কমলা ও লেবুজাত ফলে বৃদ্ধি। |
চোখ যেন পিছনের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে এমন অনুভূতি। |
মানসিক শ্রমে শরীর গরম অনুভূতি। |
পাকস্থলী ও বুকে খালি খালি অনুভূতি, বিশেষত আহারের পরে। |
চামড়া, হৃদপিন্ড ও স্নায়ুতন্ত্রের উপর এই ঔষধের সুস্পষ্ট কাজ আছে। শরীরের ঊধর্বভাগের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে খিলধরার মত আক্ষেপ সহ পক্ষাঘাত এই ঔষধ উৎপন্ন করতে পারে, আবার ঐ একই জাতীয় লক্ষণ এই ঔষধ আরোগ্য করতে পারে। শরীরের একদিকের পক্ষাঘাত। উচ্চারণ করা কষ্টসাধ্য।
মন — স্মৃতিশক্তি দুর্বল; অনুভূতিধীরে সম্পন্ন হয়। বিষন্নতা, তৎসহ দুর্দমনীয় কোষ্ঠকাঠিণ্য।
মাথা — মাথাঘোরা ও দৃষ্টবস্তু দুটি থাকে, বিশেষ করে যখন নীচের দিকে তাকায়। কোন বস্তুর দিকে স্থির ভাবে তাকিয়ে থাকলে অথবা বিছানা থেকে উঠে বসার সময় মাথাঘোরে। মস্তিষ্কের ভিতরে বেদনা, যেন মনে হয় মাথাটি ফেটে যাবে। অসাড়তার অনুভূতি। নিস্তেজ, চিন্তা করতে অক্ষম। পরিশ্রমে অনিচ্ছা, মাথার চামড়ায় উক্তে সমূহ। কারণগুলির পিছনের অংশে আর্দ্র, দূর্গন্ধযুক্ত স্থানসমূহ (গ্রাফাইটিস; পেট্রোলিয়াম) এবং মাথার পিছনের অংশে, তৎসহ মাথার সামনের অংশে লাল, খসখসে, উদ্ভেদযুক্ত স্থানসমূহ। মাথার চুলের কিনারায় ও কপালে ক্ষয়কারক চুলকানি, উত্তাপে বৃদ্ধি।
চোখ – কোন বস্তুর একটি দিকে তাকালে তবেই ঐ বস্তুটি দেখতে পায়। পড়ার সময় চোখ থেকে জল পড়ে। দ্বিত্ব দৃষ্টি। চোখ দুটি যেন পিছন দিকে, মাথার ভিতরে টানা রয়েছে এই জাতীয় অনুভূতি।
মুখমন্ডল – ফ্যাকাশে, কোটরগত, তৎসহ চোখের চারিপাশে গোলাকার নীলবর্ণ (ফসফরিক অ্যাসিড)।
পাকস্থলী — প্রচন্ড ক্ষুধা, তৎসহ দ্রুত আহার করে, যদিও আহার করার জন্য কোন স্পৃহা থাকে না। পিপাসা, শূন্য ঢেকুর। ভুক্ত খাদ্যে বস্তুর বমন; সবুজ বর্ণের জল। পাকস্থলী উপরের অংশে দর অনুভূতি। উদর – পেটডাকা, তৎসহ-প্রচুর, দূর্গন্ধযুক্ত বায়ু নিঃসরণ। নাভির চারিপাশে কামড়ায়। নিম্মলন মলবেগ। অজীর্ণ মল। বায়ুনিঃসরনের সময় মল নির্গমন। মলদ্বারে জ্বালাকর বেদনা।
বুক – বুকের উপর ভারী বস্তু রয়েছে এই জাতীয় অনুভূতির সঙ্গে শ্বাসবন্ধ হবার মত অবস্থা; যখন শুয়ে থাকে হাঁপানীর মত অবস্থা। হৃদকম্প তৎসহ বুকের ভিতরে দুর্বলতা ও খালি খালিভাব। শ্বাসকষ্ট। বুকের ভিতরে ভোতা সূঁচ দিয়ে বিদ্ধ করার মত বেদনা।
অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ – নিম্নংঙ্গের দুর্বলতা। পা ও পায়ের পাতাগুলির পক্ষাঘাত। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে শারীরিক উত্তাপের অভাব। পায়ের পাতাগুলি শীতল। হাতের আঙ্গুলগুলির স্ফীতি ও জ্বালাকর আড়ষ্টতা।
বেদনাহীণ পক্ষাঘাত। পায়ের পাতাগুলির অবিরাম শীতলতা। হাতগুলির শিরাগুলির স্ফীতি। শোথ। সন্ধিস্থান সমূহের আড়ষ্টতা।
চামড়া — চুলকানি, শুষ্ক ফুস্কুড়ি সমূহ; হার্পিস; অনুভূতি প্রবল ও অসাড়তা। রাত্রিকালীণ জ্বালা। চামড়া অত্যন্ত অনুভূতি প্রবণ; সামান্য ঘর্ষনে চামড়ায় টাটানি ব্যথা। তীব্র চুলকানি সহ উদ্ভেদসমূহ, উদ্ভেদগুলি থেকে ছুঁয়ে ছুঁয়ে রক্ত আসে; ঘামের অভাব। চুলকাণি, বিশেষতঃ মাথার চামড়ার উপর, যা অত্যন্ত অনুভূতি প্রবণ।
কমা-বাড়া-বৃদ্ধি, জামা কাপড় খোলার পরে, বিশ্রামে, জামা কাপড়ের ঘর্ষনে।
সম্বন্ধ-তুলনীয় – কোনিয়াম ; নেট্রাম মিউর ; রাসটক্স ; কষ্টিকাম ; ল্যাথিরাস।
দোষঘ্ন – ক্যাম্ফর ; সালফার।
শক্তি – ৩য় থেকে ৩০ শক্তি।
অপর নাম – নেরিয়াম ওলিয়েণ্ডার (Nerium olender)
অ্যাপোসাইনেসী নামক একপ্রকার বৃক্ষ। এর সরস পাতা থেকে মূল অবিষ্ট তৈরী করা হয়।
* অজীর্ণ ভুক্তদ্রব্য বিশিষ্ট (undigested food) উদরাময়ে গুলিয়েণ্ডার আমাদের সর্বোৎকৃষ্ট ঔষধ। অধোবায়ু (flatus) নিঃসরণের সময় অনিচ্ছয় মল বের হয়ে যাওয়া এর প্রধান নির্দেশক লক্ষণ। অতি অধোবায়ু নিঃসরণকালেও মল নির্গত হয়; সেজন্য প্রায়ই কাপড় নষ্ট হয়ে যায়।
- রোগী বিবরণী —
আমি আমার মেয়ের তিন বছর স্থায়ী উদরাময়ে একে ২০০ শক্তিতে ব্যবহার করে তাকে সুস্থ করেছিলাম। ওলিয়েণ্ডার ব্যবহার করে যে কেবল তার উদরাময় সেরে গিয়েছি, তা নয়। সে সুস্থ ও সবল হয়ে উঠেছিল এবং রোগও আর প্রত্যাবর্তন করেনি।