জরায়ুর ক্যানসার, ফাইব্রইড তার সহিত অসহ্য জ্বালা যন্ত্রণা ও প্রচুর রক্তস্রাব। |
যে গ্রন্থি গুলো ফুলে উঠে সেগুলি নরম ও স্থিতিস্থাপক (রাবারের মত)। |
ব্যথা যুক্ত ঋতুস্রাব, ফ্লো হলে উপশম। |
গ্রন্থিসমূহের উপসর্গসমূহ, গলগন্ড, এবং ক্যান্সার রোগে ক্ষত তৈরী হবার পূর্বাবস্থায় এই ঔষধটি প্রযোজ্য। স্তনে, পাকস্থলীতে ও জরায়ুতে জ্বালাকর, হুল ফুটানোবৎ বেদনা। গ্রন্থির চারিদিকে থাকা সংযোজক কলা সমূহবিশেষভাবে আক্রান্ত হয়। চবিরযুক্ত, রক্তহীণ শিশু, যাদের আয়োডিনের মত ক্ষুধা থাকে। রাক্ষুসে ক্ষুধা। গন্ডমালা দোষযুক্ত রোগে এই ঔষধ আশ্চর্যরকম ভালো কাজ করে, কিন্তু ম্যালেরিয়া রোগে এই ঔষধের কোন কাজ নেই। জরায়ুর ক্যান্সার। জরায়ুর ফাইব্রয়েড জাতীয় অর্বুদ, তৎসহ তীব্র জ্বালাকর বেদনা সমগ্র জরায়ুর মধ্যে প্রসারিত হয় তৎসহ প্রচুর রক্তস্রাব হয়। গ্রন্থিগুলি টানলে সামান্য বেড়ে যায় এবং কিছুটা পরিমানেনরম, অন্যদিকে এই ঔষধের গ্রন্থিগুলিক্যাল্কেরিয়া ফুয়োর এবং সিস্টাসের মত কঠিন নয়।
কান – মধ্যকর্ণের পুঁজযুক্ত প্রদাহ। যে সকল ক্ষেত্রে সিলিকা নির্দেশিত হয় সেই সকল ক্ষেত্রে ল্যাপিস দ্রুত উন্নতি সাধন করে।
বুক – স্তনগ্রন্থি দেশে অবিরাম বেদনা। গ্রন্থিজ কঠিণতা।
চামড়া — গন্ডমালা জাতীয় ফোঁড়া ও ক্ষত। গ্রন্থিজ বিবৃদ্ধি ও কঠিনতা, বিশেষ করে গ্রীবাদেশীয় গ্রন্থি সমূহের। লাইপোমা, সারকোমা, কার্সিনোমা। চুলকানি।
সম্বন্ধ – তুলনীয় সিলিকা; ব্যাভিয়েগা; আর্সেনিক আয়োড; ক্যাল্কেরিয়া আয়োড; কোনিয়াম; ক্যালি আয়োড, এক্টারিয়াস।
শক্তি – ১ম থেকে ৬ষ্ঠ শক্তি।
সিলিকো ফ্লুরাইড অফ ক্যালসিয়াম (Silico Fluoride of Calcium)
গ্যাষ্টিনের (Gastein, Germany) ঝরনার জলে দ্রবীভূত একপ্রকার পদার্থ।
ডাঃ ভন গ্রোভগল গ্যাস্টিনের ঝরনার জলে এক বিশেষ রকমের পাথর পেয়ে তার এই নামকরণ করেন। যেসকল লোক এই জল পান করেন, তাদের মধ্যে গলগণ্ড ও বামনত্ব রোগ বহুল পরিমাণে হতে দেখা যায়। গ্লোভগল এর পরীক্ষা করে দেখিয়েছিলেন যে, ইহা পাকস্থলীর উৰ্দ্ধ ও নিম্মমুখের (Cardia and pylorus) জ্বালাকর ও চিড়িকমারা বেদনা উৎপন্ন করে; তাছাড়া জরায়ু ও স্তনে ঐরকম বেদনা হয়। তিনি রোগীদের ক্ষেত্রে পরীক্ষা করে দেখতে পান যে, গণ্ডমালাজনিত রোগে ইহা চমৎকার ফল প্রকাশ করে; কিন্তু যারা পূর্বে ম্যালেরিয়ায় ভুগেছে তাদের অনিষ্ট করে।
তিনি অ্যালোপ্যাথরা যে জরায়ুর ক্যানসার বা কার্সিনোমাকে (uterine carcinoma) অনারোগ্য বলে অভিহিত করেছিলেন, সেইরকম পাঁচটি রোগীকে এই ঔষধে ভাল করেছিলেন।
- রোগী বিবরণী –
এখন আমার চিকিৎসাধীনে একটি রোগিণী আছেন, যাকে দেখবার জন্য আমাকে একবছর আগে ডাকা হয়েছিল। তার জরায়ুতে একটি বড় তন্তুময় অর্বুদ বা ফাইব্রয়েড (fibroid) জন্মেছিল। কয়েকটি ঔষধ দেওয়া সত্ত্বেও তার অবস্থা আরও খারাপ হয়ে পড়ে এবং পুনঃপুনঃ ও প্রভূত রক্তস্রাব হতে থাকে। রক্তস্রাব এত বেশী ছিল যে, মনে হয়েছিল তার রক্তপাতেই মৃত্যু ঘটবে। টিউমারটি জরায়ুর সমগ্ৰ অংশ জুড়েই ছিল এবং বস্তিগহ্বরে আড়াআড়িভাবে বিস্তৃতি ছিল। টিউমারটির উপরিভাগ ছিল বাঁ দিকের শ্রোণী ত্রিকাস্থিগহূরে (left sacro-iliac fossa) এবং নিম্নাংশ ছিল বস্তিগহূরের (pelvic cavity) ডানদিকে। এক্ষেত্রে টিউমারের নিম্নাংশ বস্তিগহ্বরের এত উর্ধে ছিল যে, যন্ত্রদ্বারা (speculum) একে দেখা যায়নি।
কিছুদিন পূর্বোক্ত প্রকারের রক্তস্রাব হওয়ার পর স্রাব কালচে আকার ধারণ করে এবং অতিশয় দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে উঠে। তাছাড়া হাত দিয়ে স্পর্শ করলে জরায়ুর মুখ খসখসে বা কর্কশ বোধ হয়। পরিশেষে রোগিণী সমগ্র আক্রান্ত অংশে তীব্র জ্বালাকর বেদনা অনুভব করেন।
আর্সেনিকাম অ্যালবামে তার কোন উপকার হয়নি। আমি তখন পরীক্ষামূলকভাবে তাকে লেপিস এলবাস দিই। আমার মনে হয়েছিল সে আর সপ্তাহ দুই বাঁচবে। কিন্তু এই ঔষধের ক্রিয়ায় সে অবিলম্বে ভাল হতে থাকে এবং যে অর্ধমৃত কঙ্কালসার প্রেতের মত সাদা রোগিণী অপরের সাহায্য ব্যতীত বিছানায় পাশ ফিরতে পারত না, সে এখন গৃহস্থলীর কাজ করছে এবং স্বাভাবিক মাসিক ঋতুস্রাব ব্যতীত তার আর কোন বই নেই। টিউমারটিও ছোট হয়ে যাচ্ছে এবং মনে হচ্ছে সে ভাল হয়ে যাবে। সে সপ্তাহে একমাত্রা করে লেপিস আলবাস ৩০ সেবন করে।