Bac | লক্ষণ সমূহ পরিবর্তনশীল অর্থাৎ রোগীর মগজ, ফুসফুস, কলিজা, প্লীহা, স্নায়ুবিধান ইত্যাদি একেক সময় একেক স্থানে আক্রান্ত হয়। |
Bac | লক্ষণ হঠাৎ আসে আবার হঠাৎ চলে যায়। |
Bac | সহজেই সর্দি লাগে, খুব সাবধানে থাকলেও রক্ষা নাই, কেমন করে যে সর্দি লাগে, তা রোগী নিজেই ঠিক বুঝতে পারে না। |
Bac | রোগী দিন দিন রোগা হয়ে হতে থাকে। বেশ খায় দায় অথচ রোগা হয়ে যায়। |
Bac | ঘাড়ের গ্রন্থিগুলি (গ্ল্যান্ড) বড় ও তাতে ব্যথা। |
Bac | চোখের পাতার ধারে একজিমা বা কাউর ঘা। |
উপযোগিতা – মানসিক—চুপচাপ, মনমরাভাব, অল্পেতেই রেগে যায়, কোন কিছু বললেই বা করলেই যেন ক্ষেপে যাবে, খিটখিটে, হতাশ, আশাশূন্য। সবকিছুতেই নিরাশী এতে যেন পাগল হয়ে যাবে ।
রোগের বিষয়েই শুধু চিন্তা, রোগ নিয়ে অভিযোগ—কুকুরের কথা আলোচনা হলে ভীষণ ভীত হয়ে পড়ে ।
মাথা – মস্তিষ্কের ভিতরে তীব্র যন্ত্রণা বারে বারে ঘুরে আসে- যন্ত্রণায় চুপ করে পড়ে থাকতে হয়—নাড়ালেই যন্ত্রণা বেড়ে যায়। এত যন্ত্রণা যেন লোহার বেড়ি দিয়ে মাথা চেপে ধরা আছে ঐ সাথে হাত দুটো কাঁপতে থাকে ঐ সাথে মেরুদন্ডে যেন ভেঁজা কাপড়চোপড় ঠাসা আছে-যন্ত্রণায় একদম ঘুমাতে পারে না। মাথায় স্থানে স্থানে চাপ বেধে চুল উঠে যায় (Alopecia Areate)।
চোখ – চোখের পাতায় দাঁদ ।
মুখ — বাঁদিকের গালে ভয়ঙ্কর ব্রনে ভরে যায়—পেকে যায় আবার হয়, কিছুতেই সারতে চায় না, অনেক সপ্তাহ ধরে এই ভাব চলতে থাকে ।
দাঁত – ঘুমের মধ্যে দাঁত কিড়মিড় করে দাঁতগুলো অসমান, ভঙ্গুর ।
পাকস্থলী — বদহজম, পেটে বায়ু হয়, স্তনের ঠিক নীচের পাজরগুলোতে সূঁচ ফোটানো মত যন্ত্রণা হয় ।
পেট – (পেট গরম হয়ে) জ্বর হয়, (হজম হয় না বলে) দেহ শুকিয়ে যায়। তলপেটে যন্ত্রণা, অস্বস্তি, রাতে অস্থিরতা ঐ সাথে কুঁচকি দুটো ফোলে শক্ত হয়। ঘুমের মধ্যে চিৎকার করে ওঠে, জিব কালচে হয়ে যায়। অন্ত্রের ক্ষয়রোগ। ঘুমর মধ্যে কথা বলে, দাঁত কিড়মিড় করে, খিদে থাকে না, হাত দুটো নীল হয়ে যায় হাত বোলালে টের পাওয়া যায়, দেহের সবগ্রন্থিগুলো শক্ত হয়ে যায়—হাত বোলালে টের পাওয়া যায়, পেট ঢাকের মত ফুলে ওঠে, প্লীহাস্থান ফুলে ওঠে (প্লীহা বাড়ে) ।
কুঁচকী ফোলে ঘাম হয় প্রচুর ক্রনিক উদরাময়ে ভোগে ।
মল ও মলদ্বার — দুর্দম্য কোষ্ঠকাঠিন্য। অত্যন্ত পচাগন্ধযুক্ত বায়ু-নিঃসরণ, অর্শে সূঁচ ফোটানো যন্ত্রণা ।
প্রস্রাব – প্রচুর পরিমাণে ফ্যাকাসে প্রস্রাব—সাদা তলানিযুক্ত, রাতে বহুবার ঘুম ভেঙ্গে প্রস্রাব করতে থাকে ।
শ্বাসযন্ত্র — কষ্টকর শুকনো কাশি, শরীর ঝেকে ওঠে, ঘুমের মধ্যে কাশতে থাকে অথচ ঘুম ভাঙ্গে না সকালে ঘুম থেকে উঠলেই একবার কাশি হবেই। আবার রাতে কাশিতে ঘুম ভেঙ্গে যায় এ লক্ষণও আছে—শ্লেষ্মা সহজেই ওঠে। (স্টার্নাম অস্থির ঠিক নীচে যাকে অগ্রকড়া বলে। এপি-গ্যাষ্ট্রিক = ওপর পেটে বা প্রিকর্ডিয়াল রিজিয়ন (Precordial Region) ঐ স্থানে কাশতে কাশতে তীব্র যন্ত্রণা হয়— দমবন্ধের মত অবস্থা হয়। বাদিকের কাঁধের হাড়ের (Scapula) নীচে যন্ত্রণা— রাতে শুলে বাড়ে- গরম সেঁক দিলে উপশম হয় ।
ঘাড় ও পিঠ – ঘাড়ের গ্ল্যান্ডগুলো বড় হয়— ব্যথায় ছোঁয়া লাগান যায় না।
নিমাঙ্গ – হাঁটুর ক্ষয়রোগ ।
সর্বাঙ্গীন লক্ষণ — প্রচন্ড দুর্বলতা কেউ বিরক্ত করুক তা চায় না।
ঘুম – দিনের বেলায় ঝিমুনীভাব—রাতে অস্থিরতা—বিভিন্ন স্বপ্ন দেখে ।
জ্বর — চোখে মুখে উত্তাপ (ঔষধ প্রয়োগের ঠিক পরেই) সামান্য ঘাম, অত্যন্ত মাথার ভিতরদিকে যন্ত্রণা ।
সর্দিকাশি সবসময়ই থাকে—সর্দি হলেই হাঁপানির মত টান হয়। শিশু গরম দুধ অপেক্ষা ঠান্ডা দুধ ভালবাসে—ঐ সাথে চর্মরোগের ইতিহাস থাকলে অব্যর্থ ফল দেয়। Tubercular Gland যে ক্ষেত্রে গ্লান্ডগুলো ফুলে শক্ত হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে Dr. Dewey প্রতি সপ্তাহে একমাত্র উচ্চশক্তির ব্যাসিলিনাম প্রয়োগ করতে বলেছেন। শিশুদের দাঁতরোগে Burnet ব্যাসিলিনাম দিয়ে আরোগ্য করেছেন। সর্দিকাশির এমন ক্ষেত্রে NASH অবশ্যই ব্যাসিলিনাম দিতে বলেছেন। Francois Cartier বলেন যেক্ষেত্রে ফুসফুস হতে অতিরিক্ত পরিমাণে পুঁজমেশানো শ্লেষ্মা বার হয়ে ফুসফুস পূর্ণ হয়ে শ্বাস বন্ধ হয়ে রোগী মারা যেতে পারে সেক্ষেত্রে ব্যাসিলিনাম প্রদেয় ।
(টি.বি. রোগাক্রান্ত ফুসফুস থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ম্যাসেরেশন পদ্ধতি অনুসারে তৈরী ঔষধ – ডাঃ বার্নেট এই ঔষধের প্রচলন করেছিলেন)।
টি.বি. রোগের চিকিৎসায় এই ঔষধ প্রয়োগ করে সাফল্য লাভ করা সম্ভব হয়েছে, থুথুর প্রকৃতির পরিবর্তনের উপর এই ঔষধের প্রকৃত সুফল দেখতে পাওয়া যায়, থুথুর। পরিমান কমে যায়, ও অধিক পরিমানে বায়ুপূর্ণ থাকে এবং পুঁজের পরিমান কমে যায়। টি.বি. নয় এই জাতীয় বহু পুরাতন রোগের উপর এই ঔষধ খুব ভালোভাবে প্রভাব বিস্তার করে থাকে, বিশেষ করে যখন শ্বাসনলী থেকে প্রচুর শ্লেষ্মাস্রাব নির্গত হয় এবং শ্বাস কষ্ট থাকে। শ্বাসযন্ত্রে পুঁজযুক্ত শ্লেষ্মা। রোগী খুব কম পরিমানে শ্লেষ্মা উঠাতে পারে। ব্যাসিলিনাস বৃদ্ধদের ফুসফুসের রোগে বিশেষভাবে নির্দেশিত হয়ে থাকে, তৎসহ পুরাতন সর্দিজনিত রোগ, ফুসফুসীয় সংবহনের পরিমান কমে যায়, রাত্রে শ্বাসকষ্ট তৎসহ কষ্টকর কাশি। শ্বাসকষ্ট যুক্ত সর্দি। টি.বি. মেনিনজাইটিস। দাঁতের উপর ছোপযুক্ত ময়লা পরিষ্কার এই ঔষধ সাহায্য করে থাকে। সর্বদা ঠাণ্ডা লাগার প্রবণতা যুক্ত ব্যক্তি।
মাথা — খিটখিটে, অবসাদগ্রস্ত। মাথার গভীরে প্রবল যন্ত্রণা, তথা মনে হয় মাথাটি যেন গোলাকার ধাতব পাতদ্বারা কষে বাঁধা রয়েছে। দাদ। চোখের পাতায় একজিমা।
উদর – পেটের যন্ত্রণা, কুঁচকিস্থানের গ্রন্থিস্ফীতি, টেবিস মেসেন্টেরিকা। প্রাতঃরাশের আগে হঠাৎ করে উদরাময়। দুর্দমনীয় কোষ্ঠকাঠিণ্য তৎসহ দূর্গন্ধযুক্ত বায়ু নিঃসরণ।
শ্বাস-প্রশ্বাস — বুকেরভারবোধ। সর্দিজনিত শ্বাসকষ্ট। ভিজে বাতাস যুক্ত আবহাওয়ায় হাঁপানী। বুদবুদের মত বুকের ভিতর ঘড়ঘড় শব্দ ও শ্লেষ্মা ও পুঁজ মিশ্রিত স্রাব নির্গত হয়। এই শ্লেষ্মা ও পুঁজমিশ্রিত স্রাব, ব্রঙ্কাইটিস রোগীর ক্ষেত্রে বহু জীবানুর থেকে উৎপন্ন হয়, এটি বিভিন্ন প্রকারের বীজানুর মিশ্রন এবং এই কারণে ব্যাসিলিনাম প্রকৃত পক্ষে নির্দেশিত ঔষধ (কর্টিয়ার)। প্রায়ই ফুসফুসের রক্তাধিক্যের উপশম করে থাকে এবং এর ফলে টি.বি. রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত অন্যান্য ঔষধের প্রয়োগরে পথ পরিষ্কার করে। দেয়।
চামড়া — দাদ, খুস্কি, চোখের পাতার একজিমা। ঘাড়ের গ্রন্থিগুলির স্ফীতি ও হাত দিলে ব্যথা করে।
কমা-বাড়া – বৃদ্ধি রাত্রিতে ও খুব সকালে, ঠাণ্ডা বাতাসে।
সম্বন্ধ – এন্টিমন আয়োড, ল্যাকেসিন, আর্সেনিক আয়োড, মায়োসটিস। ব্যসিলাস প্রয়োগের পর যেখানে প্রচণ্ড দুর্বলতা দেখা যায়, ঐরূপ ক্ষেত্রে ৫-১০ ফোঁটা লেভিকো মধ্যবর্তী ঔষধরূপে প্রয়োগ করা যেতে পারে (বার্নেট)।
অনুপূরক — ক্যালমেরিয়া ফস, কেলি কার্ব।
তুলনীয় – এই ঔষধের গুনাগুন কক দ্বারা প্রস্তুত টিউবারকিউলাসের অনুরূপ বলে মনে করা হয়। উভয় ঔষধই থাইসিস দেখা দেবার আগে টিউবারকিউলার ধাতুগ্রস্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়ে থাকে। গ্রন্থি, সন্ধি, চামড়া ও অস্থিরটি.বি. রোগের প্রথমাবস্থায় এই ঔষধ ব্যবহার হয়ে থাকে। সোরিনাম, ব্যাসিলিমের ক্রনিক বলে মনে করা হয়। ব্যাসিলিন টেটিয়াম (বিশেষতঃ শরীরের নিম্নাংশে কাজ করে)।
শক্তি – ঔষধের মাত্রা ও শক্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কোন অবস্থাতে ৩০ শক্তির নীচে দেয়া উচিত না, এবং খুব তাড়াতাড়ি পূনঃপ্রয়োগ করার প্রয়োজন নেই। সপ্তাহে এক মাত্রাই যথেষ্ট। এই ঔষধের কাজ দ্রুত এবং খুব ভালো ফলাফল খুব দ্রুত দেখতে পাওয়ার কথা। যদি কোন ভালো ফল পাওয়া না যায়, সেক্ষেত্রে এই ঔষধ পূনঃপ্রয়োগ করার কোন প্রয়োজন হয় না।