ হয় এবং একবারের মূত্রক্রিয়ার মধ্যেই দুই তিন বার ঐরূপ হইতে থাকে। মূত্রত্যাগকালে পেশীসমূহের অনিয়মিত ক্রিয়া। সবিরাম মূত্র-প্রবাহ, তৎসহ মূত্রত্যাগের পর কর্ত্তনবৎ যন্ত্রণা। মূত্র কিছুক্ষণ থাকিবার পর ঘোলা হইয়া যায়।”

পুরুষের সঙ্গম শক্তির দুর্বলতা, ধ্বজভঙ্গ। তাহার খুব সঙ্গমেচ্ছা থাকিতে পারে, তবুও সঙ্গমশক্তি থাকে না। “অত্যন্ত কামপ্রবৃত্তির সহিত আংশিক বা সম্পূর্ণ অক্ষমতা। স্বপ্ন ব্যতীতই শুক্রস্রাব। কষ্টকর শুক্রস্রাব, সঙ্গম চিন্তার আবেগে কষ্টকর শুক্রস্রাব।” শুক্রকোষ সমূহের একপ্রকার সর্দিজ অবস্থার সহিত অত্যন্ত ক্ষততাবোধ থাকে, সেইজন্য শুক্রপাতের সময়ে ছুরি দিয়া কাটার ন্যায় যন্ত্রণা বোধ করে, মনে হয় যেন শুক্রটিই ক্ষতকর। বিপত্নীকদিগের এবং যাহারা সহবাসে অভ্যস্ত, তাহাদের সঙ্গমপ্রবৃত্তির নিরোধের কুফল। “সঙ্গমবিষয়ক দুর্বলতা, সম্পূর্ণ লিঙ্গোদেক, উহা অল্পক্ষণ মাত্র স্থায়ী হয়, আলিঙ্গনের পর ইন্দ্রিয়ের দুর্বলতা। অন্ডকোষের স্ফীতি ও কঠিনতা।” অন্ডকোষের কঠিনতা ও স্ফীতি ধীরে ধীরে উপস্থিত হয়। “প্রত্যেকবার মনের আবেগের পরিবর্তনে, কামচিন্তা ব্যতীতই, অথবা মলত্যাগকালে প্রষ্টেটিক রস ক্ষরিত হয়, তৎসহ লিঙ্গমুন্ডে চুলকায়।” সুতরাং আমরা অঙ্গগুলির মূত্রস্থলীগ্রীবার, জননেন্দ্রিয়ের, প্রষ্টেট গ্রন্থির বর্ধিত উত্তেজনা প্রবণতার সহিত দুর্বলতা ও ধ্বজভঙ্গের এক অদ্ভুত সংমিশ্রণ পাইলাম। মনে রাখিও পুরুষদিগের অন্ডকোষের কঠিনতা ও বৃদ্ধি এবং স্ত্রীলোকদিগের ডিম্বকোষ ও জরায়ুর কঠিনতা ও বৃদ্ধি থাকিবেই। “অতি সত্বর ও স্বল্প ঋতুস্রাবের সময়ে জরায়ুর আক্ষেপ।” গর্ভকালের প্রথমদিকে উদরে ক্ষতবৎ বেদনা অনুভব করে, জরায়ুর মধ্যে সন্তানের নড়াচড়া কষ্টকর বোধ হয়। জরায়ুগ্রীবায় জ্বালাকর, হুলবিদ্ধবৎ, ছিন্নকর যন্ত্রণা। স্তনদ্বয়ে অত্যন্ত ব্যথা। এই ঔষধে স্তন গ্রন্থিসমূহের শুষ্কতা এবং ঐগুলির বৃদ্ধি ও কঠিনতা দুইই আছে। ঋতু অবরুদ্ধ, ঋতু কষ্টকর,—জরায়ুতে, ডিম্বকোষে, বস্তিগহ্বরে দপদপকর, ছিন্নকর, জ্বালাকর বেদনা। ইহা দ্বারা জরায়ুর সৌত্রিক অর্বুদ আরোগ্য হইয়াছে। ইহা জরায়ুগ্রীবার ক্যান্সার সদৃশ উৎপত্তি দমন করিয়াছে। স্ত্রীলোকদিগের যে-সকল অতি কষ্টকর উৎপত্তির কথা জানা আছে, জরায়ুগ্রীবার ক্যান্সার সদৃশ উৎপত্তি তন্মধ্যে অন্যতম। উহা খুব দ্রুত বাড়িয়া উঠিতে থাকে এবং যেসকল ঔষধে ঐ প্রদাহ শোথ হয় এবং রক্তস্রাব কতকটা সংযত হয়, কোনিয়াম তাহাদের অন্যতম। কোনিয়াম (পরীক্ষাকালে) জরায়ুগ্রীবার কঠিনতা ও রসপ্রসেক উৎপাদন করিয়াছে।

কষ্টকর শ্বাসক্রিয়া। প্রায় অবিরত শুষ্ক কাশি, শয্যায় শয়নে বৃদ্ধি। প্রথম শুইবার সময় কাশি। উঠিয়া বসিয়া কাশিয়া লইতে হয়। দীর্ঘশ্বাস লইলে কাশি হয়। এইগুলি কোনিয়াম জ্ঞাপক কাশির বিশিষ্টতা। বুকের মধ্যে ভয়ানক সূচীবিদ্ধবৎ যন্ত্রণা বোধ করে। স্তনদ্বয়ের যন্ত্রণাদায়ক স্ফীতি। বুকে বিদীর্ণকর, ছিন্নকর যন্ত্রণা।

পৃষ্ঠদেশ সম্বন্ধে কিছুটা বেদনার সহিত দুৰ্বলতা একটি আশ্চৰ্য্য লক্ষণ। উহাকে বর্শাবিদ্ধবৎ যন্ত্রণা বলা হইয়াছে। “মেরুদন্ডে থেঁৎলাইয়া যাওয়া বা আঘাতের কুফল।” আঘাতের, বিশেষতঃ কটিদেশে আঘাতের পর বেদনা এবং নিম্নাঙ্গের শিরাগুলির পূর্ণতা। বাতবেদনা, নিম্নাঙ্গগুলির পক্ষাঘাত, ক্ষত। আক্রান্ত অঙ্গগুলি ঝুলাইয়া রাখিলে যন্ত্রণা ও অবস্থার উপশম হয়। এই বিষয়ে কোনিয়াম অন্য বহু ঔষধ হইতে পৃথক। সাধারণতঃ পা দুইটি চেয়ারের উপর তুলিয়া রাখিলে, উহাদিগকে বিছানার উপর উঁচু করিয়া রাখিলে বেদনার ও কামড়ানির উপশম হইয়া থাকে। কিন্তু কোনিয়াম রোগী বাতে, পায়ের ক্ষত ও অন্যান্য যন্ত্রণায়, বিছানায় শুইয়া হাঁটু পর্যন্ত পা বিছানার বাহিরে ঝুলাইয়া দিবে। ইহা এমন একটি ব্যাপার যে, ইহার কারণ দেখাইবার। জন্য অন্য লোককে ধরা উচিত, কিন্তু আমাদের দিক হইতে অন্ততঃ নিদানশাস্ত্র মত ঔষধ ব্যবস্থা করিবার উপযুক্ত একটি বিশেষ জিনিষ পাইতেছি আমরা কিন্তু এ পর্যন্ত ইহার কোন ব্যাখ্যা সংগ্রহ করিতে পারি নাই। মধ্যবয়স্ক ব্যক্তিগণের কম্পন বিশিষ্ট গতি।

এই ঔষধের আর একটি বিশেষ লক্ষণ, সে নিদ্রাকালে প্রচুর ঘামে। কখন কখন রোগী বলে যে, যদি সে কেবলমাত্র চক্ষু মুদ্রিত, করে, তাহা হইলেও সে ঘামিতে থাকে। ইহা নিশ্চয়ই সত্য যে, নিদ্রা যাইবার উদ্যোগে চক্ষু মুদ্রিত করিলে সে ঘর্মাক্ত হইবে। যে-সকল টিসু প্রদাহিত হয়, কোনিয়াম তাহাদের কঠিনতা ও রসপ্রসেক উৎপন্ন করে এবং এই কারণে প্রদাহযুক্ত স্থানের ছিদ্র ও আধারগুলির আকুঞ্চন জন্মাইবার প্রবণতা থাকে। মূত্রনলীর অস্বাভাবিক আকুঞ্চন এবং জরায়ুমুখের সঙ্কোচন কোনিয়াম দ্বারা আরোগ্য হইয়াছে।

[Conium-Koneion, hemlock; Maculatum-macula, spot, stain]

অপর নাম — স্পটেড হেমলক (Spotted Hemlock)

পয়জন হেমলক (Poison Hemlock)।

আম্বেলিফেরী জাতীয় কোনায়াম ম্যাকিউলেটাম গাছ এশিয়া ও ইউরোপে জন্মে। আমেরিকাতেও এর চাষ হয়। এর বীর্যকে কোনায়া বলে। কোনায়া জল অপেক্ষা লঘু, তামাকের মত স্বাদ ও গন্ধ বিশিষ্ট পীতাভ, তেলের মত স্বচ্ছ, তরল বিষাক্ত পদার্থ।

পুষ্পিত ও ফলিত বৃক্ষ থেকেই কোনিয়ামের হোমিওপ্যাথিক মূল অরিষ্ট তৈরী হয়। এই কোনায়াম বা হেমলকের বিষ পান করেই মাহাত্মা সক্রেটিসের মৃত্যু হয়েছিল। এই বিষ পানকরে ঘাতকের আদেশানুসারে তিনি কিয়ৎকাল ঘুরে বেড়িয়ে ছিলেন; তারপর দেহের কষ্টেচিৎ হয়ে শয়ন করেন। প্রথমতঃ তার জঙ্খা ও পায়ের জ্ঞান লোপ পায়, তারা নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় ও ঠান্ডা হয়, এবং ক্রমে ক্রমে এই অবস্থা হৃৎপিন্ডে সম্প্রসারিত হয়ে আক্ষেপ জন্মে মৃত্যু হয়। মৃত্যুর আগে তিনি প্রকৃস্থিত ছিলেন এবং শিষ্যদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে গেছেন।

 

সংক্ষেপে – কোনিয়াম

১। মাথা ঘোরা, বিশেষতঃ মাথা ঘুরলে বাড়ে। মাথা ঘুরলে, বা পাশের দিকে ফিরে চাইলে অথবা বিছানায় পাশ ফিরলেও মাথাঘোরা বাড়ে।

২। চোট লাগা বা থেঁৎলে যাওয়ার পরে গ্রন্থি সমূহের স্ফীততা ও কাঠিন্য।

৩। বিবর্ধিত গ্রন্থি সহকারে ক্যানসার ও গন্ডমালাগ্রস্ত ব্যক্তি।

৪। থেকে থেকে মূত্র প্রবাহিত হয়, বিশেষ করে বন্ধ হয় পুনরায় প্রবাহিত হয় অথাৎ থেমে থেমে প্রস্রাব হয়, প্রস্টেট গ্রন্থি ও জরায়ুর পীড়া।

৭। ঋতুকালে স্তনদুটি টাটায়, শক্ত হয় ও বেদনা করে।

কোনিয়ামপর্যালোচনা

১। মাথা ঘোরা

কোনিয়াম তথাকথিত মেরুদন্ডের আর একটি ঔষধ। ককিউলাস সম্বন্ধে প্যাথলজির দিক থেকে প্রামানিকগ্রন্থকারেরা কি বলেছে তা যেমন উদ্ধৃত করেছিলাম কোনিয়াম সম্বন্ধ সে রকম কিছু এখানে উল্লেখ করলাম না। কারণ সকলেই একমত যে এর পক্ষাঘাতে নীচের দিক থেকে উপরের দিকে উঠে, এবং সক্রেটিসের বিষাক্ততা। এর উদাহরণ। কারণ সক্রেটিসের এই রকম পক্ষাঘাত দেখা গিয়েছি। কোনিয়াম লোকোমোটার এটাক্সিয়ায় একটি প্রধান ঔষধ। হোমিওপ্যাথির দিক থেকে আমি সৰ্ব্বপ্রধান প্রকৃতিগত লক্ষণটি জানি তা হল-এর বিশেষ ধরনের শিরোঘূর্ণন বা মাথা ঘোরা। এই মাথা ঘোরা মাথা পাশের দিকে ঘোরালে বাড়ে (বাঁদিকে মাথা ঘোরালে বাড়লে কলোসিন্থ উপযোগী)। বিম্বনায় পাশ ফিরলেও তাই। কেউ কেউ বলে বিছনায় শুলে ও পাশ ফিরলে কষ্ট বাড়ে। আমি (ডা. ন্যাশ) কিন্তু দেখেছি দাঁড়িয়ে হোক, আর শুয়েই হোক মাথা পাশের দিকে ঘুরলে কষ্ট বাড়ে। তবে দাঁড়িয়ে মাথা ঘুরলে যে কষ্ট শুয়ে তত কষ্ট হয় না।

রোগী বিবরণী

আমি কোনিয়াম দ্বারা একটি রোগীর চিকিৎসা করেছিলাম। মনে হয় তার লোকোমোটর এটাক্সিয়া রোগ হয়েছিল। লোকটি ধীরে ধীরে পাদুটির ব্যবহার শক্তি হারাচ্ছিল। অন্ধকারে দাঁড়াতে পারত না এমনকি যখন সে রাস্তায় হাঁটত, তখন তার স্ত্রীকে সামনে বা পিছনে হাঁটত, কারণ তার স্ত্রী পাশে থাকলে তাকে তার দিকে তাকাতে হলে মাথা ঘুরতে হবে আর মাথা ঘুরতে গেলেই রোগী টলে পড়ে যাবে বা টলমল করবে, কিন্তু সামনে বা পিছনে রাখলে এসবের বালাই থাকে না।

কোনিয়াম সেবনে এই রোগী আরোগ্য হয়েছিল। তবে প্রথমে প্রায়ই এই ঔষধে রোগ বেড়ে যেত কিন্তু ঔষধ বন্ধ করলেই আবার রোগী খুব ভাল থাকত। ফিঙ্কের সি এম পোটেন্সির একমাত্র খেলেও যেমন বৃদ্ধি হত আবার নিম্নক্রমের ঔষধ খেলেও সেইরকম হত, তবে সি.এম পোটন্সির পর তার উন্নতি দীর্ঘকাল স্থায়ী হত।

এক সপ্তাহ থেকে চার সপ্তাহ ঘড়া এক মাত্রা ঔষধ সেবনে সে এক বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গিয়েছিল। তবে আমার কাছে আসার আগেই তার রোগ প্রায় দুরারোগ্য ও বহুদিনের পুরাতন হয়ে গিয়েছিল।

মন্তব্য

আমি (ডা. ন্যাশ) এই লক্ষণটি বৃদ্ধদের মাথা ঘোরায় অনেকবার সত্য বলে প্রমান করেছি। তবে বুড়োদের মধ্যেই যে কেবল এরকম মাথা ঘোরা দেখা যায় তা কিন্তু না, অনেক সময় সকল বয়সের নানা রকম রোগের সঙ্গে ইহা থাকতে পারে, বিশেষতঃ ডিম্বকোষ ও জরায়ু পীড়ায় এরকম দেখা যায়।

আর কোন ঔষধে এই লক্ষণটি এত প্রবলভাবে আছে কিনা তা আমার জানা নেই।

২। চক্ষু প্রদাহ

গন্ডমালা ধাতু দুষ্ট ব্যক্তিদের একপ্রকার চক্ষু প্রদাহ (অপথ্যালমিয়া) দেখা যায় এবং তাতে অন্য যেকোন ঔষধ অপেক্ষা কোনিয়ামই অধিক উপযোগী। উহার বিশেষ ও অসাধারণ লক্ষণ—আলোকাতঙ্ক (ফটোফোবিয়া), বিশেষ করে প্রদাহের বাহ্য লক্ষণ অপেক্ষা আলোকাতঙ্কের অনেক বেশী আতিশয্য থাকে। বেদনা রাত্রিতে বাড়ে এবং অত্যল্প আলোক কিরণে কষ্ট অত্যন্ত বৃদ্ধি পায়, অন্ধকার ঘরে ও চাপে উপশম হয়।

এই সঙ্গে কর্নিয়ার ক্ষত থাকতেও পারে বা নাও থাকতে পারে।

চোখের পক্ষাঘাতেও জেলসিমিয়াম, কষ্টিকাম ও সিপিয়ার মত কোনিয়ামও একটি অত্যুকৃষ্ট ঔষধ। গ্রন্থি স্ফীতি ও কাঠিন্য, তার সঙ্গে টনটন করা ও সূচীবিদ্ধবৎ বেদনা, বিশেষ করে আঘাত লাগা ও থেঁৎলে যাওয়ার পরে কোনিয়াম উপকারী।

টিউমার

অনেকগুলি রোগীর স্তনের ডেলা বা ফোলা এই ঔষধে আরোগ্য হয়েছে। স্তনের সঙ্গে কোনিয়ামের বিশেষ সম্বন্ধ আছে বলে মনে হয়।

এমনকি স্তনের (এস্টি রিয়াসে), জরায়ুর ও পাকস্থলীর ক্যানসার জনিত রোগে, শেষ করে যদি ঐ স্থান গুলিতে আঘাত বা উপঘাতের ফলে রোগ উৎপন্ন হয় তাহলে কোনিয়ামে উপকারদর্শেও রোগ আরোগ্য হয়। সকল প্রকার টিউমারে বিশেষ করে টিউমার সিরাস (Cirrhous) কঠিন বা অন্য কোন রকমের হোক না কেন যদি পাথরের মত শক্ত হয় এবং ভার বোধ হয় এবং যদি আঘাতের ফলে উৎপন্ন হয়ে থাকে তাহলে কোনিয়াম অব্যর্থ।

পার্থক্য-

কোনিয়াম ও সাইলিসিয়া উভয় ঔষধেই স্তনের কঠিনতা আছে। কোনিয়াম ডান দিকের এবং সাইলিসিয়া বাঁদিকের স্তনের গুটিকায় উপযোগী (কাৰ্ব্বো অ্যানিমিলিস।

এছাড়া তরুণ অবস্থায় যদি স্তনে অস্ত্রাঘাতবৎ বেদনা থাকে (এস্টিরিয়া),আবার গতি ঋতুকালে স্তনদ্বয় বড় হয়ে উঠে, বেদনা করে, স্পর্শাদ্বেষ বিশিষ্ট হয় এবং সামান্য ঠোকাঠুকি লাগলে বা হাঁটলেও বেদনা বাড়ে তাহলে কোনিয়ামই বিশেষ ভাবে পযোগী।

স্তন, জরায়ু অথবা অন্য কোন স্থানের কঠিনতন্তুযুক্ত টিউমারে বা সিরাস (Cirrhous) টিউমারে কোনিয়ামে বেদনায় জ্বালা, হুলবিদ্ধ কর বেদনা বা চিড়িকমারা লক্ষণ থাকে, এপিস মেলের ও এই রকম বেদনা লক্ষণ থাকে বটে, কন্তু এক্ষেত্রে অন্যান্য লক্ষণ দেখে উভয় প্রকার ঔষধের পার্থক্য নির্ণয় করতে হয়।

জননেন্দ্রিয়ে কোনিয়ামের সুস্পষ্ট ক্রিয়া প্রকাশ পায়।

পুরুষের জননতন্ত্রের অতিশয় দুর্বলতা থাকে। রোগীর দারুণ কাম-প্রবৃত্তি ও কাম-চিন্তা থাকে বটে, কিন্তু সে ক্রিয়া সম্পাদনে অক্ষম। স্ত্রীলোক দেখলে কিংবা তাদের বিষয় ভাবলে শুক্রপাত হয়। পুরুষাঙ্গে যথোচিত উত্থিত হয় না, উহা অল্পক্ষণ উত্থিত থাকে অথবা ঠিক সংসর্গকালে শিথিল হয়ে পড়ে, এতে রোগীর দুর্বলতা ও মর্মান্তিক মনঃকষ্ট দেখা দেয়। বিশেষ করে এতে রোগীর মন আক্রান্ত হয় ও খুব উৎকট রকমের অবসাদ বা (হাইপোকন্ড্রিয়াসিসে) রোগ জন্মে। স্ত্রী-পুরুষ উভয়ের মনেই এরকম অবস্থা ঘটতে পারে, বিশেষ করে অতিরিক্ত বা খুব কম ইন্দ্রিয় সেবা বা অতি ইন্দ্রিয় সংযমের ফলেও এই অবসাদ বায়ু রোগ জন্মাতে দেখা যায়। এজন্যে কোনিয়াম অবিবাহিতা বৃদ্ধ ও বৃদ্ধাদের পক্ষে একটি উৎকৃষ্ট ঔষধ। এই সকল রোগীর যদি মাথা ঘোরা থাকে তাহলে কোনিয়াম নিশ্চয়ই কাজ করবে।

৫। থেকে থেকে মূত্র স্রাব কোনিয়ামের একটি বিশেষ চরিত্র গত লক্ষণ (ক্লিমেটিস)।

কেউ কেউ মনে করতে পারেন মূত্রাশয়ের পক্ষাঘাতিক অবস্থাই এর জন্য দায়ী। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে প্রস্টেট গ্রন্থির বিবৃদ্ধি বা অতিশয় বৃদ্ধির জন্যই এই লক্ষণ প্রকাশিত হয়ে থাকে এবং এক্ষেত্রে কোনিয়ামহ উপকার করে।

৬। ঘুমিয়ে পড়া মাত্র, বা চোখ বুজলেই (দিনে বা রাত্রিতে) ঘাম— কোনিয়ামের একটি বিশেষ লক্ষণ। এই লক্ষণটি অন্য কোন ঔষধে দেখা যায় না। (সাম্বুকাসে এর বিপরীত লক্ষণ আছে)।

মন্তব্য-

ডা. লিপি এক সময়ে এই লক্ষণটি দ্বারা পরিচালিত হয়ে ৮০ বছরের একজন পুরুষের এক পাশ্বিক পক্ষাঘাতে সুন্দর ভাবে আরোগ্য করেছিলেন। আমার মনে হয় প্যাথলজি অনুসারে এই রকম একটি লক্ষণের কারণ ঠিক করা ও তার ব্যাখ্যা দেওয়া অত্যন্ত কঠিন, কিন্তু এর নিশ্চয়ই কোন কারণ আছে যা আমাদের অজানা। তবে আরোগ্যের সম্ভবনা থাকলে, এবং ঔষধটি সাদৃশ্য লক্ষণানুসারে ব্যবহৃত হলে যে কোন রোগ নিশ্চয়ই সারবে।

লক্ষণের সম্বন্ধ বিচার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার একটি বড় কাজ। এর দ্বারা চিকিৎসক সহজে ও সংক্ষেপে ঔষধের ব্যবস্থা করতে পারেন। একে আমরা ঔষধ বস্থার সংক্ষিপ্ত পথ বলেও অভিহিত করতে পারি। এখানে কোনিয়ামের প্রধান। বশেষ লক্ষণটির-মাথা ঘোরার উল্লেখ করা হল।

 

 

মাথা ঘোরা

মাথা ঘুরলে-                  মাথা ঘোরা- কোনিয়াম, ক্যাল অষ্ট, কেলিকার্ব্ব।

মাথা নাড়লে-                 মাথা ঘোরা- বায়ো, ক্যাল্ক অষ্ট, কোণি।

উপরের দিকে তাকালে-      মাথা ঘোরা— পালস, সাইলি।

নীচের দিকে তাকালে-        মাথা ঘোরা- ফস, স্পাইজি, সালফ।

ফুলের গন্ধে                    মাথা ঘোরা- নাক্স ভমিকা, ফস।

রাত জাগায় বা নিদ্রাহীনতায়- মাথা ঘোরা- ককু, নাক্স ভমিকা।

অতি সামান্য শব্দে             মাথা ঘোরা- থেরিডিয়ান।

হাটার সময়                     মাথা ঘোরা— নেট্রাম মিউর, নাক্স ভমিকা, ফস, পালস।

পড়ার সময়                     মাথা ঘোরা স্ট্রোম মিউর।

খাওয়ার সময় ও পরে          মাথা ঘোরা- গ্রাটিওলা, নাক্স ভমিকা পালস।

যেন চক্রাকারে ঘুরছে           মাথা ঘোরা- ব্রায়ো, কোনি, সাইক্লে, পালস।

যেন বিছনাটি ঘুরছে             মাথা ঘোরা- কোনিয়াম।

মুর্চ্ছাসহ                          মাথা ঘোরা- নাক্স ভমিকা।

টলমল করা সহ                 মাথা ঘোরা- আর্জ নাই, জেল, নাক্স ভমিকা, ফস।

চোখ বুজলে বা অন্ধকারে        মাথা ঘোরা- আর্জ নাই, স্ট্রামো, থেরিডিয়ন।

ঝাপসা দৃষ্টিসহ                   মাথা ঘোরা- সাইক্লে, জেলস, নাক্স ভমিকা।

আসন থেকে উঠার সময়        মাথা ঘোরা— বায়ো, ফস।

হেট হওয়া অবস্থা থেকে মাথা তুললে- মাথা ঘোরা- বেলেডোনা।

বিছানা থেকে উঠবার সময়       মাথা ঘোরা- ব্রায়ো, চেলিডো, ককিউলাস।

মাথা নীচু করলে বা হেঁট হলে     মাথা ঘোরা- বেলে, নাক্স, পালস, সালফ।

সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠবার সময়- মাথা ঘোরা- ক্যাল্কঅষ্ট।

সিঁড়ি দিয়ে নীচে নামবার সময়-  মাথা ঘোরা- বোরাক্স, ফেরাম।

শোয়ার সময়                 মাথা ঘোরা- কোনিয়াম।

শোয়ার দরকার হয় এমন          মাথা ঘোরা- ব্রায়ো ককিউলাস,ফস, পাল।

মাথার পিছ দিকে                   মাথা ঘোরা- জেলস, সাইলি, পেট্রোল।

ঘুমের পরে                          মাথা ঘোরা- ল্যাকেসিস।

ঋতু বিলোপের পর                  মাথা ঘোরা— সাইক্লে, পালস।

 

Con : Conium Maculatum
KINGDOM:

Plant


FAMILY:

Umbelliferae


SOURCE:

It is prepared from the tincture of the entire plant when in flower.


A/F:

-From being alone

-From masturbation

-Sexual excess

-Climacteric period

-Grief, sorrow

-Disappointed love


MODALITIES:

< Lying down,

< Turning in bed

< Raising the affected part

< Rising from bed, from sitting position

< Celibacy

< Before and during menses

< From taking cold

< Physical exertion

< Mental exertion.

< Rest

< While eating

< After eating

< 9 p.m. to 5 a.m.

< Alcoholic drinks

< Milk

< Jarring and stepping

< Lifting, overlifting, straining of muscles and tendons

< Light, daylight, artificial light, candlelight, lamplight

< Lying

< At the beginning of motion

< Rubbing, massage

< Suppression of sexual desire

< Sitting

< Standing

< Snow air

< Fast walking

< While walking

< Frosty hoarfrost weather

< About midnight 4 am

< Frosty air

< Open air

< Cold bathing

< Ascending

< Getting out of bed

< Bending, turning backwards

< Turning in bed

< After breakfast

< Change of position

< After coition

< Getting cold

< Putting hand out of bed

< Descending

< Mental exertion

< Motion of affected part

< Reading

< Rising up

< Winter

< Sitting erect

< During and after sleep

< Supporting a part

< Warmth of stove

> Motion

> Pressure

> After coition

> Darkness

> While fasting

> Hang down, letting limbs

> Continued motion

> Sitting down

> Walking bent

> Ascending

> Lying in knee-elbow position

> Lying with head high

> Sitting bent

> After stool

> Stooping


CONSTITUTION:

-Cancerous diathesis.

-Old looking expression.

-Complexion is fair, blonde, light.


MIND:

-Excitement causes mental depression.

-Depressed, timid, averse to society, and afraid of being alone.

-No inclination for business or study; takes no interest in anything.

-Memory weak; unable to sustain any mental effort.


KEYNOTES:

1. Mind

SEXUAL EXCITEMENT, LOW SPIRITED WITH ANXIETY AND SADNESS FROM SUPRESSION OF EXCITEMENT

SEXUAL EXCITEMENT SUPRESSED

Anxiety

Confusion Of Mind After Siesta

Dementia In Old People

Dreams Frightful, Many, Visionary

Dullness, Sluggishness, Difficulty Of Thinking And Comprehending While Reading

Gestures Of Fingers As If Picking, Grasping Or Reaching At Something

Hypochondriasis From Sexual Abstinence

Hypochondriasis From Sexual Excess

Ideas Deficiency of

Imbecility

Indifference, Apathy

Indifference, Apathy During Fever

Irritability With Chill

Shuns Light

Weakness Of Memory With Vertigo

Loss Of Memory

Prostration Of Mind, Mental Exhaustion, Brain Fag

Sadness, Despondency, Depression, Melancholy During Chill

Sadness, Despondency, Depression, Melancholy From Continence

Sadness, Despondency, Depression, Melancholy During Intermittent Fever

Sadness, despondency, depression, melancholy during perspiration

Sadness, despondency, depression, melancholy from suppressed sexual excitement

Dullness and bluntness of senses during chill

Oversensitive to noise

Inclination to sit

Slowness in old people

STUPEFACTION, AS IF INTOXICATED AFTER SLEEP

Stupor in the morning

Vanishing of thoughts

Work fatigues

Company desire for with dislike to society

Aversion to dresses in sadness

Excitement after sad singing

Fear, dread of work, can not be persuaded

Haughty likes to wear his best clothing

Hypochondriasis with suppressed menses

Impressionable, susceptible unpleasantly by everything

Indifference, apathy in evening 5-6pm

Indifference, apathy with irritability < afternoon 5-6pm

Indifference, apathy while walking in open air

Irritability in afternoon until 5 pm

Grief as if a great, weighted on him < five pm. – six pm

Morose, sulky, cross, fretful, ill-humour, peevish < 5-6pm

Quarrelsomeness, scolding alternating with sadness

Sadness, despondency, depression, melancholy periodical every 14 days

Talk indisposed to desire to be silent alternating with quarrelsomeness

Weakened power of correctly expressing:

Weeping, tearful mood periodical every four weeks

Weeping, tearful mood sobbing aloud when alone

2. Generals

Acts on the glandular system, engorging and indurating it, altering its structure like scrofulous and cancerous conditions.

INDURATION OF GLANDS AFTER INJURY

Atrophy of glands

Cancerous affections

Cancerous affections Scirrhus

Ulcers of glands

Catarrh

Sensation of constriction and band in internal organs

Convulsions hysterical, uterine

Faintness after stools

Easily intoxicated

Formication of glands

Flushes of heat with perspiration

Heaviness externally

Injuries, blows, falls and bruises of glands and soft parts

Lack of physical irritability

Itching and tickling of glands

Lassitude tendency

Mucous secretions corrosive and purulent

Numbness of parts suffering externally

Direction of pain outwards

Cutting, constricting pains externally

Cutting, tearing pain internally

Sore bruised pain in glands

Sore bruised pain in joints > on motion

Stitching pain in bones

Paralysis painless

Pulse:Frequent, accelerated, elevated, exalted, fast, innumerable, rapid after stools

Pulse large

Pulse quivering

Lack of reaction

Sensitiveness of glands

Right-sided affections

Impulse to sit

Swelling of glands

Swelling of glands-cold, hard, inflammatory and painful

Tension, tightness externally

Trembling externally

Trembling externally after stools

Ulcers are cancerous

Symptoms go upwards

Weakness, enervation, exhaustion, prostration, infirmity

Weakness, enervation, exhaustion, prostration, infirmity > in evening in open air

Weakness, enervation, exhaustion, prostration, infirmity < from slight exertion

Weakness, enervation, exhaustion, prostration, infirmity, tremulous after stools

Weakness, enervation, exhaustion, prostration, infirmity in joints

Wounds of glands

Cancerous affections after contusions

Trembling from wine

Aversion to open air

Abscesses, suppurations- pus tenacious

Anaemia:Impaired production of red blood cells

Anaemia from iron deficiency

Dread of bathing

Blackness of external parts, gangrene

Discharges smelling like old cheese

Dwarfishness

Faintness, fainting tendency

Fistulae with ulcers of skin

Aversion to bread

Desires coffee

Aversion to, loathing to food in general

Gait reeling, staggering, tottering and wavering

Flushes of heat on falling asleep

Lack of vital heat

Premature aging

Periodicity every fourteen days

Left sided affections

Sensitiveness to pain

Sluggishness of the body

Symptoms or sensations occur in spots

Weakness, enervation, exhaustion, prostration, infirmity

Extravasation of wounds

3. Head

Vertigo

VERTIGO > ON CLOSING THE EYES

Vertigo during headache

Vertigo < On lying down

Vertigo on moving the head

Vertigo as if turned in bed

Vertigo on turning in bed

Vertigo as if turning in circles

Vertigo < on quickly or suddenly turning the head

Head pain < on coughing

Head pain heavily on standing

Bursting pain in head

Shooting pain in forehead

Heat on occiput < Excitement

Heaviness of head < while sitting bent over

Heaviness of occiput < while sitting bent over

Head pain on right side as if there is a foreign body

Cutting, darting, stabbing pain in occiput with every pulsation

Lancinating pain in occiput with every pulsation

Shooting pain in occiput with every pulsation

Tearing, rending pain on sides , must lie down

4. Eyes

ECCHYMOSIS OF RIGHT EYE

ULCERATION OF CORNEA FROM RIGHT TO LEFT

Eyes close involuntary

Heaviness of lids

Opacity of cornea

Pain in eyes from light and reading

Pain:Burning, smarting, biting

Pain in lids as if pressing them outwards

Paralysis of optic nerve

Photophobia intense

Photophobia without inflammation

Weakness in eyes

Accommodation slow

Objects seem red

Objects seem striped and variegated

Vision dazzling, dim, striped and weak

Sensation as of a fringe were falling over the eyes

Aching pain in eyes before sleep

Loss of vision, blindness after pain in head and eyes < in afternoon

5. Ears

Discharges

Pain in ear from noises

Sound is heard sharp

Stitching pain in ear

Stopped sensation

Wax red

Acute hearing

Acute hearing to noises

Acute hearing during heat

Acute hearing during perspiration

Hearing impaired > after removal of wax

Hearing impaired from paralysis of auditory nerve

6. Nose

Discharge purulent

Obstruction of nose

Pain at the root of the nose before menses

7. Face

Cancer of lips

Discolouration bluish, yellow

Herpes eruptions on cheeks

Ulcers of lips, cancerous

8. Mouth

Drawing pain in teeth < while eating cold food

Drawing pain in teeth < while walking in open air

9. Throat/External throat

Irritation of throat

Induration of glands

Swelling of cervical glands

Hard swelling of cervical glands

Constant disposition to swallow while walking in wind

Swallowing involuntary when walking in wind

10. Stomach

Cancer of stomach

Eructations empty

Heartburn

Nausea during headache

Nausea from seasickness

Pain:Cramping, griping, constricting

Distension of stomach after milk

Eructations suppressed before pain in stomach

Regurgitation of food putrid

11. Abdomen

Sensation of band around hypochondria

Cutting pain > after passing flatus

Distension after milk

Stitching, sticking pain in right hypochondria

Stitching, sticking pain in liver

Acute inflammation of pancreas

Sticking, stitching pain in iliac region during menses

12. Rectum

Constipation

Constipation difficult stools

Constipation with ineffectual urging

Burning pain in rectum < during stools

Sharp stitching pain in rectum

Frequent urging

Sensation of weight on perineum

Stools watery

Coldness in anus during stool and flatus

Cold flatus

Tenesmus in rectum with hard stools

13. Urinary system

Retention of urine

Constant urging to urinate

INEFFECTUAL, FRUITLESS URGING TO URINATE DURING HEADACHE

Urination interrupted, intermittent

Cutting pain in urethra

Cutting pain in urethra during urination

Urine cloudy, pale

Urine scanty

Stitching, sticking pain in the neck of bladder > sitting

Urination interrupted, intermittent in climacteric period

Acute inflammation of the parenchymous tissue in kidney

haemorrhage in first part of urination

14. Prostate gland

Emission prostatic fluid with itching at prepuce

15. Emission prostatic fluid with every emotion

Emission prostatic fluid while fondling woman

Emission prostatic fluid during lascivious thoughts

Emission prostatic fluid with stools

Enlargement of prostate

Hardness of prostate

Complaints after masturbation

Enlargement of prostate in old people

16. Male genitalia

Cancer of testes

Erections, troublesome

Erections, troublesome, wanting impotency from continence

Erections, troublesome, incomplete

Induration of testes

Inflammation of testes

Itching of penis at prepuce

Pollutions, seminal emissions

Pollutions, seminal emissions during caresses

Pollutions, seminal emissions while caressing a woman

Sexual desire increased

Sexual desire increased without erection

Itching of penis at prepuce during discharge of prostatic fluid

Erection painful, incomplete, too quick, premature

Erection from least excitement

Erection incomplete during coition

17. Female genitalia

Cancer of uterus, scirrhus

Enlarged ovaries

Enlarged uterus

Induration of ovaries and cervix of uterus

Menses absent, amenorrhoea

Menses too late, scanty, suppressed

Stitching pain in uterus

Sexual desire increased

Sexual desire suppressed

Sexual desire suppressed in climacteric period

Aversion to coition in climacteric period

Induration from injuries

Menopause in servants

Tearing pain while sitting

18. Larynx/Trachea

Dry spot in larynx

Formication, crawling

Tickling in the air passages

19. Cough

COUGH ONLY ON LYING

COUGH ON FIRST LYING DOWN, WAS OBLIGED TO SIT UP AND COUGH IT OUT, THEN HAD REST

COUGH MUST SIT UP, COUGH IT OUT AND THEN HAD REST

Cough in evening in bed

Cough < deep breathing

Cough in dry fever from tickling in larynx

Cough from dryness of air passage

Cough < during fever

Cough from formication, crawling in larynx

Hacking cough from dryness in larynx

Cough from irritation in larynx

Cough commences, as soon as lies down

Cough from dry spot in larynx

COUGH FROM TICKLING IN THROAT

Violent cough at night

Expectoration purulent

Must swallow expectoration that has been loosened

Cough during pregnancy < Night

20. Chest

PAIN IN HEART DURING PAINFUL MENSES

Atrophy, of mammae

Cancer of mammae

Constriction, tension, tightness in chest

Flabby mammae

Induration of right mammae

Itching of mammae

Nodules in mammae

Sore bruised pain in mammae before menses

Sore bruised pain on sides of mammae < on touch

Stitching pain in sides of mammae < night

Palpitation heart

Palpitation heart after drinking

Palpitation heart after stools

Shocks in the region of heart

tumours of mammae

tumours of mammae in climacteric period

Fullness during menses

Milk is thin and watery long after weaning

Pain in mammae on every step

Cutting, sudden sharp pain in heart during menses

Stitching pain in mammae

21. Back

Pain in back < at the beginning of motion

Pain in sacral region < while standing

Stitching shooting pain in sacral region < standing

Polypus

22. Extremities

Coldness of foot

Yellowish discolouration of finger nails

> Hang down, letting limbs

Heaviness, tired limbs-upper and lower

Heaviness, tired limbs after exertion

Heaviness, tired limbs

In coordination

23. Itching of back of the fingers

Numbness, insensibility of leg and foot

Paralysis painless

Paralysis of lower limbs painless

Tottering

Weakness of joints, upper limbs

Weakness of lower limbs < while and after walking

Weakness in knee on ascending stairs

Weakness in legs

Pain in upper limbs on hanging down > raising arm

Pain in lower limbs > letting limb hang down

Sore, bruised pain in joints > on motion

Numbness, insensibility in fingers after eating

Numbness, insensibility in heel while sitting

Paralysis of extremities < 5-6 pm

Trembling of thigh while walking

Pressing pain in left thigh as from a ball

Stitching pain in the tip of first toe while sitting

24. Sleep

Deep

Perspiration during falling asleep

Sleeplessness before midnight

Sleeplessness from perspiration

Waking from perspiration

Restless sleep in mental derangements

25. Chill/Fever

Chilliness in morning

Intense heat

Dry burning heat < Night

PERSPIRATION IN DAYTIME WHEN CLOSING THE EYES

Perspiration at night on closing eyes.

Perspiration < During heat

Perspiration hot

Perspiration during sleep even when closing the eyes

26. Skin

Discolouration greenish spots

Discolouration yellow spots

Eruptions crusty, herpetic

Inactivity of skin

Indurations, nodules

Ulcers crusty, indolent, mottled areola and tense

Eruptions petechiae in old people

Rash during menses


NUCLEUS OF REMEDY:

-It corresponds to the debility, hypochondriasis, urinary troubles, weakened memory, sexual debility found in old people.

-Troubles at the change of life, old maids and bachelors.


CLINICAL:

Arteriosclerosis, Caries of sternum, ASCENDING PARALYSIS, Epithelioma, Polypi, Orchitis, Hydrocele, Peritonitis, Gastritis.


REMEDY RELATIONSHIPS:

Inimical : Psor.

Compare : Aeth, Ambr, Asaf, Calc, Graph, Oena, Petros, Phel.

Antidoted By : Coff, Dulc, Nit-ac, Nit-s-d.

It Antidotes : Merc, Nit-ac, Sulph.

Duration Of Action : 30-50 Days.


✅ আমাদের সফল চিকিৎসার প্রমাণ দেখুন।

(ডান পার্শের মেনুতে রোগের নাম লিখে সার্চ করুন)

[videogallery id=”Success of Homeopathy”]

.
.

About The Author

D.H.M.S (Dhaka), M.M (BMEB) Consultant Homoeopathic physician Researcher, books author and speaker Owner of HD Homeo Sadan  CEO of HD Health Lecturer: Ashulia Homeopathic Medical College

Related posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *