Calc-ar | মাথা নাড়লে মাথাঘোরে, প্রথমে চাঁদিতে পরে মাথার পিছনে ভারী অনুভূতি। |
Calc-ar | মাথাধরা ও বুক ধড়ফড়ানি একসঙ্গে বাড়ে ও একসঙ্গে কমে। |
Calc-ar | ডান চোখের উপরে ব্যথা, ডান দিকের কপালে সূচ ফোটানোর মত ব্যথা, প্রতি সপ্তাহে বৃদ্ধি। |
Calc-ar | পায়ে ছিঁড়ে ফেলার মত ব্যথা সহ কুঁচকি ফোলা। |
Calc-ar | কন্ঠনলী হতে ভিতরের দিক সূতা দিয়ে টেনে রাখা হয়েছে এরূপ অনুভূতি। |
Calc-ar | হৃৎপিন্ডের নিকট ব্যথা আরম্ভ হয়ে পিঠের দিকে গিয়ে হাতে ও পায়ে ছড়িয়ে পড়ে। |
Calc-ar | নাড়ীর প্রতি চতুর্থ স্পন্দন থেমে যায়। |
ভীষণ মানসিক অবসাদ।
সামান্য উত্তেজনায় বুক ধড়ফড় করে (লিথিকাৰ্ব)। দেহের সমস্ত রক্ত যেন মাথা ও বুকের বাদিকে জমা হচ্ছে (এমিল-নাই; গ্লোনয়িন)।
হৃৎপিন্ডের ভালবের অসুখে মৃগী রোগ।
মাতালদের মদ খাওয়া ছেড়ে দেওয়ার পর অসুখে। মদ খাওয়ার ইচ্ছা (আসারাম, এসি-সাল) সেক্ষেত্রে উপযোগী। মোটাসোটা স্ত্রীলোক যারা রজোনিবৃত্তি বয়সের দিকে এগিয়ে আসছেন তাদের অসুখে।
সম্বন্ধ — তুলনীয়— কোনি; গ্লোন, লিথি-কা; পালস, নাক্স-ভ ।রসপ্রধান, সোরা ও টিউবারকুলার ধাতুর দোষযুক্ত ব্যক্তির রোগে কোনিয়ামের পর ভাল কাজ দেয় ।
শক্তি – ৩x, ৩০, ২০০ ।
মৃগী, তৎসহ রোগাক্রমণ কালের ঠিক আগে মাথায় রক্ত প্রবাহের পরিমানের বৃদ্ধি. মৃগীরোগজ বিশেষ অনুভূতি বা অরা হৃদপিণ্ডস্থানে অনুভব করা যায়, উড়ে যাবার মত অনুভূতি। রজোনিবৃত্তি কালের নিকটবর্তী অবস্থায়, মেদযুক্ত স্ত্রীলোকের নানাপ্রকার অসুবিধা সমূহ। পুরাতন ম্যালেরিয়া রোগ। শিশুদের যকৃৎ ও প্লীহার বিবৃদ্ধি। নেফ্রাইটাস তৎসহ বৃক্কস্থান অত্যন্ত অনুভূতিপ্রবন। মাতাল ব্যক্তির মত ছেড়ে দেবার পরে যেসকল উপসর্গ প্রকাশ পায়। (কার্বন সালফ) রজোনিবৃত্তিকালীন সময়ের হৃষ্টপুষ্ট স্ত্রীলোক যাদের সামান্য মানসিক আবেগে হৃদকম্প দেখা দেয়। শ্বাসকষ্ট তৎসহ দুর্বল হৃদপিণ্ড। শীতবোধ। প্রস্রাবে অ্যালবিউমিনের উপস্থিতি শোথ। প্লীহা ও মেসেনট্রিক গ্রন্থির উপসর্গ সমূহ। রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ ও লোহিতকণিকার সংখ্যার হ্রাস।
মন – ক্রোধ, উদ্বেগ। সঙ্গ চায়। বিভ্রান্তি, মোহগ্রস্থ অবস্থা, চিত্তবিভ্রম। প্রচণ্ড হতাশা।
মাথা – মাথায় তীব্র গতিতে রক্ত যায়, তৎসহ মাথা ঘোরা। মাথা যন্ত্রণা, যন্ত্রণারদিকে চেপে শুলে আরাম। সাপ্তাহিক মাথার যন্ত্রণা। অসাড়ভাব তৈরি করে এইজাতীয় মাথার যন্ত্রণা যা প্রায়ই কানের চারিপাশে অনুভূত হয়।
পাকস্থলী – পাকস্থলীর স্থান প্রসারিত। শিশুদের যকৃত ও প্লীহার বিবৃদ্ধি। অগ্ন্যাশয় সংক্রান্ত রোগ, অগ্ন্যাশয়ে ক্যানসার রোগে জ্বালাকর বেদনার উপশম করে। ঢেকুর তৎসহ লালাস্রাব এবং হৃৎস্পন্দনের শব্দ অনুভূত হয়।
প্রস্রাব – বৃক্ক স্থান চাপে অনুভূতি প্রবণ। প্রস্রাবে অ্যালবিউমিনের উপস্থিতি প্রতি ঘন্টায় প্রস্রাব করে।
হৃদপিণ্ড – হৃদপিণ্ড স্থানে সঙ্কোচনবোধ ও বেদনা, শ্বাসরোধের মত অনুভুতি, হৃদকম্প, বুকের উপর ভারীবোধ ও দপদপকর এবং পিঠে বেদনা বাহুপর্যন্ত প্রসারিত হয়।
স্ত্রীরোগ – দূর্গন্ধযুক্ত, রক্তমিশ্রিত প্রদরস্রাব। জরায়ুর ক্যান্সার, জরায়ু ও যোনিপথে জ্বালাকর বেদনা।
পিঠ – ঘাড়ের নিকটবর্তী অংশে বেদনা ও আড়ষ্টভাব। তীব্র পিঠের যন্ত্রণা, দপদপানি, রোগীওক বিছানা থেকে উঠে পড়তে বাধ্য করে।
অঙ্গ-প্রতঙ্গ – নিম্নাঙ্গের শিরা থেকে প্রদাহিক বস্ত্ত সমূহ বের করে দেয়। নিম্নাঙ্গের ক্লান্তি ও খঞ্জতা।
কমা-বাড়া – সামান্য নড়াচড়ায় বৃদ্ধি।
শক্তি – ৩য় শক্তি।
এই ঔষধটি দুইটি সুপরীক্ষিত গম্ভীরক্রিয় ঔষধের রাসায়নিক সম্মিলন বলিয়া খুব সম্ভবতঃ, সাথে সাথেই মনে হইবে যে, ইহাও একটি দীর্ঘক্রিয় এবং নানাপ্রকার পুরাতন রোগে বিশেষভাবে কার্যকরী ঔষধ। বাস্তবিক ইহা কতকগুলি অপস্মাররোগের দুরারোগ্য ক্ষেত্রে বিশেষভাবে আরোগ্যকর হইয়াছে। এই শ্রেণীর রোগীদিগের পক্ষে ইহা রেকর্ড সৃষ্টি করিয়াছে। অতিশয় শারীরিক ও মানসিক দুর্বলতা। কম্পনশীল ও পক্ষাঘাতিক দুর্বলতা। সে যেন শূন্যে ভাসিতেছে, শরীরে এরূপ হালকা বোধ। মূর্চ্ছার আক্রমণ। পূর্বানুভূতি হৃৎপিন্ডে” অনুভূত হয়, এরূপ অপস্মাররোগের আক্ষেপ। সুস্পষ্ট দুর্বলতা। হৃৎপিন্ডস্থানে বেদনা ও ঠান্ডাবোধ হওয়ায় পরবর্তী আক্ষেপ। দুর্বলতা অথবা শিরোঘূর্ণন অথবা ক্ষণিক দৃষ্টিশক্তির লোপ। হৃৎপিন্ড কপাটিকার পীড়ার সহিত আক্ষেপ। সন্ধ্যাকালীন ও রাত্রিকালীন বৃদ্ধিই সাধারণতঃ দেখা যায়। রোগী ঠান্ডায় অত্যনুভূতিযুক্ত- দেহে জৈব উত্তাপের অভাব। উন্মুক্ত বাতাসে অপ্রবৃত্তি। সিঁড়ি দিয়া উপরে উঠিতে গেলে নানাপ্রকার উপসর্গ। আর্সেনিকের ন্যায় ইহাতে নানাপ্রকার জ্বালাকর যাতনা আছে। ইহা অন্ডলালা মূত্রের প্রাথমিক অবস্থায় বহু রোগীকে আরোগ্য করিয়াছে। ইহা হরিৎপাড়ুরোগের একটি উৎকৃষ্ট ঔষধ। আর্সেনিক’ ও ‘ক্যাল্কেরিয়া’য় শোথ যেরূপ একটি প্রবল লক্ষণ ইহাতেও দ্রুপ। রোগলক্ষণগুলি সামান্য পরিশ্রমে বৃদ্ধিযুক্ত হয়; মূৰ্ছাভাব, বুক ধড়ফড় করা, শ্বাসকষ্ট এবং দুর্বলতা উপস্থিত হয়। শরীরের বামপার্শ্বই অধিক আক্রান্ত হয়।
নিম্নলিখিত মানসিক লক্ষণগুলি সচরাচর ইহার ব্যবহারের পথ দেখায়। ক্রোধ এবং ক্রোধ ও বিরক্তি হইতে রোগ। সন্ধায়, রাত্রে, শয্যায়, জ্বরের শীতের সময়, এবং জাগরিত হইলে উৎকণ্ঠা। ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে সশঙ্কিত অবস্থা, রাত্রিকালে মুক্তি সম্বন্ধে সশঙ্কিত। মানুষের দোষ ধরার দিকে ঝোক। লোকসঙ্গ কামনা করে। জাগিয়া উঠিলে মনের বিভ্রান্তি। মনঃসংযোগ করিতে অক্ষমতা। অলীকদর্শন। মৃতব্যক্তি, ছায়ামূর্তি ও মূর্তি দেখে। কল্পনাপ্রসূত চিত্তবিভ্রম। আগুনের স্বপ্ন দেখে, রাত্রে বৃদ্ধি, চক্ষু বুজিলে বৃদ্ধি। আরোগ্য ও মুক্তি সম্বন্ধে নৈরাশ্য। অসন্তুষ্ট। উত্তেজনাশীল। রাত্রিকালে মৃত্যুর ভয়, নির্জনতার ভয়, পাগল হইবার ভয়। আনন্দের বিষয়ে উদাসীন। উন্মাদ লক্ষণ। অব্যবস্থিতচিত্ত। উত্তেজনাপ্রবণ। শোকপরায়ণ। জীবনে বিতৃষ্ণা, জীবনে শ্রান্ত। স্মৃতিশক্তির দুর্বলতা। অনিষ্টকারক। একগুঁয়ে। অনুভূতি প্রবণ, সহজেই অপমানিত বোধ করে। অত্যন্ত অস্থিরতা, বিশেষতঃ রাত্রিকালে, উত্তাপকালে, ঋতুকালে। সন্ধ্যাকালে ও জ্বরের সময় অত্যন্ত বিষন্নতা। সহজেই চমকিত হয়। রাত্রিকালে ক্রন্দন করে।
শিরোঘূর্ণন ও সাধারণভাবে আক্ষেপের সহিত মাথায় ভীষণ রক্তের প্রধাবন হয়। ইহা বহুপ্রকার পুরাতন শিরঃপীড়া সৃষ্টি করিয়াছে ও আরোগ্য করিয়াছে। মাথার বেদনার একটি বিশেষ প্রকৃতি এই যে, বেদনাটি যে-পার্শ্বে চাপিয়া শুইয়া থাকে, তাহা হইতে বিপরীত পার্শ্বে সহিয়া যায় এবং এইভাবে অবস্থানের পরিবর্তনের সহিত পার্শ্ব-পরিবর্তন করিতে থাকে। অবশ্য সব শিরঃপীড়াই এরূপ করে না। ইহার অনেক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অদ্ভুত লক্ষণ আছে। মানসিক পরিশ্রমের সময়ে, মাথার বেদনা উপশমিত হয়, পরে অনেক বাড়িয়া উঠে। মুখের, চক্ষুপাতার, শঙ্খদ্বয়ের ও কর্ণের স্ফীতি। মুখের ও মস্তক-ত্বকে পামা। মস্তকের শীতলতা। বিবর্ণ, রুগ্ন, ফুলামুখ। তরল সর্দিস্রাব। হাঁচি। সকলপ্রকার খাদ্যে অরুচি, কেবলমাত্র ঠান্ডা জলের তৃষ্ণা। আহারের পর উদ্গার ও বমন। পাকস্থলী সহজেই বিকৃত হয়, বিশেষতঃ দুগ্ধ ও ঠান্ডা খাদ্য গ্রহণের পর। ঠান্ডা জল পান করার পর পাকস্থলীতে বেদনা। মদ্যপানের পর কুঁচকিতে বেদনা। গলায় জল উঠা এবং পাকস্থলীতে অম্ল। পাকস্থলীতে উদ্বেগ ও জ্বালা। পাকস্থলীতে সূঁচীবিদ্ধবৎ বেদনা। পাকস্থলীতে কামড়ানবৎ বেদনা। পাকস্থলী ও উদ্গারের ফাঁপ। ইহা দ্বারা পাকাশয়ের ক্ষত আরোগ্য হইয়াছে।
মূত্রপিন্ডপ্রদেশে অত্যধিক বেদনা। স্বল্প জ্বালাকর মূত্র উহাতে এলবুমেন ও তলানি থাকে। পরিশ্রমের এবং মদ্যপানের পর, রেতঃরজ্জুতে বেদনা।
ক্ষতকর হরিদ্রাবর্ণ প্রদরস্রাব। দুর্গন্ধ রক্তাক্ত প্রদরস্রাব। দুর্গন্ধ প্রদরের জন্য ইহা কেলি আর্স’ ও ‘কেলি ফসে’র সহিত তুলনীয়। ইহা জরায়ুর ক্যান্সাররোগে উপযোগী, যখন জ্বালা ও রক্তাক্ত, ক্ষতকর ও দুর্গন্ধ স্রাব বর্তমান থাকে। লক্ষণ মিলিলে ইহা ঋতুপ্রবাহ পুনঃস্থাপিত করে। ঋতুস্রাব প্রচুর অথবা সামান্য; খুব শীঘ্র শীঘ্র অথবা বিলম্বিত। ঋতুর আগমনে যন্ত্রণা। ঋতুদ্বয়ের মধ্যবর্তীকালে রক্তস্রাব। জরায়ুতে ও যোনিতে জ্বালাকর বেদনা।
কণ্ঠনলী হইতে পশ্চাদ্দিকে সূতা ধরিয়া টানিতেছে, এরূপ অনুভূতি। কণ্ঠনলীতে শুষ্কতাবোধ। অপস্মাররোগের আক্ষেপের পূর্বে স্বরভঙ্গ। রাত্রিকালে বিছানায় শ্বাসরোধ ও হৃৎস্পন্দন। অপম্মারের আক্ষেপের পূর্বে বক্ষে জ্বালাকর উত্তাপ এবং হৃৎপিন্ডস্থানে বেদনা। হৃৎপিন্ডপ্রদেশে রক্তের উচ্ছ্বাস। রক্তবহা নাড়ীগুলির মধ্যে বিশেষতঃ মস্তকে ও পৃষ্ঠে দপ-দপানি, এইজন্য রোগীকে শয্যা ছাড়িয়া উঠিতে হয়। বুক ধড়ফড়ানির সহিত হৃৎপিন্ডে বেদনা। হৃৎশূল। হৃৎপিন্ডে চাপিয়া ধরার ন্যায় বেদনা। মুখমন্ডলের উত্তাপের সহিত হৃৎস্পন্দন। সামান্য মাত্র উত্তেজনা বা পরিশ্রমে হৃৎস্পন্দন, সন্ধ্যাকালে ও রাত্রে বৃদ্ধি। নাড়ীর প্রত্যেক চতুর্থ স্পন্দন পাওয়া যায় না। দ্রুত নাড়ী।
স্কন্ধাস্থি ও ত্রিকাস্থির মধ্যে ভীষণ বেদনা পৃষ্ঠবেদনা বাহু পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। হাত ও পায়ের স্ফীতি। নিম্নাঙ্গের দুর্বলতা। ভীষণ স্বপ্নে নিদ্রার ব্যাঘাত হয়। হৃৎস্পন্দন ও শ্বাস রোধভাব। রাত্রির শেষভাগে জাগিয়া থাকে এবং অত্যন্ত ঘর্ম হয়।
‘আর্সেনিক’ ও ‘ক্যাল্কেরিয়া’র উপর মন রাখিয়া, এই ঔষধটি পাঠ করিলে, আরও বিস্তৃত জ্ঞান লাভ হইবে। নানা শক্তিতে ইহার আরও পরীক্ষা হওয়া প্রয়োজন।