Calc-f | পাথরের মত শক্ত স্ফীতি। সকল গ্রন্থি, টনসিল, অর্শ, টিউমার, ক্ষতের ধার ফুলো ও শক্ত। |
Calc-f | ক্ষত চিহ্ন লালচে দেখায় ও চুলকায়, ঠান্ডায় ক্ষতের উপশম। |
Calc-f | আঘাত লাগার পরে অস্থি বৃদ্ধি টিউমার। |
Calc-f | ভেরিকোস ভেইন ও কেপিলারীতে নরম টিউমার হওয়ার প্রবণতা। |
Calc-f | দাঁতের গোঁড়া অস্বাভাবিক নড়বড়ে হয়ে পরে। |
Calc-f | বিছানায় শুইলে বৃদ্ধি, স্যাঁৎসেঁতে ও ঠান্ডা আবহাওয়ায় বৃদ্ধি। |
শরীরের তন্তুর উপর কার্যকরী একটি শক্তিশালী ঔষধ বিশেষ। গ্রন্থিসমূহশক্ত, পাথরের মত, শিরার স্ফীতি ও বিবৃদ্ধি, ও অস্থির অপুষ্টি। স্ত্রীলোকের স্তনের উপর শক্ত গুটিসমূহ। গলগণ্ড। জন্মগত, বংশগত সিফিলিস। কঠিনতা প্রাপ্ত অংশ, যাতে সহজেই পুঁজোৎপত্তি হয়। অনেক ছানি নিঃসন্দেহে এই ঔষধের প্রভাবে ভালো হয়েছে। জন্মগত সিফিলিস, যা প্রকাশিত হয় মুখগহ্বর ও গলার ক্ষতে, বিভিন্ন অঙ্গের ক্ষয় ও পচন, তৎসহ ছিদ্র করার মত বেদনা উত্তাপের সাহায্যে। আটিরিয়ো স্কেলেরোসি, জীবনসংশয় জ্ঞাপক সন্ন্যাস রোগ। টিউবার কিউলোসিস। অস্ত্রোপচারের পর ব্যবহৃত হয়, অকারণ তন্তুর জোড়া লাগা রোধ করে।
মন – প্রচণ্ড হতাশা, অর্থনৈতিক ধবংস সম্বন্ধীয় অকারণ ভীতি।
মাথা – মাথার ভিতর কটকট শব্দ। সদ্যজাত শিশুর রক্তজ অর্বুদ। মাথার চামড়ায় শক্ত শক্ত উপমাংস সমূহ। মাথার চামড়ায় ক্ষত, তৎসহ ক্ষতস্থানের কিনারা শক্ত।
চোখ – চোখের সামনে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ ও ঝলকা দেখতে পাওয়া যায়, কর্ণিয়াতে ছোপ, কনজাংটিভাইটিস, ছানি। সাবকিউটেনিয়াম প্যালপিব্রাল সিষ্টস।
কান – কানের পর্দার উপর চুনজাতীয় পদার্থের সঞ্চয়, অসিকিউল্যা ও টেম্পোর্যাল অস্থির পেট্রাস অংশের ক্সেলেরোসিস্ তৎসহ বধিরতা, কানের ভিতর ঝিনঝিন ও গর্জন। মধ্য কর্ণের পুরাতন পুঁজ ঘটিত। কানপাকা।
নাক – মাথায় ঠাণ্ডা লাগা, ঠাণ্ডা লাগা থেকে নাক বন্ধ, শুষ্ক সর্দি, নাকে পচা ঘা, নাক থেকে প্রচুর গাঢ়, সবুজ বর্ণের, দলা দলা হলদেটে শ্লেষ্মা স্রাব। নাকের শীর্ণতা সহ প্রদাহ, বিশেষ করে মামড়ি পড়া যদি মুখ্য হয়।
মুখমণ্ডল — গালে শক্ত স্ফীতি তৎসহ বেদনা অথবা দাঁতের যন্ত্রনা। চোয়ালের অস্থির শক্ত স্ফীতি।
মুখগহ্বর — মাড়ীতে ফোঁড়া তৎসহ চোয়ালের উপর শক্ত স্ফীতি। জিহ্বার ফাটা, বেদনাযুক্ত অথবা বেদনাহীন। জিহ্বার কঠিনতা, প্রদাহের পর শক্ত হওয়া। দাঁতের গোড়া অস্বাভাবিক প্রকৃতির শিথিল, তৎসহ দাঁতের গর্তের ভিতর শিথিল অবস্থায় থাকে। দাঁতের সংস্পর্শে আসলে বেদনা শুরু হয়।
গলা – ঝিল্লীযুক্ত গলক্ষত, টনসিলের ভিতর অবিরত শ্লেষ্মার পিণ্ডসমূহ তৈরী হয়ে থাকে। গলায় বেদনা ও জ্বালা, উষ্ণ পানীয়ে উপশম, ঠাণ্ডা পানীয়ে বৃদ্ধি। টনসিলের বিবৃদ্ধি। আলজিহ্বা শিথিল, সুড়সুড় ভাব কণ্ঠনলী পর্যন্ত যায়।
পাকস্থলী – শিশুদের বমি। অভূক্ত খাদ্যবস্তুর বমন হিক্কা (ক্যাজুপিউটাম, সালফিউরিক অ্যাসিড)। পেট ফাঁপা। হজম শক্তি দুর্বল কিন্তু মুখরোচক খাদ্যের প্রতি স্পৃহা, বমিবমিভাব এবং অল্প বয়স্ক ছেলেদের আহারের পরে কষ্ট সাধারণতঃ এইসকল ছেলেরা অতিরিক্ত পড়াশুনার চাপে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। অতিরিক্ত পরিশ্রমের ফলে হজমশক্তির মারাত্মক ধরনের গোলযোগ মস্তিষ্কের ক্লান্তি, পেটে প্রচুর বায়ু জমা হয়।
মল ও মলদ্বার — গেঁটে বাতযুক্ত ব্যক্তিদের উদরাময়। মলদ্বারে চুলকানি, এবং অন্ত্রের নীচের তীব্র টাটানি ব্যথাযুক্ত ফাটা। রক্তপাত যুক্ত অর্শ। মলদ্বারে চুলকানি, কুচো-ক্রিমি থাকার ফলে যেরকম হয়। মলদ্বারের অভ্যন্তরে ও স্রাবযুক্ত নয় এই অর্শ, তৎসহ পিঠে বেদনা, যা ত্রিকাস্থির বহু নীচে অনুভূত হয় এবং কোষ্ঠকাঠিণ্য। অন্ত্রের নিম্নাংশে প্রচুর বায়ু জমা হয়। গর্ভকালে বৃদ্ধি।
পুরুষের রোগ – হাইড্রোসিল, অণ্ডদ্বয়ের কঠিাতা।
শ্বাস–প্রশ্বাসের যন্ত্রসমূহ – স্বরভঙ্গ, ঘুংড়ীকাশি। কাশি তৎসহ ছোট ছোট হলদে রঙের শ্লেষ্মা দলা উঠে। তৎসহ শুয়ে পড়লে গলায় সুড়সুড় করে ও অস্বস্তি। আক্ষেপিক কাশি। ক্যাল্কেরিয়া ফ্লয়োরিকা, হৃদপিণ্ডের এণ্ডোকার্ডিয়ামের চারিপাশের সঞ্চিত ফাইব্রয়েড তন্তু দূর করে এবং এন্ডোকার্ডিয়ামের স্বাভাবিক গঠন ধরে রাখতে সাহায্য করে (জোনস্ এম. ডি.)
রক্ত সংবহন যন্ত্রসমূহ – রক্তবহানলীর অর্বুদের প্রধান ঔষধ তৎসহ প্রসারিত রক্তবহানলী, এবং শিরা স্থিতাবস্থা বা প্রসারিত অবস্থা। অ্যানিউরিজম। হৃদ্ কপাটিকার রোগ সমূহ। যে অবস্থায় টি. বি. রোগের বিষ হৃদপিণ্ড ও রক্তবহানলীকে আক্রমন করে, সেই ক্ষেত্রে এই ঔষধ উপযোগী।
ঘাড় ও পিঠ – কোমরের পুরাতন যন্ত্রণা, হাঁটা শুরু করার মুখে বেদনার বৃদ্ধি এবং অবিরাম হাঁটা-চলা বা নড়াচড়ায় উপশম। অস্থিময় অবুদ। শিশুদের ঊরুস্থানের অস্থির বা ফিমারের রিকেটের মত বিকৃদ্ধি। পিঠের নিম্নাংশে বেদনা, তৎসহ জ্বালা।
অঙ্গ–প্রত্যঙ্গ – কজির পিছনের অংশে নাড়ীগ্রন্থি অথবা কোষাবৃত অর্বুদ। হাতের আঙ্গুলের সন্ধির গেঁটে বাতজনিত কারণে বৃদ্ধি। হাতের আঙ্গুলের অস্থিবৃদ্ধি। হাঁটুর পুরাতন প্রদাহ।
ঘুম — সুস্পষ্ট স্বপ্ন, তৎসহ আসন্ন বিপদ সম্বন্ধীয় অনুভূতি। অতৃপ্তির ঘুম।
চামড়া – চামড়া সুস্পষ্টভাবে সাদা। ক্ষতস্থান জোড়া লাগার তন্তুসমূহ, অস্ত্রোপচারের পর তন্তুসমূহের জোড়া লাগা। ফাটাসমূহ। হাতের তালুর ফাটাসমূহ, অথবা চামড়া শক্ত। মলদ্বারের ফাটা। ফাটা স্থান থেকে পুঁজ নির্গমন, তৎসহ কিনারা শক্ত। আঙ্গুলহাড়া। মলদ্বারে সহজে আরোগ্য হয় না এই জাতীয় নলী ঘা, ক্ষতস্থান থেকে গাঢ় হলুদবর্ণের পুঁজ বেরিয়ে থাকে এবং চারিপাশের চামড়া বেগুনিবর্ণ যুক্ত ও স্ফীত। স্ত্রীলোকের স্তনগ্রন্থি শক্ত ও গুটিযুক্ত। সন্ধিস্থানের গোলাকার পেশীবন্ধনী অথবা কন্যরার স্থান থেকে স্ফীতি অথবা কাঠিণ্যসহ বিকৃদ্ধি। কঠিন হয়ে যাওয়া মাত্র স্থান সমূহ পাথরের মত শক্ত।
কমা–বাড়া – বৃদ্ধি, বিশ্রামের সময়, আবহাওয়ার পরিবর্তনে।
উপশম — গরমে, উষ্ণ প্রলেপে।
সম্বন্ধ – তুলনীয়: কোনিয়াম, লেপিস, ব্যারাইটা মিউর, হেকলা, রাসটক্স, ক্যাল্কেরিয়া সালফ স্টিবিয়েটা (রক্তরোধক এবং জরায়ু পেশীর অর্বুদ নাক্স)। ম্যাঙ্গিফেরা ইণ্ডিকা (শিরা স্ফীতি)।
শক্তি – ৩য় থেকে ১২ শক্তি। একটি “পুরাতন”ঔষধ। এর কাজের প্রভাব পরিলক্ষিত হতে কিছু সময় প্রয়োজন হয়। কিছুতেই পুনঃ পুনঃ প্রয়োগ নিষিদ্ধ।
চুন ও ফ্লোরিক এসিডের রাসায়নিক সংযোগ আমাদিগকে এমন একটি ঔষধ দিয়াছে, যাহার প্রকৃতি ও লক্ষণ নূতন। কেহ পূর্বোক্ত উপাদান দুইটির কোন একটি বা উভয় সম্বন্ধে যতই অভিজ্ঞ হউন না কেন, এই মিশ্রণজাত ঔষধটির আরোগ্যকর ক্ষমতা সম্বন্ধে কোন কিছুই পূর্ব হইতে বলিতে পারিবেন না। আমি ইহার গ্রন্থির স্ফীতি ও রসপ্রসেকের কথা, কৌষিক তন্তু ও অস্থিময় গঠনের কথা বলিতেছি। পেশীরজ্জুর মধ্যে ঢেলা জন্মান, অস্থিবৃদ্ধি পাথরের মত শক্ত গ্রন্থি, অস্থিবেষ্টের মধ্যে রসপ্রসেকহেতু অস্থিবৎ গঠন, উপস্থিসমূহের মধ্যে ধানের ন্যায় পিন্ড জন্মান রোগ, লক্ষণের স্বল্পতা থাকিলেও এই ঔষধে বিস্ময়করভাবে আরোগ্য হইয়াছে। অবশ্য লক্ষণ মিলিলেই ইহা আরোগ্য করে, কিন্তু যাহাতে সহজেই স্বতন্ত্রীকরণ সম্ভব হয় সেইজন্য ইহার পরীক্ষা প্রয়োজন।
কোন ব্যক্তির হাঁটুর পশ্চাদভাগের গর্তের ন্যায় স্থানের অর্বুদ অস্ত্রোপচার দ্বারা অপসৃত হইয়াছিল, কিন্তু উহা পুনরায় দেখা দিয়াছিল এবং হাতের মুঠার ন্যায় বড় হইয়া উঠিয়াছিল। পাটি ৪৫ ডিগ্রী পর্যন্ত বাঁকান যাইত এবং হাঁটুটি অচল হইয়াছিল। রোগীর লক্ষণ ও অর্বুদটির কঠিনতা দেখিয়া এই অদ্ভুত ঔষধটি ব্যবস্থা করা হইয়াছিল। অর্বুদটি ক্রমশঃ ছোট হইতে লাগিল এবং অঙ্গটি স্বাভাবিক ও পূর্বের ন্যায় সুস্থ হইয়া উঠিল, রোগীর সুস্থদেহে শিশুর ন্যায় পুনর্জন্ম হইল এবং আজও সে সর্বপ্রকার অসুবিধা হইতে মুক্ত আছে। আজ হইতে দশ বৎসর পূর্বে সে আরোগ্য হইয়াছে।
রোগী ঠান্ডায়, বায়ুপ্রবাহে, আবহাওয়ার পরিবর্তনে এবং ভিজে আবহাওয়ায় অত্যনুভূতিযুক্ত থাকে। উত্তাপে এবং উষ্ণ বাহ্য-প্রয়োগে লক্ষণ উপশম হয়, বিশ্রামকালে লক্ষণগুলির বৃদ্ধি হয়।
প্রচুর বিবর্ণ মূত্র ও উদরাময় থাকিলে ইহা গেঁটেবাত রোগে উপকারী। রোগী দুঃখিত ও বিষাদিত থাকে। সিফেলিমেটোমা নামে পরিচিত শিশুদের মাথার উপরের হ্রাস-বৃদ্ধিযুক্ত অর্বুদ এই ঔষধ দ্বারা আরোগ্য হইয়াছে। চক্ষুর কাজ করিবার পর, চক্ষুর সম্মুখে দাগ দাগ দেখে। ছাঁনি রোগ। চক্ষের কনীনিকার ক্ষতের ধারগুলি কঠিন থাকিলে ইহা দ্বারা আরোগ্য হয়, ছোট ছোট শক্ত দাগ ও চক্ষুর শুক্লমন্ডলের প্রদাহও আরোগ্য হয়। ইহা গ্রন্থিবিকৃতি এবং নাসিকা হইতে ঘন হরিদ্রাভ সবুজ স্রাব আরোগ্য করিয়াছে। দীর্ঘকালস্থায়ী দুর্গন্ধ সর্দি। দাঁতের স্বল্প পাথুরি।
গলার ব্যথা, ক্ষত, দানাময় অবস্থা, ঠান্ডায় বৃদ্ধি এবং উষ্ণ পানীয়ে উপশম। বেদনা রাত্রে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। বর্ধিত কঠিনতাপ্রাপ্ত টনসিল ব্যারাইটা কাৰ্ব ব্যর্থ হওয়ার পর, ইহা দ্বারা আরোগ্য হইবে।
রাত্রিকালে যকৃতে বেদনা, বেদনাযুক্ত পার্শ্বে চাপিয়া শুইলে বৃদ্ধি, সঞ্চালনে উপশম। যকৃতে কর্তনবৎ বেদনা, হাঁটিলে উপশম।
গেঁটেবাতগ্রস্ত ব্যক্তির উদরাময়। মলদ্বারে চুলকানি ও অর্শ; বেদনা ও প্রবল রক্তপাত। মলদ্বার ফাটা। কোষ্ঠবদ্ধতা।
প্রচুর জলের ন্যায় মূত্র। তীব্র গন্ধবিশিষ্ট মূত্র। মূত্রত্যাগকালে চিড়িকমারা যাতনা ।
অন্ডদ্বয়ে কঠিনতাপ্রাপ্ত। অন্ডে ডেলা ডেলা গঠন। স্ত্রী-বহির্জননেন্দ্রিয়ে শিরাস্ফীতি। জরায়ুতে সৌত্রিক অবুদ। স্তনের উপরে ডেলা ডেলা গঠন।
কণ্ঠনলীতে শুষ্কতা ও সুড়সুড় করা। স্বররঞ্জু পরিষ্কার করিবার প্রবৃত্তি। উচ্চস্বরে পড়িবার পর স্বরভঙ্গ। গলার সুড়সুড়ি হইতে আহারের পর এবং ঠান্ডা বাতাসে খকখকে কাশি। আক্ষেপজনক কাশি।
ইহা অষ্টম পঞ্জরের কোণের অস্থিবৃদ্ধি আরোগ্য করিয়াছে।
ইহা বিশ্রামকালে বৃদ্ধি ও উত্তাপে উপশমযুক্ত গেঁটেবাত’, ‘রাস টক্স বিফল হইবার পরেও আরোগ্য করিয়াছে। পৃষ্ঠবেদনা, উহা ত্রিকাস্থি পৰ্য্যন্ত বিস্তৃত হয়।
গ্রীবাগ্রন্থির কঠিনতা প্রাপ্তি।
অতৃপ্তকর নিদ্রা ও স্পষ্ট স্বপ্ন। স্বপ্নে বিছানার উপর লাফাইয়া উঠে। পুজোৎপত্তিতে ইহা ‘সাইলিশিয়া সদৃশ্য।
গ্রন্থিতে, মাংসপেশীর আবরণী (fasciae) অথবা বন্ধনীতে পাথরের ন্যায় শক্তভাব ও ফোলা।