Bar-m | মানসিক উৎকন্ঠা, জড়বুদ্ধি কানে কম শুনে। |
Bar-m | নির্দিষ্ট সময় পরে পরে আক্ষেপ (convulsion) তার সহিত হাত পা ছোড়ে, শরীরের ভিতরে বিদ্যুতের ধাক্কার মত অনুভূত হয়। |
Bar-m | রতিক্রিয়ার ইচ্ছা প্রবল হলে পাগলামি আরম্ভ হয়। |
ব্যারাইটার নানা প্রকার লক্ষণগুলি, বৃদ্ধ ব্যক্তি ও মানসিক এবং শারীরিক উভয় দিক থেকে খর্বকায় ব্যক্তিদের যান্ত্রিক অসুস্থতার প্রয়োজন হয়ে থাকে। আর্টিরিয়ো স্কেলেরোসি ও মস্তিষ্ককোষ উপসর্গ এই অবস্থায় দেখা দেয়। মাথার যন্ত্রণা কিন্তু রোগের তরুণ আস্থার প্রকাশ হয় না, সাধারণতঃ বৃদ্ধ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, মাথায় যন্ত্রণার থেকে ভারী বোধ বেশী অনুভব হয়। মস্তিষ্কের রক্তাল্পতার জন্য মাথা ঘোরা এবং কানের ভিতর শব্দ। পরিপাকতন্ত্রের নিম্নাংশে ভালো কাজ করে, বিশেষ করে সরলান্ত্রে, পেশী ও সন্ধি সমূহের আড়ষ্টতা ও দুর্বলতা, অতিরিক্ত হাঁটা-চলা করার ফলে যেরকম অবস্থা দেখা দেয় সেই প্রকার অনুভূতি। রক্তের শ্বেতকণিকার সংখ্যার বৃদ্ধি। উচ্চ রক্তচাপ ও রক্তবহানলীর ধবংস। নাড়ীর টানভাবের বৃদ্ধি। আটিরিয়ো-স্কেলেরোসিস্ (অরাম,সিকেলি), যে ক্ষেত্রে রক্তের সিস্টোলিক প্রেশার বেড়ে যায় ও তুলনামূলকভাবে ডায়াস্টোলিক প্রেশার কমে যায়, মূলতঃ মস্তিষ্ক ও হৃদপিণ্ড সম্পর্কিত উপসর্গের দরুণ।
এই ঔষধ হৃদপিণ্ড স্থানে পাকস্থলীর প্রবেশ পথটি শক্ত ও সংকীর্ণ করে দেয় তৎসহ খাবার পরে পরেই পেটে বেদনা এবং পেটের উপর অংশের স্পর্শকাতরতা, এই লক্ষণগুলি বহুবার সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে, এছাড়াও এই ঔষধ ধমনীর অর্বুদ ও টনসিলের পুরাতন বিবৃদ্ধি রোগে ব্যবহার হয়। পুরুষ ও স্ত্রীলোক উভয়ের কামোন্মত্ততা। আক্ষেপ। যে কোন প্রকার মানসিক উন্মত্ততা, যেখানে কামোন্মত্ততা বৃদ্ধি পায়। শরীর বরফের মত ঠাণ্ডা তৎসহ পক্ষাঘাত। সুষুম্নাকাণ্ড ও মস্তিষ্কে মাল্টিপল স্কেলেরোসিস্। ঐচ্ছিক পেশীর কাজ করার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়, কিন্তু রোগী এই অসুবিধা সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে অনুভূতি সম্পন্ন হয়। ডিফথিরিয়া ও ইনফ্লুয়েঞ্জার পর আংশিক পক্ষাঘাত। সকালের দিকে সর্বাঙ্গীণ অবসন্নতা বিশেষ করে পা দুইটির দুর্বলতা ও পেশীর আড়ষ্টতা। যেসব শিশুমুখ হাঁ করে চলাফেরা করে ও যারা নাকি সুরে কথা বলে। বোকা-হাবার মত দেখতে এবং কানে কম শোনে।
কান- কানের ভিতর ঝিঁ ঝিঁ ও বুজ বুজ শব্দ। খাবার চিবানোর সময় ঢোক গেলার সময় অথবা হাঁচির সময় কানের ভিতর শব্দ। কানের ভিতর যন্ত্রনা, এক ঢোক এক ঢোক করে ঠান্ডা জল পানে উপশম। কর্ণমূল গ্রন্থির স্ফীতি। কানে দূর্গন্ধযুক্ত পূঁজ। নাক দিয়ে হাওয়া টানার সময় মধ্যকর্ণ ফুলে উঠে।
গলা – ঢোক গিলতে কষ্ট। টনসিলের বিবৃদ্ধি। কর্ণনল ও গলবিলের আংসিক পক্ষাঘাত, তৎসহ হাঁচি ও কানের ভিতর শব্দ। মনে হয় নলী অত্যধিক প্রসারিত হয়ে রয়েছে।
শ্বাস-প্রশ্বাস – বৃদ্ধ ব্যক্তিদের শ্বাসনলীর উপসর্গ সমূহ তৎসহ হৃদপিণ্ডের বিবৃদ্ধি। এই ঔষধ শ্লেষ্মা বার করতে সাহায্য করে। শ্বাসনলীর ভিতর প্রচুর শ্লেষ্মা বার করতে সাহায্য করে। শ্বাসনলীর ভিতর প্রচুর শ্লেষ্মা জমা হয়। এবং বুকের ভিতর ঘড়ঘড় শব্দ তৎসহ শ্লেষ্মা তুলে ফেলতে কষ্ট। ফুসফুসের আর্টিরিয়ো- স্কেলেরোসিস এর ফলে বার্ধক্যজনিত হাঁপানী ও ধমনীর টানভাবের পরিবর্তন দেয়া দেয়।
পাকস্থলী – পেটের উপরের অংশে খালিবোধ, পুরাতন উপসর্গে এটি একটি ভালো পথপ্রদর্শক লক্ষণ বিশেষ। ওয়াক তোলা ও বমি। গরম ভাব যেন মাথা পর্যন্ত প্রসারিত হয়।
প্রস্রাব – প্রস্রাবে, ইউরিক অ্যাসিডের পরিমানের বৃদ্ধি, ক্লোরাইডের পরিমানের স্বল্পতা।
উদর – দপদপানি(সেলেনি), অগ্নাশয়ের কঠিণতা, উদর সম্বন্ধীয় ধমনীর অর্বুদ। কুঁচকির স্থানের গ্রন্থিস্ফীতি। সরলান্ত্রের আক্ষেপিক বেদনা।
সম্বন্ধ – সুষূম্নাকাণ্ড, যকৃৎ হৃদপিণেডর তন্তুসমূহের কঠিনতা সহ ধবংস, বিশেষভাবে তুলনীয়। প্লাম্বার মেট ও প্লাম্বার আয়োড, এছাড়াও অরাম মিউর ।
শক্তি – ৩x বিচূর্ণ। পুনঃ পুনঃ প্রয়োগ করা চলে।
ইহা আমাদের একটি দীর্ঘক্রিয়, ধাতুদোষ সংশোধক ঔষধ কিন্তু ইহাকে অবহেলা করা হয়। আমাদের সম্প্রদায়ের পূর্ববর্তী চিকিৎসকগণ এই ঔষধ ব্যবহার করিয়া যথেষ্ট উপকার পাইতেন। মানসিক দুর্বলতা, উন্মাদ, গ্রন্থিবৃদ্ধি, কামোন্মাদনা রোগে, আমরা এমন কতকগুলি লক্ষণ পাই যে, ব্যারাইটা মিউর ব্যতীত তাহা আরোগ্য করা কঠিন হয়। ইহার সহিত বর্ধনশীল গভীর পৈশিক দুর্বলতা যোগ কর, এবং ঐরূপ রোগীর ক্ষেত্রে কখন কখন আমাদিগকে এই ঔষধটি দিতেই হইবে, নচেৎ আরোগ্যক্রিয়া ধীরগতি হইয়া পড়িবে। ইহার উপসর্গগুলি প্রাতঃকালে, দুপুরের পূর্বে অপরাহ্নে, সন্ধ্যাকালে, রাত্রে এবং মধ্যরাত্রির পর, সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ পায়। লসিকা গ্রন্থির ও অন্যান্য গ্রন্থির রোগ ইহা দ্বারা সহজেই আরোগ্য হয়। রোগী খোলা বাতাস চায়, কিন্তু খোলা বাতাসে তাহার লক্ষণগুলি বাড়ে। ধমন্যার্বুদ রোগগ্রস্ত বহু রোগী ইহা দ্বারা আরোগ্য হইয়াছে। সৰ্বাঙ্গীণ দৈহিক উৎকণ্ঠা একটি প্রবল লক্ষণ। শ্বাসকষ্ট, বুক ধড়ফড়ানি এবং দুর্বলতা প্রভৃতি উপসর্গ সিঁড়ি দিয়া উপরে উঠিলে বৰ্দ্ধিত হয়। সালফারের ন্যায় স্নান করিতে ভয়। লক্ষণগুলি ঠান্ডা বাতাসে, ঠান্ডা লাগিলে বাড়ে। আক্ষেপপ্রবণতা। একটি মূল্যবান লক্ষণ, শিরঃপীড়ার সহিত আক্ষেপ; বধিরতা, বমন, এবং পাকস্থলীতে জ্বালা। বিদ্যুতাঘাতবৎ আক্ষেপের সহিত পূর্ণজ্ঞান বর্তমান থাকে, পুনঃ পুনঃ ক্ষণিক আক্ষেপ। ইহা অত্যন্ত অদম্য প্রকৃতির অপস্মার রোগ আরোগ্য করিয়াছে। রক্তবহা নাড়ীসমূহের স্ফীতি, শীর্ণতা, মাঝে মাঝেই মূর্চ্ছার আক্রমণ। রাত্রিকালে এবং বসন্তকালে রোগের বৃদ্ধি। সর্বাঙ্গে পিঁপড়ে চলার ন্যায় সুড়সুড়ি। আভ্যন্তরিক পূর্ণতার অনুভূতি। শ্লৈষ্মিক ঝিল্লী ও ক্ষত হইতে রক্তপাত। আভ্যন্তরিক ও বাহ্যিক ভারবোধ, যেন উহা দুর্বলতা ও শিথিলতা হইতে দেখা গিয়াছে। গ্রন্থিসমূহের কঠিনতা, গ্রন্থিসমূহের প্রদাহ ও স্ফীতি। অত্যন্ত আলস্যভাবা শুইয়া থাকিতে বাধ্য হয়। ঋতুর পূর্বে ও ঋতুকালে রোগগুলি প্রকাশ পায়। কতকগুলি লক্ষণ সঞ্চালনে উপশমিত হয়, আভ্যন্তরিক থেঁৎলানবৎ অনুভূতি, অনেকগুলি অঙ্গে জ্বালা, আভ্যন্তরিক অঙ্গগুলিতে কর্ত্তনবৎ বেদনা, খননবৎ বেদনাও প্রায়ই দেখা দেয়, বাহ্যিক অঙ্গগুলিতে কামড়ানি ব্যথা। কিন্তু যন্ত্রণাহীন লক্ষণেরই প্রাধান্য থাকে, যন্ত্রণা একটি ব্যতিক্রম। অঙ্গগুলিতে আক্ষেপিক উৎক্ষেপ, গ্রন্থি ও শিরার উপর সূঁচীবিদ্ধবৎ যাতনা, নিম্নভিমুখী ছিন্নকর বেদনা, বেদনাটি যেন পেশী সম্বন্ধীয়। একাঙ্গিক পক্ষাঘাত, বামপার্শ্বিক পক্ষাঘাত। অনেক অঙ্গে চাপ সহ্য হয় না। উদরে এবং অন্যান্য অঙ্গে দপদপ করে। নাড়ী দ্রুত, মিনিটে ১২০ বার, পূর্ণ কঠিন, ক্ষুদ্র। উঠিয়া দাঁড়াইলে বহু লক্ষণ উপস্থিত হয়। আক্ষেপের সহিত, বিদ্যুতাঘাতবৎ অনুভূতি। রোগসকল বামপার্শ্বিক, বসিয়া থাকিলে বৃদ্ধি, রোগী শুইয়া থাকিতে বাধ্য হয়। নিদ্রাকালে অনেক লক্ষণ প্রকাশ পায়, দাঁড়াইলে বৃদ্ধি। যন্ত্রণাদায়ক গ্রন্থিস্ফীতি। আরক্ত জ্বরের পর শোথজনিত ফুলা, টানটানভাব, কম্পন, উৎক্ষেপ; সৰ্বাঙ্গীণ দুর্বলতা, হাত-পা নাড়িতে পারে না, চলিতে গেলে দুৰ্বলতা, সৰ্বাঙ্গীণ পৈশিক দুর্বলতা, পক্ষাঘাতিক দুর্বলতা, ক্লান্তি। ভিজে আবহাওয়ায় রোগগুলি ও লক্ষণগুলি বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। ইহা গ্রন্থিরোগে ‘কোনিয়ামে’র স্বাভাবিক অনুপূরক এবং অত্যন্ত সদৃশ কিন্তু আরও গভীরক্রিয়।
সহজেই রাগিয়া যায়। সন্ধ্যাকালে ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে উৎকণ্ঠা, তৎসহ বমি বমিভাব, উকি উঠা এবং পাকস্থলীতে চাপাবোধ। যে-সকল শিশু ধীরে লেখাপড়া শিখে এবং বুঝে, যাহারা অন্যান্য ছেলের ন্যায় খেলা করিতে চায় না, তাহাদের পক্ষে উপযোগী। মনঃসংযোগ অসম্ভব। তাহার আশপাশ তাহার নিকট অদ্ভুত বোধ হয়, পরিবর্তিত বোধ হয়; ভীরু, কাপুরুষ; তাহার ভ্রান্ত বিশ্বাস যে, সে হাঁটুতে ভর দিয়া হাঁটে। মনের জড়তা। মনে করে সে মরিতে বসিয়াছে। ভয়, অনিষ্টের, লোকের; বোকার ন্যায় ব্যবহার, জড়বুদ্ধি, মূঢ়তা, ঔদাসীন্য, উন্মাদ, কামসম্বন্ধীয় উন্মাদ। সঙ্গমপ্রবৃত্তি প্রবল হইয়া উন্মাদ। অব্যবস্থিত চিত্ত। সন্ধ্যাকালে উত্তেজনা বিশেষ। সঙ্গমপ্রবৃত্তি বর্ধিত হইলে নানাপ্রকার পাগলামি। স্ত্রীলোকের কামোন্মাদ। প্রাতঃকালে বিমর্ষভাবে, চুপ করিয়া বসিয়া থাকে। শিশু ঘরের কোণে বসিয়া থাকে এবং বিশৃঙ্খল উত্তর দেয়। সহজেই চমকিয়া উঠে, সন্দিগ্ধ, কথা বলিতে চায় না, ঘুমের মধ্যে কথা বলে, অচৈতন্যতা, মূর্হিত হওয়া, চলিতে গেলে শিরোঘূর্ণন, মনে হয় যেন বস্তুগুলি ঘুরিতেছে।
মস্তক- ত্বক সঙ্কুচিত বোধ হয়। ইহা মস্তকত্বকের একটি বড় ঔষধ। পুরু দুর্গন্ধ মামড়ী, মাথার উপরিভাগের সবটুকু জুড়িয়া একজিমা, উহা দুই পার্শ্বে এবং পশ্চাদ্দেশে বিস্তৃত হইতে থাকে, প্রচুর পুঁজ জন্মে। দলে দলে ব্রণ। মাথা এত ভারি বোধ হয় যে, সে উহা ধারণ করিয়া ভারবোধ, মস্তিষ্ক শিথিল বোধ হয়, মাথার মধ্যে থাকিতে পারে না, কপাল ও মাথার পশ্চাদ্দেশে। একপ্রকার সঞ্চালন অনুভব করে। প্রাতঃকালে নিদ্রাভঙ্গে, অপরাহ্নে, সন্ধ্যাকালে মাথায় বেদনা, খোলা হাওয়ায় বৃদ্ধি, চুল বাঁধিলে বৃদ্ধি, শুইয়া থাকিলে, চক্ষু নাড়াইলে, শব্দে, চাপে, হেঁট হইলে, চলিতে গেলে বৃদ্ধি; বেদনা কপালের উপর, মস্তক-শীর্ষে, মাথার উভয়পার্শ্বে, শঙ্খদেশে। শখস্থানে ছিদ্রকর বেদনা, মাথার মধ্যে থেঁৎলান বেদনা, মাথার মধ্যে জ্বালা, মাথার মধ্যে এবং কপালে চাপবোধ; বেদনা ভিতর হইতে বহির্দিকে; কপালে, মস্তক-শীর্ষে, মাথার উভয় পার্শ্বে, শঙ্খদেশে সূঁচীবিদ্ধবৎ বেদনা; মাথায় বিহ্বল বেদনা; মস্তকের পশ্চাদ্দেশে এবং উভয়পার্শ্বে। ছিন্নকর বেদনা; মাথার মধ্যে ঝাঁকি দিয়া উঠা; মস্তক-ত্বকে ক্ষত।
প্রাতঃকালে চক্ষুর পাতা জুড়িয়া যায়, চক্ষু হইতে শ্লেষ্মা ও পুজস্রাব। গন্ডমালা ধাতু ব্যক্তিদিগের চক্ষু-প্রদাহ। চক্ষু চুলকান, চিড়িকমারা এবং চাপাবোধ, চক্ষুর উপর পাতার পক্ষাঘাত আলোকাতঙ্ক, চক্ষুতারকা বিস্তৃত এবং গতিশূন্য। চক্ষুপাতার আরক্ততা, চক্ষুর আড়ষ্টতা, কনীনিকায় ক্ষত, চক্ষুপাতার স্ফীতি, দৃষ্টিশক্তির অতি ব্যবহারবশতঃ চক্ষু এবং মাথার রোগ, অনেকটা কোনিয়ামে’র ন্যায় অস্পষ্ট দৃষ্টি এবং চক্ষু মিট মিট করা।
আরক্ত জ্বরের পর, উভয় কর্ণের পশ্চাতে ফোড়া, উভয় কর্ণ হইতে স্রাব,—উহা প্রচুর, দুর্গন্ধ, পচা পনিরের ন্যায় ও পুঁজযুক্ত। কর্ণের উপর উদ্ভেদ, পুনঃ পুনঃ কর্ণের, কর্ণশঙ্কুলির প্রদাহ, কানের মধ্যে চুলকানি, চিবাইতে গেলে ও গিঁলিতে গেলে কানের মধ্যে শব্দ, ইউষ্টেচিয়ান নলের সর্দি, পতপত, টং টং, শোঁ শোঁ শব্দ, দুই কর্ণের মধ্যেই গভীর দেশে বেদনা, দক্ষিণ কর্ণে অধিক; কানের বেদনার সহিত গলার বেদনা, ব্যথিত পার্শ্বে শয়নে বৃদ্ধি, ঠান্ডা জল পানে উপশম। কানের মধ্যে টানিয়া ধরার মত, সূঁচফোটানোর ন্যায়, ছিঁড়িয়া ফেলার ন্যায় বেদনা; কানের পশ্চাতে ছিন্নকর বেদনা, কানের মধ্যে দপদপানি, কানের মধ্যে ঝিনঝিন করা, ঝুঁকি মারিয়া উঠা। শ্রবণশক্তি কমিয়া যায় এবং পরিশেষে লোপ পায়।
প্রচুর হলদে, ঘন স্রাবের সহিত নাকের সর্দি; জ্বরের সহিত তরল সর্দি, নাসিকার শুষ্কতা, নাসিকা হইতে রক্তপাত। নাকের মধ্যে চুলকায়, নাক বুজিয়া যায়, নাকের মধ্যে হাজা। নাকের দক্ষিণ পার্শ্বে উপর দিকে একটি লালবর্ণ ঢেলা, নাকের মধ্যে সূঁচীবিদ্ধবৎ বেদনা। পুনঃ পুনঃ হাঁচি, ঘুমের মধ্যে না জাগিয়া হাঁচি।
জ্বরের সহিত মুখ লাল হয়, অন্যথায় বিবর্ণ থাকে। মুখের আকৃষ্ট ভাব এবং আক্ষেপ। ওষ্ঠদ্বয়ের শুষ্কতা। কর্ণপুঁজের সহিত নিম্ন চোয়ালের গ্রন্থিগুলির বৃদ্ধি ও দৃঢ়তা, নাকের ও কপালের উপর উদ্ভেদ, মামড়ীযুক্ত ব্রণ, মুখাকৃতি উৎকন্ঠাপূর্ণ, এবং মুখ উত্তপ্ত। আরক্ত জ্বরের পর দক্ষিণ কর্ণমূলগ্রন্থির প্রদাহ, ঘাড়ের ও চোয়ালের গ্রন্থিগুলির স্ফীতি, দক্ষিণ কর্ণমূলগ্রন্থি এবং নিম্ন চোয়ালের গ্রন্থিগুলি অত্যন্ত কঠিন। বমনেচ্ছা এবং উদরাময়ের সহিত মুখে টানটানভাব।
মাড়ি হইতে রক্ত পড়ে; জিহ্বা ফাটা, জিহ্বা সাদাবর্ণ, প্রাতঃকালে মুখের ও জিহ্বার শুষ্কতা, জিহ্বা লেপযুক্ত, চটচটে শ্লেষ্মায় মুখ পূর্ণ ও জিহ্বা আবৃত থাকে। মুখ হইতে দুর্গন্ধ, পচা গন্ধ, পারদদুষ্ট রোগীর ন্যায় গন্ধ ছাড়ে। মুখের মধ্যে জ্বালা, মাড়ি ক্ষতবৎ বেদনাযুক্ত। জিহ্বায় পক্ষাঘাত। প্রত্যেক পক্ষাঘাতিক আবেশের সহিত লালাস্রাব। কথা বলিতে কষ্ট হয়। মাড়ি ও তালু স্ফীত। আস্বাদ তিক্ত, পচা গন্ধ, টক, ঈষৎ মিষ্ট। খাদ্যে পচা গন্ধ পায়। জিহ্বার উপর ক্ষত। দন্তের শিথিলতার সহিত লালাস্রাব, দাঁতে দপদপকর বেদনা। বিছানায় বসিয়া থাকিতে বাধ্য হয়, মধ্যরাত্রির পর এবং নিদ্রার পর বৃদ্ধি; উৎক্ষেপ, সূঁচীবিদ্ধবৎ বেদনা, ছিন্নকর বেদনা।
গলা এবং টনসিলের প্রদাহ; ঠান্ডা লাগিলে পুনঃ পুনঃ টনসিল-প্রদাহ; গলার শুষ্কতা। টনসিলদ্বয় বৰ্দ্ধিত, আলজিভ বড় হইয়া পড়ে, তৎসহ গলক্ষত, গলায় চটচটে শ্লেষ্মা, গলায় ও কর্ণে বেদনা, দক্ষিণ পার্শ্বে অধিক, উহার সহিত লালাস্রাব, গিলিবার সময় বৃদ্ধি, গলার মধ্যে জ্বালা। টনসিল পাকিয়া উঠে। গেলা অত্যন্ত কষ্টকর হয়; গলার মধ্যে শিরাস্ফীতি। ঘাড়ের গ্রন্থিগুলির স্ফীতি ও কঠিনতা।
রাক্ষুসে ক্ষুধা, ক্ষুধার অভাব, খাদ্যে অপ্রবৃত্তি। শুষ্ক গমের রুটি খাইতে চায়। পাকস্থলীর ফাঁপ। পাকস্থলীতে শূন্যতাবোধ। আহারের পর তিক্ত জল উদ্গার।
পাকস্থলী হইতে মস্তক পর্যন্ত উত্তাপের ঝলক উঠে। শক্ত খাদ্য খাইলে পাকস্থলীতে পূর্ণতা ও ভারবোধ দেখা দেয়, তৎসহ বুকজ্বালা, হিক্কা। সে কেবলমাত্র অতি সাধারণ খাদ্য খাইতে পারে, কারণ তাহার হজমশক্তি ধীর এবং পাকস্থলী দুৰ্বল। পাকস্থলীর প্রদাহ; খাদ্যে অপ্রবৃত্তি, বমনেচ্ছা। পাকস্থলীতে খালধরার ন্যায়, আহারের পর চাপনবৎ, ক্ষতবৎ, সূঁচীবিদ্ধবৎ বেদনা। উকি তোলা। টানটানভাব। শীতের সময় শুষ্ক জিহ্বার সহিত তৃষ্ণা, অত্যন্ত তৃষ্ণা, প্রাতঃকালে বমন, মাথাধরার সহিত অবিরত পিত্ত, রক্ত, শ্লেষ্মা, জলবৎ বমন, ঐ সঙ্গে ভেদ এবং অত্যন্ত উদ্বেগ।
উদরের ফাঁপ। যকৎ ও মধ্যান্তত্বচগ্রন্থিগুলি বৰ্দ্ধিত ও কঠিন। বায়ু-স্ফীতি, পূর্ণতাবোধ, উদরের কঠিনতা। প্রাতঃকালে আহারের পর এবং মলত্যাগের পূৰ্ব্বে উদরবেদনা, কুক্ষিপ্রদেশে ও কুঁচকিস্থানে জ্বালা, খালধরা, কৰ্ত্তনবৎ, সূঁচীবিদ্ধবৎ বেদনা। উদরের নাড়ীস্ফীতি রোগে ইহা বিশেষ উপযোগী হইয়াছে। যকৃৎস্ফীতি, অবরুদ্ধ প্রমেহের পর কুঁচকিগ্রন্থির স্ফীতি। উদরে টানটানভাব। কুঁচকিপ্রদেশে ক্ষত।
কোষ্ঠবদ্ধতা, কষ্টকর মলত্যাগ, মলত্যাগের প্রবৃত্তি থাকে না, মল শক্ত এবং আম দ্বারা আবৃত সাধারণতঃ যন্ত্রণাহীন। উদরাময়, তাহাও সাধারণতঃ যান্ত্রনাহীন। আমাশয়, রক্তময় আম, জেলির মত, পুনঃ পুনঃ মলবেগ, কিন্তু সাধারণতঃ যাতনাহীন। অতি দুর্গন্ধ অধঃবায়ু; সরলান্ত্র ও নাড়ী হইতে রক্তস্রাব। বাহ্যিক অর্শ বলি, মূত্রত্যাগকালে বাহির হইয়া পড়ে; গুহ্যদ্বারে চুলকানি, অনিচ্ছায় মলত্যাগ, গুহ্যদ্বার ভিজা ভিজা, মলত্যাগকালে সরলান্ত্রে সামান্য বেদনা, মলত্যাগকালে ও পরে জ্বালা; চাপনবৎ বেদনা, ক্ষততা, সূঁচীবিদ্ধবৎ বেদনা, কোঁথানি। সরলান্ত্র ও মলদ্বারের সঙ্কোচক পেশীর পক্ষাঘাত। রক্তময়, জেলির মত, শক্ত, সবুজ, দুর্গন্ধ, নরম, পাতলা, জলবৎ, সাদা ও শক্ত মল, হলদে ও চটচটে মল, মলের সহিত ক্রিমি।
মূত্রস্থলীর প্রদাহ। মূত্ররোধ। অবিরাম, পুনঃ পুনঃ নিস্ফল, তীব্র মূত্রবেগ। মূত্রত্যাগ। কষ্টকর, রাত্রে পুনঃ পুনঃ মূত্রবেগ, ঘৰ্ম্মের সময় পুনঃ পুনঃ মূত্রবেগ; রাত্রিকালে অসাড়ে মূত্রপাত। মূত্ৰনলী হইতে লালামেহবৎ স্রাব। ইহা পুরাতন গণোরিয়া আরোগ্য করিয়াছে। মূত্রত্যাগকালে মূত্রনলীতে যাতনা। মূত্র উত্তপ্ত, প্রচুর, দুর্গন্ধ; সাদা তলানিযুক্ত; জলবৎ, হরিদ্রাবর্ণ, অত্যন্ত দুর্গন্ধযুক্ত।
বর্ধিত অন্ড, অন্ডদ্বয়ের কঠিনতা। রুদ্ধ গণোরিয়া হইতে অন্ড-প্রদাহ; শুক্রপাত; কাম-প্রবৃত্তি অত্যন্ত বর্ধিত, এমন কি ভীষণ। ডিম্বকোষদ্বয়ের কঠিনতা। প্রদরস্রাব। ঋতুস্রাব প্রচুর, শীঘ্র শীঘ্র ও যাতনাদায়ক। জরায়ুতে বেদনা। বন্ধ্যাত্ব।
কণ্ঠনলী ও শ্বাসনলীর সর্দি, কণ্ঠনলী ও শ্বাসনালীতে উপদাহ, কণ্ঠনলীতে সুড়সুড়ি। স্বর কর্কশ, ভাঙ্গা ও দুৰ্বল। শ্বাসক্রিয়া দ্রুত, উদ্বেগজনক, হাঁপানির ন্যায় গভীর, কষ্টকর, তৎসহ কাশি এবং উহাতে সে বসিয়া থাকিতে বাধ্য হয়, ঘড়ঘড় করে, হ্রস্ব কাশি।
দিবাভাগে, প্রাতঃকালে, সন্ধ্যাকালে, রাত্রে, মধ্যরাত্রির পূৰ্ব্বে কাশি, হাঁপানির ন্যায় শুষ্ক কাশি, কণ্ঠনালী ও শ্বাসনলীতে উপদাহহেতু, গন্ডমালা ধাতু শিশুদের পুরাতন শুষ্ক কাশি; ঘড়ঘড় করা হুপিং কাশি। প্রাতঃকালে প্রচুর শ্লেষ্মা উঠে, বায়ুনলী হইতে পূঁজ-শ্লেষ্মা মিশ্রিত গয়ের উঠে, উহার বর্ণ হলদে। পোড়া নারাঙ্গার ন্যায় উদ্ভেদ ও অন্ডের কঠিনতা থাকিলে ইহা বক্ষের যক্ষ্মারোগজ অবস্থা আরোগ্য করিয়াছে। সুস্পষ্ট হৃৎস্পন্দন। মেরুদন্ডের বক্রতা রোগে ইহা অত্যন্ত উপযোগী ঔষধ।
হাত ও পায়ের পাতা শীতল, পদাঙ্গুলিতে খালধরা, হাত-পা গুটাইয়া রাখিলে উপশম। অঙ্গপ্রত্যঙ্গের উপর উদ্ভেদ, ব্রণ। হাত উত্তপ্ত। সারা দেহে ভারবোধ, সে শুইয়া থাকিতে বাধ্য হয়। হাতে পায়ে এবং ঊরুতে চুলকানি। রাত্রিকালে বাহুদ্বয়ের যন্ত্রণাহীন উৎক্ষেপ। নির্দিষ্টকাল ব্যবধানে হাত-পায়ের তীব্র উৎক্ষেপ, তৎসহ আক্ষেপ। আলস্যভাব, হস্তাঙ্গুলির অসাড়তা। ঊর্ধ্বাঙ্গে ও উরুতে বেদনা। বামপার্শ্বের পক্ষাঘাত। পদ-ঘৰ্ম্ম, অবরুদ্ধ পদ-ঘৰ্ম্ম। স্কন্ধে দপদপানি। হাত, নিম্নাঙ্গ, হাঁটু ও পায়ের পাতার স্ফীতি। হাঁটুতে টানটানবোধ। হাতপায়ের কম্পন। ঊর্ধ্বাঙ্গ, উরুদেশ এবং পদদ্বয়ে ঝাঁকি দিয়া উঠে। পায়ের উপর ক্ষত। অঙ্গগুলির দুৰ্বলতা।
স্বপ্ন কামোদ্দীপক, উৎকণ্ঠাপূর্ণ, ভীতিকর, দুর্ঘটনাসম্বন্ধীয়, সুখকর, স্পষ্ট। অস্থির নিদ্রা, অপরাহ্নে, সন্ধ্যাকালে ও মধ্যাহ্নভোজনের পর নিদ্রালুতা। মধ্যরাত্রির পূৰ্ব্বে ঘুম আসে না। পুনঃ পুনঃ জাগিয়া উঠে।
শীতার্ততা, প্রাতঃকালে, সন্ধ্যাকালে, শয়ন করিলে। ঠান্ডা বোধ, বাহ্যিক শীত, কম্পনকর শীত, প্রতি তৃতীয় দিনে শীত। সন্ধ্যাকালে ও রাত্রে জ্বর, জ্বালাকর উত্তাপ, শীতভাবের সহিত উত্তাপ; সারাদিন শুষ্ক উত্তাপ; রাত্রিকালে শুষ্ক উত্তাপ।
শুষ্কতা, চর্মে দংশনবৎ ও জ্বালার অনুভূতি, চর্ম শীতল, উদ্ভেদ, একজিমা, সর্বাঙ্গে পোড়া নারাঙ্গা, ব্রণ, মামড়ী, হরিদ্রাবর্ণ আঁইশ হুলবিদ্ধবৎ যাতনা, আমবাত, বিসর্প, সুড়সুড়ি, লেহমর্ষ। চৰ্ম্ম-প্রদাহ, চুলকানি। স্ফীতি এবং টানটানভাব। সৰ্বাঙ্গ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ক্ষতে আবৃত। অসুস্থ চৰ্ম্ম। জ্বালাকর ক্ষত।