NATRUM PHOSPHORICUM [Nat-p] নেট্টাম ফসফরিকাম

সোনালী হলদেটে আস্তরণ যুক্ত জিহ্বা, শরীরের যে কোন স্রাব সোনালী হলদেটে হয়।
হৃৎপিণ্ড হতে বুদবুদ উৎপন্ন হয়ে ধমনি দিয়ে নির্গত হচ্ছে এমন অনুভূতি।
টক উদগার ও মুখে টক স্বাদ।
রোগীর মনে ভয় যেন বিপদ আসন্ন।
নাকের ডগা ও মলদ্বার চুলকায় ও পেটে ব্যথা হয়।

শরীরের ল্যাকটিক অ্যাসিডের পরিমানের বৃদ্ধির ফলে যে সকল শারীরিক উপসর্গ সমূহ দেখা দেয়, সেই সকল ক্ষেত্রের জন্য নেট্রাম ফসফরিকাম একটি ঔষধ বিশেষ, ল্যাকটিক অ্যাসিডের এই বৃদ্ধি। প্রায়ই অতিরিক্ত চিনি থেকে উদ্ভব হয়। অতিরিক্ত মাত্রায় অম্লের থেকে যে সকল উপসর্গ। দেখা দেয়। টক ঢেকুর ও টক আস্বাদ। টক বমি। মুখগহ্বরের পিছনের অংশের ছাদে ও জিহ্বা, হলুদ, মাখনের মত দেখতে লেপযুক্ত। গলার যে কোন অংশের প্রদাহ, তৎসহ গলার ভিতরে একটি পিন্ড থাকার ন্যায় অনুভূতি। পেট ফাঁপা, তৎসহ টক বস্তু সহ ঢেকুর। শূলবেদনা, তৎসহ ক্রিমির লক্ষণসমূহ। সন্ধিস্থান সমূহে কটকট শব্দ হয়।

জন্ডিস – (১x বিচূর্ণ )। প্রস্রাবে অকজ্যালেটের উপস্থিতি।

মন — রাত্রে, ঘুম ভাঙ্গার পরে রোগী কল্পনা করে যে, আসবাবপত্রগুলি সবই মানুষ; পাশের ঘরে সে পায়ের শব্দ শুনতে পায়। ভীতি।

মাথা — সকালে মাথার ভিতরে নিস্তেজ ভাব, পূর্ণতার অনুভূতি এবং দপদপানি।

চোখ – চোখ থেকে সোনার মত হলুদবর্ণের, মাখনের মত বস্তু সমূহের স্রাব। একদিকের চোখের তারা বিস্ফারিত চোখের সাদা অংশ ফ্যাকাশে হলুদবর্ণ।

কান একদিকের কান লাল, উত্তপ্ত, প্রায়ই চুলকায়, তৎসহ পাকাশয়িক গোলযোগ এবং অম্নের প্রকোপ সংশ্লিষ্ট থাকে।

নাক – নাকে দূর্গন্ধ।নাকে চুলকায়।নাসিকা-গলবিলের সর্দিজ প্রদাহ, তৎসহ গাঢ়, হলুদবর্ণের, দূর্গন্ধযুক্ত শ্লেষ্মা।

মুখমন্ডল – ফ্যাকাশে নীলবর্ণ, উজ্বল মুখমন্ডল।

মুখগহ্বর – ঠোঁট ও গালে পচা ক্ষত। জিহ্বার অগ্রভাগে ফোস্কা। তৎসহ সন্ধ্যায় হুলফোঁটার মত বেদনা। পাতলা, আর্দ্র লেপযুক্ত জিহ্বা। মুখগহ্বরের পিছনের অংশের ছাদহলুদবর্ণের, মাখনের মত দেখতে লেপযুক্ত। বেদনাপূর্ণ গলাধঃকরণ। টনসিলদ্বয়ের উপরে গাঢ়, মাখনের মত লেপ এবং তালুর কোমল অংশে ঐ একই জাতীয় লেপ দেখতে পাওয়া যায়।

পাকস্থলী — টক টেকুর, টক বমন, সবুজাভ উদরাময়। গালভৰ্ত্তি খাবার ফুৎকারের সঙ্গে বাইরে বেরিয়ে আসে।

পুরুষের রোগ – স্বপ্ন ছাড়াই বীর্যপাত; তৎসহ পিঠের দুর্বলতা ও অঙ্গ সমূহের কম্পন। লিঙ্গাদ্রেক ছাড়াই সঙ্গমের ইচ্ছা। গনোরিয়া।

স্ত্রীরোগ – মাসিক ঋতুস্রাব নির্দিষ্ট সময়ের অনেক আগে; স্রাব ফ্যাকাশে, পাতলা, জলের মত। বন্ধ্যাত্ব, তৎসহ যোনিপথে, অম্লযুক্ত স্রাবের নির্গমন। প্রদর স্রাবসামনের মাখনের মত অথবা মধুর মত রঙ যুক্ত, অথবা অম্লযুক্ত ও জলের মত। জরায়ু থেকে টক গন্ধযুক্ত স্রাব। সকালে বমিবমিভাব, তৎসহ টক বমন।

অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ-হাঁটুসন্ধির বাতরোগ।

পিঠ- ক্লান্তি;কজি ও হাতের আঙ্গুলের সন্ধি সমূহের কানি। হ্যামস্ট্রিং পেশীর টাটানি ব্যথা। স্নেহরসস্রাবী সন্ধিস্থানে দুটি পাতার মধ্যে ঘর্ষনের ফলে যে জাতীয় শব্দ হয় ঐ একই জাতীয় শব্দ হয়। বাতজনিত সন্ধি প্রদাহ।

চামড়া – হলুদ বর্ণ। বিভিন্ন অংশের চুলকানি, বিশেষতঃ, গোড়ালি স্থানে। আমবাত। মসৃন, লালচে, উজ্বলবর্ণযুক্ত, ইরিসিপেলাস। দিনের বেলা পায়ের পাতাদ্বয় বরফের মত ঠান্ডা, কিন্তু রাত্রে জ্বালা করে। লসিকা গ্রন্থিসমূহের স্ফীতি।

সম্বন্ধ-তুলনীয়-নেট্রাম ল্যাকটিক (সন্ধিবাত ও গেঁটেবাত;গেঁটে বাতজনিত গুটি সমূহবাতসহ বহুমূত্র রোগ); নেট্রাম নাইট্রোসাম (হৃদল। রক্তে অক্সিজেনের অভাব হেতু নীলবর্ণ, মূচ্ছ, রাত্রে প্রচুর তরল মন, দপদপানি ও পূর্ণতার অনুভূতি, মূচ্ছা, মাথায় স্নায়বিক বেদনা, বমি বমিভাব, ঢেকুর, ঠোঁট দুটি নীলবর্ণ);

নেট্রাম সিলিকো ফ্লোরিকাম স্যালিউফার (এটি একটি ক্যান্সার রোগের ঔষধ বিশেষ; অবুদসমূহ:অস্থির উপসর্গসমূহ, অস্থির পচন। খুব সতর্কতার সঙ্গে ঔষধটি ব্যবহার করা প্রয়োজন);

নেট্রাম সেলিন-(কণ্ঠনলীর পুরাতন প্রদাহও কণ্ঠনলীর ক্ষয়রোগ;গায়কদের স্বরভঙ্গ, ছোটছোট শ্লেষ্মার দলা উঠে, তৎসহ বারে বারে গলা পরিষ্কার করতে হয়);

নেট্রাম সালফিউরোসাম (উদরাময় তৎসহ ইটের মত মল);

নেট্রাম সালফোকার্বন (পায়েমিয়া; পুঁজযুক্ত প্লুরিসি, এই ঔষধের তিন থেকে পাঁচ গ্রেণ পরিমান প্রতি তিন ঘন্টায় অন্তর প্রযোজ্য);

নেট্রাম টেলিউরিকাম—(শ্বাস-প্রশ্বাসে রসুনের গন্ধ; ক্ষয়রোগে রাত্রিকালীন ঘাম);ক্যাল্কেরিয়া কার্ব; রোবিনিয়া, ফসফরাস। অকজ্যালেটযুক্ত প্রস্রাবে ১x শক্তির ঔষধ দিনে চারবার ব্যবহার করা হলে, পাথর তৈরীতে বাধা দেয়।

শক্তি – ৩য় থেকে ১২ শক্তির বিচূর্ণ। জন্ডিসের ক্ষেত্রে ১x। অহহামিওপ্যাথিকভাবে, ফসফেট সোডা চামড়ার নীচে ইঞ্জেকশন করা হয়, আফিমের নেশাগ্রস্ত ব্যাক্তিদের ক্ষেত্রে, (ডাঃ এম. জে, লিউসের)। ফসফেট সোড়া ৭৫ গ্রেন দৈনিক থাইরয়েড গ্রন্থির বিবৃদ্ধিজনিত উপসর্গে;গ্রেস্ ডিজীজের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

এই ঔষধটির লক্ষণগুলির জন্য আমরা একমাত্র সুসলারের উপরেই নির্ভরশীল নহি, কারণ আমরা নিদানশাস্ত্রমতেও অনেকগুলি লক্ষণ পাইয়াছি। সুসলারের নিকট প্রাপ্ত লক্ষণগুলি মূল্যবান এবং রোগীক্ষেত্রে পরীক্ষায় উহার প্রায় সবগুলিই সমর্থিত হইয়াছে। বর্তমান লেখক এই ঔষধটি কুড়ি বৎসর যাবৎ অনেকগুলি রোগীকে দিয়াছেন, তাহাদের স্নায়ুগুলি মানসিক পরিশ্রমে অথবা। অতিরিক্ত ইন্দ্রিয়চালনায় বা হস্তমৈথুনাদিতে উপদ্রাহিত হইয়া পড়িয়াছিল। লক্ষণগুলি প্রাতে, সন্ধ্যায়, রাত্রিকালে এবং মধ্যরাত্রির পর বাড়ে। স্পষ্ট নীরক্ততা এবং খোলা বাতাসে অপ্রবৃত্তি থাকে। বায়ুপ্রবাহে, খোলা বাতাসে, ঠান্ডায়, ঠান্ডা লাগায়, ঠান্ডা লাগার পর রোগী বৃদ্ধিযুক্ত হয়, এবং পুনঃ পুনঃ সর্দিলাগার প্রবণতা থাকে। সে আবহাওয়ার পরিবর্তনে খারাপ বোধ করে। হরিৎপান্ডুরোগ। স্নানে অপ্রবৃত্তি। অনেক লক্ষণ সহবাসের পর উপস্থিত হয়। সে হয়ত অতি ইন্দ্রিয়াসক্ত হইতে পারে। অনেক লক্ষণ উপবাস করিলে উপস্থিত হয় এবং সে সাধারণতঃ আহার করিলে উপশম পায়। শারীরিক পরিশ্রমে সে বৃদ্ধিযুক্ত হয়। তাহার পেশীগুলি থলথলে, তাহার মাংস ক্ষয় হইতে থাকে। মাখন, ঠান্ডা পানীয়, ঠান্ডা খাদ্য, চর্বি, ফল, দুগ্ধ, টক জিনিষ, ভিনিগার খাইলে তাহার পাকস্থলীর বিশৃঙ্খলা উপস্থিত হয়। তাহার বাহ্যিক ও আভ্যন্তরিকভাবে পোকা হাঁটার ন্যায় অনুভূতি থাকে। যথেষ্ট শারীরিক উপদাহিতা থাকে এবং পরে স্পষ্ট প্রতিক্রিয়ার অভাব থাকে। অনেক লক্ষণ ঝাকি লাগায়, পা ফেলায় বাড়ে। গরমকালে, প্রাতঃকালে সুস্পষ্ট আলস্য দেখা দেয়। অবিরত শুইয়া থাকিবার ইচ্ছা। রক্তরসাদি তরল। পদার্থের ক্ষয়হেতু দীর্ঘকাল স্থায়ী দুর্বলতা ] বামপার্শ্বে শুইলে অনেক লক্ষণের বৃদ্ধি হয়। ঋতুর পূর্বে ও পরে অত্যন্ত খারাপ বোধ করে। ঋতুকালে বৈকালে ও সন্ধ্যাকালে লক্ষণগুলি বাড়ে। কোন বিশেষ অঙ্গের অসাড়তা। রক্তের উচ্ছ্বাস। সূচীবিদ্ধবৎ, ছিন্নকর যন্ত্রণা, ঝড়বৃষ্টির সময় বৰ্দ্ধিত হয়। সর্বাঙ্গে দপদপ করে। ধমনীগুলির মধ্যে যেন একটি গুলি ঢুকিয়া গেল এরূপ অনুভূতি- ইহা একটি পরীক্ষিত লক্ষণ। সাধারণভাবে যন্ত্রণা সম্বন্ধে অত্যনুভূতি। রাত্রিকালে জাগিয়া থাকার সময় দেহে বিদ্যুতাঘাতের ন্যায় অনুভূতি। বসিয়া থাকিলে লক্ষণগুলি বাড়ে। ঝড়বৃষ্টির সময় সর্বাঙ্গীণ বৃদ্ধি। পেশী ও কন্ডরাগুলিতে টানটানবোধ। ঝড়বৃষ্টির সময় কম্পন । পেশীসমূহের উৎক্ষেপ। স্নায়বিক ও পক্ষাঘাতিক দুর্বলতা, প্রাতঃকালে এবং পরিশ্রমের পর বাড়ে। দেহ হইতে টক গন্ধ ছাড়ে (সদৃশ—“হিপার’, ‘সালফ’, ‘লাইকো)।

তুচ্ছ বিষয়ে রাগ; বিরক্তি হইতে রোগ জন্মে। উৎকণ্ঠা—সন্ধ্যাকালে ও রাত্রে, শয্যার শুইলে, মধ্যরাত্রির পূর্বে, আহারের পর, ভয়ের সহিত, জ্বরের সময়, ভবিষ্যৎ-সম্বন্ধে, তাহার স্বাস্থ্য-সম্বন্ধে, জাগিয়া থাকিলে । দুঃসংবাদ হইতে রোগ। লোকসঙ্গ পছন্দ করে না। মনঃসংযোগ কষ্টকর। মানসিক গোলমাল—প্রাতে, সন্ধ্যায়, আহারের পর, মানসিক পরিশ্রম হইতে, জাগিয়া উঠিলে। ভ্রান্তবিশ্বাস, ভীতিপূর্ণ, মনে করে সে মৃতব্যক্তিকে দেখিতেছে, বিভিন্ন মূৰ্ত্তিকে দেখিতেছে, মনে করে তাহার টাইফয়েড জ্বর হইবার উপক্রম হইয়াছে, সে পার্শ্বের ঘরে পদশব্দ শুনিতেছে। অসন্তুষ্ট, নিরুৎসাহিত, সহজেই বিচলিত। পড়িবার সময় মনের জড়তা। মানসিক পরিশ্রমে নানা উপসর্গ উপস্থিত হয়। সে অতিশীঘ্র উত্তেজিত হয়। রাত্রিকালে ভয় আসন্ন রোগের, যেন কিছু ঘটিবে এরূপ, বিপদের ভয়, জাগিয়া উঠিলে ভয়। আশঙ্কা করে বুঝি কোন দুঃসংবাদ আসিবে। বিস্মৃতিপরায়ণ। সহজেই ভয় পায় এবং মনোযোগবিহীন। সে হিষ্টিরিয়াগ্ৰস্তা এবং সত্বরতাবিশিষ্টা। কেহই তাহার মনের মত কাজ করিতে পারে না। সময়ে সময়ে তাহার প্রচুর কল্পনা থাকে, সময়ে সময়ে কোন কল্পনাই থাকে না, মন অলস হইয়া পড়ে। অধৈৰ্য্যভাব। সে সবকিছুতেই উদাসীন, এমনকি তাহার পরিজনের প্রতি উদাসীন। ক্রমশঃ জড়তা বাড়িতে থাকে, মানসিক ও দৈহিক পরিশ্রমে ভয় হয় । উত্তেজনাপ্রবণতা প্রাতঃকালে, ঋতুকালে, তুচ্ছ বিষয়ে। স্মৃতিশক্তি দুর্বল। সময়ে সময়ে আনন্দপূর্ণ হইয়া উঠে। মনের অত্যন্ত অবসন্নতা। সন্ধ্যাকালে ও রাত্রে অস্থির ও উদ্বিগ্ন হয়। সন্ধ্যাকালে, শুক্রপাতের পর, জ্বরের সময় এবং সঙ্গীত শুনিলে বিষন্নতা। সে সঙ্গীতে, গোলমালে এবং তাহার পারিপার্শ্বিক সম্বন্ধে অত্যন্ত অনুভূতিবিশিষ্ট থাকে। সে গম্ভীর এবং নীরব হইয়া পড়ে, বহুক্ষণ ধরিয়া সম্পূর্ণ চুপচাপ হইয়া বসিয়া থাকে। সে সহজেই চমকিত হয়—ভয় পাইয়া, শব্দে, নিদ্রা যাইবার সময়, নিদ্রার মধ্যে চমকাইয়া উঠে। এক এক সময় বিমূঢ়ভাব তাহাকে পাইয়া বসে। বন্ধুগণ তাহাকে সন্দিগ্ধ মনে করে কথা বলিতে চায় না। তাহার চিন্তা নানা দিকে ঘোরে। সে ক্রমশঃ ভারত ও সলঙ্গন হইতে থাকে । সহজেই কাঁদে। মানসিক কাৰ্য্য অসম্ভব হইয়া পড়ে, মনে হয় যেন সে মেস জড়ত্বের দিকে অগ্রসর হইতেছে।

প্রাতে শিরেঘূর্ণন, মানসিক পরিশ্রমে, বসিয়া থাকাকালে এবং হটিবার সময় বৃদ্ধি । পড়ি। যাইবার মত হয়।

সন্ধ্যাকালে মস্তকে রক্তসঞ্চয়। সন্ধ্যাকালে মস্তকে, কপালে ও মস্তকশীর্ষে উত্তাপ। ঘরে উপর উত্তাপের ঝলক। মস্তকত্বকে টানটানবোধ। মাথার উপর সোনার ন্যায় হলদে মামড়িবিশিষ্ট উদ্ভেদ। কপালের উপর একজিমা। মস্তকের উপর, চক্ষের উপর, প্রাতঃকালে পূর্ণতাবোধ, মানসিক পরিশ্রমে বৃদ্ধি। মস্তকে ভারবোধ, চুল উঠিয়া যায়। মস্তকে যন্ত্রণ প্রাতে, অপরাহ্নে, সন্ধ্যাকালে এবং রাত্রে, চুল বাঁধিলে বৃদ্ধি, আহারের পর বৃদ্ধি, শুইয়া পড়িতে বাধ্য হয়, আলোকে বৃদ্ধি, শয়নে, ঋতুর পূর্বে, সময়ে ও পরে, মানসিক পরিশ্রমে, ঘোল খাওয়ার পর, সঞ্চালনে, মাথা নাড়াইলে, শব্দে, শুইবার পর উঠিয়া বসিলে, ঘরে ভিতর, অতিরিক্ত ইন্দ্রিয়সেবার পর, নিদ্রার পর, হেট হওয়ার পর, চক্ষুচালনার পর, ঝড়বৃষ্টির সময়, চলিবার সময়, গরম ঘরে: খোলা বাতাসে উপশম, চাপে উপশম। শিরঃপীড়া নির্দিষ্টকাল ব্যবধানে ও দপদপকর। কপালে যন্ত্রণা, মানসিক পরিশ্রমে বৃদ্ধি; সঞ্চালনে, চক্ষুর উপরে, মস্তকের পশ্চাদ্ভাগে, মস্তকের উভয় পার্শ্বে, শখস্থানে; প্রাতঃকালে, চলিবার সময় মস্তকশীর্ষে, মস্তকশীর্ষে ও কপালে। যন্ত্রণা ফাটিয়া যাওয়ার ন্যায়, শখস্থানে ও মস্তকের উভয় পার্শ্বে কাটিয়া ফেলার নয়, মাথায় ও মাথার পশ্চাদ্ভাগে টানিয়া ধরার মত, টক পিচ্ছিল বমনের সহিত চাপনবৎ; কপালে, বহির্দিকে, চক্ষুর উপর; মস্তকের পশ্চাদ্দিকে ও মস্তকের পশ্চাদ্দেশের উভয় পার্শ্বে চাপনবৎ, শখস্থানে চাপুনবৎ, মস্তকশীর্ষে যেন উহা কাটিয়া যাইবে এরূপ চাপনবৎ। মাথায়, কপালে, মাথার উভয় পার্শ্বে, শঙ্খদ্বয়ে সূচীবিদ্ধবৎ। মাথায় ও কপালে হতবুদ্ধিকর যন্ত্রণা। মাথায় ছিন্নকর যন্ত্রণা। কপালে ঘৰ্ম্ম। মাথায়, কপালে, শঙ্খস্থানে এবং মস্তকশিখরে দপদপ করা। মাথায় বিদ্যুত্বৎ সজ্ঞাত। পেশীসঙ্কোচন। মাথা অনাবৃত করিলে লক্ষণগুলি উপস্থিত হয় ।

চক্ষের শুষ্কতা সরের ন্যায় হলদে স্রাব । চক্ষুপাতা দুইটিতে ভারবোধ। চক্ষুদ্বয়ের প্রদাহ। গন্ডমালাজনিত চক্ষুপ্রদাহ এবং দানাময় চক্ষের পাতা। চক্ষুপাতায় এবং চক্ষর পাতায়। কিনারাগুলিতে চুলকানি ও জ্বালা। জ্বালাকর অশ্রুস্রাব, চক্ষু মুছিতে বাধ্য হয়। পড়িবার সময় চক্ষে যন্ত্রণা । জ্বালা ও কাটিতে থাকার ন্যায় যন্ত্রণা। ঋতুকালে চাপনবৎ যন্ত্রণা। চক্ষে বালিপড়ার ন্যায় যন্ত্রণা। পড়িবার সময় ক্ষতবৎ, হেলাইয়া যাওয়ার ন্যায় অনুভূতি। চক্ষে সূচীবিদ্ধবৎ যন্ত্রণা। চক্ষের স্নায়ুগুলির পক্ষাঘাত । আলোকাতঙ্ক। চক্ষুতারা দুইটিতে বিস্তৃত। একটি চক্ষুতারা বিস্তৃত। পড়িবার সময় ডান চক্ষুর পাতার স্পন্দন । একদৃষ্টি। টেরা দৃষ্টি। চক্ষুপাতার স্ফীতি। চক্ষুর শ্বেতপটল হরিদ্রাবর্ণ হয়। চক্ষুর সম্মুখে নানা বর্ণ, কালবর্ণ দেখে। আলোকের চারদিকে জ্যোতির্মন্ডল দেখে। দূরের দ্রব্য অস্পষ্ট দেখে। কুয়াশাচ্ছন্ন দৃষ্টি। অন্ধতা। চক্ষুর পরিশ্রমে অনেক লক্ষণ বাড়ে। প্রাতে নিদ্রাভঙ্গে, এবং অপরাহ্ন ৫টায় চক্ষুর সম্মুখে দপদপকর। আলোকশিখা দেখে। চক্ষুর সম্মুখে কুজ্বটিকা দেখে, রাত্রি ৮টায় গ্যাসের আলোকে বর্ধিত হয়। নিকটদৃষ্টি। চক্ষুর সম্মুখে অগ্নিস্ফুলিঙ্গদর্শন ।

কানের উপর উদ্ভেদ। কানের উপর সরের ন্যায় হলদে মামড়ি। কর্ণের ভিতর পূর্ণতা। এক কর্ণের উত্তাপ ও আরক্ততা। কর্ণের মধ্যে চুলকানি । ডান কর্ণের লতিতে জ্বালা ও চুলকানি, চুলকাইয়া রক্ত বাহির করিয়া ফেলে। শিরোঘূর্ণনের সহিত কর্ণে নানাপ্রকার শব্দ—গুনগুন শব্দ, ঠং ঠং শব্দ, গৰ্জ্জনবৎ শব্দ, শো-শো শব্দ, সঙ্গীতবৎ শব্দ, সাই সাই শব্দ। কর্ণে যন্ত্রণা। কর্ণনালীতে কনকনানি। জ্বালা, কর্ণের মধ্যে ও পশ্চাতে সূচীবিদ্ধবৎ যন্ত্রণা। ছিন্নকর যন্ত্রণা। দপদপ করা। বুজিয়া থাকার অনুভূতি। শ্রবণশক্তি তীক্ষ মানুষের স্বর ভাল শুনে শ্রবণশক্তি কমিয়া যায়, লোপ পায় ।

রোগীর স্রাবশীল সর্দি হয় এবং নাসিকার সর্দিতে ঘন হলদে পুঁজের ন্যায় স্রাব হয়। নাক ঝাড়িলে নাক হইতে রক্ত পড়ে। নাসা-মূলে পূর্ণতাবোধ। নাক শ্লেষ্ম ও মামড়িতে বুজিয়া যায় কিন্তু সাধারণতঃ নিঃস্রাব স্বল্প থাকে। প্রাতঃকালে নাক হইতে দুর্গন্ধ বাহির হয়। পূতিনস্য। বাম নাসারন্ধ্র খুঁটিলে চক্ষে জল আসে। ঘ্রাণশক্তি তীক্ষ্ণ। বাম নাসারন্ধ্রে ক্ষততা। সর্বদাই নাক খুঁটিতে থাকে এবং মামড়ি জন্মে। পুনঃ পুনঃ হাঁচি। নাকের গোড়ায় টানটানবোধ।

মুখমন্ডল বিবর্ণ, নীলাভ, চক্ষুর চারিদিকে কৃষ্ণমন্ডল, মৃদ্বর্ণ, পান্ডুবর্ণ, লাল-লাল দাগ কিন্তু জ্বর থাকে না, পান্ডুবর্ণের সহিত পৰ্য্যায়ক্রমে লালবর্ণ; হরিদ্রাবর্ণ, যকৃৎরোগসূচক দাগ, নাক ও মুখের চারিদিকে সাদা। মুখের উপর, কপাল, থুতনি, ওষ্ঠের উপর, মুখের চারিদিকে, নাকের উপর উদ্ভেদ। কপালে ব্রণ। মুখের উপর পুঁজবটী। সন্ধ্যাকালে শীতের সময় উত্তাপ। মুখমন্ডলে জ্বালা। মুখমন্ডল ও নাকের চুলকানি।

মুখমন্ডলে জ্বালাকর স্নায়ুশূলের ন্যায় যন্ত্রণা। বাম গন্ডে তীরবিদ্ধবৎ যন্ত্রণা। বাম চোয়ালের ডান পার্শ্বের কোণটিতে ক্ষততা, উহার মধ্যে বর্শাবিদ্ধবৎ যন্ত্রণা, সূচীবিদ্ধবৎ যন্ত্রণা। নিম্ন ‘চোয়ালের গ্রন্থিগুলির স্ফীতি। চোয়ালের নিম্নবর্তী গ্রন্থিগুলির স্ফীতি।

মাড়ী হইতে রক্ত পড়ে। জিহ্বা হলদেবর্ণ লেপাবৃত । জিহ্বার গোড়ার দিকে হলদে অথবা মলিন সাদা। টাকার সোনার ন্যায় হলদে অথবা সরের ন্যায় লেপাবৃত। মুখগহ্বর ও জিহ্বার শুষ্কতা। লালাস্রাব। জিহ্বার উপর একগাছি চুল থাকার অনুভূতি, তাহার সমুদয় মুখগহ্বরে কাঁটা ফোটার ন্যায় অনুভূতিযুক্ত অসড়তা। কথা বলা কষ্টকর হয়। জিহ্বার উপর হুলবিদ্ধবৎ যন্ত্রণা। নিদ্রাভঙ্গে স্বাদ বিশ্রী তিক্ত, ধাতব, লবণাক্ত। মুখের মধ্যে ও জিহ্বার উপর ফুস্কুড়ি।

দাঁতের ক্ষয়। শিশুদের নিদ্রাবস্থায় দাঁত কড়মড় করা। দাঁত আলগা হইয়া যায়। রাত্রে দাঁতে যন্ত্রণা, চাপে ও বাহ্যিক উত্তাপে উপশম। জ্বালা, চাপনবৎ, দপদপকর যন্ত্রণা।

গলা ও টনসিলদ্বয়ে হলদে লেপে আবৃত্ত। গলার শুষ্কতা। গলায় শ্লেষ্মা জমে। নাসিকার পশ্চাত্রন্ধ্রে শক্ত পরিষ্কার সাদা শ্লেষ্মা। পশ্চাত্র হইতে ঘন হলদে শ্লেষ্ম বাহির হইতে থাকে রাত্রে বর্ধিত হয়, গলা পরিষ্কার করিবার জন্য উঠিয়া বসিতে বাধ্য হয়। গলায় একটি ডেলা থাকার অনুভূতি। অত্যন্ত গলায় খেকারি দেয়। গলায় প্রদাহ। গিলিতে গেলে গলায় বেদনা। ডান পার্শ্বের গলবেদনা, গিলিতে গেলে বৰ্দ্ধিত হয়। জ্বালাকর, খোচামারার ন্যায়, সূচীবিদ্ধবৎ যন্ত্রণা। টনসিলের মধ্যে দপদপ করে। নাসিকার পশ্চাত্র হইতে চাচিয়া শ্লেষ্মা বাহির করে। গলার ক্ষততা, শক্ত অপেক্ষা তরল খাদ্য খাদ্য ভাল গিলিতে পারে।

ক্ষুধা বৰ্দ্ধিত হয়, রাক্ষুসে ক্ষুধা অথবা ক্ষুধার অভাব। খাদ্যে মাংসে, দুগ্ধে, রুটিতে ও মাখনে অপ্রবৃত্তি। মদ্যজাতীয় পানীয়, বিয়ার, ঝাল খাদ্য, ডিম, মাছভাজা, শীতল পানীয় ইচ্ছা। করে। দুগ্ধ ও চর্বিতে পাকস্থলীর বিশৃঙ্খলা হয়। শূন্যতাবোধ, আহারের পর বাড়ে। উদার— আহারের পর শূন্য, টক, গলায় জল উঠা। আহারের পর পূর্ণতা। বুকজ্বালা, ভারবোধ, চাপবোধ। পাকস্থলীতে উত্তাপ। বমনেচ্ছা—প্রাতে, সন্ধ্যায়, কাশির সময় এবং শিরঃপীড়ার সময়। পাকস্থলীতে যন্ত্রণা—আহারের পরে, আহারের দুই ঘন্টা পরে, খাল ধরিতে থাকার ন্যায়, পাকাশয়শূল; তরল টক পদার্থ বমনের সহিত উঠিয়া আসে, প্রতিদিন কয়েকবার করিয়া আক্রমণ হয়, ল্যাকটিক এসিডে’র অতিসঞ্চয়। পাকস্থলীতে কামড়ানি । আহারের পর চাপনবোধ। ক্ষততা ও সূচীবিদ্ধবৎ যন্ত্রণা। উকি উঠে। অত্যন্ত তৃষ্ণা। পাকস্থলীতে ক্ষত। টক বমন। জিহ্বার উপর সরের ন্যায় লেপ। শরীরে টক গন্ধ। বমন-কাশিলে, শিরঃপীড়ার সহিত, পিত্তময়, তিক্ত, শিরঃপীড়ার সহিত ফেনাফেনা, শ্লেষ্মাময় ; দুগ্ধপায়ী শিশুদের টক, সবিরাম জ্বরে পনীরের ন্যায় ডেলা ডেলা টকদ্রব্যমিশ্রিত, গর্ভকালে সবজেটে হলদে বমন হইতে থাকে।

আহারের পর উদরস্ফীতি । মলত্যাগের পর শূন্যতাবোধ। উদরে বায়ুসঞ্চয়,-দুর্দম্য, আহারের পর। পূর্ণতা, কঠিনতা ও গড়গড় শব্দ। যন্ত্রণা–অপরাহ্নে ও রাত্রে, আহারের পর, আবেশে আবেশে, মলত্যাগের পূর্বে। কুক্ষিদেশে যন্ত্রণা। উদরে জ্বালা। মলত্যাগের পূর্বে খালধরা, উহাতে মলপ্রবৃত্তি আসে, চলিবার সময় খালধরা। উদরে কৰ্ত্তনবৎ যন্ত্রণা। তলপেটে চাপনবৎ যন্ত্রণা । সমুদয় উদরে ক্ষততা। উদরে ও যকৃতে সূচীবিদ্ধবৎ যন্ত্রণা। যকৃৎ জড়ভাবাপন্ন। গড়গড় শব্দ। টানবোধ।

কষ্টদায়ক কঠিন মলবিশিষ্ট কোষ্ঠবদ্ধতা। সরলান্ত্রের নিষ্ক্রিয়তা। একদিন কোষ্ঠবদ্ধতা, পরদিন উদরাময়। উদরাময়, প্রাতে, রাত্রে, শূলবেদনাসহ, আহারের পর, গ্রীষ্মকালে, উদর। বায়ুযুক্ত। মলদ্বার হাজিয়া যায়। অত্যন্ত অধঃবায়ু, অনিচ্ছায় মলত্যাগ, বায়ুত্যাগকালে অসাড়ে মলত্যাগ। মলদ্বার ক্ষততা ও চুলকানিযুক্ত, শয্যার উত্তাপে বৃদ্ধি। মলত্যাগের পর সরলান্ত্রের যন্ত্রণা। মলত্যাগের সময় কৰ্ত্তনবৎ যন্ত্রণা। হাঁটিবার সময় সূচীবিদ্ধবৎ যন্ত্রণা। কোথানি। পুরুষদিগের সহবাসের পর মলপ্রবৃত্তি। মলপ্রবৃত্তি নিষ্ফল ও অসন্তোষজনক। মলত্যাগের পূর্বে সরলান্ত্রে দুর্বলতার অনুভূতি। মল, রক্তময়, পনীরের ন্যায়, ভাঙ্গিয়া ভাঙ্গিয়া পড়ে, ফিকেবর্ণের, পিত্তহীন। মল-সবুজ, জেলির ন্যায় দলাদলা, আঠার ন্যায়, টকগন্ধবিশিষ্ট। পাতলা হলদেটে বাদামীবর্ণ মল, জলের ন্যায়, হলদেটে সবুজ, হলদেটে বাদামী, মলের সহিত ক্রিমি।

মূত্রস্থলীর পক্ষাঘাত। মূত্রত্যাগের পূর্বে মূত্রস্থলীতে চাপনবৎ যন্ত্রণা। মূত্রপ্রবৃত্তি-রাত্রে, সহবাসের পর (পুরুষের), আহারের পর, অবিরত, ঘনঘন । মূত্রকৃচ্ছ্ব। মূত্রত্যাগ-ঘনঘন, রাত্রে, ঘামিবার সময়, অনিচ্ছায় রাত্রিকালে, ঘুমের মধ্যে। মূত্রপ্রবাহ আরম্ভ হইবার জন্য অপেক্ষা করিতে হয় মূত্রপ্রবাহ আরম্ভ হইবার পূর্বে অনেকক্ষণ বেগ দিতে হয়। অতৃপ্তিজনক মূত্রপাত। মূত্রপিন্ডদ্বয়ে সূচীবিদ্ধবৎ যন্ত্রণা। মলত্যাগের সময় প্রষ্টেট গ্রন্থিরস নির্গমন। প্রষ্টেট গ্রন্থির বৃদ্ধি। মূত্রত্যাগকালে মূত্রনালীতে জ্বালা। মলত্যাগের পর মূত্রনালীতে জ্বালা ও চুলকানি। মূত্র এলবুমেনযুক্ত, জ্বালাকর ঘোলাটে, ঘোরাল, বিবর্ণ, রাত্রে ও প্রাতে প্রচুর, দুর্গন্ধযুক্ত, স্বল্প, শ্লেষ্মাময় তলানিযুক্ত।

লিঙ্গোচ্ছ্বাস প্রাতে ও রাত্রে কষ্টকর, ক্রমাগত, পুনঃপুনঃ অসম্পূর্ণ, যন্ত্রণাদায়ক, অনৈচ্ছিক, ভীষণ, লিঙ্গোদ্রেকের অভাব। জননাঙ্গে ফুস্কুড়ি। অন্ডকোষে, লিঙ্গাগ্রতৃকে এবং মলদ্বারে চুলকানি। রেতঃরজুতে ও অন্ডে বেদনা। রেতঃরজ্জুতে টানিয়া ধরার ন্যায় যন্ত্রণা। অন্ডে চাপনবৎ যন্ত্রণা। সহবাসের পর, স্বপ্ন ব্যতীত, লিঙ্গোদ্রেক ব্যতীত, পুনঃপুনঃ, অজ্ঞাতসারে শুক্রপাত। সঙ্গমপ্রবৃত্তি কমিয়া যায় বা বাড়িয়া যায়। লিঙ্গোদ্রেক হয় না, বমনভাব উপস্থিত হয়। লিঙ্গ ও অন্ডের স্ফীতি।

স্ত্রীলোকদিগের সঙ্গমপ্রবৃত্তি বর্ধিত হয়। ঋতুর পর প্রদরস্রাব,ক্ষতকর, প্রচুর, ঘন দুধের ন্যায়, মধুর বর্ণ, অগন্ধ, হলদে এবং জলের ন্যায়। ঋতু-অনুপস্থিত, প্রচুর, পুনঃ পুনঃ, বিলম্বিত, বিবর্ণ, যন্ত্রণাকর, দীর্ঘস্থায়ী। মলত্যাগের পর দুর্বল অবসন্নকর অনুভূতির সহিত জরায়ুর বহিঃনির্গমন। বন্ধ্যাত্ব।

কন্ঠে ক্ষততা। স্বরভঙ্গ ও স্বরনাশ। শ্বাসক্রিয়া হাঁপানির ন্যায়, কষ্টকর, হ্রস্ব এবং দীর্ঘনিশ্বাসবিশিষ্ট।

কাশি;—অপরাহ্নে, সন্ধ্যায় শুইলে, রাত্রে শীতের সময়, অবিরত, সর্দির সহিত, পানের পর। শুষ্ক সন্ধ্যাকালীন কাশি, তাহার সহিত প্ৰাতে গয়ের উঠা। বুকে বা কণ্ঠনালীতে উপদাহের সহিত খুকখকে, শূন্যগর্ভ, হ্রস্ব, যন্ত্রণাদায়ক কাশি। প্রাতঃকালীন সরল কাশি। কণ্ঠনালী ও বুকে সুড়সুড় করা। তীব্র কাশি বসিয়া থাকিলে কাশি বৰ্দ্ধিত হয়। প্রাতঃকালে গয়ের উঠা—রক্তাক্ত, সবজেটে, শ্লেষ্মময়, দুর্গন্ধ, পুঁজের ন্যায় ঘন, চটচটে, হরিদ্রাবর্ণ, স্বাদহীন, পচাগন্ধ, লবণাক্ত।

বক্ষে উৎকণ্ঠা, হৃৎপিন্ডের মধ্যে ভুড়ভুড়ি উঠিয়া উহা ধমনীগুলিতে প্রসারিত হয়। বক্ষে সঙ্কোচনবোধ। আহারের পরে বুকে শূন্যতার অনুভূতি। বুকের উপর ব্রণ। বুকের উর্ধ্বভাগে আকস্মিক পূর্ণতার অনুভূতি। বুকে চাপবোধ। বুকে যন্ত্রণা মধ্যাহ্নভোজনের পর, গভীর নিশ্বাস লইলে, কাশির সময়। হৃৎপিন্ডে যন্ত্রণা। বুকে কনকনানির ন্যায়, চাপনবৎ যন্ত্রণা। বুকের গভীর অংশে জ্বালা, ডান পার্শ্বে, সন্ধ্যাকালে শুইলে বর্ধিত হয়। কাটার ন্যায়, চাপ দেওয়ার ন্যায় যন্ত্রণা। কাশিলে বুকে হাজাভাব। বুকে ক্ষততাবোধ। বুকের ভিতর, বুকের পার্শ্বদ্বয়ে ক্ষততা, বামপার্শ্বে অধিক। হৃৎস্পন্দন উৎকন্ঠাপূর্ণ, আহারের পর; শব্দে, বামপার্শ্বে শুইলে, ঝড়বৃষ্টির সময় বৃদ্ধি। যুবকদিগের উজ্জ্বল লালরক্ত উঠা যক্ষ্মারোগ । হৃৎপিন্ডের মধ্যে কম্পন,—ঋতুর পর, সিঁড়ি দিয়া উপরে উঠিলে।

পৃষ্ঠে গুরুতরভাবে টানিয়া ধরার ন্যায় যন্ত্রণা। পৃষ্ঠের চৰ্ম্মে চুলকানি । পৃষ্ঠে বেদনা,—রাত্রে, ঋতুকালে, সঞ্চালনে, অতিরিক্ত ইন্দ্রিয়সেবা হইতে, বসিয়া থাকার সময়। পৃষ্ঠদেশে, বাম স্কন্ধাস্থিতে, স্কন্ধাস্থিদ্বয়ের মধ্যে যন্ত্রণা। ঋতুকালে কটিদেশে যন্ত্রণা। ঋতুকালে ত্রিকাস্থিতে বেদনা। ঋতুকালে কটিদেশে পৃষ্ঠে কনকনানি। পৃষ্ঠে ও মেরুদন্ডে ক্ষততা ও ঘেঁনবৎ যন্ত্রণা। মেরুদন্ডের উপদাহ। কটিদেশে ও মেরুদন্ডে জ্বালা । পৃষ্ঠে টানিয়া ধরার ন্যায় বেদনা। ত্রিকাস্থি ও তলপেটের সংযোগস্থানের ডান পার্শ্বে তীব্র যন্ত্রণা। কটিদেশে সূচীবিদ্ধবৎ যন্ত্রণা।

পৃষ্ঠে ঘর্ম। ঘাড়ের উভয় পার্শ্বের আড়ষ্টতা। ঘাড়ের গ্রন্থিগুলির স্ফীতি। সন্ধ্যার দিকে পৃষ্ঠে ও শুক্রস্রাবের পর কোমরে দুর্বলতাবোধ।

হাত, পা ও পায়ের পাতা শীতল। ঋতুকালে, দিবাভাগে বরফের ন্যায় শীতল পায়ের পাতা, রাত্রে শয্যায় শুইলে জ্বালা করে। লিখিবার সময় সম্মুখ বাহুর প্রসারক পেশীগুলির আকুঞ্চন। ক্ষততাযুক্ত, হুলবিদ্ধৎ যাতনাযুক্ত পায়ের কড়া পায়ের ডিমে ও পায়ের পাতায়। খালধরা। লিখিবার সময় হস্তে খালধরা। সন্ধিগুলিতে মটমট শব্দ। অঙ্গাদির উপর উদ্ভেদ, ফুস্কুড়ি। নিম্নাঙ্গগুলির উপর ব্রণ ও ফুস্কুড়ি। পদাঙ্গুলির খাজে খাজে ব্রণ, পায়ের গোড়ালিতে একজিমা। ঊর্ধ্বাঙ্গগুলিতে ও পায়ের পাতার উপর পোকাহাঁটার অনুভূতি। হাতের ও পায়ের পাতার উত্তাপ। অঙ্গাদির, নিম্নাঙ্গগুলির, পায়ের ও পায়ের পাতার ভারবোধ। অঙ্গগুলির, ঊধ্বাঙ্গগুলির, নিম্নাঙ্গগুলির, পায়ের গোছের চুলকানি। অঙ্গগুলির ঊর্ধ্বাঙ্গগুলির, ডানহাতের ও বাহুর, হস্তাঙ্গুলিগুলির, ডান হস্তাঙ্গুলিগুলির, পায়ের পাতার অসাড়তা। অঙ্গগুলিতে যন্ত্রণা। গেটেবাতগ্রস্ত, বাতগ্রস্ত সন্ধিসকল ও হাতের কজি। স্কন্ধে বাতের যন্ত্রণা (ডানটিতে)। পায়ে, পায়ের ডিমে, পায়ের গোছে, পায়ের গাঁটে, পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলিতে যন্ত্রণা। অঙ্গগুলিতে, নিম্নাঙ্গগুলিতে, হাঁটুতে, পায়ে হেঁলাইয়া যাওয়ার ন্যায় যন্ত্রণা। হাত ও পায়ের তলায় জ্বালা। বাম হস্তে ও তর্জনীতে খালধরার ন্যায় যন্ত্রণা। ঋতুকালে, সম্মুখবাহুতে, কজিতে, হাতে, সন্ধিতে, বামস্কন্ধে, নিতম্বে ও হাঁটুতে টানিয়া ধরার ন্যায় অনুভূতি। স্কন্ধে চাপনবৎ বেদনা। স্কন্ধে ও হস্তাঙ্গুলিতে, নিতম্বে, হাঁটুতে, উরুতে, জানুতে, পায়ের তলায়, গোড়ালিতে সূচফোটার ন্যায় যন্ত্রণা। অঙ্গাদিতে, সন্ধিতে, উর্ধ্বাঙ্গগুলিতে, স্কন্ধে, উর্ধ্ববাহুতে, কনুইতে, হস্তাঙ্গুলিতে নিম্নাঙ্গগুলিতে, নিতম্বে, হাঁটুতে, পায়ে, পায়ের পাতায়, পায়ের আঙ্গুলে ছিন্নকর যন্ত্রণা। হাতে ও পায়ের পাতায় ঘৰ্ম্ম। পদদ্বয় অস্থির। হাঁটুর বিপরীত দিকের গৰ্ত্তাকার স্থানের বন্ধনীগুলির হস্বতাপ্রাপ্তি, আবার ঋতুর পরেও ঐরূপ হয়। সন্ধিগুলির আড়ষ্টতা। হস্তাঙ্গুলিগুলির, নিম্নাঙ্গগুলির, পায়ের পাতার স্ফীতি। জঙ্ঘার শিরায় ও পায়ের ডিমে টানবোধ। শুক্রস্রাবের পর হস্তের, হাঁটুর কম্পন। পেশীগুলিতে ঝাকি দিয়া উঠা। ঋতুর পর ঊর্ধ্বাঙ্গগুলির, হস্তের, ডান কজির এবং বাম পায়ের গোছের দুর্বলতা; নিম্নাঙ্গগুলির, ঊরুর, পায়ের গোছের দুর্বলতা। শিশুদিগের পায়ের গোছের দুর্বলতা (নেট্রাম কার্ব)। চলিতে চলিতে হঠাৎ পা এলাইয়া পড়ে।

অত্যন্ত গাঢ় নিদ্রা। রোগী খুব স্বপ্ন দেখে। স্বপ্ন উৎকন্ঠাপূর্ণ, কামবিষয়ক, মৃত লোক সম্বন্ধে, কষ্টকর, পূর্বঘটনার, অগ্নির, ভীতিপূর্ব, বুকচাপা স্বপ্ন; আনন্দদায়ক, বিরক্তিকর ও স্পষ্ট। চেয়ারের উপর নিদ্রিত হইয়া পড়ে। নিদ্রা অস্থির। নিদ্রালুতা, সারাদিন, মধ্যাহ্নভোজনের পর, পূর্বাহ্নেই সর্বাপেক্ষা বেশী। মধ্যরাত্রির পূর্বে, চিন্তারাশি উপস্থিত হওয়ায় নিদ্রাহীনতা। নিদ্রালুতা অথচ ঘুমাইতে পারে না। অতৃপ্তিকর নিদ্রা। রাত্রি ১২টা হইতে ৩টা পর্যন্ত জাগিয়া থাকে। ভোর ৫টায় অতৃপ্ত হইয়া জাগিয়া উঠে। বিলম্বে নিদ্রাভঙ্গ হয় ।

সন্ধ্যাকালে শয্যায় শুইলে ও শীতল বাতাসে শীতল হইয়া পড়ে। সন্ধ্যাকালে, ঋতুকালে এবং আহারের পর শীতশীতবোধ। কম্পকর শীত। একপার্শ্বিক শীতলতা। আভ্যন্তরীণ শীত। প্রত্যহ অপরাহ্নে জ্বর, উত্তাপের ঝলক ও শিরঃপীড়া। এত গরম বোধ করে যে, নিদ্রা যাইতে পারে না।ন্দ্রিাকালে ঘর্মবিশিষ্ট জ্বর। টক চাপচাপ বমনবিশিষ্ট সবিরাম জ্বর। দিবাভাগে, প্রাতে, অপরাহ্নে, রাত্রিকালে ঘৰ্ম্ম। উৎকণ্ঠাজনক ঘৰ্ম্ম। শীতল ঘৰ্ম্ম। কাশিলে সামান্য পরিশ্রমে ঘর্ম। অত্যধিক স্নায়বিক দুর্বলতার সহিত প্রাতে ও রাত্রিকালে প্রচুর ঘর্ম। টকগন্ধ ঘর্ম। শিশুর দেহ হইতে টক গন্ধ বাহির হয়।

চৰ্ম্মে কুটকুট করা, জ্বালা বা শীতলতা। যকৃৎরোগসূচক দাগসকল, লাললাল চিহ্ন, হলদে চিহ্ন, এবং চৰ্ম্ম ন্যাবাগ্রস্ত। শুষ্ক চৰ্ম্ম। শুষ্ক জ্বালাকর উদ্ভেদসকল—ফোস্কা, ফোড়া, জ্বালাকর খোলস উঠা, আর্দ্র, শুষ্ক, ইন্দ্রবিদ্ধাসদৃশ, যাতনাকর, গলিত ব্রণ,—সোনার ন্যায় হলদে মামড়িবিশিষ্ট; পুঁজোৎপত্তিকর, আমবাত ফোস্কাকার। একজিমা হইতে মধুর বর্ণের স্রাব হয়। ইরিসিপ্লাস। হাজা। পোকাহাঁটার অনুভূতি। খাজপড়া চৰ্ম্ম । চর্মে কামড়ানর ন্যায় যন্ত্রণা। চর্মের ক্রিয়াহীনতা। চুলকানি, কামড়ানি, জ্বালা, সুড়সুড়ি, পোকাহাঁটার ন্যায় অনুভূতি, হুলফোটার ন্যায় অনুভূতি, চুলকাইলে উপশম হয়, শয্যার উত্তাপে বাড়ে। চৰ্ম্মের স্পর্শকাতরতা। চৰ্ম্মে ক্ষততাবোধ। চর্মে কাঠিফোটার ন্যায় যন্ত্রণা। চৰ্ম্মের আক্রান্ত অংশগুলির স্ফীতি। চর্মের শোথভাব। ক্ষতবৎ যন্ত্রণা। ক্ষত;—কামড়ানিযুক্ত, জ্বালাকর, সুড়সুড়িযুক্ত, গভীর দুর্গন্ধ ও হলদে স্রাবযুক্ত; নালীক্ষত, প্রদাহিত, লালবর্ণ মন্ডলবেষ্টিত, স্পর্শকাতর, হুলফোটার ন্যায় যাতনাযুক্ত পুঁজোৎপত্তিপ্রবণ, স্ফীতিযুক্ত, অস্বাস্থ্যকর। চৰ্ম্ম অসুস্থ আঁচিলসকল।

সোডিয়াম ফসফেট (Sodium Phosphate)। অত্যধিক অম্লতা মুখগহ্বরের তালুর পিছন দিকে সরের ন্যায় হলুদ বর্ণের অম্ল উদগার।

✅ আমাদের সফল চিকিৎসার প্রমাণ দেখুন।

(ডান পার্শের মেনুতে রোগের নাম লিখে সার্চ করুন)

[videogallery id=”Success of Homeopathy”]

.
.

About The Author

D.H.M.S (Dhaka), M.M (BMEB) Consultant Homoeopathic physician Researcher, books author and speaker Owner of HD Homeo Sadan  CEO of HD Health Lecturer: Ashulia Homeopathic Medical College

Related posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *