কঠিন জিনিস গিলতে কষ্ট বা অপারগ। |
শরীরের নানা স্থান এমন কি প্রত্যেক লোমকুপ হতে রক্তস্রাবের প্রবনতা, যে রক্তস্রাব হয় তা জমাট বাধে না। |
মূত্রে রক্ত মিশ্রিত থাকার কারনে দেখতে ধোয়ার মত, মূত্রের পরিমান অতি কম। |
চোখ হলদে বর্ন, সমস্ত শরীর হলদে দেখায়। |
জিহ্বা ফোলা ও তাতে প্রদাহ। |
সামান্য শ্রমেই ক্লান্তি অনুভূত হয়। |
যারা গ্ল্যান্ডের অসুখে ভোগে (Strumous = Serofulous), দুর্বল, সহজেই রক্তপাত হয়, স্বাস্থ্য ভেঙ্গে গেছে, ঘা সহজেই পেকে ওঠে, মাদকদ্রব্য সেবন জনিত রোগে ভোগে, কার্বাঙ্কল বা রক্ত ফোড়া হওয়ার প্রবণতায় ভোগে তাদের পক্ষে উপযোগী (এনথ্রাসিনাম) ।
শারিরীক দুর্বলতায় বহুদিন যাবৎ ভুগে টাইফয়েড বা ম্যালেরিয়ায় ভুগে রক্ত দূষিত হওয়ার কারণে। বহুদিন যাবৎ মদ খাওয়ার অভ্যাসজনিত, জীবনীশক্তি নিঃশেষিত প্রকৃত শেষ অবস্থা-এরূপ অবস্থায় উপযোগী। সন্ন্যাস রোগ- মাদকাসক্ত, রক্তস্রাব প্রবণ ও ভগ্ন স্বাস্থ্য তাদের মৃগী রোগীর মত হাত পা খিঁচতে থাকে। রক্তস্রাব প্রবণ, চোখ, কান, নাক ও দেহের প্রতিটি দ্বার হতে রক্ত বার হতে থাকে, ঘামের সাথে রক্ত বের হতে থাকে।
চোখের সাদা অংশ হলদে- চোখের তারার স্বচ্ছ অংশের প্রদাহ হলে এ ওষুধ প্রয়োগে দৃষ্টিশক্তি পরিষ্কার করে। সাংঘাতিক জন্ডিস- লিভার সংক্রান্ত (Hepatic) না হয়ে বরং রক্ত সংক্রান্ত (Hemolytic) জন্ডিস রোগে ব্যবহার্য।
Purpura Haemorrhagica (রক্তে Platelel কমে যায়, রক্ত জমে যায় তাড়াতাড়ি কিন্তু রক্ত বহুক্ষণ ধরে বের হতে থাকে) রোগ— এতে হঠাৎ দেহের সব দ্বার দিয়ে, চামড়ায়, নখে বা দাঁতের মাড়ী হতে রক্ত বার হয় এ লক্ষণে উপযোগী। জিব অত্যন্ত লাল; মসৃণ, চকচকে (পাইরো), জিব খুব ফুলে যায় ।
সাংঘাতিক ডিপথেরিয়া বা স্কারলেট জ্বরে গলা বা টনসিল ফোলে। গ্যাংগ্রিন হয়— তাতে ব্যথা, ঐ ব্যথা ঢেকুরে বাড়ে, বমি বা ডায়েরিয়া হলে বেড়ে যায়।
জীবনী শক্তি অবসন্ন, নাড়ী কখনও পাওয়া যায় কখনও যায় না, রক্ত বিষাক্ততা (পাইরো) ।
বমি— পিত্তবমি সাথে উদ্বেগ ও নাড়ী দুর্বল, প্রতি মাসে ঋতুস্রাবের পর বমি, ডান পাশে বা চিৎ হয়ে শুলে সাথে সাথে কালচে, সবজে রঙের বমি হয়, কাল বা কফিগুড়ার মত বমি।
Yellow fever (জন্ডিস, কাল বমি ও প্রস্রাব বন্ধ এই তিনটি লক্ষণ থাকে, ‘B’ Arborivirus-এর সংক্রমণে—মশাবাহিত হয়ে এই জ্বর বিশেষতঃ গরম দেশে দেখা যায়) এই জ্বরে কাল বমি হলে প্রযোজ্য।
ডায়রিয়া- মল কাল, পাতলা, কফিগুড়ার মত রঙ, ভীষণ দুর্গন্ধ, খাদ্য বা পানীয়ে বিষাক্ত কিছু থাকার জন্য, অসংযত জীবন যাপন করে (পাইরো) yellow ever, কলেরা, টাইফয়েড বা টাইফাস জ্বরে ডায়ারিয়া বা উদরাময় হলে উপযোগী।
রক্তদূষিত রোগ ও সহজেই পুঁজ জন্মায় এমন রোগে অন্ত্র হতে রক্তস্রাব হলে ব্যবহার্য-রক্ত কাল, তরল, জমাট বাধে না।
শব কাটাছেঁড়াজনিত ক্ষত, পোকামাকড়ের কামড়, টিকা দেওয়ার কুফলে প্রযোজ্য।
দুর্বল স্ত্রীলোকদের রজোস্রাবের পরিবর্তে অন্য পথে রক্তস্রাব (ডিজিটা, ফস্)।
রজোনিবৃত্তিকালে মুখে, চোখে আগুনের হলকা, ঘামে সারাদেহ ভিজে যায়। পাকস্থলীতে খালি খালিবোধ ও অবসন্নতা, বহুদিন যাবৎ রক্তস্রাব-রক্ত কাল, দুর্গন্ধ সেই সাথে রক্তশূন্যতা।
জরায়ুতে সাংঘাতিক রোগ-তা থেকে অনেক রক্ত বার হতে থাকে রক্ত কাল, তরল, দুর্গন্ধযুক্ত।
সম্বন্ধ-তুলনীয়- ইল্যাপ্স, ল্যাকে, ন্যাজা, পাইরো। চামড়া ঠান্ডা ও আঠালো ঘাম-ল্যাকে, চামড়া ঠান্ডা ও শুকনোভাব—ক্রোটেলাস।
ডান ফুসফুস আক্রান্ত মুখ হতে কাল রক্ত-ইল্যাপ্স।
শক্তি – ৬, ৩০, ২০০।
[Gangrene=গ্যাংগ্রীন—আক্রান্ত টিস্যুতে পচন বা মৃত্যু, সাধারণত ঐ টিস্যুতে অল্প বা একদম রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। কোন যন্ত্র বা টিস্যুতে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কোন প্রদাহযুক্ত অসুখ, আঘাত বা আর্টারীর দেওয়াল মোটা হয়ে ঐরূপ হয়। ফোড়া, ঠান্ডা লেগে, পিষে যাওয়া মত আঘাত বা ডায়াবেটিস মেলিটাস ও Raynaud’s Disease-এর উপসর্গরূপে গ্যাংগ্রীন হতে পারে। বড় আর্টারিতে রক্ত চাপ বেধে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে সংযুক্ত অঙ্গে গ্যাংগ্রীন হতে পারে। নরম টিস্যুতে পচন ধরলে তাকে Slough বলে ও শক্ত টিস্যু যেমন হাড় এ পচন ধরলে তাকে Sequestrum বলে। গ্যাংগ্রীন অনেক প্রকার যথা- (A) G. Angioneurotic—আর্টারি বা ভেন-এ রক্তের চাপ বেধে। (B) G. Diabetic-Blood-vessesl রোগাক্রান্ত হয়ে। (C) G. Dry—আর্টারিতে রক্ত চলাচল কমে গিয়ে হয়। ভেন-এ অবস্ট্রাকসন হয় না। (D) G. Embolic এমবলাস বা পিন্ড-গ্যাসীয় বা শক্ত বা ব্যাকটেরিয়া একত্রিত হয়ে রক্তচলাচলে বাধা সৃষ্টি করলে হয়। (E) G. Gas-Clostridium Perfringens ব্যাসিলি দ্বারা গ্যাস তৈরী হয়ে। (F) G. Humid-রস ঝরতে থাকে। (G) G. Idiopathic-অজ্ঞাত কারণে। (H) G. Inflammatory-তরুণ সংক্রমণ বা প্রদাহ হয়ে। (I) G. Symmetric—একই অঙ্গের দুদিকে সমানভাবে হয় ।
Raynaud’s Disease ও Buerger’s Disease-এ দেখা যায়। (U) G: Traumaticখুব জোর আঘাত লেগে আক্রান্ত অঙ্গে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
সাপের বিষগুলি রাসায়নিক দিক থেকে সোড়া অথবা অন্যান্য লবনের সায়ান হাইড্রেট। এই লবনগুলি সুরাসারে দ্রবনীয় এবং সুরাসার এই গুলির ক্রিয়ানাশক। পুটিসাধন সম্পর্কে এই ঔষধের কাজ আছে। বৃদ্ধ বয়েসে পুটি সম্পর্কিত গোলযোগে। অপ্রবল পচন অবস্থা। সাধারণভাবে রক্তের বিকৃত অবস্থা, রক্তস্রাব ও জন্ডিস।
ক্রোটেলাসের উপর ক্রোটেলিন, ইনজেকশন করা হলে রক্তের জমাট বাঁধার ক্ষমতা হ্রাস পায়। মৃগী রোগে এই প্রক্রিয়ার প্রাবল্য, গড় স্বাভাবিক অবস্থা থেকে অনেক বেশী। রক্তের পচন, রক্তস্রাব (কালো, জলের মত, জমাট বাঁধে না), কার্বাঙ্কল, ম্যালিগন্যান্ট স্কারলেটিনা, পীতজ্বর, প্লেগ, কলেরা, প্রভৃতি হবার প্রবণতা এবং জাতীয় রোগে এই ঔষধটির কিছু কাজ আছে। রক্তস্রাব যুক্ত ধাতুবিকৃতি। নিদ্রাকারক হিসাবে কাজ করে। ঘুমের মধ্যে রোগলক্ষনের বৃদ্ধি। ডানদিকের এই ঔষধের কাজের প্রাধান্য দেখা যায়।
মন — ক্রন্দন প্রবণ; জ্ঞান ও স্মৃতি শক্তির আচ্ছন্ন অবস্থা; অধীর। বাচাল, তৎসহ পলায়ন প্রবণ। দুঃখিত মস্তিষ্কের ক্ষয় সম্পর্কিত বিভ্রান্তি।
মাথা — মাথাঘোরা, তৎসহ দুর্বলতা ও কম্পন। মৃদু, ভারবোধের ন্যায়, মাথার পিছনের অংশে বেদনা, মাথার ডানদিকেও ডানচোখের উপর বেদনা। বামদিকে চেপে শুলে মাথার যন্ত্রনা সহ হৃদপিন্ডের বেদনা। মাথার যন্ত্রনা, ডিঙ্গি মেরে হাঁটে যাতে—শরীরে ঝাঁকুনি না লাগে।
চোখ — আলোতে অত্যন্ত অনুভূতি প্রবন, বিশেষত ল্যাম্পের আলোতে। চোখদুটি হলুদবর্ণ। ভ্রান্তি সমূহ, নীল রঙ সমূহ দেখে। চোখের স্নায়ুশূল; ছিঁড়ে ফেলার মত, ছিদ্র করার মত বেদনা, মনে হয় যেন চোখের চারিধারে কাটা হয়েছে। চোখের ভিতরে হওয়া রন্ধস্রাব শোষন করার কাজে এই ঔষধ ব্যবহার করা হয়। কিন্তু বিশেষ করে, রেটিনার, অপ্রদাহিক রক্তস্রাব বেশী উপকারী। দ্বিত দৃষ্টি।
কান — শ্রবন কাজের দরুন মাথা ঘোরা। কান দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ে। ডানদিকের কান বন্ধ হয়ে গেছে এই জাতীয় অনুভূতি।
নাক — নাক থেকে রক্তস্রাব, রক্তকালো ও দড়ির মত, নাকে পচা ঘা, উদ্ভেদ জাতীয় রোগ অথবা সিফিলিস জাতীয় রোগের পরে এই জাতীয় অবস্থা দেখা দেয়।
মুখমন্ডল — ব্রন, ঠোঁট দুটি স্ফীত ও অসাড়। সীসার মত রঙ যুক্ত ও মুখমন্ডল হলুদ বর্ণ। লক-জ।
মুখগহ্বর – জিহ্বা লাল ও ছোট, কিন্তু স্ফীত বলে মনে হয়। জিহ্বা আগুনের মত লাল, কেন্দ্রস্থল শুষ্ক, মসৃন ও চকচকে। মুখ থেকে ছাতা পড়ার গন্ধ বেরিয়ে থাকে। মুখ গহ্বর লালাস্রাবে পূর্ণ। জিহ্বা ঠেলে বার করার সময় ডানদিকে বেঁকে যায়। রাত্রে আক্ষেপিক দাঁত কড়মড়ানি। জিহ্বা ক্যান্সার তৎসহ রক্তস্রাব।
গলা – শুষ্ক, স্ফীত, কালচে লাল। অন্ননলীর আক্ষেপ, কিছুতেই কোন শক্ত খাবার গিলতে পারে না। বেশ কষা জাতীয় সঙ্কোচন। গ্যাংগ্রীন, তৎসহ যথেষ্ট ফোলাভাব।
পাকস্থলী – পেটের চারিপাশে পোষাকের চাপ অসহ্য। পাকস্থলীর ভিতর কোন কিছু ধরে রাখতে পারে না; ভুক্ত খাদ্যবস্তুর তীব্র বমন; পিত্ত বমন, রক্ত বমন। অবিরাম বমিবমিভাব ও প্রতিমাসে ঋতুস্রাবের পরে বমি। কিছুতেই ডানদিকে পাশ ফিরে শুতে পারে না। ডানদিকে চেপে শুলেই কালচে সবুজ বর্ণযুক্ত বমি। কালো অথবা কফির রঙের মত বমি। পাকস্থলীর ক্যান্সার, তৎসহ রক্তমিশ্রিত, পিচ্ছিল বমি। পেটের উপরের অংশের কেন্দ্রস্থলে কম্পন ও ডানা ঝটকানোর মত শব্দ হয়। পেটের উপরের অংশের কেন্দ্রস্থলে জামা কাপড়ের চাপ অসহ্য। মূর্চ্ছা ও পাকস্থলীর ভিতর খালিবোধ। পাকস্থলীর ক্ষত। পাকস্থলী দুর্বলতা হেতু অজীর্ণরোগ। পুরাতন মদ্য পায়ীদের পাকাশয়িক প্রদাহ। ক্ষুধার্ত, উৎসুক বস্তুর জন্য স্পৃহা, চিনি খেতে চায়; মাংসে অনিচ্ছা।
উদর – প্রসারিত, উত্তপ্ত ও স্পর্শকাতর। যকৃৎস্থানে বেদনা।
মল – কালো, পাতলা, দূর্গন্ধযুক্ত, অনেকটা কফির মত দেখতে। অন্ত্রের রক্তস্রাব। রক্তকালো, জলের মত, জমাট বাঁধেনা। দাঁড়িয়ে থাকলে অথবা হাঁটা চলার সময় সরলান্ত্র দিয়ে রক্ত চুঁয়ে চুঁয়ে গড়িয়ে পড়ে।
স্ত্রীরোগ – দীর্ঘস্থায়ী মাসিক ঋতুস্রাব। বাধক বেদনা; যন্ত্রনা নীচের দিকে ঊরুস্থান পর্যন্ত প্রসারিত হয়, তৎসহ হৃদপিন্ড স্থানে কনানি। জরায়ু থেকে রক্তক্ষরণ তৎসহ পাকস্থলীর অবসন্নতা। প্রসবান্তিক জ্বর; দূর্গন্ধযুক্ত প্রসবান্তিক স্রাব। জরায়ু যেন খসে পড়বে এই জাতীয় অনুভূতি। জরায়ু বন্ধনীতে যন্ত্রনাদায়ক টানভাব। কিছুতেই পা দুটি স্থির রাখতে পারে না।
প্রস্রাব – কালো, রক্তমিশ্রিত প্রস্রাব। প্রস্রাবে তলানি। বৃক্ক প্রদাহিত। অ্যালবিউমিনযুক্ত, কালো, অল্প (মার্ককর)।
হৃদপিন্ড – দুর্বল কাজ, অকম্পনাড়ী। হৃদকম্প, বিশেষ ঋতুস্রাবের সময়। হৃদপিন্ডে কম্পন অনুভূতি।
শ্বাস-প্রশ্বাস — কাশি, তৎসহ রক্তমিশ্রিত শ্লেষ্মা। কণ্ঠনলীর ভিতর একটি শুষ্ক স্থানে। সুড় সুড় কর অনুভূতি।
অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ — হাত দুটি কাঁপে, স্ফীত। নিম্নাঙ্গ খুব সহজেই ঝিমিয়ে পড়ে। ডানদিকের পক্ষাঘাত।
জ্বর — রক্তস্রাবযুক্ত অথবা পচনশীলতা যুক্ত, ম্যালিগন্যান্ট জাতীয় জ্বর। অপ্রবল, পিত্ত, সবিরাম জ্বর। পীত জ্বর। রক্তযুক্ত ঘাম। সেরিব্রো-স্পাইন্যাল মেনিঞ্জাইটিস (সিকিউসা; কুপ্ৰাম এসেটিকাম)। ঠান্ডা ঘাম।
চামড়া — স্ফীতি ও বিবর্ণতা, চামড়ায় সেঁটে থাকা ভাব, চামড়ার উপর নানা প্রকার রঙ দেখা যায়, তৎসহ তীব্র বেদনা। ফোস্কাযুক্ত। পান্ডুবর্ণ। সমগ্র শরীর হলুদ বর্ণ। শরীরের ডানদিকের চামড়া অত্যন্ত অনুভূতি প্রবন। পারপিউরা হেমারেজিকা। শরীরের সকল অংশ থেকে রক্তস্রাব। রক্তমিশ্রিত ঘাম। শীত স্ফোটক, আঙ্গুল হাড়া। শরব্যবচ্ছেদ জনিত কারণে ক্ষত সমূহ। পুঁজ যুক্ত উদ্ভেদ। পোকামাকড় হুল ফোটালে। টীকা নেবার পরে দেখা দেওয়া উদ্ভেদ সমূহ। টীকা নেবার কুফল সমূহ। লসিকাগ্রন্থির প্রদাহও রক্তদুষ্টি বা সেপিটসিমিয়া। ফোঁড়া, কার্বাঙ্কল, ও উদ্ভেদ সমূহের চারিপাশ বেগুনি বর্নের, চর্ম নানাবর্ণে চিত্র-বিচিত্র ও শোথ। অ্যানথ্রাক্স, টাটানি অনুভূতি চাপে উপশম।
ঘুম – মৃতদেহের স্বপ্ন দেখে। ঘুমের মধ্যে চমকিয়ে উঠে। হাই তোলা। জেগে থাকার সময় শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা।
কমা-বাড়া-বৃদ্ধি, ডানদিকে, মুক্ত বাতাস, সন্ধ্যা ও সকালে; বসন্তকালে, গরম পড়ার মুখে, বাৎসরিক, ঘুম থেকে জাগার সময়, ভিজে স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়া; ঝাঁকুনি।
সম্বন্ধ – তুলনীয়-বোথ্রোপস; ন্যাজা- (অতিরিক্ত স্নায়বিক উত্তেজনামূলক); ল্যাকেসিস-(সুস্পটভাব বাম দিকে বৃদ্ধি, এই লক্ষনটি থাকে); ঈলাক্স- (কানে পুঁজ ও ডানদিকের ফুসফুসের উপসর্গে বেশী ব্যবহৃত হয়); ক্রোটেলাস কাস্কাভেলা- (মৃত্যুর স্বপ্ন দেখে ও চিন্তা করে। সন্ধিস্থানের পক্ষাঘাত, অর্ধচেতনভাব। একজাতীয় সম্মোহিত অবস্থা তৈরী হয়। চোখের তারা চারিপাশে কেটে ফেলার মত অনুভূতি); বাঙ্গেরাম-ক্রেট (পালওমায়েলাইটিস)।
দোষঘ্ন — ল্যাকেসিস; সুরাসার; বিচ্ছুরিত তাপ; ক্যাম্ফর।
শক্তি – ৩ থেকে ৬ষ্ঠশক্তি।
ক্রোটেলাস, ল্যাকেসিস’, ‘এপিস’ এবং অন্যান্য জৈব বিষ প্রভৃতির ন্যায় পদার্থগুলির ঔষধরূপে ব্যবহারে আপত্তি করাই সাধারণের প্রথম সংস্কার হওয়া উচিত এবং একথাও সত্য যে, সাধারণ লোকের মন এইরূপ ব্যবহারিক ভীতির চক্ষে দেখিয়া থাকে। কিন্তু যখন এগুলি উপযুক্তভাবে ব্যবহৃত হয় এবং যখন আমরা উহাদের প্রয়োগক্ষেত্রের ভীষণতার কথা চিন্তা করি এবং নিশ্চিত বুঝি যে উহাদের প্রয়োজনে আর কোন বিকল্পই চলিতে পারে না, আর যখন সম্পূর্ণ বিশুদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত, ও সাধারণ জিনিষের অবস্থায় না আসা পর্যন্ত আমরা উহাদিগকে শক্তীকৃত ও পরিবর্তিত করিয়া লই, তখন মন হইতে ভয় চলিয়া যায়। একথাও সত্য যে, যে সকল রোগে ক্রোটেলাস প্রভৃতি বস্তুর আবশ্যক হয়, তাহাও অতি সাম্মাতিক। যখন কেহ একটি ক্রোটেলাস রোগীর শয্যাপার্শ্বে যায়, তখন তাহার মনে হয় যে, মৃত্যু সন্নিকট, রোগী দেখিতে ভয়ঙ্কর হইয়া পড়ে, এবং শিশুর প্রতি মমতার জন্য মাতা অথবা রোগিণীর স্বামী তৎক্ষণাৎ বলিয়া উঠেন, “ডাক্তার, ইহার জীবনরক্ষার জন্য যাহা হয় কিছু ব্যবহার করুন, রোগীকে আরোগ্য করিবার জন্য যে-কোন ব্যবস্থার আশ্রয় লউন।”
ক্রোটেলাসের লক্ষণগুলি অদ্ভুত। ইহা অন্য সকল ঔষধ হইতে স্বতন্ত্র। ইহার কোন প্রতিনিধি নাই, এবং অপর কোন ঔষধই লক্ষণসমষ্টির দিক হইতে ইহার সদৃশ নহে। অন্যান্য সর্পবিষয়গুলির সহিত ইহার অপরাপর ঔষধ অপেক্ষা অধিক সাদৃশ্য আছে, কিন্তু সম্ভবতঃ এনসিসট্রোডন কনটরট্রিকস্ (কপারহেড) সৰ্প ব্যতীত, ইহাই সৰ্ব্বাপেক্ষা ভীষণ সর্প। আমরা সর্পদষ্ট রোগীতে সর্বাপেক্ষা ভীষণ পরিণতি দেখিতে পাই, আমরা স্বয়ং মৃত্যুকেই দেখিতে পাই, অত্যন্ত দ্রুত ক্রিয়ার পর অন্তিমকে দেখিতে পাই, অতি সাম্রতিক প্রকৃতির অন্তরুৎসেক্য দেখিতে পাই। এই সকল সর্পবিষকে সোডা ও অন্যান্য ক্ষারের বিশ্লেষণে প্রাপ্ত অম্লজানজারিত অঙ্গারসার বলিয়া মনে করা হয়। আমরা জানি যে, সুরাসারই অম্লজানজরিত অঙ্গারসারগুলির স্বাভাবিক দ্রাবক পদার্থ, আর এই কারণেই সর্পদংশনে যথেষ্ট পরিমাণে সুরাসার খাইতে দেওয়া হয়, তাহাতে সাধারণতঃ মৃত্যু বিলম্বিত হয় এবং সময়ে সময়ে জীবন রক্ষাও হয়। যদি সে এইরূপ ভীষণ আক্রমণের মধ্যেও বাঁচিয়া যায়, তাহা হইলেও তাহার দেহে আজীবন উহার পুরাতন ফল প্রকাশ পাইতে থাকে এবং ঐ সকল হইতেই আমরা ইহার লক্ষণ সংগ্রহ করিয়াছি। যে-সকল কুকুরকে রাটেল সাপে কামড়াইয়াছে, তাহাদের মধ্যেও উহার পুরাতন ফল প্রকাশ। পাইয়াছে এবং এক প্রকার অদ্ভুত নির্দিষ্টকাল ব্যবধানে রোগাক্রমণ দেখা দিয়াছে, যথা—শীতের আবহাওয়ার শেষে প্রত্যেক বসন্তকালে, গরম দিন আরম্ভ হইলেই রোগাক্রমণ। কোন সময়ে, আমার সেংক্রিস সর্পদ্বারা দুষ্ট হইবার পর বাঁচিয়া গিয়াছিল এমন একটি কুকুরকে পর্যবেক্ষণ করার সুযোগ হইয়াছিল। উহার গ্রীবাদেশ দষ্ট হইয়াছিল এবং কুকুরটি যতদিন বাঁচিয়াছিল, ততদিন প্রতি বসন্তকালে উহার ঐ স্থানে একটি বড় ফোড়া জন্মিত, অবশেষে বৃদ্ধ হইয়া সে ঐ রোগেই মারা গিয়াছিল। সর্পবিষগুলির নির্দিষ্টকাল ব্যবধানে রোগাক্রমণ বসন্তকালের সহিত, উষ্ণ আবহাওয়ার উপস্থিতির সহিত সম্বন্ধযুক্ত।
অন্যান্য অধিকাংশ সর্পবিষের ন্যায় ক্রোটেলাসের মধ্যেও আর একটি স্পষ্ট সাধারণ লক্ষণ এই যে, রোগী বৃদ্ধির মধ্যেও ঘুমায়।
আরক্তজ্বর, ডিপথেরিয়া, টাইফয়েড এবং অন্যান্য দুষ্ট প্রকৃতির রক্তবিষাক্ততায় যেরূপ অন্তরুৎসেক্য ক্রিয়া দেখা যায়, ক্রোটেলাস হরিডাসের বিষের প্রাথমিক ক্রিয়াও সেইরূপ; ঐসকল ক্ষেত্রে রোগ অত্যন্ত দ্রুত উপস্থিত হয়, রক্তকে বিশ্লিষ্ট করে, রক্তবহা নাড়ীগুলি শিথিল হইয়া পড়ে, দেহের সমস্ত দ্বার হইতে রক্তপাত ঘটে, মাতালের ন্যায় অতি দ্রুত বর্ধনশীল অচৈতন্যতা উপস্থিত হয় এবং চেহারা হতবুদ্ধির ন্যায় হইয়া পড়ে। মানসিক ও শারীরিক অবসন্নতা দেখা দেয়, উহার প্রকৃতি পক্ষাঘাতের ন্যায়। আরক্ত জ্বরে যখন পচন উপস্থিত হয়, টাইফয়েড যখন পচনযুক্ত হয়, ডিপথেরিয়ায় যখন পচা গন্ধ ও অত্যন্ত রক্তপাত হইতে থাকে, তদ্রুপ অবস্থা। দেহ চিত্র-বিচিত্র হইয়া পড়ে, হলুদের সহিত মিশ্রিত নীলবর্ণ দেখায়। আশ্চর্যজনক ক্ষিপ্রতার সহিত কামলারোগ উপস্থিত হয়, চক্ষু দুইটি হলদে হইয়া পড়ে, চৰ্ম্ম। হলদে ও দাগদাগযুক্ত হয়। স্থানে স্থানে নীলবর্ণ দাগ দেখা যায়। থেঁৎলাইয়া গেলে সেরূপ হয়, তদ্রুপ হলদের সহিত সংমিশ্রিত নীল ও কাল দাগ দেখা যায়। রক্তস্রাবের পর গাত্রচর্ম অত্যন্ত নীরক্ত হইয়া পড়ে। উহা হলদে, বিবর্ণ, রক্তহীন হয়। শরীর মোমের ন্যায় দেখায়। কর্ণ, চক্ষু, নাসিকা, ফুসফুস হইতে সকল স্থানের শ্লৈষ্মিক ঝিল্লী হইতে, অন্ত্র হইতে, জরায়ু হইতে রক্তস্রাব হয়। একপ্রকার রক্তস্রাবপ্রবণ ধাতু। ক্রোটেলাসের ব্যবহার অত্যন্ত দুষ্ট প্রকৃতির, অত্যন্ত পচনযুক্ত রোগে উহা দ্রুত উপস্থিত হয়, অত্যল্পকাল মধ্যেই পচন অবস্থায় পৌঁছায়। যে-ব্যক্তি এই বিষে বিষাক্ত হয়, সে অতি দ্রুত বিমূঢ়, অবসন্ন, পচনযুক্ত ও অর্ধ অচৈতন্য হইয়া পড়ে। তাহার বোধ হয়, যেন মৃত্যু আসিয়া পড়িয়াছে। যখন রক্তক্ষরণ হয়, তখন উহা কাল হইয়া থাকে, কিন্তু সময়ে সময়ে উহা তরল থাকে।
একপ্রকার ভয়ানক স্নায়বিক অবস্থা বর্তমান থাকে। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কম্পনশীল হয়, কম্পনশীল দুৰ্বলতা। জিহ্বা বাহির করিলে, উহা কাঁপিতে কাঁপিতে বাহির হয়। সামান্য পরিশ্রমেই শ্রান্ত হইয়া পড়ে। জীবনীশক্তির হঠাৎ অবসন্নতা। সর্বত্র পক্ষাঘাতিক দুর্বলতা বৰ্তমান থাকে। পেশীসমূহের আকস্মিক সঙ্কোচন, অঙ্গপ্রত্যঙ্গের কম্পন। টাইফয়েড অবস্থায় রোগী বিছানার নীচের দিকে গড়াইয়া পড়ে; সে ক্ষেত্রে ইহার উপযোগিতা প্রমাণিত হইয়াছে। ঐ প্রকৃতির আরক্ত জ্বরের সহিত অত্যন্ত দুর্বলতা। ঐ প্রকৃতির পীত জ্বরে এই ঔষধে আরোগ্য হইয়াছে। আক্ষেপ ও পক্ষাঘাত। ইহাতে কতকটা কোরিয়া-রোগের ন্যায় পেশীর উৎক্ষেপ, কম্পন, সীমাবদ্ধ স্থানে আক্ষেপ, হিষ্টিরিয়ার ন্যায় লক্ষণ বিকাশ আছে।
মানসিক লক্ষণ ভালভাবে পরীক্ষা করা উচিত। মৃদু প্রকৃতির প্রলাপ, বিড়বিড় করা, এক অদ্ভুত প্রকৃতির আপন মনে কথা বলিয়া যাওয়া। উহা ল্যাকেসিস’ হইতে কিছুটা পৃথক। উভয় ঔষধেই বাচালতা আছে। ল্যাকেসিসে’র বাচালতা এত দ্রুত যে, ঘরের ভিতরের লোক যদি কোন কিছু বলিতে আরম্ভ করে, তাহা হইলে রোগীর মনের অতি সক্রিয়তার জন্য, সে ঐ বিষয় কিছু না শুনিয়াও, উহা ধরিয়া লইয়া বক্তব্যটি শেষ করিয়া দিবে। ল্যাকেসিসের রোগীর সম্মুখে কেহই তাহার বক্তব্য শেষ করিতে পারে না। কেহ হয়ত কিছু বলিতে আরম্ভ করিলে; অমনি সে বলিবে, “হাঁ, হাঁ, আমি উহা বুঝিতে পরিতেছি,” আর সাথে সাথেই সে আর এক লাইন যোগ করিয়া একটি সম্পূর্ণ পৃথক কিছু বলিয়া শেষ করিয়া ফেলিবে। ক্রোটেলাসেও তাহাই হয়, কিন্তু ক্রোটেলাস রোগী উহা ধরিয়া লইয়া, জড়ান ভাব থাকিয়া থামিয়া অকুশলভাবে কথা বলিতে থাকে। ইহা মত্ততার ন্যায় একপ্রকার দুষ্ট প্রকৃতির জড় অবস্থা, কিন্তু ল্যাকেসিসে ইহা প্রচন্ড উত্তেজনা। “অবসন্নতা, ঘুম ঘুমভাব ও সংজ্ঞাহীনতার সহিত প্রলাপ।” এই কথা দ্বারাই অবস্থাটি বুঝা যায়। “শয্যা হইতে পালাইবার ইচ্ছার সহিত বাচালতাযুক্ত প্রলাপ।” কিন্তু উহা উত্তেজনাবিহীন। তাহার সঞ্চালন ধীর। “টাইফাস জ্বরের বিড়বিড় করা প্রলাপ।” তাহার চিন্তা ক্রমাগত মৃত্যুর আলোচনা করে। “অত্যন্ত স্পর্শকাতরতা। পড়িতে গেলে চক্ষে জল আসে। ভীরুভাব ও ভয়ের সহিত বিষন্নতা। উৎকণ্ঠিত, বিবর্ণ, ঠান্ডা ঘৰ্ম্মযুক্ত। ক্রুদ্ধভাবযুক্ত, খিটখিট, সামান্যমাত্র বিরক্তিতে প্রচন্ড হইয়া উঠে।” নড়াচড়ায় শিরোঘূর্ণন, টলমলে ভাব দেখা দেয়। স্থির হইয়া থাকিলে যন্ত্রণা হয়। নিদ্রা যাইলে যন্ত্রণা হয় এবং সে তীব্র যন্ত্রণায় জাগিয়া উঠে। সে যত বেশীক্ষণ ঘুমায়, মাথার যন্ত্রণা ততই গুরুতর হয়।
সছে সে রোগ-লক্ষণগুলির মধ্যেই ঘুমায়। সর্পবিষগুলির সব কয়টিই রোগের কষ্টের মধ্যে অল্প বিস্তর ঘুমায়। সে শিরঃপীড়ার মধ্যে ঘুমায়। সে যত বেশীক্ষণ ঘুমায়, শিরঃপীড়াও তত গুরুতর হয়। মাথার পশ্চাদ্দিকের শিরঃপীড়া এত গুরুতর হয় যে, বালিশ হইতে মাথা উঠান প্রায় অসম্ভব হইয়া পড়ে। ঘাড়ের পেশীগুলি এত ক্লান্ত হয় যে, ঐ স্থানে হাত দিয়া ধরিয়া রাখিতে হয়। এই লক্ষণ ল্যাকেসিসে’ও আছে। একপ্রকার রক্তসঞ্চয়যুক্ত শিরঃপীড়া, তৎসহ মোমবর্ণ মুখমন্ডল, হলদে, বেগুনিবর্ণ, চিত্র-বিচিত্র মুখমন্ডল, যেন উহা থেঁৎলাইয়া গিয়াছে—এরূপ আকৃতি। “শিরঃপীড়া চক্ষু পর্যন্ত বিস্তারশীল। কয়েক দিন অন্তর পিত্তজনিত, শিরঃপীড়া।” ভয়ানক সবমন শিরঃপীড়া, উহার সহিত মাথাঘোরা এবং মস্তক-শীর্ষে দপদপানি। মৃদু স্পন্দনবিশিষ্ট শিরঃপীড়া। “মৃদু ভারবোধযুক্ত, দপদকর, মস্তকের পশ্চাদ্দিকের শিরঃপীড়া অথবা সমুদয় মস্তকটি রক্তসঞ্চয় অবস্থায় থাকে। রোগী মনের গোলযোগযুক্ত ও হতবুদ্ধি হইয়া পড়ে। মাথাটি অত্যন্ত বড় বোধ হয়। মাথা পূর্ণ বোধ হয়, মনে হয়, উহা যেন ফাটিয়া যাইবে। শিরঃপীড়া ঢেউয়ের মত আসে, মনে হয়, যেন ঢেউগুলি পৃষ্ঠ দিয়া উপরদিকে উঠিয়া আসে; উপরের দিকে ঢেউয়ের ন্যায় রক্তের উচ্ছ্বাস, যেন উপরদিকে বেগে রক্ত উঠিতেছে, যন্ত্রাদির এরূপ রক্তপূর্ণতা। ঢেউয়ের মত উত্থিত শিরঃপীড়া, সঞ্চালনে, ঝাঁকি লাগিলে, বিছানায় পাশ ফিরিলে, বিছানায় উঠিয়া বসিলে, বিছানায় শুইয়া পড়িলে, উহা অনুভূত হয়। অবস্থানের যে-কোন পরিবর্তনে উপরদিকে রক্তোচ্ছ্বাস অনুভূত হয়। ল্যাকেসিসে উহা বর্ণিত আছে এবং আমি পরীক্ষা করিয়া দেখিয়াছি যে, উহা মেরুদন্ডের নিম্নদিকে আরম্ভ হইয়া, নাড়ির গতির সহিত মিল রাখিয়া উপর দিকে উত্থিত হয়।
চক্ষু হইতে রক্তস্রাব। চক্ষুর হলদে আকৃতি। “চক্ষু হইতে চুয়াইয়া রক্ত পড়ে, চক্ষে জ্বালা করা, অশ্রুস্রাবযুক্ত চক্ষুর আরক্ততা।” মাথা হইতে যেন চক্ষু বাহির হইয়া আসিবে, চক্ষে এরূপ চাপবোধ। উপর পাতা দুইটির পক্ষাঘাত। চক্ষুর পাতার শ্লৈষ্মিক ঝিল্লীর প্রদাহ।
কর্ণের মধ্যে রক্তোচ্ছ্বাস। “শব্দে অত্যনুভূতি।” কানের মধ্যে মৃদু কামড়ানি ও দপদপানি। কর্ণ হইতে প্রচুর, পচা, হলদে, দুর্গন্ধ, রক্তাক্ত স্রাব। অন্তরুৎসেক্য রোগে, দুষ্টজাতীয় আরক্ত জ্বরে কর্ণ হইতে রক্তক্ষরণ অথবা ডিপথেরিয়া রোগে,চক্ষু ও কর্ণ হইতে রক্তক্ষরণ ও নাসিকা হইতে প্রচুর রক্তপাত। অন্তরুৎসেক্য রোগে নাসিকাই রক্তক্ষরণের পক্ষে খুব সাধারণ যন্ত্র । মনে হয়, নাক হইতে রক্তস্রাবে রক্তের উচ্ছ্বাস প্রশমিত হয়। এই ঔষধে মস্তিষ্কে তীব্র রক্তসঞ্চয়ের সহিত নাসাপথে রক্তস্রাব আছে। ইহা সকল প্রকার, দুর্গন্ধস্রাব আরোগ্য করিয়াছে। নাক হইতে ভীষণ, দুর্গন্ধ, পচা গন্ধ স্রাব। পূতিনস্য রোগ।
কর্ণমূলগ্রন্থির প্রদাহ। মুখের নীলাভা ও বিবর্ণতা। মুখের হলদে আকৃতি, সুস্পষ্ট কামলারোগ লক্ষণ। যে-সকল বালিকা মোমবর্ণ এবং রক্তশূন্য, সবজেটে হলদে বর্ণ, অনেকদিন যাবৎ ঋতুলোপ হইয়াছে এবং ফুস্কুড়ি ও ব্রণে আবৃত হইয়া পড়িয়াছে, তাহাদের পক্ষে উপযোগী।
রোগী অনেক সময়ে রাত্রে দাঁত কড়মড় করিতে করিতে জাগিয়া উঠে। মুখের স্বাদ খারাপ, পচা গন্ধ। মাড়ির প্রদাহ। মুখ হইতে রক্তস্রাব। গলার প্রদাহের সহিত; গলা হইতে রক্তপাত গলায় ও মুখে জ্বালা। কম্পন ও স্পন্দনযুক্ত স্ফীত জিহ্বা। জিহ্বা বাহির করিলে উহা কাঁপিতে থাকে। হাত দুইটি নাড়িলে, উহারা কাঁপিত থাকে। যে-সকল ডিপথেরিয়ার রোগীর নাক ও মুখ হইতে রক্তক্ষরণ হয়, অত্যন্ত দুষ্ট প্রকৃতির আক্রমণ, সুনিৰ্বাচিত ঔষধ না পড়িলে যাহাদের মৃত্যু। নিশ্চিত, তাহাদের ক্ষেত্রে উপযোগী। ঐরূপ অবস্থায় গলা ডিপথেরিয়ার ঝিল্লীতে পূর্ণ হইয়া যায়, এবং ঝিল্লীগুলি কাল দেখায়। উহার চারিদিক হইতে রক্তপাত হয়। মুখক্ষতের সহিত রক্তস্রাব। মুখের মধ্যে ক্ষত উৎপন্ন হয়। যাহাদের রাত্রে বালিশের উপর লালা পড়িতে থাকে তাহাদের মার্ক দেওয়ার পর মুখক্ষত। মুখের মধ্যের ক্ষত হইতে রক্তস্রাব। গিলিতে কষ্ট। সাঘাতিক প্রকৃতির ডিপথেরিয়া। অনতিবিলম্বে কাল পিত্তময় বমন উৎপাদন না করিয়া, ডানপার্শ্বে বা চিৎ হইয়া শুইতে পারে না। ইহা একটি আশ্চর্য্য পিত্তপ্রধান ঔষধ; সবমন শিরঃপীড়ায় অনেকখানি। করিয়া পিত্তবমন করে। যেসকল প্রকারের দুষ্ট প্রকৃতির রোগ অনেকখানি করিয়া পিত্ত, কখন কখন রক্তের সহিত মিশ্রিত পিত্ত বমি হইতে আরম্ভ হয়, তাহাতে ক্রোটেলাস উপযোগী।
পাকস্থলীতে যন্ত্রণা, যেন পাকস্থলীতে বা উদরে একটুকরা বরফ রহিয়াছে, এরূপ শীতলতা বোধ। পাকস্থলী উপদাহযুক্ত, কোন জিনিষই পেটে থাকে না, অবিরত রক্তবমন করিতে থাকে। ক্রোটেলাস পাকাশয়ের ক্ষত আরোগ্য করিয়াছে। অধিক পিত্ত ও রক্তবমন থাকিলে, উহা পাকস্থলীর কর্কটরোগের প্রসার নিবারিত করিয়াছে। অনেক ক্ষেত্রে বমিত রক্ত চাপ বাঁধিতে চায়। তারপর এইসব পাকস্থলীর ক্ষত, ক্যান্সাররোগ, দুষ্টপ্রকৃতির অন্তরুৎসেক্য রোগের প্রায় সর্বক্ষেত্রেই কামলা বর্তমান থাকে, কামলারোগ এবং অম্লাধিক রক্তস্রাব, জ্বর কদাচিৎ দেখা যায়, কখন কখন গাত্রতাপ সাধারণ অপেক্ষা কম হয়, কিন্তু উহার সহিত রক্ত চুয়ান ও রক্তস্রাব, নাসিকা ও মুখ হইতে কাল রক্তপাত এবং অন্ডলালামিশ্রিত কাল, স্বল্প, রক্তাক্ত মূত্র থাকে। টাইফয়েড এবং দুষ্টপ্রকৃতি অন্তরুৎসেক্য রোগে ঢাকের মত পেটফাঁপের ন্যায় অত্যন্ত উদরস্ফীতি থাকে। অন্ত্রে ক্ষত জন্মে, অন্ত্র হইতে রক্তপাত হয়। উদরে অসাড়তা বোধের সহিত অত্যন্ত যাতনা ও ক্ষততাবোধ। মনে হয়, যেন পেটটি কাঠ দ্বারা নির্মিত। “মল কাল, পাতলা, কফি-চূর্ণের ন্যায় দূষিত খাদ্য ইত্যাদি হইতে রক্তদুষ্টিজনিত উদরাময়। দূষিত বাষ্প হইতে উদরাময়।” ডিম্বকোষ ও জরায়ুর প্রদাহ। দুষ্ট প্রকৃতির পচা জ্বর। রক্তস্রাব। হয় কাল চাপচাপ রক্ত, না হয় এমন রক্ত যে, উহার কোন জমিবার প্রবণতা থাকে না এবং প্রবাহিত হইতে থাকে। ঋতুনিবৃত্তিকালে নানা উপদ্রব দেখা দেয়। উত্তাপের উচ্ছ্বাস, ন্যাবা। জরায়ু বা অন্য কোন যন্ত্র হইতে রক্তস্রাব। জরায়ুর ক্যান্সার, উহা হইতে প্রচুর রক্তস্রাব। অত্যন্ত দুর্গন্ধ। রোগী হরিদ্রাবর্ণ, ন্যাবাগ্রস্ত, অত্যন্ত অবসন্ন, চৰ্ম্মের চিত্র-বিচিত্র আকৃতি, মুখে, পায়ে, বিশেষতঃ শিরাপথে স্ফীতি। সূতিকাস্তম্ভ। সামান্য স্পর্শে খারাপ হয়। ঝাঁকি লাগায়, সঞ্চালনে খারাপ হয়।
ইহা হৃৎপিন্ডের যেরূপ অত্যধিক দুর্বলতা উৎপন্ন করে তাহাতে ইহা যে অল্পাধিক পরিমাণে একটি হৃৎপিন্ডের ঔষধ হইবে, তাহা মনে করার কারণ আছে। কিন্তু এই ঔষধ অপেক্ষা ন্যাজা’, ‘ল্যাকেসিস’ এবং ইলাপ্স’ প্রভৃতি সর্পবিষ রোগীক্ষেত্রে অধিক প্রযুক্ত হইয়াছে। মনে হয় ইহা হৃৎপিন্ডকে অবসন্ন করে, কিন্তু ঐরূপভাবে সমস্ত দেহকেও অবসন্ন করে, সুতরাং ইহার রোগগুলি সাধারণ প্রকৃতির। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের চিত্র-বিচিত্র আকৃতি। হস্ত-পদাদির গ্যাংগ্রিন সদৃশ আকৃতি।
ফোড়া, কাৰ্ব্বাঙ্কল এবং উদ্ভেদ সকল বেগুনিবর্ণ চৰ্ম্ম দ্বারা পরিবেষ্টিত, চিত্র-বিচিত্র, নীলবর্ণ বড় বড় দাগযুক্ত অথবা মার্বেলের ন্যায় সাদা। ইহা ফোড়া, বড় ফোড়া এবং কাৰ্ব্বাঙ্কল সদৃশ অবস্থা উৎপন্ন করে, তৎসহ জ্বালা এবং ভীষণ যাতনা থাকে, কিন্তু উহার বিশেষ প্রকৃতি এই যে, ফোড়ার মাথাটি মাখা ময়দার ন্যায় নরম থাকে। ফোড়া বা কাৰ্ব্বাঙ্কলের চারিদিকে কয়েক ইঞ্চি স্থান ব্যাপিয়া স্ফীতি থাকে, উহা টিপিলে বসিয়া যায়। ফোড়া, বড় ফোড়া বা কাৰ্ব্বাঙ্কল হইতে ঘন, কাল রক্তক্ষরণ হয়, তাহা জমিয়া যায় না। ঘাড়ে বা পৃষ্ঠে যে-কাৰ্ব্বাঙ্কল জন্মে, তাহা প্রথমে একটি ফুস্কুড়ির ন্যায় আসে, তারপর অনেকগুলি ফুস্কুড়ি জন্মে এবং সেইগুলির চারিদিকে ছোট ছোট ফুস্কুড়ি ও পুঁজবটী জন্মে এবং ঐ স্থানটিতে চাপ দিলে গর্ত হইয়া যায়। এই সকল কাৰ্ব্বাঙ্কলের জন্য, তোমাদিগকে বিশেষভাবে ‘আর্সেনিক’, ‘এন্ত্রাসিনাম’, ‘সিকেলি’ এবং ক্রোটেলাসকে ভালভাবে পড়িতে হইবে। ঐ ঔষধগুলির প্রকৃতিতে এই রোগের বিকাশ ও দূষিততা আছে। সূতিকা জ্বরে ক্রমাগত কাল, দুর্গন্ধ রক্তক্ষরণ থাকে, ঐ রক্ত জমে না; শরীরের সকল দ্বার এবং জরায়ু হইতে রক্তস্রাব। মনে কর, একজন গর্ভবতী স্ত্রীলোক টাইফয়েড জ্বরে ভুগিতেছেন। তাঁহার গর্ভস্রাব হইল এবং আমি যেরূপ বর্ণনা করিয়াছি, সেইরূপ লক্ষণ এবং চেহারার সহিত দুষ্ট অন্তরুৎসেক্য অবস্থা উপস্থিত হইল, মনে হইল যেন তিনি গর্ভস্রাবের পর রক্তস্রাব হইয়াই মারা যাইবেন। রক্ত চাপ বাঁধিল না এবং রক্তপ্রবাহ ক্রমাগতই চলিতে থাকিল। অথবা টাইফয়েড জ্বরগ্রস্ত কোন রোগিণীর ঋতু দেখা দিল। কিন্তু উহা সাধারণ ঋতুপ্রবাহের মত হইল না, কারণ প্রচুর কাল এবং তরল রক্ত অবিরত ক্ষরিত হইতে লাগিল, তৎসহ পূর্ববর্ণিত গুরুতর লক্ষণগুলি দেখা দিল, বিশেষতঃ রোগিণীর মুখভাব হতবুদ্ধির ন্যায় হইয়া পড়িল। তিনি আচ্ছন্ন নিদ্রায় অভিভূত হইয়া পড়িলেন, তাঁহার অবস্থা অত্যন্ত মাতাল হইলে যেরূপ হয়; অজ্রপ হইল; তিনি মৃতের ন্যায় পড়িয়া থাকিলেন। জাগাইয়া দিলে তাহার প্রত্যেকটি পেশী কাঁপিতে লাগিল, জিহ্বা বাহির করিলে কাঁপিতে লাগিল, তিনি কথা বলিতে অক্ষম হইয়া পড়িলেন। এরূপ অবস্থায় ক্রোটেলাস তাহার জীবন রক্ষা করিতে পারে। এই সর্পবিষটি দ্বারা যেরূপ সাঙ্ঘাতিক রোগাবস্থা উৎপন্ন হয়, তাহা অপেক্ষা আরও গুরুতর রোগাবস্থার কথা ভাবিতে পারা সম্ভব কি? যখন কোন, চিকিৎসক এই সকল লক্ষণ উপস্থিত হইতে দেখিবেন, তখন এমন এক শ্রেণীর ঔষধগুলির কথা মনে করিবেন, যাহারা এরূপ অবস্থারও প্রতিকার করিতে পারিবে, ঐ ঔষধগুলি যথা— ব্যাপ্টিশিয়া, আর্সেনিক’, ‘সিকেলি’ এবং সর্পবিষ’ সমূহ এবং কখন কখন ‘আর্ণিকা’, ফসফরাস’ ও ‘পাইরোজেন।
আরও বেশী পুরাতন অবস্থায়, রোগীর নিদ্রা বিষয়ে ভয়ানক অবস্থা প্রকাশিত হয়। তিনি ভয় পাওয়ার ন্যায় অবস্থায় নিদ্রা হইতে জাগিয়া উঠেন, তিনি খুনের মৃত্যুর, মৃতদেহের, মৃত ব্যক্তির, শবদেহের সহিত একত্র বাসের, কবরস্থানে থাকার ভয়াবহ স্বপ্ন দেখেন, এমনকি স্বপ্নের মধ্যে শবদেহের গন্ধ পর্যন্ত পান। জাগিয়া উঠিলে তিনি ক্লান্ত হইয়া পড়েন, নির্বোধ হইয়া পড়েন, তিনি সংখ্যাগুলি যোগ দিতে পারেন না, লিখিতে ভুল করেন, বাক্যগুলিকে উল্টা-পাল্টা করিয়া ফেলেন, শব্দের মধ্যে অক্ষরগুলিকে উল্টা-পাল্টা করিয়া ফেলেন। তিনি তাহার হিসাবপত্র করিতে অক্ষম হইয়া পড়েন, কারণ যে-বিষয়গুলি দফায় দফায় লেখা থাকে তিনি তাহাদের যোগ করিতে পারেন না। নিদ্রার সহিত দীর্ঘ এবং বিরক্তিকর জাগরিত অবস্থা পর্যায়ক্রমে দেখা দেয়। আবহাওয়া পরিবর্তিত হইয়া গরম দেখা দিলেই তিনি বিচলিত হইয়া পড়েন। অত্যন্ত উত্তেজনাপ্রবণতা, স্থান ও অবস্থার পরিবর্তনে অত্যনুভূতি, পারিপার্শ্বিক অবস্থার দ্বারা সহজেই বিচলিত হওয়া, উত্তেজনার ঊর্ধ্বসীমায় পৌছান,—এগুলিও এই ঔষধটির লক্ষণ। এইগুলিকে অনুসরণ করিয়া রোগী বন্ধুগণকে সন্দেহ করিতে থাকেন এবং যুক্তিযুক্ত ভিত্তির উপর চিন্তা করিতে পারেন না। তিনি মত্ততাজনক পানীয় আকাঙ্ক্ষা করেন এবং ঐ আকাক্ষা দমন করিতে পারেন না। পুরাতন মাতালদিগের সহিত এইরূপ আশ্চর্য সাদৃশ্যবশতঃ ক্রোটেলাস মদত্যয়। অবস্থায় ব্যবহৃত হইয়া থাকে, ইহাতে চিত্র-বিচিত্র মুখভাব, মুখের বেগুনি আভা, মাতালদিগের অদ্ভুত রকমের ক্ষুধা, থাকিয়া থাকিয়া উত্তেজক পানীয়ের আকাঙক্ষা আছে। উপযুক্তভাবে ব্যবহৃত হইলে, ইহা যে মোটাসোটা, হৃষ্টপুষ্ট, পুরাতন মাতালদের মদ্যপানের আকাক্ষা দূর করিবার মত গভীরক্রিয় ঔষধ হইতে পারে, তাহা বিশ্বাস করিবার যথেষ্ট কারণ আছে।
*অপরনাম- রাটেল স্নেক (Rattle Snake)
ইহাও একটি সর্পবিষ যদিও ইহা ন্যাজার মত নিম্নক্রমেই পরীক্ষা করা হয়েছে তথাপি চিকিৎসার ক্ষেত্রে ইহার উপকারীতা অনেক সুস্পষ্ট। যদিও ল্যাকেসিসের মত সুনির্দিষ্ট লক্ষণগুলি নেই। তবুও ইহা যে অত্যন্ত মূল্যবান, সে সম্বন্ধে যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে। ক্রেটেলাস হরিডাসকে আমেরিকায় বাটেল স্নেক বলে। দুগ্ধ শর্করায় এর বিষ নিয়ে বিচূর্ণ প্রস্তুত করা হয়। ডা. হেরিং ১৮৩৭ সালে একে প্রথম প্রুভিং করেন।
১। আমার মনে হয়, যেসকল রোগে রক্ত বিশ্লিষ্ট হয়ে যায় এবং শরীরের প্রত্যেক দ্বার থেকে যুক্ত স্রাব হয় (অ্যাসেটিক অ্যাসিড) সেক্ষেত্রে ইহা উপকারী। এতে ঘামের সঙ্গেও রক্ত বের হতে দেখা যায়।
এই ধরণের রক্তস্রাব গ্রীষ্মপ্রধান দেশের দুষ্টপ্রকৃতির জ্বরে, যেমন-পৈত্তিক রেমিটেন্ট জ্বরে দেখা যায়।
২। ক্রোটেলাস ডিপথিরিয়ার একটি প্রধান ঔষধ। যখন নাক থেকে প্রচুর পরিমাণে রক্তস্রাব হয় এবং বুঝা যায় রোগটি অতি সাংঘাতিক, সেক্ষেত্রে ক্রোটেলাস উপযোগী।
রোগী বিবরণী-
একজন ভগ্নদেহের বৃদ্ধের নাক থেকে রক্তস্রাব হওয়ায় প্রচলিত সব ঔষধ ব্যবহার করা হয় কিন্তু ঐগুলি বিফলে ক্রোটেলাস দেওয়া হয়, ইহা সত্বর কাজ করে লোকটির জীবন রক্ষা করে। এটি আমার নিজের রোগী। তবে আগেও তার নাক থেকে প্রায়ই রক্ত পড়ত, কিন্তু ক্রোটেলাস দেওয়ার পর তার আর কখনও রক্ত পড়েনি। তবে এই ধরনের ঔষধে অর্থাৎ ক্রোটেলাসে রক্তপাতের সঙ্গে রোগীর অত্যন্ত অবসন্নতা থাকে। ৩। ক্রোটেলাস ডানদিকের ঔষধ।
৪। সাংঘাতিক ধরণের জণ্ডিসে ক্রোটেলাসের একটি প্রধান লক্ষণ দেহ ত্বকের বর্ণ হলুদ। ইহা ক্রোটেলাসের একটি প্রকৃতিগত অবস্থা। তবে এর উৎপত্তি মনে হয় লিভারের দোষ অপেক্ষা রক্তবিকারের ফলেই ঘটে। যদিও ইহা উভয় প্রকারের রোগ থেকেও উৎপন্ন হতে পারে। কারণ লিভারের উপদ্রব প্রায় সৰ্ব্বদাই গ্রীষ্মপ্রধান দেশে দেখা যায় আর তাই ক্রোটেলাসের খ্যাতি সৰ্বাধিক।
মন্তব্য
ক্রোটেলাসের সূক্ষ্মপ্রকৃতির লক্ষণগুলি বের করার জন্য শক্তিকৃত ঔষধ দ্বারা পরীক্ষা করার আরো প্রয়োজন।