চোখে খোঁচা লাগার ফলে কর্নিয়ার অসচ্ছতা। |
চোখ হতে প্রচুর ঝাঁঝাল অশ্রু নির্গত হয় এবং নাক দিয়ে যে পাতলা সর্দি নির্গত হয় তাহা ঝাঁঝাল নয়। |
কেবল দিনের বেলায় কাশি, কাশির সময় চোখ হতে প্রচুর পানি পড়ে। |
ঋতুস্রাবের ফ্লো একদিন থাকে, কখনো কখনো একঘণ্টা থাকে। |
দেহের বাইরের অঙ্গে পড়ে গিয়ে, পিষে গিয়ে বা যন্ত্র দ্বারা আঘাত লাগার কুফলে (আর্নিকা) ব্যবহার হয়।
শ্লৈষ্মিক ঝিল্লী বিশেষতঃ চোখ ও নাক-এ সর্দি লেগে শ্লেষ্মাস্রাব অশ্রুস্রাব প্রচুর হেজে যায় সেইসাথে নাকের সর্দিস্রাবে হেজে যায় না। (বিপরীত=এলি-সিপা)।
চোখ দিয়ে সবসময় জল ঝরতে থাকে—সকালে চোখ (পিচুটিতে) জুড়ে যায়। চোখের পাতার ধারগুলো লাল হয়, ফুলে যায়, জ্বালা করতে থাকে।
সকালে প্রচুর তরল সর্দি নাক দিয়ে গড়াতে থাকে সাথে ভীষণ কাশি ও প্রচুর শ্লেষ্মা ওঠে দক্ষিণ দিকের গরম বাতাসে সর্দি বেড়ে যায়। সকালে দুর্গন্ধযুক্ত শ্লেষ্মা তুলে গলা পরিষ্কার-এর চেষ্টা করলে ওয়াক পাড়তে থাকে তার ফলে সদ্য খাওয়া প্রাতরাশ বমি হয়ে বের হয়ে যায় (ব্রায়ো)। খকখক করলে অনায়াসে প্রচুর শ্লেষ্মা ওঠে, সকালে ঐ অবস্থা ঘুম ভাঙ্গার পর বেড়ে যায়।
চোখ ও নাকে সর্দি লেগে ও প্রচুর হাজাকারক অশ্রুস্রাব হয়ে রজঃস্রাব বন্ধ হয়ে যায়।
ঋতুস্রাব – কষ্টকর কিন্তু নিয়মিত, কেবল একঘন্টা স্থায়ী হয় বা দেরীতে হয়, অল্প পরিমাণ, অল্পক্ষণ শুধু একদিন মাত্র স্থায়ী হয় (ব্যারাইটা-কার্ব)।
হুপিং কাশি – কাশির সময় চোখ দিয়ে প্রচুর জল বার হতে থাকে, কাশি শুধুমাত্র দিনের বেলায় হয় (ফেরাম, নেট-মি)।
সম্বন্ধ — চোখের অসুখে পালস্-এর সদৃশ। অশ্রুস্রাব ও সর্দিতে এলিয়াম সেপার বিপরীত।
বৃদ্ধি — সন্ধ্যাবেলায়, শোয়া অবস্থায়, ঘরের মধ্যে, তাপে, ভেজা থাকলে, দক্ষিণ দিকের বাতাস লাগলে, ছোঁয়া লাগলে (হিপার) ।
শক্তি — ৩, ৬, ৩০।
এই ঔষধটি বিশেষ করে চোখের কনজাঙটিভা অংশের প্রদাহ উৎপন্ন করে, এছাড়াও প্রচুর অশ্রস্রাব উৎপন্ন করে। রোগীমুক্ত বাতাসে উপশমবোধ করে। শ্লৈষ্মিক ঝিল্লীর সর্দিজনিত প্রদাহবিশেষ করে চোখ ও নাকের প্রচুর হাজার অশ্রুস্রাবও প্রচুর অনুত্তেজক নাসিকা স্রাব; সন্ধ্যায় বৃদ্ধি। গলা খেঁকারী দিলে দূর্গন্ধযুক্ত শ্লেষ্মা উঠে।
মাথা – মাথায় ফেটে যাবার মত যন্ত্রনা তৎসহ চোখ ঝলসিয়ে যায়। সর্পিজনিত মাথার বেদনা তৎসহ নাক ও চোখ দিয়ে প্রচুর সাব।
নাক – প্রচুর, তরলসর্দি তৎসহ প্রচন্ড কাশিও প্রচুর শ্লেষ্মা স্রাব নির্গত হয়।
চোখ – সর্দিজনিত কাউটিভাইটিস; হাজাকর স্রাব। চোখ দিয়ে সর্বদা জলঝরে। হাজাকর অশ্রস্রাব; অনুত্তেজক সর্দি। (এলিয়াম সেপার বিপরীত) স্রাব গাঢ় ও হাজাকর। (মার্কিউরিয়াস পাতলা ও হাজাকর।) চোখের পাতায় জ্বালা ও স্ফীতি। বারে বারে চোখ মিটমিট করে। কনীনিকার উপর চটচটে শ্লেষ্মা; এই শ্লেষ্মা বার করার জন্য চোখ মিটমিট করতে বাধ্য হয়। চোখের ভিতর চাপবোধ। কনীনিকার উপর ছোট ছোট ফোস্কা। অস্বচ্ছতা। বাতজনিত কারণে উপতারার প্রদাহ। চোখের পাতায় পড়ে থাকা বা চোসিস। (জেনস; কষ্টিকাম)।
মুখমন্ডল – গাল লাল ও উত্তপ্ত। উপরের ঠোঁটের আড়ষ্টতা।
পাকস্থলী — গলা খেঁকার দিয়ে শ্লেষ্মা বার করার সময় বমি। বমি ধূমপানের পরে বমিবমিভাব ও মুখের আস্বাদ তিতো।
পাকস্থলী — আমাশয়। মলদ্বারের স্থানচ্যুতি। বসে থাকার সময় মলদ্বারের ভিতর দিয়ে নীচের দিকে ঠেলামারার মত চাপবোধ। কোষ্ঠকাঠিণ্য।
স্ত্রীরোগ – মাসিক ঋতুস্রাব বেদনাদায়ক। স্রাব কেবলমাত্র একঘন্টা বা একদিন স্থায়ী হয়; ঋস্রাব নির্দিষ্ট সময়ের পরে, অল্প ও ক্ষণস্থায়ী, রজঃ রোধ-তৎসহ চোখ উঠা।
পুরুষের রোগ — জননেন্দ্রিয়ের আক্ষেপিক সঙ্কোচন, তৎসহ বস্তিকোটরের অস্থিস্থানে চাপবোধ। আঁচিলের ন্যায় অবুদ ও সাইকোসিস্ দোষজনিত গুটি। প্রস্টেট গ্রন্থির প্রদাহ। প্রস্রাবথলির রাত্রিকালীন অস্বস্তি; প্রস্রাব ফোঁটা-ফোঁটা করে হয়।
শ্বাস-প্রশ্বাস – মুক্ত বাতাসে ভ্রমনকরার সময় বারে বারে হাইতোলে। সকালে প্রচুর, তরল সর্দিজস্রাব তৎসহ প্রচুর কাশি ও শ্লেষ্মা উঠে। ইনফ্লুয়েঞ্জা। সকালে গলা পরিষ্কার করার সময় শ্বাসবন্ধ হয়ে আসে। হুপিং কাশি কেবলমাত্র দিনের বেলায় হয় তৎসহ প্রচুর অশ্রস্রাব।
চামড়া – হাড়ের প্রথমাবস্থা; চোখের লক্ষনসমূহ সুস্পষ্টভাবে বর্তমান থাকে। বাইরের আঘাতজনিত কুফল। ঘুম — মুক্ত বাতাসে ভ্রমণের সময় হাইতোলা। দিনের বেলা নিদ্রালুতা।
জ্বর— শীতবোধ ও ঠান্ডা। ঘাম, অধিকাংশ যুবকের উপর হয়। রাত্রে এবং ঘুমের মধ্যে।
কমা-বাড়া-বৃদ্ধি – সন্ধ্যায়, ঘরের ভিতরে, উষ্ণতায়; দক্ষিনাবাতাসে, আলোতে।
উপশম – কফি পানে, অন্ধকারে।
সম্বন্ধ – দোষঘ্ন – ক্যাম্ফর, পালসেটিলা,
তুলনীয় — হাইড্রোফাইলাম- (চোখের সর্দিজনিত প্রদাহ; উত্তপ্ত অশ্রুস্রাব তৎসহ চুলকানি, চোখের পাতার স্ফীতি, মৃদু মাথার বেদনা; এছাড়াও পয়জন ওকের বিষক্রিয়ার ক্ষেত্রে); সেপা, আর্সেনিক, জেলস, ক্যালি হাইড্রো, স্যাবাডিলা।
শক্তি – ৩য় থেকে ৬ষ্ঠ শক্তি।
ইউফ্রেশিয়া জ্বরসংযুক্ত বা জ্বরবিহীন তরুণ সর্দিজ রোগের একটি হ্রস্বক্রিয় ঔষধ। সর্দি এবং চক্ষু লক্ষণযুক্ত শিরঃপীড়া, সন্ধ্যাকালে মাথা যেন থেঁৎলাইয়া গিয়াছে, এরূপ যন্ত্রণা। মাথার মধ্যে সূচীবিদ্ধবৎ যাতনা। সূর্যালোকে চোখের ঝলসাইয়া যাওয়া ভাবের সহিত, মাথা ফাটিয়া। যাওয়ার ন্যায় শিরঃপীড়া। ইহা সর্দিজ শিরঃপীড়া, সঙ্গে চক্ষু ও নাক হইতে প্রচুর জলবস্রাব। নির্গত হইতে থাকে। ইউফ্রেশিয়ার চক্ষু-লক্ষণগুলিই সর্বাপেক্ষা স্পষ্ট। নাকের সর্দি থাকুক বা না-থাকুক, চক্ষুর সর্দিজ অবস্থা, তৎসহ প্রচুর, বিদাহী, জলবস্রাব। চক্ষুতে কাটিয়া ফেলার ন্যায় যাতনা, উহা মাথা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়, চক্ষে যেন বালি পড়িয়াছে, এরূপ অনুভূতি। চক্ষুতে শুষ্কতা, জ্বালা, দংশনবৎ অনুভূতি। চক্ষুতে ধূলা পড়ার ন্যায় অনুভূতি। চক্ষের ভীষণ চুলকানি, চক্ষু রগড়াইতে এবং পলক ফেলিতে বাধ্য করে, তাহার সহিত প্রচুর অশ্রুপাত। চক্ষুতারা অত্যন্ত আকুঞ্চিত এবং চক্ষুর শ্লৈষ্মিক ঝিল্লীর অত্যন্ত স্ফীতি, তৎসহ আরক্ততা, রক্তবহা নাড়ীগুলির বৃদ্ধি এবং চিড়িকমারা। বাত হইতে বা বাতবিশিষ্ট সন্ধির সহিত সম্পর্কযুক্ত উপতারা-প্রদাহ। প্রচুর পাতলা বা ঘনস্রাব। চক্ষুর সকল টিসুরই সৰ্বাঙ্গীণ প্রদাহ। কনীনিকায় ক্ষত। ইহা Pannas (কনীনিকা আরক্ত ও মাংসময় হইয়া উঠা) রোগ আরোগ্য করিয়াছে। পুঁজবটীযুক্ত প্রদাহ। আঘাতের পরবর্তী কনীনিকার অস্বচ্ছতা। ইহা চক্ষের অতি ভীষণ তরুণ শ্বেতমন্ডল-প্রদাহে উপযোগী। শ্বেতাংশের ও চক্ষুর পাতার প্রদাহের সহিত দৃষ্টিশক্তির খর্বতা। প্রচুর অশ্রুস্রাব ও জ্বালা। চক্ষুর পাতার শ্লৈষ্মিক ঝিল্লী এবং চক্ষুতারকাদ্বয় অন্তঃপ্রবিষ্ট, লাল ও ফুস্কুড়িযুক্ত। প্রাতঃকালে চক্ষের পাতা জুড়িয়া যাওয়া। সর্দির সময় প্রচুর ক্ষতকর অশ্রুস্রাব, তৎসহ নাক হইতে সর্দি ঝরা। চক্ষুর পাতার শুষ্কতা, চক্ষু পাতার কিনারাগুলি লাল, স্ফীত ও জ্বালাকর। পাতা দুইটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও স্ফীত। চক্ষুর পাতার কিনারাগুলি চুলকায় ও জ্বালা করে। চক্ষুর পাতার কিনারাগুলিতে পুঁজোৎপত্তি। চক্ষুর পাতায় যথেষ্ট প্রাদাহিক স্ফীতি। চক্ষুর পাতার ফুলা ফুলাভাবের সহিত চক্ষুর চারিদিকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পীড়কা। অস্পষ্ট দৃষ্টি। চক্ষের তৃতীয় স্নায়ুর পক্ষাঘাত।
পরবর্তী অত্যন্ত প্রয়োজনীয় লক্ষণগুলি নাকের সহিত সম্বন্ধযুক্ত। ঝরা সর্দির সহিত হাঁচি। নাকের স্রাব অবিদাহী এবং উহার সহিত অশ্রুস্রাব ক্ষতকর। নাসিকার শ্লৈষ্মিক ঝিল্লীগুলি স্ফীত প্রচুর, অবিদাহী, ক্ষরণশীল সর্দি। এই সর্দি দুই এক দিন থাকার পর, কণ্ঠনলীতে বিস্তৃত হই কঠিন কাশির সৃষ্টি করে। রাত্রিকালে শুইয়া থাকিবার সময় সর্দির বৃদ্ধি হয়। কাশি দিবাভ। বৃদ্ধিযুক্ত হয়, শুইলে উপস্থিত হয়। এই ঔষধে হামের ন্যায় উদ্ভেদ আছে, এবং জ্বরল আছে, সুতরাং এই লক্ষণগুলি সম্বন্ধে উপযুক্ত বিবেচনা করিলে দেখা যাইবে যে, ইউফ্রেশি, হাম রোগে যেরূপ লক্ষণ দেখা যায়, তাহার সদৃশ। ইহা হামের পক্ষে একটি উৎকৃষ্ট ঔষধ, যদি ‘পালসেটিলা’র ন্যায় তত সচরাচর ব্যবহৃত হয় না, কারণ ইহার লক্ষণসমষ্টি সচরাচর আসে না প্রাতঃকালে স্বরভঙ্গ। কণ্ঠনলীর উপদাহ তাহাকে কাশিতে বাধ্য করে, তারপর বক্ষাস্থির নীচে চাপ বোধ হয়। কণ্ঠনলীতে প্রচুর শ্লেষ্মা জন্মে বলিয়া, বুকে ঘড়ঘড়ানির সহিত সরল কাশি জন্মে। দীর্ঘশ্বাস লওয়া কষ্টকর হয়। কাশিকে স্বতন্ত্রভাবে বিবেচনা করিলে, উহা একটি অদ্ভুত লক্ষণসমষ্টি সৃষ্টি করে। সর্দির সহিত বা সর্দির পরবর্তী প্রচুর শ্লেষ্মা উৎক্ষেপযুক্ত কাশি। কষ্টকর শ্বাসক্রিয়া, রাত্রিকালে শয়ন করিলে উপশম হয়। প্রাতঃকালে, ঘুরিয়া ফিরিয়া বেড়াইতে থাকিলে কাশির বৃদ্ধি হয় এবং প্রচুর শ্লেষ্মা উঠে। কণ্ঠনলীতে সুড়সুড় করিয়া ভীষণ কাশি। রাত্রিতে কাশি হয় না, লক্ষণটি ইহাকে ব্রায়ো’ ও ‘ম্যাঙ্গেনামে’র সদৃশ করিয়াছে। শ্বাসকষ্ট ও কাশি শুইয়া পড়িলে উপশমিত হয়। অন্যপক্ষে সর্দি-লক্ষণ রাত্রে এবং শুইলে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। যখন এই লক্ষণগুলি বহু ব্যাপক সর্দি বা ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগে দেখা যায়, তখন এই ঔষধটি বিশেষ উপযোগী হইয়া থাকে। প্রচুর, শ্লেষ্মা, কণ্ঠনলী ও গলা হইতে খেঁকারি দিয়া উঠানর পর, মনে হয় যেন উহাতেই দুষ্ট সৰ্দিটির শেষ হইল। শ্লেষ্মা সহজেই উঠে, প্রায় কাশি ব্যতীতই উঠে। উহা তুলিতে বেশী কষ্ট করিতে হয় না। বক্ষাস্থির নীচে চাপনবৎ বেদনার জন্য মনে হয়, যেন কণ্ঠই। সর্দি দ্বারা বিশেষভাবে আক্রান্ত হইয়াছে। চক্ষুর যাতনা খোলা বাতাসে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। সর্দিও খোলা বাতাসে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। কিন্তু সময়ে সময়ে কাশি খোলা বাতাসেই উপস্থিত হয়। ঝটিকাময় আবহাওয়ায় ঝরা সর্দি জন্মে। ঠান্ডা হাওয়া ও ঝোড়ো হাওয়ায় অশ্রুস্রাব দেখা দেয়। রোগী শীতার্ত থাকে এবং শয্যার উত্তাপে গরম বোধ করে না। এই ঔষধে শীত, জ্বর ও ঘর্ম আছে। শীতেরই প্রাধান্য। লাল মুখমন্ডল ও শীতল হাতের সহিত বেশীরভাগ দিনের বেলাতেই ইউপেটোরিয়াম পারফোলিয়েটাম (হাড়জোড়া গাছ) ইউপেটোরিয়াম পারফোলিয়েটাম (হাড়জোড়া গাছ) জ্বর আসে। উত্তাপ শরীরের নিম্নদিকে নামে। ঘৰ্ম্ম প্রায়ই শরীরের সম্মুখ দিকেই সীমাবদ্ধ থাকে। রাত্রিকালে নিদ্রার মধ্যে ঘর্ম। ঘৰ্ম্মে অদ্ভুত গন্ধ, সময়ে সময়ে দুর্গন্ধ ছাড়ে, ঘৰ্ম বুকেই বেশী হয়। ইহা বিশেষভাবে সর্দি জ্বরে, ইনফ্লুয়েঞ্জায় ও হামে উপযোগী। লক্ষণ মিলিলে, ইহা হামের ভীষণ আক্রমণকে সরল করিয়া দিবে, রোগী ভাল বোধ করিবে, উদ্ভেদগুলি বাহির হইয়া আসিবে, জ্বর প্রশমিত হইবে, কাশি, সর্দি, সর্দিজ লক্ষণসমূহের উপশম দিবে। উদ্ভেদ প্রকাশের সহিত স্রোতের ন্যায়, উত্তপ্ত, জ্বালাকর অশ্রুস্রাব, আলোকাতঙ্ক, নাক হইতে গড়ান সর্দি, অত্যন্ত দপদপৃকর শিরঃপীড়া, চক্ষুর আরক্ততা, জ্বরহেতু আলোকাতঙ্ক, হামের সময় শুষ্ক কাশি।
(Euphrasia, delight, good cheer ‘as to its effects upon the spirits through its benefits to sight’ –Millspaugh.)
অপর নাম – আই ব্রাইট (Eye bright)।
আই কম্ফর্ট (Eye comfort)
ইউফ্রেসিয়া স্ক্রফিউলেরিয়েসী জাতীয় উদ্ভিদ। ভিন্ন ভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন শতাব্দীতে এই সুন্দর ক্ষুদ্র বৃক্ষকে আইব্রাইট, আইকম্ফর্ট, স্পেক্টেকেলস ব্রেকার প্রভৃতি যে সকল নামে অভিহিত করা হয়েছে সেগুলিই এর দৃষ্টিশক্তির পুনরুদ্ধার ও উৎকর্ষ সাধন গুণের পরিচায়ক। এই গাছের মূল ছাড়া সমগ্র অংশ থেকেই মূল অরিষ্ট তৈরী হয়।
এই ঔষধটির ক্রিয়া প্রধানতঃ চোখেই নিবদ্ধ থাকে বলে মনে হয়। তাছাড়া আমরা যদি “হেরিংয়ের গাইডিং সিম্পটমস” এর লক্ষণগুলি পড়ি তাহলে মনে হবে যে ইহা কঞ্জাংটিভাইটিস, আইরাটস, কেরাটোআইরাইটিস, স্পটস, ভেসিকলস, প্যাস, প্রভৃতি চোখের উরুণ বা পুরাতন সৰ্ব্বপ্রকার রোগই আরোগ্য করে।
১। সর্দি রোগে কাশি ও নাক দিয়ে জলের মত সর্দি পড়লে উহা এর দ্বারা সময়ে সময়ে আরোগ্য হয়, কিন্তু এস্থলে আর্সেনিকাম, এলিয়াম সেপা ও মারকিউ-রিয়াসের সঙ্গে তুলনা করে ব্যবহার করতে হয়। (এলিয়াম সেপা দ্রষ্টব্য) ।
২। চোখের জল এবং নাকের ঝরা সর্দি থাকলে ইহা কখন কখন হামেও সর্বোৎকৃষ্ট ঔষধ। আমার মনে আছে নিউইয়র্কের আবার্ণের ডাঃ সি. ডবলিউ বয়েস ঐ নগরে একেবারের বহুব্যাপক আকারের হামেও একে সাফল্যের সঙ্গে ব্যবহারের কথা প্রকাশ করেছিলেন এবং তিনি এই ঔষধ দ্বারা তার সব রোগীকেই আরোগ্য করেছিলেন। সেজন্য পরের বারের বহুব্যাপক রোগে আমার কাছাকাছি একটি অঞ্চলে আমি ইউফ্রেসিয়া ব্যবহার করেছিলাম। কিন্তু আমার ব্যর্থতা তার সাফল্যের ন্যায়ই প্রকট হয়ে উঠেছিল। কারণ এটি আমার বহুব্যাপক রোগের একটি অমোঘ ঔষধ ছিল না। তাছাড়া আমি জানি যে দীর্ঘকাল এরকম “কানার মত” চলা উচিত নয়। তাই আমি ঐ বহু ব্যাপক রোগে সদৃশতম ঔষধটির অনুসন্ধান করেছিলাম এবং কৃতকাৰ্যও হয়েছিলাম। তাই তরুণ চিকিৎসক বন্ধু দের কাছে আমার অনুরোধ যে ঔষধটি কোন বিশেষ রোগের সবক্ষেত্রেই উপযোগী বলে বর্ণিত হয় তার সম্বন্ধে সাবধান থেকে অন্যথায় সময়ে সময়ে খুবই লজ্জায় পড়তে হবে।
৩। চক্ষুরোগে ইউফ্রেসিয়া একটি চরিত্রগত লক্ষণ হল কর্ণিয়ার উপর আঠা আঠা শ্লেষ্মা সঞ্চয়ের প্রবণতা। “উহা চোখ মিটমিট করলে অপসারিত হয়; চোখের যে কোন রোগে আলোকাতঙ্ক ও অশ্রুস্রাব থাকলে নাকের সর্দি থাক বা না থাক ইউফ্রেসিয়ায় ব্যবহৃত হয় বা ব্যবহৃত না হলেও এর কথা মনে আসা উচিত। ইউফ্রেসিয়ায় চক্ষুরোগে চোখের পাতা দুটি প্রায়ই আক্রান্ত হয়। আর্সেনিক, এপিস, রাসটক্স প্রভৃতি অন্যান্য ঔষধেও এই প্রকার হয়ে থাকে। অতএব পার্থক্য নির্ণয় করেই এদের ব্যবহার করা উচিত।
* সাধারণতঃ তরল কিন্তু কখন কখন শুকনো কাশি, কাশি দিনের বেলা বাড়ে কিন্তু রাত্রিতে কোন উপদ্রব না থাকা ইউফ্রেসিয়ার লক্ষণ।
** সাধারণতঃ সব কাশিই রাত্রিবেলা বাড়ে। তাই ইউফ্রেসিয়ায় রাত্রিতে উপশম ও দিনের বেলা কাশির কভু লক্ষণটি অতি প্রয়োজনীয় লক্ষণ।